ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

adbilive
adbilive
তারেক-জোবাইদার মামলার রায় নিরপেক্ষ হয়নি ॥ হাইকোর্ট

তারেক-জোবাইদার মামলার রায় নিরপেক্ষ হয়নি ॥ হাইকোর্ট

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে দুদকের করা মামলায় অধস্তন আদালতের বিচার ‘নিরপেক্ষ হয়নি’ মর্মে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ মামলায় তারেক রহমান ও জোবাইদা রহমানকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে সেই রায়ের ৫২ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে। রায়ের পর্যবেক্ষণে অধস্তন আদালতের বিচারে নিরপেক্ষতাহীনতার বিষয়টি উঠে আসে। রায়ের পর্যবেক্ষণে উচ্চ আদালত বলেন, বিচারিক আদালতে দ্রুতগতিতে সাক্ষ্য নেওয়া ও রায় ঘোষণা করা, -জোবাইদা রহমানকে নোটিস না করা এবং অভিযোগ গঠনে আইনের ব্যত্যয় হয়েছে। আদালত আরও বলেন, বিচারিক আদালতে দুই মাস চারদিনে ৪২ সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া এবং সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আটদিনের মধ্যে রায় দেওয়ার এমন দ্রুতগতি ও সমাপ্তি ব্যাপকভাবে বিশ্বাস তৈরি করে যে, বিচারকার্য নিরপেক্ষভাবে হয়নি। সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের মামলায়-জোবাইদা রহমানের তিন বছর ও দুটি ধারায় তারেক রহমানের ৯ বছরের সাজা হয় বিচারিক আদালতে। তবে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের একক বেঞ্চ গত ২৮ মে যে রায় দেন তাতে তারেক রহমান ও -জোবাইদা রহমান উভয়ে বিচারিক আদালতের দেওয়া দ- থেকে খালাস পান। দুদক আইনের ২৬ (১) ধারা অনুযায়ী নোটিস দেওয়ার বিধান সম্পর্কে হাইকোর্ট বলেন, নোটিস দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। যেহেতু কোনো নোটিস দেওয়া হয়নি। তাই তাকে (-জোবাইদা রহমানকে) দোষী সাব্যস্তকরণ এবং সাজা আইন অনুসারে টেকে না এবং এটা বাতিলযোগ্য। আদালত বলেন, আপিলকারীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ গঠন করা হয়েছিল তা অত্যন্ত ত্রুটিপূর্ণ। ফৌজদারি কার্যবিধির ২২১ ধারার বিধানগুলো পালন করা হয়নি। অতএব এ ধরনের ত্রুটিপূর্ণ অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত ও সাজা বহাল রাখা যায় না। রায়ে তারেক রহমানের সাজা প্রসঙ্গে বলা হয়, ভারত ও বাংলাদেশের উচ্চ আদালতের নজির অনুসারে যেহেতু মামলায় নানান অসঙ্গতি রয়েছে সেহেতু পুরো রায়টি বাতিলযোগ্য। তাই এক্ষেত্রে তারেক রহমানও খালাসের সুবিধা পেয়েছেন। এ বিষয়ে বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আমাদের দেওয়া যুক্তি আইনগতভাবে যে সঠিক ছিল সেটা হাইকোর্ট বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায়ে প্রমাণিত হলো। আমরা বলেছি তারেক রহমান ও -জোবাইদা রহমানের সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছিল। জাস্টিস হারিড জাস্টিস বারিড। দ্রুত শুধু সাক্ষী নেওয়াই শেষ নয়, এখানে মোমবাতি জ্বালিয়েও সাজা দেওয়ার জন্য দ্রুত বিচারকাজ চালিয়েছিলেন বিচারিক আদালত। গত ১৪ মে -জোবাইদা রহমানের তিন বছরের কারাদ-ের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে জরিমানা স্থগিত করে ওইদিন আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাকে জামিন দেওয়া হয়। এর আগের দিন ১৩ মে আপিল দায়েরের ৫৮৭ দিনের বিলম্ব মার্জনা করেন হাইকোর্ট। বিলম্ব মার্জনার পর -জোবাইদা রহমান সাজার রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন। সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান, জোবাইদা রহমান ও তার মা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। এ মামলার বিচার শেষে ২০২৩ সালের ২ আগস্ট জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তারেক রহমানকে দুই ধারায় মোট ৯ বছর ও জোবাইদা রহমানকে তিন বছরের সাজা দেন ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের তৎকালীন বিচারক মো. আছাদুজ্জামান। রায়ে দুদক আইন, ২০০৪-এর ২৬(২) ধারায় তারেক রহমানকে তিন বছর এবং ২৭(১) ধারায় ছয় বছরের কারাদ- দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাকে তিন কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। জোবাইদা রহমানকে ২৭(১) ধারায় তিন বছরের কারাদ- ও ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের নির্বাহী আদেশে তার সাজা এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়।

একদিনের ব্যবধানে বেড়েছে ডলারের দাম

একদিনের ব্যবধানে বেড়েছে ডলারের দাম

বাজারে এক সময় ডলারের জন্য হাহাকার ছিল। বৈদেশিক লেনদেন সামলাতে গিয়ে ব্যাংকগুলো ছুটতো এক্সচেঞ্জ হাউসের পেছনে। এখন আর সেই পরিস্থিতি নেই।  ডলার সংকটের কঠিন সময় পার করে বাংলাদেশ এখন এক ধরনের মুদ্রা স্বস্তির মধ্যে প্রবেশ করেছে। যেখানে টাকার মান বাড়ছে, রিজার্ভ বাড়ছে, আর বৈদেশিক বাণিজ্যে শৃঙ্খলা ফিরছে। ব্যাংকগুলোর কাছে এখন পর্যাপ্ত ডলার রয়েছে। শুধু তাই নয়, মার্কিন ডলার এখন মার খাচ্ছে টাকার কাছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের অর্থনীতিতে ‘অবমূল্যায়নের যুগ’ থেকে ‘স্থিতিশীল বিনিময় হারে’ প্রবেশের সম্ভাবনাই এখন দৃশ্যমান।  ঐতিহাসিক নিলামের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে বেশি দামে ডলার কিনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মার্কেট ফ্লোর কার্যত তুলে দেওয়ার পর সোমবার এক দিনেই মুদ্রাটির দাম ১.৮ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংক নিলামের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ডলার কেনে। এদিন ১২১.৫০ টাকা দরে ১৭১ মিলিয়ন ডলার কেনা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই পদক্ষেপের পর বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সোমবার রেমিটেন্সের ডলার কেনার ক্ষেত্রে আগেরদিনের ১১৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১২০.৮০ টাকা পর্যন্ত দাম দিয়েছে।  ব্যাংকাররা বলছেন, গত সপ্তাহে ডলারের দাম প্রায় ৩ টাকা কমে যাওয়ার জেরে নিলামে বেশি দামে ডলার কেনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশি রেট দিয়ে ডলার কিনে বাজারে দাম বাড়ানোর সিগন্যাল দেয়। সোমবার কোনো নিলাম অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে বাজারে রবিবারের নিলামের প্রভাব ছিল স্পষ্ট, কারণ ব্যাংকগুলো রেমিটেন্সের ডলার কেনার ক্ষেত্রে দর বাড়িয়ে দেয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো. কবির আহমেদ বলেন, ‘আমরা বাজার থেকে কী পরিমাণ ডলার কিনব, তা এখনও নির্দিষ্ট করিনি।