আসছে মুসলিম উম্মাহর দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। এ ঈদের প্রধান ও অন্যতম অনুষঙ্গ পশু কোরবানি। এ কারণে কোরবানির ঈদ বলা হয়। চাঁদের হিসাবমতে আর দুই সপ্তাহ পরই পবিত্র ঈদুল আজহা। সে হিসাবে বলা যেতে পারে দুয়ারে এসে দাঁড়িয়েছে ঈদের বার্তা।
এ ঈদে কোরবানির পশুর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষের পছন্দের শীর্ষে থাকে গরু। গরু নিয়েই যত হৈ হুল্লোড় শুরু হয়। গরু নিয়ে ঘটে যায় নানা কাহিনী। গরুর পরই কোরবানির তালিকায় থাকে ছাগল। গরু ও ছাগলের পাশাপাশি ভেড়া, মহিষ কোরবানির তালিকায় থাকে। তবে গরুর চাহিদা হলো সবার শীর্ষে।
ঈদের আগের অন্তত এক মাস ধরেই গরুময় হয়ে উঠে সবক্ষেত্র। হাট-ঘাট, সড়কপথ কিংবা চায়ের স্টল সবখানেই গরু নিয়ে জমে উঠে অলোচনা, তর্ক-বিতর্ক। কোন হাটে কত টাকার গরু বিক্রি হলো, কে কত বড় কোরবানির গরু কিনল এসব নিয়ে চলে যত বিতর্ক।
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে তাই এখনই জমে উঠতে শুরু করেছে রাজশাহী অঞ্চলের পশুহাটগুলো। দেশের সবচেয়ে কোরবানির পশু রয়েছে রাজশাহী বিভাগেই। এ বিভাগের উদ্বৃত্ত গরু-ছাগল চাহিদা মেটায় রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলের কোরবানি দাতাদের। এবারও তার ব্যতিক্রম নই। রাজশাহী বিভাগের উদ্বৃত্ত কোরবানির পশু এবারও চাহিদা মেটাবে সারাদেশের।
রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ বিভাগের হিসাব মতে এবার এ অঞ্চলের আট জেলায় ৪৩ লাখ ৪৪ হাজার কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত করেছেন কৃষক ও খামারিরা। যা এ অঞ্চলের কোরবানিদাতাদের চাহিদা মিটিয়ে জোগান দেবে দেশের বিভিন্ন জেলায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতবারের তুলনায় এবার শুধু রাজশাহী জেলায় কোরবানিযোগ্য পশু বেড়েছে ৩০ হাজার ৬৯৭টি। বিভাগের অন্য জেলাতেও বেড়েছে কোরবানিরযোগ্য পশু। ভারতীয় গরুর আগ্রাসন বন্ধ হওয়ায় দেশীয় গরু-ছাগলের প্রতিপলন ও সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে রাজশাহী বিভাগের আট জেলায়।
এবার রাজশাহী বিভাগের ৩০২টি হাটে কোরবানির পশু বেচাকেনা হবে বলে জানিয়েছে বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তর। ইতোমধ্যে এ অঞ্চলের হাটে হাটে পশু আমদানি ও কেনাবেচা শুরু হয়েছে। এবার ব্যবসায়ীরা স্বাচ্ছন্দ্যে কোরবানির পশু কেনাবেচা করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করছেন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবার হাটে হাটে আগাম কোরবানির পশু উঠতে শুরু করেছে। এখনো জোরতাল কেনাবেচা শুরু না হলেও চলতি সপ্তাহের তা জমে উঠবে। হাটে হাটে শুরু হবে ক্রেতা-বিক্রেতা আর বেপারিদের হাক-ডাক। এ অঞ্চলের পশুহাটগুলো সারাবছর জোরতাল থাকলেও কোরবানির ঈদের এক মাস আগে থেকে শতগুণ বেড়ে যায় ক্রেতা-বিক্রেতারের বিচরণ। ইতোমধ্যে রাজশাহীর হাটগুলোতে শুরু হয়ে গেছে ক্রেতা-বিক্রেতা আর বেপারিদের বিচরণ।
সর্বশেষ বুধবার ছিল রাজশাহীর সবচেয়ে বৃহৎ পশুর হাট সিটিহাটের নির্ধারিত দিন। সপ্তাহে দুটি হাটবার হলেও কোরবানির ঈদ উপলক্ষে এ হাটটি প্রতিদিনই বসবে। রাজশাহী নগরীর বাইপাশ সড়কের পাশে বিশাল এ হাটের অবস্থান। বলা হয় এটিই রাজশাহী বিভাগের সবচেয়ে বড় কোরবানির হাট। উত্তরবঙ্গে সব জেলার ক্রেতা-বিক্রেতা আর সারাদেশের পাইকাররা এ হাটে আসেন। বুধবার এ হাটে কোরবানির পশুর আধিক্য লক্ষ্য করা গেছে।
শুধু সিটিহাট নয়, রাজশাহীর সব পশুহাটই এরই মধ্যে জমতে শুরু করেছে। হাটে হাটে আসতে শুরু করেছে বিপুল পরিমাণ কোরবানির পশু। এবারও রাজশাহী অঞ্চলে পর্যাপ্ত পরিমাণ কোরবানির পশু থাকায় হাটে হাটে ছোট, মাঝারি আকারের গরুগুলো আসছে ব্যাপক হারে। বড় আকারের গরুগুলো আরও কয়েকদিন পরে আসবে হাটে।