ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৬ অগ্রাহায়ণ ১৪৩০

ভিন্নখবর

‘ফিলিস্তিন : আমার বারুদের ফুল’  গ্রন্থের প্রকাশনা

‘ফিলিস্তিন : আমার বারুদের ফুল’ গ্রন্থের প্রকাশনা

প্রতিনিয়ত ইসরাইলি আগ্রাসনে ধ্বংস হচ্ছে ফিলিস্তিন। ইসরাইলি বর্বরতায় প্রাণ হারাচ্ছে দেশটির নারী-শিশু থেকে নিরীহ মানুষ। প্রাণহানির পাশাপাশি ক্রমাগত বোমা হামলায় মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে ফিরিস্তিনবাসীর ঘরবাড়ি। হয় ইসরাইলি নৃশংসতায়  নিহত হচ্ছে নয় তো গৃহহীন হচ্ছে।  ইসরাইলিদের এমন আমানবিক আচরণ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় ফিলিস্তিনের প্রতি ভিন্নভাবে সংহতি প্রকাশ করল প্রকাশনা সংস্থা ঐতিহ্য। কবিতার পঙ্ক্তিমালায়  ফিলিস্তনিবাসীর প্রতি জানানো হয়েছে সহমর্মিতা। সেই সুবাদে   ‘ফিলিস্তিন : আমার বারুদের ফুল’ কাবগ্রন্থ প্রকাশ করেছে ঐতিহ্য। সংকলনটিতে ফিলিস্তিনি প্রখ্যাত কবিদের অনুবাদের পাশাপাশি বাংলাদেশের নবীন ও প্রবীণ কবিদের কবিতা স্থান পেয়েছে।

ভিন্নখবর বিভাগের সব খবর

এক সড়কে পাল্টে গেছে দৃশ্যপট

এক সড়কে পাল্টে গেছে দৃশ্যপট

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও ফতুল্লায় ১০৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভাষা সৈনিক বেগম নাগিনা জোহা সড়কটি বদলে দিয়েছে আশপাশের এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার পরিবেশ। সড়কটির কারণে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৬, ৮ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডবাসী ও ফতুল্লার হাজীগঞ্জ ও তল্লাসহ আশপাশের মানুষের ভাগ্য বদলে গেছে। রাতারাতি জমির দামও হু হু করে বেড়ে গেছে। সড়কটির উভয় পাশের দৃশ্যপট পাল্টে গেছে। স্থানীয়দের দাবি, এ সড়কটি নির্মিত হওয়ায় নারায়ণগঞ্জ-বরফকল-আদমজী-শিমরাইল পুরাতন সড়কের একটি অংশের যানজটও কমে এসেছে। এ সড়কটি চালু হওয়ায় চাষাঢ়া থেকে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে আদমজী ইপিজেড পর্যন্ত যানজটমুক্ত পরিবেশে চলাচল করতে পারছে এখানকার লোকজন। এ সড়কটির কারণে অর্থনৈতিকভাবেও উন্নত হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ। এ সড়কটি নির্মিত হওয়ায় সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে এখানকার মানুষের আমূল পরিবর্তন এসেছে। এ সময়ের অবহেলিত ও পরিত্যক্ত চাষাঢ়া-আদমজী-সিদ্ধিরগঞ্জ  রেলপথটি এখন সড়কে পরিণত করায় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা আনন্দে উচ্ছ্বসিত। গত ১৪ নভেম্বর গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে ভাষা সৈনিক বেগম নাগিনা জোহা নামের সড়কটি উদ্বোধন করেন। নির্মাণ শেষে উদ্বোধনের আগ থেকেই এ সড়কে যানবাহনের চলাচল শুরু হয়। এখন ধীরে ধীরে যানবাহন চলাচল বেড়ে যাচ্ছে।

এক কক্ষের বিদ্যালয়

এক কক্ষের বিদ্যালয়

পুরান ঢাকায় জরাজীর্ণ একটি ভবনের এক কক্ষেই চলছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের লালমোহন সাহা স্ট্রিট এলাকায় ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত স্কুলটির নাম মুসলিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। স্কুলটি দেখে প্রথমেই মনে হবে, এটা কোনো গোডাউন নয়তো? সাইনবোর্ড থাকায় ‘প্রমাণ’ হয় এখানে একটি স্কুল আছে। তবে নেই কোনো শ্রেণিকক্ষ, খেলার মাঠ, পাঠাগার, নিরাপদ পানির ব্যবস্থা। যারা উপায় না পেয়ে ভর্তি হয়েছিল তারাও এখন স্কুলটি ছেড়ে অন্য কোথাও ভর্তি হওয়ার চেষ্টায় আছে। পড়ার ন্যূনতম পরিবেশ না থাকলেও কাগজে-কলমে ১০০ জন শিক্ষার্থী তিনজন শিক্ষক ও একজন অফিস সহকারী নিয়ে চলছে প্রতিষ্ঠানটি।

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

বায়ান্ন বাজার তিপ্পান্ন গলি

বিজয় দিবস সামনে। মহান এই দিবস উদ্যাপনের প্রস্তুতি চলছে এখন। কিন্তু এইসব উদ্যাপনে, মানতেই হবে, আনুষ্ঠানিকতা বেশি। মুক্তিযুদ্ধটাকে বোঝার, হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করার লোকের ভীষণ অভাব। যত দিন যাচ্ছে এ অভাব তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। চারপাশের পরিবর্তনগুলো লক্ষ্য করুন, খুব উদ্বেগজনক কিন্তু। একটা অংশ ‘মুক্তিযুদ্ধ’ ‘জয় বাংলা’ বিশেষ করে ‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দটির অপব্যবহার করছে। এর প্রভাব পড়ছে সমাজে। অন্যদিকে রাজাকার আলবদরদের প্রজন্ম একাত্তরের সমস্ত অর্জনকে অস্বীকার করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই অপশক্তি মারাত্মক সক্রিয়। যে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে বাংলাদেশ হলো সেই স্লোগান নিয়ে রীতিমতো তামশা করছে এরা।

সারি বেঁধে হানাদাররা প্রতি রাতে হত্যা করত মুক্তিকামীদের

সারি বেঁধে হানাদাররা প্রতি রাতে হত্যা করত মুক্তিকামীদের

রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে হানাদারদের রাইফেল যখন আর্তনাদ ছড়িয়ে দিচ্ছিল তখন শুধুই নির্মম নিষ্ঠুরতায় চলছিল হত্যাযজ্ঞ। প্রকৃতির নির্মলতাকে টুকরো টুকরো করে দিয়ে পাক হানাদার বাহিনী উন্মত্ত হিংস্রতায় রক্তের হোলি খেলায় মেতে উঠেছিল উল্লাসে। বুলেট বুক বিদীর্ণ করার আগে কারও চোখে কোন প্রিয়মুখ ভেসে উঠেছিল হয়তো। তবে মানুষরূপী পাকিদের তা একটুও টলাতে পারেনি। কারণ বাঙালি নিধনই যে ছিল তাদের নেশা। সে যে কেউ হোক। তাদের বর্বরতায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ছিল একের পর এক মুক্তিকামী মানুষ। সাধারণ মানুষকে ধরে নিয়ে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার পাকিদের নিকট ছিল এক সাধারণ বিষয়।

যুদ্ধ জয়ের স্মৃতি জেগে ওঠার মন্ত্র

যুদ্ধ জয়ের স্মৃতি জেগে ওঠার মন্ত্র

কী যে দুঃসময় পার করে এসেছে বাঙালি! আজ এতকাল পর ভয়ঙ্কর সেই অতীতের দিকে তাকালে গা শিউরে ওঠে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের প্রতি প্রান্তে নির্মম গণহত্যা চালিয়েছিল পাকিস্তানিরা। বেদনাবিধুর সেই সব স্মৃতি কোনোদিনও ভুলবার নয়। তবে ডিসেম্বর মাস এলে যুদ্ধ জয়ের স্মৃতিই বড় হয়ে ধরা দেয়। নয় মাস বীরদর্পে লড়াই করে এ মাসের ১৬ তারিখ চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেছিল বাঙালি। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াকু মানসিকতা, সশস্ত্র সংগ্রামের ইতিহাস অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে আছে আজও। প্রতি বছরের মতো এবারও যুদ্ধ জয়ের স্মৃতি, জেগে ওঠার মন্ত্র হয়ে এসেছে ডিসেম্বর। আর মাত্র কদিন পর ১৬ ডিসেম্বর। নানা উৎসব অনষ্ঠান আলোচনাসভা প্রদর্শনী ইত্যাদির মাধ্যমে যুদ্ধ জয়ের ইতিহাসটি তুলে ধরা হবে। এখন চলছে জোর প্রস্তুতি।   ইতোমধ্যে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস-২০২৩ উদ্যাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রলালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৬ ডিসেম্বর প্রত্যুষে ঢাকায় ৩১ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে বিজয় দিবসের সূচনা করা হবে। সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে অনুষ্ঠিত হবে সম্মিলিত বাহিনীর বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ। রাষ্ট্রপতি মু. সাহাবুদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত  থেকে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করবেন। কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। বিশাল এ আয়োজন সফল করতে এখন কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তর অধিদপ্তর।  বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকেও  বর্ণাঢ্য উৎসব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। বাঙালির সাংস্কৃতিক আন্দোলন সংগ্রামের মূর্ত প্রতীক ছায়ানট ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলা মাঠে বর্ণিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। প্রতিষ্ঠানের সাধারণ সম্পাদক লায়সা আহসেদ লিসা জানান, বিগত বছরগুলোর মতো এবারও দেশবোধকে প্রাধান্য দিয়েই অনুষ্ঠান পরিকল্পনা করা হয়েছে। এখন চলছে রিহার্সাল। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত রিহার্সাল করছেন। সব ঠিক থাকলে এবারের আয়োজনটিও সবার আকর্ষণের কেন্দ্রে থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।       প্রস্তুতি নিচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরও। জাদুঘর আগামী ৯ ডিসেম্বর থেকে বিজয় উৎসবের সূচনা করবে। চলবে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত। উৎসব প্রসঙ্গে জাদুঘরের ট্রাস্টি ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর বলেন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের উৎসবে সংগীত নৃত্য কবিতা আবৃত্তি চিত্রাঙ্কন চলচ্চিত্র প্রদর্শনীসহ নানা আয়োজ রাখা হবে। এ সবের মধ্য দিয়ে শুধু উদ্যাপন নয়, আমরা আমাদের গৌরবোজ্জ্বল  ইতিহাসকে স্মরণ করব। এখন আশপাশে তাকালে হতাশ হওয়ার মতো অনেক কিছু এখন দেখা যায় বটে। এ সবের বিপরীতে ডিসেম্বর আসে অনুপ্রেরণা দিতে। জাগাতে আসে। এবারের বিজয় উৎসবও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নতুন করে জাগিয়ে তুলবে বলে মনে করেন বিশিষ্ট এ নাট্যজন।  ঢাকার বেশ কয়েকটি মঞ্চে একসঙ্গে বিজয় উৎসব আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সম্মিলিত সাংস্কৃকি জোট। প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৩ ডিসেম্বর থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত উদ্যাপিত হবে এই উৎসব। প্রথম দিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উৎসবের উদ্বোধন করা হবে। এখানে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিনই থাকবে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। ১৪, ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর উৎসবের আয়োজন করা হবে রায়ের বাজারে। ধনিয়ায় বিজয় উৎসব অনুষ্ঠিত হবে ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর। আদি ঢাকা সাংস্কৃতিক জোটের উদ্যোগে অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হবে বাহাদুর শাহ পার্কে। এসব স্থানের বাইরে মিরপুর ও উত্তরা পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে উৎসব। জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ জানান, এরই মাঝে প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছেন তারা। অনুষ্ঠানমালার পাশাপাশি ১৬ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে বিজয় শোভাযাত্রা বের করা হবে। বিকেল থেকে চলবে অন্যান্য অনুষ্ঠান।  সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শিল্পকলা একাডেমি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর বিভিন্ন প্রদর্শনী ও উৎসব অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে টিএসসি কেন্দ্রিক সংগঠনগুলোও।  এদিকে, বিজয় দিবস সামনে রেখে জাতীয় পতাকায় লেগেছে নতুন ঢেউ। রাজধানীর রাজপথে অলিতে গলিতে উড়তে শুরু করেছে লাল-সবুজ পতাকা। বিক্রেতারা পতাকা নিয়ে শহর প্রদক্ষিণ করছেন। পতাকা তৈরির কাজে ব্যস্ত এখন দর্জিরাও। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ফুটপাতের ওপর মেশিন নিয়ে বসে পতাকা সেলাই করতে দেখা যাচ্ছে। পছন্দ মতো পতাকা সংগ্রহ করে গাড়িতে বাড়িতে ওড়ানো হবে। বিজয়েরমাসে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি জাগানিয়া বিভিন্ন স্যুভেনিরও  বিক্রি হচ্ছে দেদার। টিশার্টে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে রণাঙ্গনের ইতিহাস। শীতে শালে, উত্তরীয়তে উঠে এসেছে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান। যার নামে মুক্তিযুদ্ধ সেই মহান নেতা শেখ মুজিব দৃশ্যমান হচ্ছেন বিচিত্র শিল্পভাষায়। এখন শুধু মাহেন্দ্রক্ষণ ১৬ ডিসেম্বরের অপেক্ষা।