ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১

ভিন্নখবর

পুরাণের ফুল পূজার অর্ঘ্য

পুরাণের ফুল পূজার অর্ঘ্য

পূজার সময় এখন। শারদীয় দুর্গোৎসবের নানা আনুষ্ঠানিকতা চলছে। এই সময়টাতে ফুলের চাহিদা বেড়ে যায়। নানা জাতের ফুল দিয়ে দেবীর অর্চনা করেন ভক্তরা। তবে যে ফুলটি না হলেই নয়, যে ফুল সবাই খুঁজে বেড়ান সেটি পদ্ম। রাজধানীর শাহবাগের দোকানগুলোতে প্রায় সব মৌসুমি ফুল রাখা আছে। কাড়াকাড়ি অবস্থা পদ্ম নিয়ে। সৌন্দর্য বা ঘ্রাণ তো আছেই, তার চেয়ে বড় কথা এটি পুরাণের ফুল। পূজার অর্ঘ্য।   পৌরাণিক কাহিনীতে ঘুরে ফিরেই এসেছে পদ্মের কথা। সে অনুযায়ী, ফুলটিকে বিশুদ্ধতার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। হিন্দুধর্মের অন্যতম প্রধান দেবতা বিষ্ণুর প্রতিকৃতিতে প্রায় নিশ্চিতভাবে দেখা যায়, তিনি হাতে পদ্ম ফুল ধারণ করে আছেন। পদ্মের ওপর আসন পেতে বসা অবস্থায়ও কল্পনা করা হয় তাকে। এ ধরনের পটচিত্র অনেক আঁকা হয়েছে। সমুদ্রমন্থনের কাহিনীটিও বহুল চর্চিত। সেখানেও উল্লেখ আছে পদ্ম ফুলের। শ্রুতি অনুযায়ী, দেবী লক্ষ্মী বিষ্ণুকে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করার সময় তার গলায় পদ্ম ফুলের মালা ছুঁড়ে দিয়েছিলেন। হয়তো এসব কারণেই পদ্মকে পূজার ফুল হিসেবে বিশেষ বিবেচনা করা হয়। পুরাণে যেমন আছে তেমনি প্রিয় কবিতায় খুঁজে পাওয়া যায় পদ্মকে। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের বিখ্যাত সেই কবিতার কথা মনে করিয়ে না দিলেই নয়। শৈশবের স্মৃতি হাতড়ে কবি লিখেছেন, ‘মামা বাড়ীর মাঝি নাদের আলী বলেছিল- বড় হও দাদা ঠাকুর,/তোমাকে আমি তিনপ্রহরের বিল দেখাতে নিয়ে যাব।/যেখানে পদ্ম ফুলের মাথায় সাপ আর ভ্রমর খেলা করে।’ একই কবিতার আরেক অংশে ব্যর্থ প্রেমের আখ্যান। প্রতারক নারীর কথা উল্লেখ করে কবি লিখছেন: ‘বিশ্ব সংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে এনেছি একশ’ আটটা নীল পদ্ম।/তবু, তবু কথা রাখেনি বরুনা।’   বলার অপেক্ষা রাখে না, জাতীয় ফুল শাপলারই মতো দেখতে পদ্ম। সব দিক থেকে দুই ফুলের মধ্যে ভালো মিল। জলজ উদ্ভিদ যেহেতু, নদ নদী হাওড় বাঁওড়ে বিলে ঝিলে জলাশয়ে প্রচুর পরিমাণে হয়। বহু বর্ষজীবী উদ্ভিদ পদ্ম কন্দের মাধ্যমে বংশ বিস্তার ঘটায়। জলের নিচে নরম মাটির সঙ্গে আটকে থাকায় কন্দ দেখা যায় না। চিনতে হয় পাতা ও ফুল দেখে। সবুজ বড় গোলাকার পাতা পানির ওপরিভাগে ভাসমান অবস্থায় থাকে। আর ফুল তো এর প্রধান আকর্ষণ। পদ্ম ফুল অনেকগুলো নরম পাপড়ির মাধ্যমে নিজের সৌন্দর্য তুলে ধরে। ফুলের রং একাধিক হয়।

ভিন্নখবর বিভাগের সব খবর

গানের সুরে নাচের ছন্দে বর্ণিল  শরৎ উৎসব

গানের সুরে নাচের ছন্দে বর্ণিল শরৎ উৎসব

ষড়ঋতুর বাংলাদেশে চলছে এখন শরৎকাল। যদিও গত কয়েকদিন ধরে মেঘ-বৃষ্টির খেলায় শরতের প্রকৃত রূপটি যেন ঢাকা পড়েছে। তাই বলে স্নিগ্ধতার প্রতিচ্ছবিময় ঋতুটি বিদায় নেয়নি প্রকৃতি থেকে। বরং একটু খেয়াল করলেই দেখা যায়, বৃষ্টির ঘনঘটা কমলেই নীল আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে সাদা মেঘের ভেলা। কোনো এক নদীর কিনার কিংবা উন্মুক্ত প্রান্তরে উঁকি দিচ্ছে গুচ্ছ গুচ্ছ কাশফুল। হৃদয়ে ভালোলাগার অনুভব ছড়ানো প্রিয় এই ঋতুর বন্দনায় সরব হলো শুক্রবার ছুটির দিনের সকালটি। সেই সুবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলার মঞ্চে বরণ করে নেওয়া হয় মায়াবি এই ঋতুকে। গানের সুরে, নাচের ছন্দে কিংবা কবিতার শিল্পিত উচ্চারণে প্রকাশিত হলো শরতের প্রতি অপার অনুরাগ। বহুমাত্রিক সাংস্কৃতিক পরিবেশনার সঙ্গে বক্তার কথনে সজ্জিত সে শরৎ উৎসবে  হিংসার বিপরীতে ব্যক্ত হয়েছে সম্প্রীতির সমাজ গড়ার আকাক্সক্ষা। উচ্চারিত হয়েছে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী প্রেক্ষাপটে বৈষম্যহীন স্বদেশ গড়ার প্রত্যয়। সময়ের আকাক্সক্ষাকে ধারণ করে এ উৎসবের আয়োজন করে সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী।        

একদিকে পূজা-অর্চনা, অন্যদিকে নামাজ- সম্প্রীতির প্রতীক

একদিকে পূজা-অর্চনা, অন্যদিকে নামাজ- সম্প্রীতির প্রতীক

শতাব্দীর মহাদুর্যোগ করোনায় (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হয়নি ঝলমলে দীঘিরপাড়ে বসবাসরত কোনো গ্রামবাসী। এখানে নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-যুবা সকলেই বিশ্বাস করেন ঝলমলে দীঘির পানি পান করায় তাদের কেউ করোনায় আক্রান্ত হননি। স্থানীয় মানুষ মনে করেন, দীঘির ভেতরে ঝলমলেশ্বরী দেবী বাস করেন। লোকমুখে শোনা যায়, ভক্তি ও শ্রদ্ধায় মা ঝলমলেশ্বরী মন্দিরে কেউ কামনা করলে এখনো তার সেই বাসনা পূর্ণ হয়। এই দীঘিতে একসময় সোনার থালা-বাটি পাওয়া যেত। মোদ্দাকথা, একবিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞানের উৎকর্ষের এ সময়েও অগণিত মানুষের কাছে ‘ঝলমলে দীঘি’ যেন অপার রহস্যে ঘেরা। বিশ্বাসের প্রতীক।

 তারেজমিনপার

 তারেজমিনপার

২০০৭ সালের ২১ ডিসেম্বর মুক্তিপ্রাপ্ত একটি হিন্দি চলচ্চিত্র তারে জমিন পার। চলচ্চিত্রের শিরোনাম সরাসরি হিন্দি থেকে ‘তারার উপরত তারা’ থেকে অনুবাদ করে। আমির খানের প্রথম পরিচালিত সিনেমা এটি। ‘তারে জমিন পার’ পুরোপুরি শিশুদের ছবি। অন্তত প্রযোজক-পরিচালক শিশুদের কথা মাথায় রেখেই ছবিটি বানিয়েছেন। শিশুদের সেই রঙিন জগৎ- যেখানে মাছ, প্রাণী, ফুল, পাখি আর আনন্দ কোলাহলে ভরা। যেখানে সকল বস্তুই নেচে-গেয়ে আনন্দে মত্ত থাকে। শিশুদের স্বপ্নময় এই জগৎটিই স্বার্থকভাবে চিত্রায়িত করেছেন পরিচালক আমির খান। প্রযোজকের খাতায় নামটি আগেই লিখিয়েছিলেন তিনি। এবার সফল পরিচালকের খাতায় নাম লেখালেন তারে জমিন পার-এর মাধ্যমে। ছবির গল্পটা কিছুটা অন্যরকম। এমন একটি মানসিক সমস্যাকে পরিচালক তার মুভির মাধ্যমে তুলে এনেছেন যা সকল বাবা-মাকেই নতুন করে ভাবতে শেখাবে। মুভির কেন্দ্রীয় চরিত্র ইশান নন্দী কিশোর আওয়াস্তি আট-নয় বছর বয়সি দুরন্ত বালক। আকর্ষণীয় এই বালকটি ডিসলেক্সিয়া নামক মানসিক রোগে আক্রান্ত। বানান ভুল করা আর পড়াশোনায় গোলমাল এ রোগের অন্যতম প্রধান লক্ষণ। ইশান ক্লাসে কিছুই পারে না, পরীক্ষাতেও তার নম্বর সবার শেষে। অথচ তার বড় ভাই ইয়োহান সবদিক থেকেই শীর্ষে। পড়াশোনায় তো বটেই, খেলাধুলাতেও সে খুব ভালো। ইশানের দুরন্তপনা আর অ্যাকাডেমিক রিপোর্টে চরম ব্যর্থতাকে ডিসিপ্লিনের আওতায় আনতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বোর্ডিং স্কুলে। সেখানেও অবস্থা তথৈবচ। প্রিয় মা আর পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ইশান পাল্টে যায়। ক্লাসের সবচেয়ে চুপচাপ ছেলেটি হয়ে যায়। হঠাৎ করেই একরাশ শীতল হাওয়ার মতো স্কুলে আসলেন নতুন পার্টটাইম ড্রয়িং শিক্ষক নিকুম্ভ স্যার (আমির খান), যিনি নিজেও ইশানের মতো এক দুঃসহ শৈশব কাটিয়েছেন ডিসলেক্সিয়া রোগের রোগী হয়ে। মুহূর্তেই পাল্টে যায় সবকিছু। সম্পূর্ণ ভিন্ন পদ্ধতিতে পাঠদানের মাধ্যমে নিকুম্ভ স্যার সকলের প্রিয় হয়ে ওঠেন। কিন্তু ইশানই একমাত্র ব্যতিক্রম। তার এই চুপচাপ মনমরা ভাব নিকুম্ভ স্যারের মনোযোগ কেড়ে নেয়। আস্তে আস্তে সব কিছু জেনে নেন তিনি। যোগাযোগ করেন ইশানের বাবা-মার সঙ্গে।

দেবী দুর্গা বন্দনা

দেবী দুর্গা বন্দনা

শরতের শিশির সিক্ত ধরণীতল, মেঘ জড়িত আকাশ, শিউলী ঝরা মায়াময় অনাবিল প্রভাতের আলো। এমন শুভক্ষণে করুণাময়ী দেবী দুর্গা আসছেন আলোকবর্তিকা হাতে। সনাতন (হিন্দু) ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস মতে, জগৎজননী মহামায়ার পূজা মানে প্রকৃৃতির সেবা করা। বিশ্বাস মতে, বিশ্বব্রহ্মামান্ডের সকল শক্তির মিলিত রূপ দেবী দুর্গা। শক্তি, মুক্তি ও শান্তির অধিষ্ঠাত্রী দেবী দুর্গা সকল প্রকার অনাচার, অবিচার, বৈশ্বিক মহামারি, জরাজীর্ণতা দূর করার প্রয়াসে সর্বোপরি অসুর ও অশুভ শক্তির বিনাশকল্পে ধরাধামে নেমে আসেন। তাই তো মহাশক্তিরূপিনী চিন্ময়ীদেবীর আগমনে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এত আয়োজন। বেজে ওঠে ঢাকির ঢাক, ধর্ম উৎসব রূপ নেয় চিরায়ত লোক উৎসবে, ধূপের গন্ধ বয়ে আনে পূজার সমুদয় অনুসঙ্গ। সবমিলিয়ে শান্তিময় হয় বসুন্ধরা।

ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্য  শৈলীর অনুপম নিদর্শন

ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্য শৈলীর অনুপম নিদর্শন

ঊনবিংশ শতাব্দীর বাংলার সাহিত্য গগনে ও বিশ্বের জ্ঞান পরিমন্ডলে উজ্জ্বল তারকারূপে আজও চির দেদীপ্যমান, ভারস্যাটাইল জিনিয়াস্ (বহুমুখী প্রতিভাসম্পন্ন) খ্যাত কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শাহজাদপুরের কাছারিবাড়ি ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্য শৈলীর এক অনুপম নিদর্শন! রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজড়িত করতোয়া নদী, কবির সেই ছোট নদীর উত্তর পশ্চিম তীরে সিরাজগঞ্জ জেলার মফস্বল শহর ‘সাজাদপুরে’ (শাহজাদপুরে) কবিগুরুর কাছারিবাড়ির অবস্থান। ছোট নদীর পূর্বের নাম ছিল খোনকারের জোলা। করতোয়া নদী বিধৌত বোনাজন আর উর্বর মাটির মফস্বল শহর শাহজাদপুর। এখানকার মাটির ঘ্রাণ কবির সাহিত্য সৃজনের প্রেরণা জুগিয়েছে। রবীন্দ্রনাথ আমাদের, রবীন্দ্রনাথ সমগ্র বিশ্বের।

দেড়শ’ বছরের প্রাচীন  এখন বেহাল

দেড়শ’ বছরের প্রাচীন এখন বেহাল

সাগরপারের জনপদ পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় খাপড়াভাঙ্গা গ্রামে দেড়শ’ বছরের প্রাচীন বৌদ্ধ মন্দিরটি মঠসহ সংরক্ষণের প্রাথমিক উদ্যোগ নেওয়ার এক যুগ পরও কিছুই করা হয়নি। উল্টো ২০১২ সালে দেওয়া সাইনবোর্ডটিও উধাও হয়ে গেছে। রাখাইন পাড়ার জীর্ণদশার এই মন্দিরটির এখন চরম ভগ্নদশা। মঠের ওপরের অংশ অনেকটা ভেঙে গেছে। মন্দিরটির স্থাপনাশৈলীতে রয়েছে প্রাচীন আদল। রাখাইনরা এই বৌদ্ধ মঠসহ মন্দিরটি রক্ষণাবেক্ষণে সরকারের প্রতি দাবি করে আসছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে প্রতœতত্ত্ব অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় অফিসের একটি টিম ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে ওই এলাকা পরিদর্শন করে একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রস্তাবনা আকারে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে পাঠাচ্ছেন বলে তখন জানিয়েছিলেন।