ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

ফুলবাড়ীতে সোনালি আঁশে লাভের আশায় কৃষকরা

মাহফুজার রহমান মাহফুজ, ফুলবাড়ী, কুড়িগ্রাম

প্রকাশিত: ১২:৫৩, ১১ জুলাই ২০২৫

ফুলবাড়ীতে সোনালি আঁশে লাভের আশায় কৃষকরা

ছবি: জনকণ্ঠ

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে চলতি মৌসুমে পাট চাষের অনুকূল আবহাওয়া থাকায় ভালো ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন কৃষকরা। কৃষকদের নিবিড় পরিচর্যায় বেড়ে ওঠা পাট খেত এখন সবুজের সমারোহ। বাতাসে খেতে উঠছে সবুজের টেউ। খেতের এমন অবস্থায় সোনালি আঁশ খ্যাত পাট চাষ করে লাভের আশা করছেন কৃষকরা।

পাট চাষাবাদের বিষয়ে জানতে সরেজমিনে ঘুরে কথা হয় উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকের সাথে। বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনিরাম গ্রামের কৃষক আব্দুল মালেক জানান, এ এলাকায় পাট আর ভুট্টা ছাড়া অন্য ফসল খুব একটা হয় না। এবছর তিনি ৫ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছেন। এবারে বন্যার ধকল নেই। পাট চাষের অনুকূল আবহাওয়া ও সঠিক পরিচর্যায় খেত বর্তমানে সবুজে ছেয়ে গেছে। পাটখেতের যে অবস্থা তাতে এবারে পাটের ভালো ফলন পাওয়ার আশা করছেন তিনি।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের প্রাণকৃষ্ণ গ্রামের কৃষক আয়নাল হক ও আবু বকর মিয়া জানান, তারা উপজেলা পাট অধিদপ্তর থেকে বিনামূল্যে পাটবীজ ও সার পেয়েছেন। জমিতে বীজ বপনের পর কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে খেতের পরিচর্যা করেছেন। অন্যান্য বারের তুলনায় এবার খেতের অবস্থা মোটামুটি অনেক ভালো। এবার পাটের আবাদ করে লাভবান হওয়ার আশা করছেন তারা।

পাটচাষে আয়-ব্যয়ের বিষয়ে শাহবাজার এলাকার কৃষক হাফিজুর রহমান জানান, জমি চাষ করা, পাটবীজ কেনা, খেতে নিড়ানি দেওয়া, সার প্রয়োগ করতে এখন পর্যন্ত প্রতি বিঘাতে প্রায় দশ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। পাট কাটা, জাগ দেওয়া ও পাট ধুতে আরও চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা খরচ হবে। সব মিলিয়ে প্রতি বিঘাতে চৌদ্দ থেকে পনেরো হাজার টাকা খরচ পড়বে। বর্তমানে খেতের অবস্থার কথা উল্লেখ করে তিনি আরও জানান, প্রতি বিঘা জমিতে নয় থেকে দশ মণ পাট ফলন পাওয়া যাবে। এবারে যদি বাজারে পাটের ভালো দাম পাওয়া যায়, তাহলে পাট আবাদে মোটামুটি লাভের আশা করছেন তিনি। পাশাপাশি পাটকাঠি (পাটশোলা) বিক্রি করে বাড়তি লাভ হবে।

উপজেলা পাট অধিদপ্তর জানিয়েছে, উন্নত প্রযুক্তিনির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৩ হাজার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বিজেআরআই (রবি-১) জাতের পাটবীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। পাট চাষাবাদের জন্য মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি অফিসার নিলুফা ইয়াসমিন জানান, উপজেলায় এবছর ৪৮০ হেক্টর জমিতে পাট চাষাবাদ হয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ২০০ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে পাটবীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি পাট চাষাবাদে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

মুমু ২

×