ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১

জাতীয়

বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার শঙ্কা

বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ, ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার শঙ্কা

পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন উত্তর আন্দামান সাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। সোমবার আবহাওয়া অফিসের এক সতর্ক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে এর নাম হবে ‘ডানা’। এ নামটি কাতারের দেওয়া। সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছে, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। যেন স্বল্প সময়ের নোটিসে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে। আবহাওয়া ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল জানিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সোমবারের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে পাওয়া সর্বশেষ পূর্বাভাস ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ সৃষ্টির আশঙ্কা ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ। ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ আগামী ২৩ অক্টোবর দিনগত রাত ১২টার পর থেকে ২৪ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে সরাসরি তীব্র ঘূর্ণিঝড় হিসেবে স্থলভাগে আঘাত করার প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে।

জাতীয় বিভাগের সব খবর

প্রশাসন এগোচ্ছে কিছুটা ধীরে

প্রশাসন এগোচ্ছে কিছুটা ধীরে

নানা প্রতিকূলতা মাড়িয়ে এগোতে হচ্ছে প্রশাসনকে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর চরম বিশৃঙ্খলার কারণে প্রশাসনে নামে স্থবিরতা। পরিস্থিতি মোকাবিলা করে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে প্রশাসনকে গতিশীল করার চ্যালেঞ্জে পড়ে অন্তর্র্বর্তী সরকার। এরই মধ্যে কেটে গেছে দুই মাসের বেশি সময়। কিছু নতুন সিদ্ধান্ত নিলেও প্রশাসন এগুচ্ছে কিছুটা ধীরে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এ সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত সরকারের সময়ে বঞ্চিত দাবি করে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একযোগে আন্দোলন শুরু করেন। তড়িঘড়ি করে বঞ্চিতদের ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে গিয়ে আসছে ভুল সিদ্ধান্ত। সৃষ্টি হচ্ছে বিতর্কের। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীলরা বলছেন, গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে নিয়োগ পাওয়া বিগত সরকারের প্রত্যক্ষ সহযোগী কর্মকর্তাদের সরাতে হচ্ছে এ সরকারকে। যেখানে নিয়োগ দিচ্ছে যোগ্য কর্মকর্তাদের। এক্ষেত্রে নানান তথ্যগত ত্রুটি ও কারও কারও অসাধু তৎপরতায় সমস্যা  তৈরি হচ্ছে। সেগুলো পরে সংশোধন করেও নিতে হচ্ছে। এছাড়া নীতিনির্ধারণী পদগুলোতে সবাই প্রায় নতুন। তাদের বুঝে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগছে। কেউ কেউ তাদের ভুল বুঝিয়ে সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছেন। জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ও সাবেক আমলারা মনে করেন, নানান চ্যালেঞ্জ থাকায় দুই মাসে প্রশাসন কাক্সিক্ষত জায়গায় যেতে পারেনি। এখনো শৃঙ্খলা পুরোপুরি ফেরানো যায়নি। গতিও ধীর। তবে পরিস্থিতি হতাশাজনক, এটাও বলতে নারাজ তারা। কারণ প্রশাসনকে একটা ভালো জায়গায় নিতে এ সরকারের প্রচেষ্টা রয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নিজের কাছে রেখেছেন প্রধান উপদেষ্টা। এছাড়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় প্রধান উপদেষ্টার অধীনে। সাতজন ছাড়া বাকি উপদেষ্টারা একাধিক মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সামলাচ্ছেন। দুই মাসের মূল্যায়ন জানতে চাইলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, এ মুহূর্তে বলার অবস্থা নেই। সময় আসুক জানাব। সরকারের দুই মাস নিয়ে জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ও সাবেক আমলারা বলছেন, যে পরিস্থিতিতে এ সরকার দায়িত্ব নিয়েছে, সেই অবস্থা থেকে প্রশাসনকে একটা স্থিতিশীল জায়গায় নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে দুই মাস খুবই অল্প সময়। দাবি-দাওয়া, আন্দোলন তাদের অনেকটাই নাজেহাল করেছে। প্রশাসনের পরিস্থিতি এখনো সন্তোষজনক নয়, গতিও ধীর। সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান বলেন, দুই মাসে সরকারের নেতৃত্বের জায়গা থেকে যতটা গতি আশা করেছিলাম ততটা আসেনি, গতি কিছুটা শ্লথ। জনগণ মনে করছে, তারা সরকারের কাছে আশানুরূপ গতিটা পাচ্ছে না। জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ ফিরোজ মিয়া বলেন, সরকারের পতনের পর এত দাবি-দাওয়া, অতীতে কখনো একসঙ্গে আসেনি। যৌক্তিক দাবিও আছে। তবে অযৌক্তিক দাবিই বেশি। এটা তাদের নাজেহাল করেছে। এর মধ্যেও অন্তর্র্বর্তী সরকার যেটুকু করেছে, সেটা মোটামুটি সন্তোষজনক। পুরোপুরি সন্তোষজনক নয়, আবার হতাশাজনকও নয়। তিনি বলেন, দুই মাস কিন্তু খুব অল্প সময়। দায়িত্ব নেওয়ার পর এ সরকার অস্বাভাবিক অবস্থার মুখোমুখি হয়েছে। এছাড়া প্রশাসনের সবকিছু বুঝতেও তো একটু সময় লাগে। সরকারের পতনের পর এত দাবি-দাওয়া, অতীতে কখনো একসঙ্গে আসেনি। যৌক্তিক দাবিও আছে। তবে অযৌক্তিক দাবিই বেশি। এটা তাদের নাজেহাল করেছে। এর মধ্যেও অন্তর্র্বর্তী সরকার যেটুকু করেছে, সেটা মোটামুটি সন্তোষজনক। পুরোপুরি সন্তোষজনক নয়, আবার হতাশাজনকও নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোবাশ্বের মোনেম বলেন, প্রশাসনের এখন যে অবস্থা, সেটা থেকে বলা যায় আমাদের প্রত্যাশা থেকে বেশ দূরেই আছে। মোটামুটি সন্তোষজনক বলা যায়, একদম ভালো, সেটা বলা যাবে না। বিভিন্ন পক্ষের নানা দাবি-দাওয়া আদায়ের যে আন্দোলন, সেটা এখনো আছে। তিনি বলেন, স্তরে স্তরে গত সরকারের লোকজন নিয়োগ পেয়েছিল। ব্লাডগ্রুপ দেখে দেখে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে সমস্যা হচ্ছে কী, আপনি যখন এ জঞ্জাল সরানোর চেষ্টা করবেন, পরের স্তরের লোকজনও কিন্তু বিগত সরকারের আমলের রিক্রুটেড। তাই তাদের চ্যালেঞ্জের লেভেলটা অনেক উঁচু। সবাইকে তো বাদ দেওয়া যাবে না। কাউকে না কাউকে নিয়ে তো সরকারকে চলতে হবে। সঠিক জায়গায় সঠিক মানুষটি বসানো, এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। অবজেক্টটিভলি অ্যাসেসমেন্ট করব? অনেক সময় ভুল তথ্যের কারণে ভুল লোক নির্বাচন করা হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে অন্তর্র্বর্তী সরকারকে কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আমি এ সরকারকে দশে ৭ বা সাড়ে ৭ দেব। তাদের চেষ্টা আছে। চেষ্টা থাকলে বুঝবেন যে প্রশাসনটা আরও কীভাবে গুছিয়ে আনতে হবে। দায়িত্ব নেওয়ার পর গত দুই মাসে ‘বঞ্চিত’ হিসেবে বিভিন্ন পর্যায়ে বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আওয়ামী লীগ সরকারের আস্থাভাজন কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাদের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হচ্ছে, পাঠানো হচ্ছে বাধ্যতামূলক অবসরে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই মাসে জনপ্রশাসনে অতিরিক্ত সচিব, যুগ্মসচিব ও উপসচিব পদে পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে শতাধিক কর্মকর্তার। ওএসডিও করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তাকে। আন্দোলনের মুখে তড়িঘড়ি করে পদোন্নতি ও পদায়ন করতে নানা ধরনের ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়েছে। অনিয়মে অভিযুক্ত কর্মকর্তারা পদোন্নতি পেয়েছেন। বিতর্কিত কর্মকর্তাদের সচিব কিংবা জেলা প্রশাসকের (ডিসি) মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে, যা সমালোচনার সৃষ্টি করে। এজন্য ভুলগুলো শুধরে বারবার সিদ্ধান্ত বদলাতে দেখা যাচ্ছে। অনভিজ্ঞতা এ সরকারের বড় দুর্বলতা বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সচিবসহ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে পদায়নের বিষয়টি এখনো চলমান। সম্প্রতি অবসরে যাওয়া খাদ্য ক্যাডারের এক কর্মকর্তাকে খাদ্য সচিব নিয়োগ দেওয়ার একদিন পর তা বাতিল করা হয়। একজন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়ে নৌ সচিব নিয়োগ দেওয়ার দু’দিন পর তাকে ওএসডি করা হয়। যাচাই-বাছাই করে নিয়োগ না দেওয়ার কারণে এভাবে সিদ্ধান্ত বদলাতে হচ্ছে বারবার। সুযোগ বুঝে অনেকেই অযৌক্তিক দাবি-দাওয়া তুলেছেন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। সেগুলো মোকাবিলা করতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে জনপ্রশাসনকে। ডিসি নিয়োগ নিয়ে সচিবালয়ে নজিরবিহীন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন কর্মকর্তারা। তারা হাতাহাতিতেও জড়ান। তদন্ত করে এর সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। গত ৩০ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেস উর রহমান জানান, জেলা প্রশাসক (ডিসি) নিয়োগ নিয়ে হট্টগোল ও বিশৃঙ্খলা করায় ১৭ উপসচিবকে শাস্তির সুপারিশ করেছে এ বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি। এছাড়া ডিসি নিয়োগ কেন্দ্র করে বিপুল অর্থের লেনদেন হয়েছে অভিযোগ করে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। যদিও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তা ‘মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগ আমলে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের বঞ্চনা নিরসনে সাবেক অর্থসচিব ও বিশ্বব্যাংকে বাংলাদেশের বিকল্প নির্বাহী জাকির আহমেদ খানকে আহ্বায়ক করে গত ১৬ সেপ্টেম্বর পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে সরকার। এ কমিটির কাছে আবেদন করেছেন বঞ্চিত কর্মকর্তারা। এই অল্প সময়ের মধ্যে প্রশাসনকেন্দ্রিক নতুন কিছু উদ্যোগও নিয়েছে অন্তর্র্বর্তী সরকার। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে জানিয়েছে, দেশের সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দিতে হবে সম্পদের হিসাব। প্রতিবছর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে হবে। তবে এ বছর ৩০ নভেম্বরের মধ্যে তা দাখিল করার জন্য সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে উপদেষ্টাদেরও সম্পদের হিসাব দিতে হবে। এজন্য একটি নীতিমালাও করা হয়েছে। এছাড়া প্রশাসন সংস্কারে সাবেক সচিব ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আব্দুল মূয়ীদ চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করা হয়েছে। এ কমিশনও শীঘ্রই কাজ শুরু করবে। একই সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বৃদ্ধির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যালোচনা করে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য মূয়ীদ চৌধুরীকে প্রধান করে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। চাকরিতে প্রবেশের বয়স যে বাড়ছে এটি মোটামুটি নিশ্চিত।

পাঁচ কারণে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে

পাঁচ কারণে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে

পাঁচ কারণে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় বেড়েছে। এরমধ্যে অন্যতম হলো- ডলারের বিপরীতে টাকার দাম কমে যাওয়া, ভূমি অধিগ্রহণে অতিরিক্ত খরচ ও নকশায় পরিবর্তন। ফলে বাস্তবায়ন শুরুর আগেই প্রকল্পটির খরচ ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। আর চার কারণে এই প্রকল্পের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে সরকার জাপানকে নিয়েছে। কম সুদে ঋণ দেওয়া, ঋণ পরিশোধের সময় বৃদ্ধি, সময়মতো প্রকল্প শেষ করা এবং জাপানি প্রকল্পে দুর্নীতি না হওয়া। একনেক সংশোধনের পর প্রকল্পের মোট খরচ এখন দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৩৮১ কোটি টাকা। এটি প্রাথমিক খরচ ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা থেকে ছয় হাজার ৬০৪ কোটি টাকা বেশি। ‘মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন’ নামে প্রকল্পটি ২০২০ সালের মার্চে নেওয়া হয়। ২০২৬ সালের মধ্যে এটি শেষ হওয়ার কথা ছিল।

রাজধানীর সড়কই নিরাপদ নয়

রাজধানীর সড়কই নিরাপদ নয়

আজ মঙ্গলবার নিরাপদ সড়ক দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হলো-‘ছাত্র জনতার অঙ্গীকার, নিরাপদ সড়ক হোক সবার।’ সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নিরাপদ করার জন্য প্রতি বছর ২২ অক্টোবর জাতীয়ভাবে পালন করা হয় এই দিবসটি। ২০১৭ সালে মন্ত্রিসভার বৈঠকে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও অনুমোদন করা হয়। গত সাত বছর যাবত জাতীয়ভাবে এই দিবসটি পালন করা হয়। এর আগে বেসরকারি সংগঠন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের নেতৃত্বে গঠিত ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ (নিসচা) ১৯৯৩ সালে থেকে এই দিবসটি পালন করে আসছে। দিবসটি এলে সরকারিভাবে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ। এ বছর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয়ভাবে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। পাশাপাশি বেসরকারিভাবে বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচির মাধ্যমে পালন করবে নিরাপদ সড়ক দিবস। কিন্তু সারাদেশে অনিরাপদ সড়কের কারণে ঘটছে দুর্ঘটনা। গত সাড়ে ৫ বছরে ২০১৯ সাল হতে ২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত ৩২ হাজার ৭৩৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৫ হাজার ৩৮৪ জন নিহত হয়েছেন এবং ৫৩ হাজার ১৯৬ জন আহত হয়েছেন।  নিহতের মধ্যে নারী ৫১০৩ জন ও শিশু ৪৭৮৫ জন। এছাড়া ১১ হাজার ৬৬৯টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১১,৫৯৩ জন। দুর্ঘটনায় ৮৩৫৮ জন পথচারী নিহত হয়েছেন। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫২৬১ জন বলে জানিয়েছে বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন। রাজধানীর সড়কই নিরাপদ নয়॥ খোদ রাজধানীর সড়কই নিরাপদ নয়। গত সাড়ে ৫ বছরে রাজধানীতে ১ হাজার ২২৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১ হাজার ৬১ জন নিহত এবং ১ হাজার ৪৬৩ জন আহত হয়েছেন। বেশিরভাগ নিহত হয়েছেন পথচারী। ৪৫১ জন পথচারী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ঢাকায়। পাশাপাশি মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন চারশ’ জনের অধিক। এছাড়া ১৯৭ জন বাস, ট্রাক, সিএনজি, রিক্সাসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালক ও আরোহী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি সংগঠন। রাজধানীর সড়ক নিরাপদ না হওয়ার অন্যতম কারণ যানজট। পাশাপাশি মোটরসাইকেলসহ ছোট যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে রাজধানীর ঢাকা। তাই ঢাকা মহানগরী সড়ক নিরাপদ করার জন্য মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারসহ ছোট যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা এবং যানজট নিরসনে বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজি পদ্ধতি চালুর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। এ বিষয়ে গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক ড. সামছুল  হক জনকণ্ঠকে বলেন, ‘গণপরিবহন শৃঙ্খলা ও ঢাকার যানজটমুক্ত করতে হলে এখনই উপযুক্ত সময়। এজন্য ঢাকা থেকে মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত গাড়িসহ ছোট গাড়ির সংখ্যা কমাতে হবে। আধুনিক বাসের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে সবাই এক সঙ্গে যাতায়াত করতে পারবে। এর ফলে জ¦ালানি খরচ ও সরকারি ব্যয়ও অনেক কমে আসবে। এজন্য বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজি পদ্ধতি চালু ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নাই।’ বিগত সরকার আমলে তিনটি সেক্টরের বাধার কারণে এটা সম্ভব হয়নি উল্লেখ করে ড. সামছুল হক বলেন, ‘পুলিশ, সরকারি আমলা ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের বাধার কারণে বাস রুট ফ্র্যাঞ্চাইজি পদ্ধতি বাস্তবায়িত হচ্ছে না। কারণ ফুটপাত হকারমুক্ত হলে পুলিশের ইনকাম কমে যাবে, প্রাইভেটকার বা ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা কমার পক্ষে থাকে না সচিবরা, গণপরিবহনে শৃঙ্খলা বা রুট ফ্র্যাঞ্চাইজি পদ্ধতি হলে বাস মালিকদের সংখ্যা কমে যাবে। ইচ্ছে করলেই কেউ রাস্তায় গাড়ি নামাতে পারবে না। তাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে এখন যে সরকার ক্ষমতায় এসেছে তারাই পারবে গণপরিবহনে একটি মেরুদ- দিয়ে যেতে।’ তা না হলে কেউ ঢাকার গণপরিবহন ব্যবস্থা পরিবহন করতে পারবে না বলে জানান তিনি। ঢাকার যানজটের ১০ কারণ ॥ রাজধানীর ঢাকায় যানজটের ১০ কারণ। এর মধ্যে প্রধান কারণ হলো ট্রাফিক অব্যবস্থাপনা। যানজটের কারণগুলো হলো- ১. উল্টো পথে গাড়ি ও এক লেনে ধীরগতির রিক্সা চলাচল; ২. রাধানীর বিভিন্ন স্থানে ভাঙা-চোরা ও খানা-খন্দ সড়ক দ্রুত মেরামত না করা; ৩. ঢাকা প্রবেশ পথে এলোমেলো গাড়ি চলাচল; ৪. ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে দোকানপাট; ৫. সড়ক দখল করে অবৈধ গাড়ি পার্কিং; ৬. মূল সড়কে যত্রতত্র যাত্রী ওঠা-নামা; ৭. রাজধানীর সড়কে বৈধ-অবৈধ রেলক্রসিং; ৮. সড়ক দখল করে মিছিল, মিটিং ও সমাবেশ; ৯. ভিআইপি চলাচলের সময় যানবাহন বন্ধ রাখা; ১০. ট্রাফিক অব্যবস্থাপনা। চারপাশে নদী দ্বারা বেষ্টিত ঢাকা শহরকে প্রথম রাজধানী করা হয় ১৬১০ সালে। চারশত বছরের আগের শহর ঢাকা দিনদিন তার ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও ট্রাফিক অবস্থাপনার কারণে যোগ্যতা হারাচ্ছে মেগা সিটি এই ঢাকা। এই দশটি কারণের মূল কারণ ট্রাফিক অব্যবস্থাপনা। ঢাকায় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ঠিক না থাকায় বাকি নয়টি সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তাই এই দশটি কারণ সমাধান না করে যত মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হোক না কেন, ঢাকা যানজট নিরসন করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, ‘রাজধানীতে যানবাহনের তুলনায় অপ্রতুল সড়ক, একই সড়কে যান্ত্রিক-অযান্ত্রিক, স্বল্প ও দ্রুতগতির যানবাহনের চলাচল, ফুটপাত হকারের দখলে থাকা, ফুটওভার ব্রিজ যথাস্থানে নির্মাণ না হওয়া ও ব্যবহার উপযোগী না থাকা এবং সড়ক ব্যবহারকারীদের মধ্যে অসচেতনতার কারণে অতিমাত্রায় দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটছে। তাই অনিরাপদ হয়ে পড়ছে ঢাকা মহানগরীর সড়ক। রাজধানীতে দুর্ঘটনাসমূহ রাতে এবং সকালে বেশি ঘটেছে। বাইপাস রোড না থাকার কারণে রাত ১০টা থেকে ভোর পর্যন্ত রাজধানীতে মালবাহী ভারি যানবাহন বেপরোয়া গতিতে চলাচল করে। ফলে রাস্তা পারাপারে পথচারীরা বেশি নিহত হচ্ছেন। এছাড়া দীর্ঘ সময় যানজটের কারণে যানবাহন চালকদের আচরণে অসহিষ্ণুতা ও ধৈযহানি ঘটছে, যা সড়ক দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে কাজ করছে।’ তাই ঢাকায় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ঠিক না থাকায় এই সমস্যা তৈরি হচ্ছে বলে জানান তিনি।    বাড়ছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ॥ গত সাড়ে ৫ বছরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে ১১,৬৬৯টি, নিহত হয়েছেন ১১,৫৯৩ জন এবং আহত ১০১১৪ জন। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগের বয়স ১৪ থেকে ৪৫ বছর। দেশে মোট মোটরযানের ৭১ শতাংশ মোটরসাইকেল। মোটরসাইকেল চালকদের বিরাট অংশ কিশোর ও যুবক। এদের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা এবং না মানার প্রবণতা প্রবল। কিশোর-যুবকরা বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালিয়ে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হচ্ছে। সড়কে মোটরসাইকেল সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনার শিকার হয় ভারি যানবাহনের ধাক্কায় ও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে। গত সাড়ে ৫ বছরে অন্য যানবাহনের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটেছে ২২ দশমিক ০৭ শতাংশ, মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে ৩৫ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং ভারি যানবাহনের ধাক্কায় ৪০ দশমিক ৩৯ শতাংশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। এ বিষয়ে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান জানান, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার একটি ব্যাপক অংশ ঘটছে ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, পিকআপ ও বাসের ধাক্কা, চাপা এবং মুখোমুখি সংঘর্ষে। এসব দ্রুত গতির যানবাহন চালকদের অধিকাংশই অসুস্থ ও অদক্ষ। এদের বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানোর কারণে যারা সতর্কভাবে মোটরসাইকেল চালান তারাও দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। মোটরসাইকেল ৪ চাকার যানবাহনের তুলনায় ৩০ গুণ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু দেশে গণপরিবহন ব্যবস্থা উন্নত ও সহজলভ্য না হওয়া এবং যানজটের কারণে মানুষ মোটরসাইকেল ব্যবহারে উৎসাহিত হচ্ছে এবং দুর্ঘটনা বাড়ছে। সড়কে বাড়ছে পথচারী নিহতের সংখ্যা ॥ সাড়ে ৫ বছরে ৮৬৩১টি দুর্ঘটনায় ৮৩৫৮ জন পথচারী নিহত হয়েছে, যা মোট নিহতের ২৩ দশমিক ৬২ শতাংশ। এর মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটেছে যানবাহনের বেপরোয়া গতির কারণে এবং ৪৩ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে পথচারীদের অসতর্কতার কারণে। পথচারী নিহত হয়েছে মহাসড়কে ২২১৩ জন, আঞ্চলিক সড়কে ২৯৩৭ জন, গ্রামীণ সড়কে ১৬৭৪ জন, শহরের সড়কে ১৪৮৫ জন এবং অন্যান্য স্থানে ৪৯ জন। যানবাহনের অতিরিক্ত গতি, সড়কের সাইন-মার্কিং-জেব্রা ক্রসিং সম্পর্কে চালক এবং পথচারীদের অজ্ঞতা ও না মানার প্রবণতা, যথাস্থানে সঠিকভাবে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ না করা এবং ব্যবহার উপযোগী না থাকা, রাস্তায় হাঁটা ও পারাপারের সময় মোবাইল ফোনে কথা বলা, হেডফোনে গান শোনা, চ্যাটিং করা এবং সড়ক ঘেঁষে বসতবাড়ি নির্মাণ ও সড়কের উপরে হাট-বাজার গড়ে ওঠা ইত্যাদি কারণে পথচারী নিহতের ঘটনা বাড়ছে বলে জানিয়েছে সরকারি সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।

রাষ্ট্রপতির বক্তব্য স্ববিরোধী

রাষ্ট্রপতির বক্তব্য স্ববিরোধী

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আড়াই মাস পর আবারও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে রাষ্ট্রপতির একটি মন্তব্যকে ঘিরে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার কোনো দালিলিক প্রমাণ তাঁর কাছে নেই। জবাবে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল রাষ্ট্রপতি মিথ্যাচার করেছেন মন্তব্য করে বলেন, রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্য শপথ ভঙ্গ করার শামিল। এই পদে থাকার যোগ্যতা উনার (রাষ্ট্রপতি) আর আছে কি না, প্রশ্ন আসে। শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা না থাকলে বা গুরুতর অসদাচরণ করলে রাষ্ট্রপতি হিসেবে থাকতে পারেন কি না, সেটা নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আমাদের দেশের সংবিধানে আছে। শুধু অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টাই নয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে অসত্য কথা বলায় রাষ্ট্রপতির নিজ থেকে পদত্যাগ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। অন্যদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন যে, তার কাছে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের কোনো ডকুমেন্ট নেই, তাহলে তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, তা ছাত্রসমাজ ঠিক করবে। সম্প্রতি একটি বাংলা দৈনিকে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হওয়ার পরই এ নিয়ে সব মহলে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। বঙ্গভবনে ওই পত্রিকাটির সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎকার গ্রহণকালে তাঁর কাছে প্রশ্ন রাখেন, ‘আপনার (রাষ্ট্রপতি) কাছে কি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্রটা আছে? জবাবে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি শুনেছি তিনি পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু আমার কাছে কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই। বহু চেষ্টা করেও আমি ব্যর্থ হয়েছি। তিনি হয়তো সময় পাননি।’ রাষ্ট্রপতির এমন বক্তব্যে জেরে সোমবার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। বিষয়টি নিয়ে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন মিথ্যাচার করেছেন। রাষ্ট্রপতির এই বক্তব্য শপথ ভঙ্গ করার শামিল। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি বলেছেন, উনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র পাননি, এটা হচ্ছে মিথ্যাচার এবং উনার শপথ লঙ্ঘনের শামিল। কারণ উনি নিজেই ৫ আগস্ট রাত ১১টা ২০ মিনিটে তিন বাহিনীর প্রধানকে নিয়ে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছেন যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী উনার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন এবং উনি তা গ্রহণ করেছেন। আইন উপদেষ্টা বলেন, এরপর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ থেকে জানতে চাওয়া হয়, এই পরিস্থিতিতে করণীয় কী। সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, উপদেশমূলক এখতিয়ার প্রয়োগ করে জানতে চাওয়া হয়। সেটার পরিপ্রেক্ষিতে তৎকালীন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও সব বিচারপতি মিলে ১০৬ অনুচ্ছেদের অধীনে মতামত দেন, রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সের ভিত্তিতে। এর প্রথম লাইন ছিল, দেশের বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে যেহেতু প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন, তারপর অন্য কথা। উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন, রাষ্ট্রপতি জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়েছেন, এর পরিপ্রেক্ষিতে যে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা যায়, সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের এই মতামতের ভিত্তিতে একটি নোট আমরা মন্ত্রণালয় থেকে রাষ্ট্রপতির দপ্তরে পাঠিয়েছি। নোটে রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর দেখিয়ে তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি এই মতামতটা দেখেছেন এবং গ্রহণ করেছেন। এরপর উনি নিজে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেছেন। ৫ আগস্ট রাত ১১টা ২০ মিনিটে নিজের মুখে ভাষণে বলেছেন, উনাকে প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ দিয়েছেন এবং উনি গ্রহণ করেছেন। পরবর্তীতে একের পর এক কার্যাবলীর মধ্য দিয়ে এটা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, উনি পুরো জাতির কাছে বিভিন্নভাবে নিশ্চিত করেছেন, আবারও নিশ্চিত করেছেন যে, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগপত্র দিয়েছেন এবং তিনি গ্রহণ করেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আজকে যদি উনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগপত্র দেননি। এত দিন পরে, প্রায় আড়াই মাস পরে, তা হলে এটা এক ধরনের স্ববিরোধিতা হয়। উনার শপথ লঙ্ঘন হয় এবং এই পদে থাকার যোগ্যতা উনার আর আছে কি না প্রশ্ন আসে। কারণ আমরা জানি, শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা না থাকলে বা গুরুতর অসদাচরণ করলে রাষ্ট্রপতি হিসেবে থাকতে পারে কি না- সেটা নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আমাদের দেশের সংবিধানে আছে।’ আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘এখন উনার (রাষ্ট্রপতি) স্ববিরোধী কথা বলার কোনো সুযোগ নেই। যদি উনি এই বক্তব্যে অটল থাকেন, তা হলে উনার রাষ্ট্রপতি পদে থাকার যোগ্যতা আছে কি না সেটা আমাদের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় ভেবে দেখা হবে।’ এ বিষয়ে সোমবার সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার জোতির্ময় বড়ুয়া সাংবাদিকদের কাছে তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, রাষ্ট্রপতি যখন সংসদ ভেঙে দিয়েছেন, তখনই প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ নিশ্চিত হয়ে গেছে। পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া না-দেওয়ার কিছু নেই। সাংবিধানিক শূন্যতার আলাপটি অপ্রাসঙ্গিক, এর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে। বিশেষ সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি কী বলেছেন ॥ শেখ হাসিনার পদত্যাগের দালিলিক প্রমাণ বা নথিপত্র নেই- রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এমন মন্তব্যের পর বিষয়টি নতুন করে সামনে আসে। সম্প্রতি মানবজমিন পত্রিকার প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি এই মন্তব্য করেন। গত শনিবার পত্রিকার রাজনৈতিক ম্যাগাজিন সংস্করণ ‘জনতার চোখ’-এ সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে। ‘উনি তো কিছুই বলে গেলেন না...’ শিরোনামে প্রকাশিত লেখায় মতিউর রহমান চৌধুরী উল্লেখ করেছেন, ‘ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন কি করেননি এ নিয়ে বিতর্ক এখনো জারি রয়েছে। হয়তো অনেক দিন থাকবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় একাধিকবার দাবি করেছেন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি। সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান মিডিয়ার সামনে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের খবর জানিয়েছিলেন। প্রশ্ন উঠেছে, প্রধানমন্ত্রী যদি পদত্যাগ করে থাকেন তা হলে সেটা গেল কোথায়? কারও কাছে এই প্রশ্নের জবাব নেই।’ তিন সপ্তাহ ধরে এই বিষয়ে অনুসন্ধান চালিয়েছেন বলে উল্লেখ করেন মতিউর রহমান চৌধুরী। প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রীদের পদত্যাগপত্র থাকার কথা যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে সেখানেও তিনি খোঁজ নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত বঙ্গভবনে প্রেসিডেন্ট সাহাবুদ্দিনের মুখোমুখি হন মতিউর রহমান চৌধুরী। আপনার কাছে কি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্রটা আছে? মতিউর রহমানের এমন প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমি শুনেছি তিনি পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু আমার কাছে কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই। বহু চেষ্টা করেও আমি ব্যর্থ হয়েছি। তিনি হয়তো সময় পাননি।’ ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলন ও গণবিক্ষোভের মুখে দেশত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। সংবিধানের ৫৭ (ক) ধারা অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিতে হবে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার কোনো পদত্যাগপত্র তাঁর কাছে নেই। কথোপকথনের সময় রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘৫ আগস্ট সকাল সাড়ে দশটায় বঙ্গভবনে ফোন এলো প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন থেকে। বলা হলো, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গভবনে আসবেন মহামান্য প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য। এটা শুনেই প্রস্তুতি শুরু হলো বঙ্গভবনে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ফোন এলো তিনি (শেখ হাসিনা) আসছেন না।’ রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘চারদিকে অস্থিরতার খবর। কী হতে যাচ্ছে জানি না। আমি তো গুজবের ওপর নির্ভর করে বসে থাকতে পারি না। তাই সামরিক সচিব জেনারেল আদিলকে বললাম খোঁজ নিতে। তার কাছেও কোনো খবর নেই। আমরা অপেক্ষা করছি। টেলিভিশনের স্ক্রলও দেখছি। কোথাও কোনো খবর নেই। এক পর্যায়ে শুনলাম, তিনি দেশ ছেড়ে চলে গেছেন। আমাকে কিছুই বলে গেলেন না।’ মতিউর রহমান চৌধুরীর সঙ্গে আলাপচারিতার এক পর্যায়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এ বিষয়ে আর বিতর্কের সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী চলে গেছেন এবং এটাই সত্য। তবুও এই প্রশ্নটি যাতে আর কখনো না ওঠে তা নিশ্চিত করতে আমি সুপ্রিম কোর্টের মতামত চেয়েছি।’ রাষ্ট্রপতির পাঠানো রেফারেন্সের পরিপ্রেক্ষিতে ৮ আগস্ট প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ সম্পর্কে তাঁদের মতামত দেন। এতে বলা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাংবিধানিক শূন্যতা দূর করতে এবং নির্বাহী কার্যক্রম সুন্দরভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টাম-লীকে রাষ্ট্রপতি শপথবাক্য পাঠ করাতে পারবেন বলে আপিল বিভাগ মতামত দেন। রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ করা উচিত-জয়নুল আবেদীন ॥ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে অসত্য কথা বলায় রাষ্ট্রপতির নিজ থেকে পদত্যাগ করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ ইস্যুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। জয়নুল আবেদীন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে যিনি পদত্যাগপত্র নিয়ে এসেছেন সেই সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান এখনো বলেননি তাঁর কাছে কোনো পদত্যাগপত্র দিয়ে যান নাই। শেখ হাসিনা যে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন এতে এ দেশের জনগণের বিন্দু পরিমাণও সন্দেহ নেই। তিনি বলেন, শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে রাষ্ট্রপতি ৫ আগস্ট যে বক্তৃতা করেছেন, তাতে তিনি যা বলেছেন, এখন যদি অন্য কথা বলেন তা হলে তাঁর পদত্যাগ করা উচিত। পদত্যাগ নিয়ে সারজিস ও হাসনাতের প্রতিক্রিয়া ॥ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন যদি বলেন যে তাঁর কাছে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্রের কোনো ডকুমেন্ট নেই, তা হলে তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত, তা ছাত্রসমাজ ঠিক করবে। সোমবার রাষ্ট্র সংস্কার নিয়ে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের একটি গোলটেবিল আলোচনায় এ মন্তব্য করেন সারজিস আলম। তিনি রাষ্ট্রপতির এই মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘জাতীয় পার্টি একটি বিবেকহীন দল, যারা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে সমর্থন দিয়েছে। তাদের নিয়ে রাজনৈতিক আলোচনা করা যুক্তিহীন। ফ্যাসিস্ট সিস্টেম এখনো বিদ্যমান। বিভিন্ন এজেন্সি ও কুচক্রী মহল দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চেষ্টা করছে। তাদের প্রতিহত করতে হবে এবং প্রয়োজনে আমরা আবার রাজপথে নামব।’ এদিকে একই বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। রাষ্ট্রপতির মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘হাসিনাকে উৎখাত করা হয়েছে; একটি অবৈধ সরকারকে জনগণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে উৎখাত করেছে। এখানে পদত্যাগপত্রের কোনো ভূমিকা নেই।’

জরায়ুমুখ ক্যান্সারে বছরে মারা যাচ্ছেন চার হাজার নারী

জরায়ুমুখ ক্যান্সারে বছরে মারা যাচ্ছেন চার হাজার নারী

নারীরা যেসব ক্যান্সারে আক্রান্ত হন তার মধ্যে অন্যতম মরণঘাতী জরায়ুমুখ ক্যান্সার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২২ সালের তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী প্রতি বছর বিশ্বের প্রায় ৬ লাখ ৬০ জন জরায়ুর মুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। যার মধ্যে প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার মারা যান। আর দেশে এই ক্যান্সারে বছরে আক্রান্ত হন ৮ হাজার ২ জন এবং তার মধ্যে মৃত্যু হয় ৪ হাজার ৯ জনের মতো। দেশে ১৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী নারীদের ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে জরায়ুমুখ ক্যান্সার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ক্ষতিকর হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি)’র সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে পারে একমাত্র একটি টিকার দুই ডোজ। কারভিক্স নামের টিকাটি তাই দেশের সব অঞ্চলের ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী মেয়েদের দিতে ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকা ছাড়া দেশের ৭টি বিভাগে একযোগে শুরু হতে যাচ্ছে এই ক্যাম্পেন। এই টিকার আওতায় সব কিশোরীকে নিয়ে আসতে পারলে একটা সময় দেশ জরায়ুমুখ ক্যান্সারমুক্ত দেশ হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে পারবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।