ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

জাতীয়

জাতীয় বিভাগের সব খবর

জাপানের বন্ধুত্ব ও অবদান সব সময় মনে রাখবে বাংলাদেশ

জাপানের বন্ধুত্ব ও অবদান সব সময় মনে রাখবে বাংলাদেশ

শিক্ষা ও ক্রীড়াসহ বিনিয়োগ, মৎস্য চাষ, রোহিঙ্গা মানবিক সহায়তা এবং যুব উন্নয়নের মতো ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা আরও জোরদার করতে জাপানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, ‘জাপান সব সময়ই আমাদের বিশ্বস্ত বন্ধু। জাপানের বন্ধুত্ব ও অবদান বাংলাদেশ সব সময় মনে রাখবে।’  বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) এক্সিকিউটিভ সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মিয়াজাকি কাতসুরা সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘সম্প্রতি আমি আপনাদের দেশ সফর করেছি এবং আমাকে ও আমার প্রতিনিধি দলের প্রতি যে উষ্ণতা ও আতিথেয়তা দেওয়া হয়েছে তা আমাকে গভীরভাবে স্পর্শ করেছে।’ এশিয়ায় বাংলাদেশ জাপানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার উল্লেখ করে মিয়াজাকি কাতসুরা বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় জাপানের সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘জুলাই মাসে (অভ্যুত্থানে) যারা প্রাণ হারিয়েছেন এবং যারা আহত হয়েছেন তাদের জন্য আমরা গভীরভাবে শোক প্রকাশ করছি।’ সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টা মাতারবাড়ি প্রকল্পের গুরুত্ব তুলে ধরে একে ‘আমাদের দেশের ভবিষ্যতের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে’ বর্ণনা করেন। তিনি বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা সম্ভাবনার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি যখন জাপানে জাইকা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা বলেছি তখন তাকে বলেছি, আমরা সমুদ্রভিত্তিক অর্থনীতি হতে চাই।’ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশি তরুণদের জাপানে পড়াশোনার জন্য বৃত্তি বাড়ানোর পাশাপাশি কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানোর জন্য দেশটির প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘অনেক তরুণ কাজের জন্যও জাপানে যেতে পারেন। সমস্যাটা ভাষার। আমরা প্রস্তাব দিয়েছিলাম জাপানি শিক্ষকরা এখানে আসুন বা দূরশিক্ষণ দিন, যাতে আমাদের লোকেরা জাপানি ভাষা ও কর্মক্ষেত্রের শিষ্টাচার শিখতে পারে।’ প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘এটি একটি দুঃখজনক পরিস্থিতি। হাজার হাজার তরুণ কোনো আশা ছাড়াই ক্যাম্পে বেড়ে উঠছে। তারা হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে।’ এ সময় মিয়াজাকি কাতসুরা বলেন, ‘জাইকা ২০২৬ সালে এলডিসি স্ট্যাটাস থেকে উত্তরণের প্রস্তুতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, স্থানীয় সরকার এবং স্বাস্থ্য খাতের সংস্কারে সহায়তা করার দিকে মনোনিবেশ করছে। জাইকা উভয় দেশের স্থানীয় সরকার, কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় উন্নত আইসিটি মানবসম্পদ প্রশিক্ষণ প্রবর্তনের প্রয়াসে বাংলাদেশকেন্দ্রিক একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে।’

জলবায়ু মোকাবিলায় সুইডেন সহায়তা করছে

জলবায়ু মোকাবিলায় সুইডেন সহায়তা করছে

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, জলবায়ু মোকাবিলা এবং জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সুইডেনের সহায়তায় গ্রহণ করা হচ্ছে বিশেষ প্রকল্প। বৃহস্পতিবার পরিবেশ অধিদপ্তরে ‘স্ট্রেংথেনিং ক্যাপাসিটি অব এমওএফইসিসি, ডিওই, অ্যান্ড বিএফডি ফর ন্যাচারাল রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইমপ্রুভড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স’ শীর্ষক প্রকল্পের অনুদান চুক্তি গ্রহণকালে পরিবেশ উপদেষ্টা এ কথা বলেন। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে অনুদান চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন এ বিভাগের সচিব (রুটিন দায়িত্বে) ড. একেএম শাহাবুদ্দিন ও ঢাকার সুইডেন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ও সহযোগিতা প্রধান মারিয়া স্ট্রিডসম্যান। পরিবেশ উপদেষ্টা আরও বলেন, সুইডেন সরকারের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা সিডার অর্থায়নে গৃহীত নতুন প্রকল্প বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। উপদেষ্টা জানান, এই প্রকল্পের মাধ্যমে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়, পরিবেশ অধিদপ্তর ও বন অধিদপ্তরের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নত হবে। প্রকল্পটি পরিবেশগত ও জলবায়ু সংশ্লিষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উদ্ভাবনী পদক্ষেপের মাধ্যমে কাজ করবে। তিনি বলেন, এর মধ্যে রয়েছে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকার উন্নত তদারকি, বৃহৎ পরিসরে পরিবেশ পুনরুদ্ধার কার্যক্রম ও দেশের প্রথম ‘ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট ফান্ড’ প্রতিষ্ঠা। মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, সিডার অনুদানে ৫০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা ব্যয়ে পরিচালিত এই প্রকল্প তিনটি প্রধান উপাদানের ভিত্তিতে বাস্তবায়িত হবে। এতে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে, যার আওতায় জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনা ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।  সূত্রটি আরও জানায়, এর অংশ হিসেবে তৈরি হবে নজরদারি পরিকল্পনা, পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়নে বিশেষ প্রশিক্ষণ এবং বুড়িগঙ্গা ও তুরাগ নদীর দূষণ পর্যবেক্ষণে আধুনিক প্রযুক্তি সরবরাহ। অন্যদিকে, সোনাদিয়া দ্বীপসহ গুরুত্বপূর্ণ ইসিএ এলাকাগুলোতে উন্নত তদারকি ও পুনরুদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এ লক্ষ্যে চালু হবে ম্যানগ্রোভ বন পুনর্¯’াপন, বালিয়াড়ি স্থিতিশীলকরণ, কচ্ছপের প্রজনন কেন্দ্র স্থাপন ও প্রাথমিক পরিবেশগত মূল্যায়ন। এই কার্যক্রমে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে গঠন করা হবে ভিলেজ কনজারভেশন গ্রুপ, যারা টেকসই জীবনযাপন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের জন্য কাজ করবে।

তড়িঘড়ি টেলিকম নীতিমালা ঘোষণায় বিএনপির উদ্বেগ

তড়িঘড়ি টেলিকম নীতিমালা ঘোষণায় বিএনপির উদ্বেগ

তড়িঘড়ি করে সরকারের ‘টেলিকম নেটওয়ার্ক ও লাইসেন্সিং রিফর্ম পলিসি (নীতিমালা)-২০২৫’ ঘোষণায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি দলের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, নীতিমালা প্রণয়নে সরকার কারো মতামত নেয়নি।  ফখরুল বলেন, এই নীতিমালায় স্পষ্টভাবে বড় কোম্পানির সুবিধা বজায় রাখা হয়েছে যা প্রতিযোগিতা নয় বরং আধিপত্য বাড়বে। বড় মোবাইল কোম্পানিকে এন্টারপ্রাইজ ব্রডব্যান্ড বাজারে প্রবেশ করতে দিলে ছোট কোম্পানিগুলো প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে এবং একচেটিয়া পরিবেশ তৈরি হবে, যা দেশের সার্বিক অর্থনীতির ওপরও বিরূপ প্রভাব ফেলবে।  ফখরুল বলেন, বড় বড় প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে করা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সাম্প্রতিক ‘টেলিকম নেটওয়ার্ক ও লাইসেন্সিং রিফর্ম পলিসি-২০২৫’ এর বিষয়টি বিএনপির দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এই উদ্যোগ প্রশংসনীয় হলেও আমরা এই মুহূর্তে এই ধরনের একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তড়িঘড়ি করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছি। খসড়া নীতিমালাটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, এতে কিছু গুরুতর সমস্যা রয়েছে, যা টেলিকম খাতে সমতাভিত্তিক ও টেকসই উন্নয়ন বাধা দিতে পারে।

প্রকোপ বাড়ছে করোনা ডেঙ্গু চিকনগুনিয়ার

প্রকোপ বাড়ছে করোনা ডেঙ্গু চিকনগুনিয়ার

ডেঙ্গু, করোনা এবং চিকনগুনিয়ার প্রকোপ ক্রমেই বাড়ছে। গত তিনদিনে সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ১৬০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৫৮ ডেঙ্গুরোগী। বাড়ছে চিকনগুনিয়ায় আক্রান্তের হারও। চলতি বছর করোনায় এ পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গুতে। এদিকে করোনা-ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়াসহ বিভিন্ন রোগ শনাক্তে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশকে ১৯ হাজার কিট দিয়েছে চীন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে বৃহস্পতিবার জানানো হয়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১ হাজার ১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪ জন, মার্চে ৩৩৬ জন, এপ্রিলে ৭০১ জন এবং মে মাসে ১ হাজার ৭৭৩ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন, এপ্রিলে ৭ জন, মে মাসে ৩ জন মারা গেছেন। সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জুলাই মাসের তিনদিনে মোট ১ হাজার ১৬০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং মারা গেছেন ৩ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৩৫৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ১৫০ জনই বরিশাল বিভাগে সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে। আর এই সময়ের মধ্যে মারা গেছেন ১ জন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৪৫ জনের এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১১ হাজার ৪৫৬ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৮ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ২০ লাখ ৫২ হাজার ১৬২ জন। সারাদেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ১ হাজার ৩২৯ জন ডেঙ্গুরোগী ভর্তি আছেন। যার মধ্যে ঢাকায় ৩৫১ জন, বাকি ৯৭৮ জন ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিভাগে। আরও ৮ জনের করোনা শনাক্ত ॥ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ২১৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়। চলতি বছর মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৯ হাজার ৪৭৬ জনের। এর মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় ৬১৭ জনের শরীরে। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১ কোটি ৫৭ লাখ ৩৩ হাজার ১৫ জনের। চলতি বছর করোনায় মোট ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশে শুরু থেকে এ পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৫২২ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ। সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৪১ শতাংশ। আর করোনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর একই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়। ১৯ হাজার কিট দিয়েছে চীন ॥ করোনা-ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়াসহ বিভিন্ন রোগ শনাক্তে বাংলাদেশকে ১৯ হাজার কিট দিয়েছে চীন। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে এসব কিট গ্রহণ করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। চীনের পক্ষে কিট হস্তান্তর করেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স লি ইয়ান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর। অনুষ্ঠান শেষে অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশকে চীন ১৯ হাজার কিট দিয়েছে। ভবিষ্যতে আরও দেবে। তাদের সঙ্গে আমরা যৌথভাবে কিছু অবকাঠামোগত কাজ করব। এ সময় তিনি আরও বলেন, এখন করোনা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়াসহ নানা ধরনের ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আছে। মানুষকে সচেতন থাকতে হবে। সমস্যা হলেই হাসপাতালে এসে টেস্ট করাতে হবে।

জুলাই সনদ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো এখন নমনীয়

জুলাই সনদ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো এখন নমনীয়

প্রথম দিকে পরস্পরবিরোধী শক্ত অবস্থানে থাকলেও জুলাই সনদের স্বার্থে এখন অনেকটাই নমনীয় রাজনৈতিক দলগুলো। রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে দলগুলো ছাড় দেওয়াকে সংলাপের বড় অগ্রগতি হিসেবেই দেখছে কমিশন। দেশের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলো শক্ত অবস্থানে না থেকে যেভাবে নমনীয় হয়ে ছাড় দিচ্ছে, তাতে চলতি জুলাই মাসেই আলোচিত ‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষরের ব্যাপারে দৃঢ় আশাবাদী হয়ে উঠেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। বৃহস্পতিবারের বৈঠকেও রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শন সম্পর্কিত বিধান এবং বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ বিষয়ে দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকার পাশাপাশি বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্টের বেঞ্চ স্থাপনের বিষয়ে একমত হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। দ্বিতীয় পর্যায়ের টানা বৈঠকে এ পর্যন্ত সংবিধানের ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিত্ব, নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা-সম্পর্কিত বিধান এবং বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ বিষয়ে আলোচনা নিষ্পত্তি হয়েছে। বৈঠক শেষে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেন, সংলাপে বড় ধরনের অগ্রগতি হয়েছে। এ জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে ধন্যবাদ দিতে চাই। কারণ সংস্কারের বিষয়ে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ছাড় দিয়েছে। বিশেষ করে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শন সম্পর্কিত বিধান এবং বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ড. আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের নবম দিনের বৈঠকে কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং ড. আইয়ুব মিয়া উপস্থিত ছিলেন।  সংলাপে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নেয়। আগামী ৭ জুলাই আবার আলোচনা হবে বলে জানায় কমিশন। বৈঠক শেষে ব্রিফিংকালে ড. আলী রীয়াজ বলেন, ‘বিগত দিনে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষেত্রে ক্ষমতার ব্যাপক অপব্যবহার হয়েছে। তাই রাজনৈতিক দলগুলো সংবিধানের ৪৯ নম্বর অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করেছে। এ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, যা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার মধ্য দিয়ে বাস্তবায়িত হবে। আর সুপ্রিম কোর্টের স্থায়ী আসন রাজধানীতে থাকবে। পাশাপাশি প্রতিটি বিভাগে এক বা একাধিক স্থায়ী বেঞ্চ থাকবে। সে বিষয়েও ঐকমত্য হয়।’ ড. আলী রীয়াজ বলেন, সংবিধানের ৪৯ নম্বর অনুচ্ছেদ সংশোধন বিষয়ে যে ঐকমত্য হয়েছে তা হলো ‘কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত যে কোনো দণ্ডের ক্ষমা ও বিরাম মঞ্জুর এবং যে কোনো দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা হ্রাস করার ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকবে। আইনের দ্বারা নির্ধারিত মানদণ্ড, নীতি ও পদ্ধতি অনুসরণক্রমে ওই ক্ষমতা প্রয়োগ করা হবে।’ তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘সংবিধানের ৪৯ নম্বর অনুচ্ছেদ সংশোধন বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া প্রস্তাবের আলোকে যে রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি হয়েছে, তা ভবিষ্যতে সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে। এতদিন ধরে এ ক্ষমতার যে অপব্যবহার হয়েছে তা বন্ধ হবে।’ বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ সম্পর্কিত বিষয়ে যে অগ্রগতি হয়েছে তা উল্লেখ করে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘রাজধানীতে সুপ্রিম কোর্টের স্থায়ী আসন থাকবে তবে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে প্রধান বিচারপতি সময়ে সময়ে যে সার্কিট বেঞ্চ প্রতিষ্ঠা করতে পারতেন তার পরিবর্তে রাজধানীতে সুপ্রিম কোর্টের স্থায়ী আসন থাকবে। প্রধান বিচারপতি কর্তৃক প্রতিটি বিভাগে এক বা একাধিক স্থায়ী বেঞ্চ থাকবে। অর্থাৎ হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ বিভাগীয় পর্যায়ে প্রতিষ্ঠার বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। এ বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে সংবিধানের ১০০ নম্বর অনুচ্ছেদের পরিবর্তন হবে।’ বৈঠক শেষে রাজনৈতিক দলের নেতারা যা বলেন ॥ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে ব্রিফিংকালে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘জাতীয় সনদ দ্রুত বাস্তবায়ন হোক বিএনপি তা চায়। আর যেন এটি দীর্ঘায়িত না হয়। বিএনপি সরকারি বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করলেও একটি মহল বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা বিগত সময় দেখেছি রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার যথেষ্ট অপব্যবহার হয়েছে। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিসহ বড় বড় অপরাধ করা আসামিদের ক্ষমা প্রদর্শনের মাধ্যমে হত্যাযজ্ঞের একটা উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। ফলে দেশে এটার মাধ্যমে আলোচনায় আসছে এ ক্ষমতাটা রাষ্ট্রপতির হাতে এভাবে অবারিত থাকা উচিত কি না। সেই সেন্টিমেন্টের সঙ্গে একমত পোষণ করে, আইনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির এ ক্ষমতা প্রয়োগের একটা বিধান আনা যায় কিনা এবং আইনি একটা পরামর্শ সভা বা বোর্ড রাখা যায় কি না। এ ছাড়া এর সঙ্গে কোনো নীতিমালা প্রণয়ন করা যায় কি না, কি পদ্ধতি অনুসরণ করেই ক্ষমা প্রদর্শনীর বিষয়টি করা যায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। নীতিগতভাবে একমত পোষণ করেছি, রাষ্ট্রপতির এ ক্ষমতাটা আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে একমত পোষণ করার বিষয়ে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা এ সময়ে এসে সংবিধানে এমন কিছু পরিবর্তন করতে পারব না, যে পরিবর্তন পরবর্তীতে টিকবে না। সেটা আমাদের জন্য মঙ্গলজনক হবে না। এখন যে পর্যায়ে আছি, এখানে জনগণ ও রাষ্ট্রের কাছে আমাদের দায় অনেক বেশি। আমরা এখানেই রাজনৈতিকভাবে মতামত দিচ্ছি না, জনগণের জন্য, দেশের কল্যাণের জন্য সার্বিকভাবে মতামত দিচ্ছি। এখানে কোনোভাবেই রাজনৈতিক বিবেচনা থাকার কথা নয়। স্বাধীন বিচারব্যবস্থার সুফল জনগণকে ভোগ করতে হলে আগে উচ্চ ও নিম্ন আদালতকে ফ্যাসিস্টমুক্ত করতে হবে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘উচ্চ এবং নিম্ন আদালতে ফ্যাসিস্টদের বহাল রেখে যতই আমরা স্বাধীন বিচারব্যবস্থা করি না কেন, এর সুবিধাভোগী এরা (ফ্যাসিস্টরাই) হবে। আমাদের পরিষ্কার বক্তব্য, ফ্যাসিস্টমুক্ত হতে হবে উচ্চ এবং নিম্ন আদালত। তারপরে স্বাধীন বিচারব্যবস্থা সত্যিকার অর্থে কার্যকর হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতাকর্মী, সাংবাদিকসহ সমাজের সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে তারা অবৈধভাবে সাজা দিয়েছে। সেই ফ্যাসিস্টদের যেন আমরা রক্ষা না করি, আমরা চাই উচ্চ এবং নিম্ন আদালতে যাতে ফ্যাসিস্টের দোসররা না থাকে। এখন যাদের বিরুদ্ধে বদলি, বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এটা যথেষ্ট নয়। তাদের অপরাধের জন্য নির্দিষ্ট করে শুধু চাকরি গেলে হবে না, অপরাধের জন্য তাদের বিচারও করতে হবে।  ব্রিফিংকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেন, ‘বিগত দিনে চিহ্নিত অপরাধীদের ক্ষমা করে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। তাই এ বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছেছে। এতে বিচার ব্যবস্থাকে জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে।’ তিনি বলেন, ‘কোনো অপরাধীর ক্ষমার বিষয়ে রাষ্ট্রপতি নিজে নিজে ক্ষমা করতে পারবেন না। অপরাধীর ক্ষমা চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করতে একটি কমিটি থাকবে। এ ক্ষেত্রে পরিবার বা ভুক্তভোগীর রক্তের সম্পর্ক থাকা ব্যক্তির মতামত লাগবে। তারা চাইলে সমঝোতা করতে পারবেন। আমরা আজ নতুন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যোগ করেছি। যদি কোনো ব্যক্তিগত অপরাধ, যেমন হত্যাকাণ্ড ঘটে এবং দোষী ব্যক্তিকে দণ্ড দেওয়া হয়, তাহলে ভুক্তভোগী পরিবারের সম্মতি ছাড়া রাষ্ট্রপতি বা কমিটি এককভাবে সেই সাজা মাফ করতে পারবেন না। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সম্মতি দিলে তবেই ক্ষমা বিবেচনায় আসবে। এতে ইনসাফ নিশ্চিত হবে।’ বিভাগীয় শহরে হাইকোর্ট বেঞ্চ স্থানান্তরের বিষয়ে জামায়াতে ইসলামী একমত পোষণ করেছে উল্লেখ করে জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, ‘অনেক পরিবারের বিচার পেতে অনেক দূর থেকে ঢাকায় আসতে হয়। এ ক্ষেত্রে অনেকের জন্য থাকা-খাওয়া ও যাতায়াতের ব্যয়ভার বহন করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তাই আমরা এ বিষয়টির পক্ষে বলেছি। শুরুতে হয়তো কিছুটা সীমাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে। এত বিচারপতি কোথা থেকে আসবে। তারা ঢাকা থেকে যেতে রাজি হবেন কি না বা আইনজীবী পাওয়া যাবে কি না। হয়তো কিছুটা বেগ পোহাতে হবে। তবে সরকার চাইলে বাজেট বাড়াতে পারে ও প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিতে পারে। তাহলে অনেক বিচারপতিই ঢাকার বাইরে যেতে আপত্তি করবেন না।’ জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, তারা রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের প্রক্রিয়া ও বিচারব্যবস্থার সংস্কারে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। অতীতে রাষ্ট্রপতির ক্ষমার অপব্যবহার হয়েছে। শীর্ষ সন্ত্রাসীদেরও ক্ষমা করা হয়েছে রাজনৈতিক বিবেচনায়। এতে ন্যায়বিচার ক্ষুণœ হয়েছে, বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের আস্থা কমেছে। রাষ্ট্রপতির ক্ষমা যেন আর নিরঙ্কুশ না থাকে, বরং একটি বোর্ডের সুপারিশের ভিত্তিতে তা প্রদর্শিত হয় এ প্রস্তাবে আমরা একমত হয়েছি। তিনি বলেন, ২০ কোটি মানুষের দেশে হাইকোর্ট এবং আপিল বিভাগ মিলিয়ে কয়েক লাখ মামলা বিচারাধীন। মাত্র ১০০ জন বিচারপতি দিয়ে এই মামলাগুলো নিষ্পত্তি সম্ভব নয়। তিনি আরও বলেন, আমরা যে গণঅভ্যুত্থানের পথ ধরে এই সংস্কার উদ্যোগে এসেছি, সেই জনগণের আকাক্সক্ষা আমাদের ধারণ করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলো ও কমিশনের একমত হওয়া সিদ্ধান্তগুলো যেন বাস্তবায়ন হয়, সেটিই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

সরকারি কর্মচারীদের তদন্ত ছাড়া শাস্তি নয়

সরকারি কর্মচারীদের তদন্ত ছাড়া শাস্তি নয়

সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ এর অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই অনুমোদন দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইউনূস। সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আগে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের বিধান রেখে করা ‘সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।  ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ গত ২৫ মে জারি হয়। বিদ্যমান অধ্যাদেশ অনুযায়ী সরকারের দৃষ্টিতে দোষী  কর্মচারীকে দুই দফায় মোট ১৪ দিনের নোটিসে চাকরি থেকে বরখাস্ত বা নিম্নপদে নামিয়ে দেওয়ার মতো শাস্তির সুযোগ আছে। এর প্রতিবাদে সচিবালয়ের কর্মচারীরা কয়েক দফা আন্দোলন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার আইনটি সংশোধনের সিদ্ধান্ত নেয়। অধ্যাদেশ প্রণয়নের দেড় মাসের মধ্যে সংশোধন প্রস্তাব অনুমোদন করল সরকার।  সরকারি উচ্চ পর্যায়ের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, সরকার কর্মচারীদের উদ্বেগের বিষয়টি আমলে নিয়েছে। আশা করা যায়, আর কোনো সমস্যা থাকবে না। অপর একটি সূত্র জানায়, প্রস্তাবিত সংশোধনে নারী কর্মচারীদের বিষয়টিও গুরুত্ব পেয়েছে। কোনো নারী কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তদন্ত কমিটিতে একজন নারী কর্মকর্তা রাখতে হবে। বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ জানিয়েছে, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং-সাপেক্ষে ‘সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ চূড়ান্ত অনুমোদন করা হয়েছে। এ ছাড়া সভায় ‘বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস’ ১৫ মার্চের পরিবর্তে ৩ ডিসেম্বর, ‘আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস’ ‘খ’ শ্রেণি হিসেবে অন্তর্ভুক্তকরণ এবং ২ এপ্রিল ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস’ ঘোষণার প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।  পাশাপাশি ওআইসি লেবার সেন্টারের সংবিধিতে সই প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে ও পারমাণবিক জ্বালানি এবং তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) কর্তৃক ১৯৯৭ সালের ৫ সেপ্টেম্বরে গৃহীত ‘ব্যয়িত জ্বালানি ব্যবস্থাপনার নিরাপত্তা এবং তেজস্ক্রিয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নিরাপত্তা বিষয়ক যৌথ কনভেনশনে’ সইয়ের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।