
ডেঙ্গু, করোনা এবং চিকনগুনিয়ার প্রকোপ ক্রমেই বাড়ছে
ডেঙ্গু, করোনা এবং চিকনগুনিয়ার প্রকোপ ক্রমেই বাড়ছে। গত তিনদিনে সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ১৬০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৩৫৮ ডেঙ্গুরোগী। বাড়ছে চিকনগুনিয়ায় আক্রান্তের হারও। চলতি বছর করোনায় এ পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গুতে।
এদিকে করোনা-ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়াসহ বিভিন্ন রোগ শনাক্তে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশকে ১৯ হাজার কিট দিয়েছে চীন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে বৃহস্পতিবার জানানো হয়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১ হাজার ১৬১ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩৭৪ জন, মার্চে ৩৩৬ জন, এপ্রিলে ৭০১ জন এবং মে মাসে ১ হাজার ৭৭৩ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ১০ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন, এপ্রিলে ৭ জন, মে মাসে ৩ জন মারা গেছেন।
সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জুলাই মাসের তিনদিনে মোট ১ হাজার ১৬০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং মারা গেছেন ৩ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ৩৫৮ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ১৫০ জনই বরিশাল বিভাগে সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে। আর এই সময়ের মধ্যে মারা গেছেন ১ জন। চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৪৫ জনের এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১১ হাজার ৪৫৬ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৮ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ২০ লাখ ৫২ হাজার ১৬২ জন। সারাদেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে বর্তমানে ১ হাজার ৩২৯ জন ডেঙ্গুরোগী ভর্তি আছেন। যার মধ্যে ঢাকায় ৩৫১ জন, বাকি ৯৭৮ জন ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিভাগে।
আরও ৮ জনের করোনা শনাক্ত ॥ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ২১৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৮ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়। চলতি বছর মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৯ হাজার ৪৭৬ জনের। এর মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় ৬১৭ জনের শরীরে। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১ কোটি ৫৭ লাখ ৩৩ হাজার ১৫ জনের।
চলতি বছর করোনায় মোট ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশে শুরু থেকে এ পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৫২২ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ। সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৪১ শতাংশ। আর করোনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর একই বছরের ১৮ মার্চ দেশে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।
১৯ হাজার কিট দিয়েছে চীন ॥ করোনা-ডেঙ্গু-চিকুনগুনিয়াসহ বিভিন্ন রোগ শনাক্তে বাংলাদেশকে ১৯ হাজার কিট দিয়েছে চীন। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে এসব কিট গ্রহণ করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান। চীনের পক্ষে কিট হস্তান্তর করেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স লি ইয়ান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর।
অনুষ্ঠান শেষে অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, বাংলাদেশকে চীন ১৯ হাজার কিট দিয়েছে। ভবিষ্যতে আরও দেবে। তাদের সঙ্গে আমরা যৌথভাবে কিছু অবকাঠামোগত কাজ করব। এ সময় তিনি আরও বলেন, এখন করোনা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়াসহ নানা ধরনের ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আছে। মানুষকে সচেতন থাকতে হবে। সমস্যা হলেই হাসপাতালে এসে টেস্ট করাতে হবে।