ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৫ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

দৌলতপুরে গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ, লাশ দাফনে পুলিশের বাধা

নিজস্ব সংবাদদাতা, দৌলতপুর, কুষ্টিয়া

প্রকাশিত: ১৮:৫০, ৪ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৯:২১, ৪ জুলাই ২০২৫

দৌলতপুরে গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ, লাশ দাফনে পুলিশের বাধা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে শ্বশুরবাড়িতে এক গৃহবধূকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় লাশ দাফনে বাধা দিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার সকালে নিহত গৃহবধূর বাবার বাড়ির লোকজন স্থানীয় কবরস্থানে লাশ নিতে গেলে হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে এমন সন্দেহে পুলিশ লাশ আটকায়। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।

নিহত শিলা খাতুন (২০) মিরপুর উপজেলার ধুবইল ইউনিয়নের কাঙালী মোড় এলাকার আমিরুল ইসলামের মেয়ে। তিনি দৌলতপুর উপজেলার পিয়ারপুর ইউনিয়নের শেরপুর সেনপাড়া গ্রামের আলামিনের স্ত্রী।

স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, দুই বছর আগে শিলার বিয়ে হয় শেরপুর সেনপাড়ার ইয়ারুল ইসলামের ছেলে আলামিনের সঙ্গে। তিন মাস আগে তাদের একটি ছেলে সন্তান জন্ম নেয়।

গত ২৯ জুন শিলার শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানায়, পারিবারিক বিরোধের জেরে শিলা শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সন্ধ্যায় শিলাকে তার স্বামী ঢাকা থেকে বাবার বাড়িতে রেখে চলে যায়। রাতেই শ্বাসকষ্ট শুরু হলে পরিবারের লোকজন তাকে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে শুক্রবার ভোরে শিলা মারা যান।

নিহতের দুলাভাই আশরাফুল ইসলাম বলেন, “ঘটনার দিন শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানিয়েছিল শিলা আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। কিন্তু মৃত্যুর আগে শিলা আমাকে জানিয়েছিল শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার শরীরে তারপিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল। তবে সে কোনো নাম উল্লেখ করেনি।”

তিনি আরও বলেন, “শুক্রবার সকাল ১০টায় কাঙালী মোড় কবরস্থানে দাফনের কথা ছিল। লাশ নিয়ে যাওয়ার পথে সকাল ৯:৪৫ মিনিটে পুলিশ এসে লাশ আটকায়। পরে পুলিশ মরদেহ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।”

মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোমিনুল ইসলাম বলেন, “আসল ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার সন্দেহে পুলিশ লাশ আটকে দেয়। নিহতের শরীরের অর্ধেক পুড়ে গেছে এবং শ্বাসনালী মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।”

দৌলতপুর থানার ওসি নাজমুল হুদা বলেন, “স্বামীর বিদেশ যাওয়াকে কেন্দ্র করে পারিবারিক বিরোধ থেকে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে শোনা যাচ্ছে। এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর বলা যাবে।”

মো. সাইদুল আনাম/মিমিয়া

×