ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২

আবহাওয়া

আবহাওয়া বিভাগের সব খবর

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে ট্রলার,জীবন হাতে নদী পাড়ি দিচ্ছে যাত্রীরা

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে ট্রলার,জীবন হাতে নদী পাড়ি দিচ্ছে যাত্রীরা

মৌসুমী বায়ুর  প্রভাবে উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলায় বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। সকল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ও থেমে থেমে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। সমুদ্রে নিন্মচাপের কারণে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি থাকায় গত তিন দিন ধরে ভোলা- লক্ষ্মীপুর নৌ রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। আজ শুক্রবার ভোর থেকে এই রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় কয়েক হাজার যাত্রী পড়েছেন চরম বিপাকে। সকাল থেকেই ভোলার ইলিশা লঞ্চ ঘাটে দেখা গেছে নারী-শিশু, বৃদ্ধসহ কয়েক হাজার যাত্রী অপেক্ষা করেন গন্তব্যে পৌঁছানোর আশায়। কিন্তু লঞ্চ ও সি-ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীদের ভোগান্তির শেষ নেই।  অনেক যাত্রী নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নিরুপায় হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই রুটে ছোট ছোট ট্রলার এবং স্প্রিট বোটে যাত্রী পাড়াপাড় করেছে। এতে করে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

যে ১৮ অঞ্চলে ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে আজ

যে ১৮ অঞ্চলে ঝড়ের সম্ভাবনা রয়েছে আজ

ঢাকাসহ ১৮ অঞ্চলে দুপুরের মধ্যে ঝড় বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, ঢাকা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালি, নোয়াখালি, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলের উপর দিয়ে দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিমি বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। বুধবার রাতে পাঁচদিন সারাদেশে টানা বৃষ্টির আভাস দিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই সময়ের মধ্যে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।

ভারি বৃষ্টিতে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের শঙ্কা

ভারি বৃষ্টিতে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের শঙ্কা

রাজধানীসহ দেশের অনেক অঞ্চলে বুধবার সকাল থেকে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। একদিকে সাগরে সৃষ্টি হওয়া সুস্পষ্ট লঘুচাপ, অন্যদিকে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এই বৃষ্টি অব্যাহত আছে। আগামী কয়েকদিন এই বৃষ্টি চলতে পারে। এদিকে আকাশে মেঘের কারণে সমুদ্র বন্দরে ৩ এবং নদীবন্দরে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ভারি বৃষ্টিতে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস এবং নি¤œাঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্ক করেছে। আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা বলেন, ‘একদিকে লঘুচাপ অন্যদিকে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সারাদেশেই বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টি আগামী চার-পাঁচদিন অব্যাহত থাকতে পারে। তবে টানা নয়, থেমে থেমে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে সারাদেশে।’ আবহাওয়া সতর্কবার্তা ॥ সমুদ্র বন্দরের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বজ্রমেঘ তৈরি হচ্ছে এবং বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিসহ দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর সতর্কতা

বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর সতর্কতা

বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। যার বর্ধিত অংশ বিস্তৃত রয়েছে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত। একই সঙ্গে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হয়ে উঠেছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। ফলে সারাদেশেই বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়ছে।  বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, আগামী পাঁচদিন দেশে বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে। ঝড়োহাওয়া বয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় দেশের সব সমুদ্রবন্দরে তিন নম্বর সতর্কতা সংকেত তোলা হয়েছে। এ ছাড়া নদীবন্দরে তোলা হয়েছে এক নম্বর সতর্কতা সংকেত। আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান বলেন, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হওয়ায় সারাদেশে বৃষ্টিপাত বেড়েছে। সকাল থেকে রাজধানী ঢাকাতেও বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে ২২ জুন (রবিবার) পর্যন্ত। এরপর ধীরে ধীরে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমতে পারে। তিনি বলেন, মৌসুমি বায়ুর সক্রিয়তার প্রভাবে সারাদেশে বৃষ্টি হচ্ছে। এ বৃষ্টিপাত চলতি সপ্তাহের বাকি দিনগুলোতেও অব্যাহত থাকবে। ২২ জুনের পর থেকে বৃষ্টিপাত কিছুটা কমতে পারে। তিনি বলেন, ঢাকায়ও থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। উপকূলে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি। রাজশাহী ও রংপুরে বৃষ্টি কম হতে পারে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বজ্রমেঘ তৈরি হচ্ছে এবং বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ভারি থেকে অতিভারি বৃষ্টিসহ দমকা/ঝড়োহাওয়া বয়ে যেতে পারে। তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। এদিকে যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ-দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা থেকে  ঝড়োহাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে এক নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আজ বুধবার একই ধরনের বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। তখনো দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত দেশের ছয় বিভাগে- রংপুর, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেটের অধিকাংশ এলাকায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। রাজশাহী ও ঢাকাতেও অনেক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। এই সময় তাপমাত্রা খুব একটা পরিবর্তন হবে না। দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। বৃষ্টি বাড়ার কারণে পাহাড়ি ও নি¤œাঞ্চলে জলাবদ্ধতা, নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি এবং পাহাড় ধসের আশঙ্কাও থেকে যাচ্ছে। তাই সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো। এই অবস্থায় আবহাওয়া অফিস ১০টি পরামর্শ দিয়েছে। সেগুলো হলো-১. বজ্রপাত হলে ঘরের মধ্যে থাকুন; ২. জানালা ও দরজা বন্ধ রাখুন; ৩. সম্ভব হলে যাত্রা এড়িয়ে চলুন; ৪. নিরাপদ আশ্রয়ে আশ্রয় নিন; ৫. গাছের নিচে আশ্রয় নেবেন না; ৬. কংক্রিটের মেঝেতে শয়ন করবেন না এবং কংক্রিটের দেওয়ালে হেলান দেবেন না; ৭. বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোর প্লাগ খুলে দিন; ৮. জলাশয় থেকে তাৎক্ষণিকভাবে উঠে আসুন; ৯. বিদ্যুৎ পরিবাহক বস্তু থেকে দূরে থাকুন; ১০. শিলাবৃষ্টির সময় ঘরে অবস্থান করুন।

আসছে বর্ষা: প্রস্তুত তো গ্রাম?

আসছে বর্ষা: প্রস্তুত তো গ্রাম?

বাংলাদেশের প্রাণগ্রন্থি হলো তার গ্রাম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও কৃষিনির্ভর জীবনের মিলনস্থল এই গ্রামগুলো প্রতি বছর বর্ষায় যেমন নবজীবন লাভ করে, তেমনি মুখোমুখি হয় নানান দুর্যোগের। খোলা রাস্তা, অপরিকল্পিত বাঁধ, দুর্বল বেড়িবাঁধ, নদীভাঙন ও বিদ্যুৎ বিভ্রাট সব মিলিয়ে এক মৌসুমি বিপদের নাম হয়ে দাঁড়ায় বর্ষা। বাংলাদেশের অন্তত ৩৫টি জেলার মানুষ প্রতিবছর নদীভাঙনের শিকার হন।পদ্মা, যমুনা, মেঘনাসহ বড় নদীগুলোর তীরবর্তী গ্রামের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।বর্ষা শুরুর আগেই বহু পরিবার ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছে নিরাপদ স্থানে।পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হলেও তা অনেক এলাকাতেই পর্যাপ্ত নয়। গ্রামীণ যোগাযোগব্যবস্থা বর্ষায় সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়ে।বেশিরভাগ রাস্তা কাঁচা বা আধা-পাকা, বৃষ্টি হলে কাদায় পরিণত হয়। হাটে-পসরে যাতায়াতে বাধা তৈরি হয়। কৃষকরা ঠিকমতো ফসল বাজারে পৌঁছাতে পারেন না।অনেক এলাকায় শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে পারে না সপ্তাহের পর সপ্তাহ। বর্ষা কৃষির জন্য আশীর্বাদ হলেও অতিবৃষ্টি বা সময়ের আগে বৃষ্টি কৃষককে বিপাকে ফেলে।ধানের চারা রোপণ, আমন চাষ সবই বর্ষার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। পানি নিস্কাশনের পথ না থাকলে জমি প্লাবিত হয়ে ফসল নষ্ট হয়। অনেক এলাকায় সেচ ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে জমি নষ্ট হয়ে পড়ে।গ্রামে এখনো অনেক এলাকায় সুপেয় পানির ব্যবস্থা সঠিক নয়। বৃষ্টির পানি ও বন্যার কারণে টিউবওয়েল ডুবে গেলে পানিবাহিত রোগের বিস্তার ঘটে। ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ওষুধ বা চিকিৎসক সংকট সাধারণ ব্যাপার। ডায়রিয়া, টাইফয়েড, চর্মরোগ বেড়ে যায় বর্ষাকালে। বজ্রপাত এখন গ্রামীণ জীবনের বড় আতঙ্ক হয়ে উঠেছে। বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে প্রাণহানির খবর বর্ষায় প্রায়ই আসে সংবাদে। গ্রামে অনেক জায়গায় নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র বা বজ্রনিরোধক ব্যবস্থা নেই। শহরের তুলনায় গ্রামগুলো বর্ষার ঝুঁকিতে পড়ে আরও বেশি, কিন্তু প্রস্তুতি অনেক কম। অথচ এই গ্রামই বাংলাদেশের উৎপাদনের কেন্দ্রবিন্দু। তাই এখনই সময় প্রকৃত প্রস্তুতি গ্রহণের। প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ করা না গেলেও তার প্রভাব কমানো যায় সচেতন পরিকল্পনায়।