ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৯ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২

আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে বৃষ্টিপাত

ভারি বৃষ্টিতে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের শঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:২৭, ১৮ জুন ২০২৫

ভারি বৃষ্টিতে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের শঙ্কা

ভারি বৃষ্টিতে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের শঙ্কা

রাজধানীসহ দেশের অনেক অঞ্চলে বুধবার সকাল থেকে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। একদিকে সাগরে সৃষ্টি হওয়া সুস্পষ্ট লঘুচাপ, অন্যদিকে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এই বৃষ্টি অব্যাহত আছে। আগামী কয়েকদিন এই বৃষ্টি চলতে পারে। এদিকে আকাশে মেঘের কারণে সমুদ্র বন্দরে ৩ এবং নদীবন্দরে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ভারি বৃষ্টিতে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধস এবং নি¤œাঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর সতর্ক করেছে।
আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা বলেন, ‘একদিকে লঘুচাপ অন্যদিকে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সারাদেশেই বৃষ্টি হচ্ছে। এই বৃষ্টি আগামী চার-পাঁচদিন অব্যাহত থাকতে পারে। তবে টানা নয়, থেমে থেমে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে সারাদেশে।’
আবহাওয়া সতর্কবার্তা ॥ সমুদ্র বন্দরের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বজ্রমেঘ তৈরি হচ্ছে এবং বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর ওপর দিয়ে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিসহ দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এই কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়।
ভারি বৃষ্টিপাতের সতর্কবার্তায় বলা হয়, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয়তার কারণে আজ সকাল ১০টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি (২৪ ঘণ্টায় ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারি (১৮৮ মিলিমিটার) বর্ষণ হতে পারে।

অতি ভারি বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজারে পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে ভারি বর্ষণজনিত কারণে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনা মহানগরীর কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে খুলনায় ১১১ মিলিমিটার। এ ছাড়া পটুয়াখালী খেপুপাড়ায় ৮৬, নারায়ণগঞ্জে ৮৫, কক্সবাজারে ৮১, চট্টগ্রামে ৭৮, নোয়াখালীর হাতিয়ায় ৬৮, গোপালগঞ্জে ৬২, ফেনীতে ৫৮, ভোলায় ৫৬, কয়রা ও মাইজদীকোর্টে ৫৫, কুমিল্লায় ৫৩, মোংলায় ৪৮, পটুয়াখালীতে ৪৯, বরিশালে ৩৭, ঈশ্বরদীতে ৪৩, কুতুবদিয়ায় ৩৮, ঢাকায় ৩৬, চুয়াডাঙ্গায় ৩২, সাতক্ষীরায় ৩০, কুমারখালিতে ২৯, যশোরে ২২, চাঁদপুরে ২০, রাঙ্গামাটিতে ১৮, বান্দরবানে ১৬, টাঙ্গাইলে ১২, ফরিদপুরে ১৫, নীলফামারীর ডিমলায় ১৩, সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ১১, নেত্রকোনা ও সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়িতে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এর বাইরে প্রায় সারাদেশে কম বেশি বৃষ্টি হয়েছে।
পূর্বাভাস ॥ আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও আশপাশের এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। লঘুচাপের বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ুর অক্ষ বিহার, সুস্পষ্ট লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল ও বাংলাদেশের দক্ষিণাংশ হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।

×