
ছবি: দৈনিক জনকণ্ঠ।
বর্ষা মৌসুমিকে সামনে রেখে পাবনার প্রায় দুইশত কারখানায় তৈরি হচ্ছে অবৈধ চায়না দুয়ারী জাল। পাবনার ফরিদপুর উপজেলায় ছোট বড় প্রায় ২০০টি কারখানায় অবাধে তৈরি হচ্ছে অবৈধ চায়না দুয়ার জাল।
বেড়া উপজেলায় প্রায় ১০ টি কারখানা রয়েছে। এসব কারখানা থেকে প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার জাল তৈরি হয়। প্রকাশ্যে পরিবহনসহ চলছে বাজারজাতকরণ। কুরিয়ার সার্ভিসের গাড়িতে পাঠানো হয় দেশের বিভিন্ন জেলায়। হাত বাড়ালেই মিলছে চায়না দুয়ারী। এ জাল চাটমোহরের চলনবিল, সুজানগরের খয়রান বিল সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। চায়না দুয়ারী জাল মূলত মাছ ধরার একটি ফাঁদ। স্থানীয়ভাবে এটি চায়না দুয়ারী, রিং জাল, চায়না বান্ধা ইত্যাদি নামে পরিচিত।
এটি একটি বিশেষ ধরনের জাল যা নদীর স্রোতে বা বদ্ধ জলাশয়ে ব্যবহার করা হয়। জালির ছিদ্র খুব ছোট হওয়ায় সব ধরনের মাছ, এমনকি মাছের ডিম ও পোনাও ধরা পরে। মাছসহ সাপ, ব্যাঙ, শামুক এ জালে আটকা পড়ে। স্বল্প খরচে এবং কম পরিশ্রমে বেশি মাছ ধরার জন্য ব্যবহার করা হয়। তবে, এর ব্যবহারের কারণে দেশীয় প্রজাতির মাছ এবং জলজ পরিবেশের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
এসব জাল খালবিলে ছড়িয়ে পড়ায় বিপন্ন হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির মাছ। কিছু ক্ষেত্রে এই জাল ব্যবহার করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তবে এর ব্যবহার এখনো বন্ধ হয়নি। এটি পরিবেশ ও মৎস্য সম্পদের জন্য ক্ষতিকর। উপজেলা প্রশাসন ছোটখাটো অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানের পর প্রশাসনের নজর ফাঁকি দিতে। জায়গা বদলসহ বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে আবারো শুরু হয়। কারিগরদের বাড়িবাড়ি জালসহ এর সরঞ্জাম পাঠানো হয়। এসব এলাকার সহস্রাধিক বাড়িতেও জাল তৈরির সরঞ্জাম রয়েছে। এভাবে প্রচুর পরিমাণে তৈরি হচ্ছে অবৈধ চায়না দুয়ারী জাল।
স্থায়ীভাবে এসব কারখানা বন্ধে প্রশাসনকে তেমন কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। এলাকাভিত্তিক চায়না দুয়ারী জাল তৈরি মালিক সমিতি গঠন করা হয়েছে। মৎস্য সুরক্ষা ও সংরক্ষণ আইন ১৯৫০ অনুযায়ী চায়না দুয়ারী জাল সহ যে কোন ফিক্সড ইঞ্জিন উৎপাদন, মজুদ, আমদানি,বাজারজাতকরণ,পরিবহণ, নিজের অধিকারে রাখা,প্রদর্শন করা অথবা ব্যবহার আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। তবে এসবের তোয়াক্কা না করে প্রকাশ্যে চলছে এ জাল তৈরি, রপ্তানি,বাজারজাতকরণ ও বহন।
ইতিমধ্যে এ বিষয় ফরিদপুর উপজেলা প্রশাসন বেশ কয়েকবার অভিযান পরিচালনা করেছে। অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান।
মিরাজ খান