
ছবিঃ সংগৃহীত
বিশ্বজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বড় একটি পরিবর্তনের পথে হাঁটছে ফেসবুক। জনপ্রিয় এই প্ল্যাটফর্মটি তাদের মূল অ্যাপ থেকে সরিয়ে দিচ্ছে প্রচলিত 'ভিডিও' সেকশন। এর পরিবর্তে চালু করা হচ্ছে একটি সম্পূর্ণ নতুন ‘রিলস’-নির্ভর ভিডিও হাব। অর্থাৎ, বড় দৈর্ঘ্যের ভিডিওর পরিবর্তে এখন ফেসবুকে দেখা যাবে শুধু সংক্ষিপ্ত, স্ক্রলযোগ্য ভিডিও কনটেন্ট।
নতুন রিলস হাবে কী থাকছে?
ফেসবুকের নতুন রিলস হাবে ব্যবহারকারীরা কেবলমাত্র মোবাইল ফ্রেন্ডলি, শর্ট ভিডিও দেখতে, তৈরি করতে ও শেয়ার করতে পারবেন। ইনস্টাগ্রাম ও টিকটকের আদলেই সাজানো এই হাবটি ফেসবুকের ভিডিও অভিজ্ঞতাকে এক নতুন মোড় দিতে যাচ্ছে।
মেটার (Meta) এক মুখপাত্র জানান, “আমরা ফেসবুককে আরও দ্রুত, সহজ ও আকর্ষণীয় করতে চাই। তাই ভিডিও অভিজ্ঞতায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। রিলসই এখন ফেসবুকের ভবিষ্যৎ।”
কেন এই পরিবর্তন?
এই পরিবর্তনের পেছনে রয়েছে একাধিক বড় কারণ:
টিকটকের উত্থান:
শর্ট ভিডিও প্ল্যাটফর্ম টিকটকের অভাবনীয় সাফল্য অন্য সব সোশ্যাল মিডিয়াকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে। এর প্রভাবেই ইউটিউব চালু করেছে ‘শর্টস’, ইনস্টাগ্রাম চালু করেছে ‘রিলস’। এবার ফেসবুকও পুরোপুরি শর্ট ভিডিওর পথে হাঁটছে।
মোবাইল ব্যবহারকারীর আধিক্য:
অধিকাংশ ব্যবহারকারী এখন মোবাইল ডিভাইস থেকেই ফেসবুকে ঢোকেন। ছোট দৈর্ঘ্যের কনটেন্ট তাদের জন্য বেশি উপযোগী, যা রিলসের মাধ্যমেই সবচেয়ে কার্যকরভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব।
এলগরিদম ও এনগেজমেন্ট সুবিধা:
ফেসবুকে রিলস কনটেন্ট সাধারণত বেশি লাইক, শেয়ার ও মন্তব্য পায়। ফলে ব্যবহারকারীরা বেশি সময় প্ল্যাটফর্মে থাকেন এবং কনটেন্ট নির্মাতারাও বেশি সক্রিয় থাকেন।
কারা সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হবেন?
কনটেন্ট নির্মাতারা:
যারা আগে বড় ভিডিও তৈরি করে ফেসবুকে আপলোড করতেন, তাদের এখন রিলস ফরম্যাটে মানিয়ে নিতে হবে। নতুন ফরম্যাট মানে নতুন কৌশল।
বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও বিজ্ঞাপনদাতা:
মার্কেটিং কৌশল বদলাতে হবে। সংক্ষিপ্ত ও আকর্ষণীয় ভিডিও বানানো এখন সময়ের দাবি।
সাধারণ ব্যবহারকারীরা:
ভিডিও ট্যাব না থাকলেও রিলসের সহজ এবং বিনোদনমূলক অভিজ্ঞতা অনেক ব্যবহারকারীর জন্য আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।
ভবিৎষ্যতের দিকনির্দেশনা
ফেসবুকের এই পরিবর্তন প্রমাণ করে, সোশ্যাল মিডিয়া জগতে টিকে থাকতে হলে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতেই হয়। অনেকে মনে করছেন, ফেসবুক ধীরে ধীরে টিকটকের বিকল্প প্ল্যাটফর্মে পরিণত হচ্ছে। আবার কেউ কেউ এটিকে সময়োপযোগী এবং ব্যবহারকারী-কেন্দ্রিক একটি উদ্যোগ হিসেবেও দেখছেন।
তবে এই পরিবর্তন একটি প্রশ্নও সামনে আনছে—সব প্ল্যাটফর্ম কি এখন একই ধরনের অভিজ্ঞতা দিচ্ছে? বৈচিত্র্য হারানোর ঝুঁকির দিকটিও ভাবনার বিষয় হয়ে উঠছে বিশ্লেষকদের কাছে।
আলীম