
দেশজুড়ে শুরু হয়েছে টানা বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া। এমন পরিস্থিতিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর সমুদ্রবন্দরগুলোতে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে। উপকূলীয় অঞ্চলে বেড়ে গেছে ঝুঁকি, বন্ধ হয়ে গেছে একাধিক নদী ও সাগরগামী নৌযান চলাচল।
আবহাওয়ার এই অবস্থার কারণে উপকূলের বিভিন্ন অঞ্চলের নৌচলাচল আংশিকভাবে বন্ধ রয়েছে। বিশেষ করে যেসব এলাকা সাগরের সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত, সেখানে সতর্কতার মাত্রা অনেক বেশি। ভোলার চারটি নদী পথে লঞ্চ চলাচল সম্পূর্ণরূপে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
মনপুরা ও বেতুরাঘাট লঞ্চঘাট থেকে শুরু করে চারটি প্রধান রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। লক্ষ্মীপুর থেকেও কোনো লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে না। অন্যদিকে, যেসব রুটে ঝুঁকি অপেক্ষাকৃত কম, সেসব স্থানে লঞ্চ চলাচল এখনও স্বাভাবিক রয়েছে।
সাগরগামী জেলেদের জন্য আগেই সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছিল। যারা সাত দিন আগে সাগরে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন, তাদের অধিকাংশই ইতোমধ্যে উপকূলে ফিরে এসেছেন। নতুন করে কাউকে সাগরে না যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে এবং বর্তমানে সকল সাগরগামী মাছ ধরা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গড়ে ৩৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এই টানা বৃষ্টির কারণে জীবিকা নির্বাহে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন খেটে খাওয়া মানুষজন। বিশেষ করে দিনমজুর, মাছ বিক্রেতা ও রিকশাচালকরা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে।
আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, আগামী কয়েকদিন এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। সেক্ষেত্রে মানুষজনকে অতিরিক্ত সতর্ক থাকার পাশাপাশি স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ থেকে দূরে থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কারণ বৃষ্টির পানি জমে থাকলে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়ার শঙ্কা থাকে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, উপকূলজুড়ে এখন বিরাজ করছে উৎকণ্ঠার পরিবেশ। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, এই দুর্যোগ কেটে গেলে ধীরে ধীরে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হবে। তবে ততদিন পর্যন্ত মানুষজনকে সাবধানতা অবলম্বন করে চলতে হবে এবং জরুরি না হলে ঘরের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বৃষ্টিপাত ও দমকা হাওয়ায় উপকূলীয় অঞ্চলে জনজীবন থমকে গেছে। মাছ ধরা, নৌচলাচল এবং খেটে খাওয়া মানুষের রুজি-রোজগারে পড়েছে বড় প্রভাব। এখনই সতর্ক না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে। আবহাওয়ার উন্নতির অপেক্ষায় গোটা উপকূলবাসী।
আফরোজা