
ছবি: সংগৃহীত
সাফল্য কি শুধু মেধার ফল? নাকি অভ্যাসেরও একটা বড় ভূমিকা রয়েছে? বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন গড় শিক্ষার্থীও যদি কিছু নির্দিষ্ট অভ্যাস গড়ে তোলে, তবে তিনিও হয়ে উঠতে পারেন একজন ‘টপার’। নিচে এমন ১০টি গুরুত্বপূর্ণ অভ্যাস তুলে ধরা হলো, যেগুলো একজন শিক্ষার্থীকে সাধারণ থেকে অসাধারণ করে তোলে।
১. উচ্চ ফলপ্রাপ্তদের বৈশিষ্ট্য বোঝা
শুধু মেধা নয়, সফল শিক্ষার্থীদের আলাদা করে তোলে তাদের পরিকল্পনা, মনোযোগ এবং অধ্যবসায়। তারা কীভাবে পড়ে, কোন কৌশলে প্রস্তুতি নেয়—তা বুঝে নেওয়াটাই প্রথম ধাপ।
২. ঘুমানোর আগে পরদিনের পরিকল্পনা করে রাখা
পরদিনের কাজগুলো আগেভাগে লিখে রাখলে সকালে লক্ষ্য স্পষ্ট থাকে এবং সময় অপচয় কম হয়।
৩. ঘুম থেকে উঠে সঙ্গে সঙ্গে ফোন না দেখা
দিনের শুরুতে মোবাইল বা সামাজিক মাধ্যম নয়, বরং পড়াশোনার লক্ষ্য স্থির করেই দিন শুরু করাটা মনোযোগ বাড়ায়।
৪. ছোট, মনোযোগী অধ্যয়ন সেশন
দীর্ঘ সময় না পড়ে ছোট ছোট (২৫-৩০ মিনিটের) মনোযোগী সেশনেই ভালো ফল পাওয়া যায়। ‘পোমোডোরো টেকনিক’ এখন জনপ্রিয় একটি পদ্ধতি।
৫. বারবার পড়ে নয়, নিজেকে প্রশ্ন করে পড়া
‘অ্যাকটিভ রিকল’ বা নিজেকে প্রশ্ন করে তথ্য মনে করার অভ্যাসটি বেশি কার্যকর, কারণ এতে দীর্ঘমেয়াদে স্মৃতিশক্তি বাড়ে।
৬. নিজে নিজে উচ্চস্বরে বোঝানো
যে শিক্ষার্থী নিজে যা শিখেছে তা অন্যকে বোঝাতে পারে, সে নিজেই তা সবচেয়ে ভালো বোঝে। একে বলে ‘ফেইনম্যান টেকনিক’।
৭. স্ক্রিন ছাড়া বিরতি নেওয়া
পড়ার ফাঁকে বিরতি দরকার, কিন্তু মোবাইল বা ল্যাপটপ স্ক্রিন থেকে দূরে থাকাই প্রকৃত বিশ্রাম। চোখ ও মন দুটোই আরাম পায়।
৮. জটিল বিষয় দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলা
কোনো বিষয় বুঝতে সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গেই শিক্ষক বা বন্ধুর সাহায্য নেওয়া উচিত, না হলে সেটি ভবিষ্যতে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
৯. পড়ার স্থান পরিচ্ছন্ন ও সরল রাখা
গোছানো পড়ার টেবিল বা জায়গা মনোযোগ বাড়ায়। অপ্রয়োজনীয় জিনিস যত কম, পড়ার মান তত ভালো।
১০. দুর্বল বিষয়ের উপর বেশি মনোযোগ
অনেকেই শুধু যেটা ভালো পারে সেটাই বারবার পড়ে, কিন্তু টপাররা তাদের দুর্বল জায়গা চিহ্নিত করে সেগুলোর উপরেই বেশি সময় ব্যয় করে।
এই অভ্যাসগুলো যে শুধু পরীক্ষায় ভালো ফলের জন্য নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি শেখার ও আত্মোন্নয়নের জন্যও সহায়ক—তা বলছেন অভিজ্ঞ শিক্ষকরাও। তাই যারা গড় মান থেকে নিজেকে টপ লেভেলে নিতে চান, তাদের জন্য এই অভ্যাসগুলোই হতে পারে সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।
শেখ ফরিদ