আওয়ামী লীগের বিশাল শান্তি সমাবেশে দলটির সিনিয়র নেতারা মার্কিন ভিসানীতির দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, আজকে যারা মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে অতি উৎসাহী হয়েছে, তারা জানে না খুব শীঘ্রই তারা মুখ থুবড়ে পড়বে। তারা নতুন করে আবার হতাশায় নিমজ্জিত হবে। মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে পশ্চিমা বিশে^র কিছু দেশ, কিছু নেতা, যারা বিভ্রান্ত হচ্ছেন, নানা রকম কৌশল করছেন, তাদের কাছে আমরা বলতে চাই- একাত্তরে আমরা পরাজিত হইনি, ওই নৌবহরের হুমকিতে আমরা পালিয়ে যাইনি। একাত্তর ও পঁচাত্তরের ঘাতক ও তাদের বিদেশী মদদদাতাদের কোনো ষড়যন্ত্রই জনগণ সফল হতে দেবে না।
শনিবার বিকেলে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে ‘শান্তি ও উন্নয়ন’ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যৌথ উদ্যোগে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য এবং জাতীয় সংসদের উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, শান্তি রক্ষার উদ্দেশ্যে ও বিএনপি জামায়াতের নৈরাজ্যের প্রতিরোধে যে প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করা হয়েছে আমি তার সঙ্গে একমত। আজকে একটাই কথা দেশকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশকে আমরা শান্তি এবং উন্নয়ন-অগ্রগতি ও প্রগতির পথে নিয়ে যেতে চাই। এজন্য বারবার দরকার শেখ হাসিনার সরকার। আগামী দিনে শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় এনে এই স্লোগানকে আমরা বাস্তবায়ন করব।
আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যারা স্বাধীনতাযুদ্ধে আমাদের সমর্থন দেয়নি, যারা সপ্তম নৌবহর পাঠিয়েছিল, ওই পাক বাহিনীকে যারা অস্ত্র দিয়েছিল, তাদের মোকাবিলা করে আমরা দেশকে স্বাধীন করেছি। আমরা পরাজিত হইনি। আজকেও বলতে চাই, মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে পশ্চিমা বিশে^র কিছু দেশ, কিছু নেতা যারা বিভ্রান্ত হচ্ছেন, নানা রকম কৌশল করছেন, তাদের কাছে আমরা বলতে চাই- একাত্তরে আমরা পরাজিত হইনি, ওই নৌবহরের হুমকিতে আমরা পালিয়ে যাইনি। আজকের এই সমাবেশ প্রমাণ করে, অতীতেও আমরা ব্যর্থ হইনি, আগামীতেও হব না।
আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম বলেন, আগামী সংসদ নির্বাচন জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে হবে। এই নির্বাচন বানচাল করার জন্য দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্র আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। বিএনপির আন্দোলনের হুমকির জবাবে তিনি বলেন, কীসের ভয় দেখান? গত ১৫ বছর দেখেছি আপনাদের। আন্দোলন করবেন, শেখ হাসিনাকে হটাবেন। এক ইঞ্চিও নড়াতে পারেনি। আর আছে মাত্র তিন মাস। এই সময়ে আমরা রাজপথে পাহারা দেব। যদি কোনো সন্ত্রাস করেন, অগ্নিসংযোগ করেন, নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করেন, রাজপথে মোকাবিলা করব।
আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, ষড়যন্ত্র চলছে। একাত্তর ও পঁচাত্তরের ঘাতক ও তাদের বিদেশী মদদদাতারা একাত্ম হয়ে ষড়যন্ত্র করছে। স্যাংশনের কথা বলে, ভিসানীতির কথা বলে তারা আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নামে ক্ষমতার পরিবর্তন করতে চায়। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করতে চায়। তিনি আরও বলেন, ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে এই বাংলাদেশ। এটা আফগানিস্তান নয়, পাকিস্তান নয়। আফগানিস্তান, পাকিস্তানে পুতুল সরকার বানাতে পারেন। কিন্তু এটা বাংলাদেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। কোনো ষড়যন্ত্র বাংলার মানুষ বরদাস্ত করবে না।
আওয়ামী লীগে সভাপতিম-লীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, আজকের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এই পিচ্ছিল পথে আবার নির্বাচন এসেছে। আবার জামায়াত-বিএনপি সোচ্চার হয়েছে। তারা জানে না, আওয়ামী লীগ আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। বিএনপি-জামায়াত আপনারা যতই উৎফুল্ল হোন, আপনারাও এই ফাঁদে পড়বেন। তাই বলি- নির্বাচনে আসুন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আমরা চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি মোকাবিলা করছি। এ কারণে আমাদের সব সময় সতর্ক থাকতে হবে। আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ কখনো ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় থাকেনি, ক্ষমতায় যায়নি। আমরা নির্বাচনে বিশ^াস করি। নির্বাচনই জনসমর্থনের ভিত্তি। জনমানুষের সমর্থন নিয়েই গণমানুষের দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। যতই ষড়যন্ত্র করেন, আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে চতুর্মুখী শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেই নির্বাচনী বৈতরণী পার হব।
আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, আজকে যারা মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে অতি উৎসাহী হয়েছেন, তারা জানে না খুব শীঘ্রই মুখ থুবড়ে পড়বে। তারা নতুন করে আবার হতাশায় নিমজ্জিত হবে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, বাংলাদেশ শেখ হাসিনার হাত ধরে এগিয়ে যাচ্ছে। ঠিক সেই সময় নতুন করে যড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। নির্বাচনকে বিএনপি-জামায়াত যদি বাধাগ্রস্ত করতে চায় রাজপথে তাদেরকে মোকাবিলা করা হবে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, বিএনপি-জামায়াতসহ যারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়, যারা সন্ত্রাসী কর্মকা- করে, লাশের রাজনীতি কায়েম করে সা¤্রাজ্যবাদীদের তল্পিবাহক হিসেবে বাংলাদেশকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যেতে চায়, ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে চায়, আমাদের জীবন থাকতে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে এটা করতে দেব না। নির্বাচনে যারা ষড়যন্ত্র করবে, তাদের প্রতিহত করা হবে।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির।