জাতীয় সংসদ নির্বাচন যত পিছিয়ে যাবে দেশে সংকট তত তীব্র হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবিলম্বে গ্রহণযোগ্য ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে ‘বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলন’ আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। অপর এক অনুষ্ঠানে বিএনপির মুখপাত্র ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, জাগ্রত চেতনাকে বিভাজনের রেখা দিয়ে বিভক্ত করা যাবে না।
দুদু বলেন, দেশে দ্রব্যমূল্যের অতি উত্থানে বাজারে আগুন লেগেছে। দ্রব্যমূল্য এতটাই বেড়েছে যে মানুষ অস্বস্তিতে পড়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই অবস্থা হবে সেটা কেউ প্রত্যাশা করেনি। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
দুদু বলেন, ১৬ বছর ধরে শেখ হাসিনা বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছে। আর তারেক রহমান বিচক্ষণতার সঙ্গে বিএনপিকে রক্ষা করেছেন। আমাদের আন্দোলনের একমাত্র মাস্টারমাইন্ড হচ্ছেন তারেক রহমান। কার্যকর আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য যা করা দরকার সবই করেছেন তিনি। এটা যদি কাউকে ব্যাখ্যা করে বোঝাতে হয় তাহলে একটু অসুবিধা আছে।
দুদু বলেন, বর্তমান সরকারের কাছে আমাদের ছোট একটি প্রত্যাশা ছাড়া তেমন কিছু নেই। দীর্ঘ ১৫ থেকে ২০ বছর ধরে দেশের মানুষ ভোট দিতে পারেনি। ড. মুহাম্মদ ইউনূস তার জ্ঞান গরিমা ও কর্মের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ব্যক্তি। জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে এ কথাটা যতদিন তিনি জাতিকে জানাতে না পারবেন, ততদিন নানা বিতর্ক তৈরি হবে।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, যত তাড়াতাড়ি নির্বাচন করা সম্ভব হবে তত তাড়াতাড়ি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। যত তাড়াতাড়ি নির্বাচন হবে তত তাড়াতাড়ি নির্বাচিত সরকার দেশ পরিচালনায় তার উপযুক্ততা প্রমাণ করতে পারবে। সেজন্য যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সিদ্ধান্ত নিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এম জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব প্রকৌশলী মোফাজ্জল হোসেন হৃদয়ের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমতুল্লাহ, কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ আব্দুল্লা আল বাকি, সহ-সাধারণ সম্পাদক রবিউল হোসেন রবি প্রমুখ।
জাগ্রত চেতনাকে বিভাজনের রেখা দিয়ে বিভক্ত করা যাবে না- রিজভী ॥ দেশের মানুষের জাগ্রত চেতনাকে বিভাজনের রেখা দিয়ে আর বিভক্ত করা যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মুখপাত্র ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে পূজাম-প পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপ করতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, দেশে আজ হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই একসঙ্গে দুর্গাপূজার উৎসবকে আরও বেশি উন্মুক্ত, আরও বেশি উদ্বেলিত করার জন্য প্রত্যেকটি সম্প্রদায়ের মানুষ মিলে পাহারা দিচ্ছে। কোনো কুচক্রী মহল যাতে তাদের উদ্দেশ্য সাধন করতে না পারে সে জন্য সবাই সতর্ক রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার এই উৎসবকে আরও আনন্দদায়ক করার জন্য চেষ্টা চালিয়েছেন।
রিজভী বলেন, শতাব্দী প্রাচীন এই দুর্গাপূজা উৎসব যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। এই উৎসবের দরজা কখনো বন্ধ থাকেনি। আমরা এই উৎসবের বেদিতে দাঁড়িয়ে এখানে একেকজন ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের হতে পারি, কেউ হিন্দু, কেউ বৌদ্ধ, কেউ মুসলিম। কিন্তু আমরা তো একই ভূখ-ে দাঁড়িয়ে আছি। একই আলো-বাতাস-জলের মধ্যে অবগাহন করি। এই অবগাহনের মধ্য দিয়ে আমাদের চিন্তা- চেতনা জাগ্রত হয়েছে। জাগ্রত চেতনাকে বিভাজনের রেখা দিয়ে আর বিভক্ত করা যাবে না। তবে একসময় শুধু নিজের স্বার্থের জন্য জঙ্গি, সাম্প্রদায়িক যে বিভেদ রেখা তৈরি করা হয়েছিল সেটা এখন আর করতে পারবে না।
রিজভী বলেন, যারা বিবাদের বাণী শুনিয়েছে তারা রাজনৈতিক উদ্দেশে, ব্যক্তিস্বার্থে শুনিয়েছে। আমাদের এই জমাট অটুট বন্ধনকে নষ্ট করার জন্য বলেছে। হাজার বছর ধরে আমরা একসঙ্গে দেশে বাস করছি। বৌদ্ধদের আমল, হিন্দুদের আমল, মুসলমানদের আমলসহ বিভিন্ন আমল থাকতে পারে কিন্তু উৎসবের কোনো আমল ছিল না। ছিল মহামিলনের একটি জায়গা, একটি প্রাঙ্গণ। সেই প্রাঙ্গণ যাতে কেউ বিনষ্ট না করতে পারে আমাদের সবাইকে সেদিকে সজাগ থাকতে হবে।
এ সময় রিজভীর সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন উপস্থিত পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, বিএনপির সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, যুবদলের নেতা মেহেবুব মাসুম শান্ত, ছাত্রদলের নেতা মাসুদুর রহমান ও রাজু আহমেদ প্রমুখ।
১৯ বছর পর আজ দেশে ফিরছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি মালিক ॥ ১৯ বছর পর আজ রবিবার দেশে ফিরছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও দলের চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এমএ মালিক। আজ দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবেন তিনি। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাবেন বিএনপি নেতারা। বিমানবন্দর থেকে তিনি সরাসরি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে নয়াপল্টন কার্যালয়ে যাবেন বলে বিএনপি সূত্র জানিয়েছেন।
শাহবাগ থানা বিএনপির ২০ নং ওয়ার্ডের সকল কার্যক্রম স্থগিত ॥ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির শাহবাগ থানাধীন ২০ নং ওয়ার্ডের সকল কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু এবং সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন শনিবার গণমাধ্যমকে দলের এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন। তারা সংশ্লিষ্ট সকলকে দলের পরিচয় দিয়ে কোনোরকম কার্যক্রম না চালাতে কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছেন।