
ছবি: জনকণ্ঠ
কুড়িগ্রামের কাঁঠালবাড়ি ও ছিনাই ইউনিয়নের দেবালয় ও দুধখাওয়া গ্রামে শত শত একর জমির পাশের রাস্তায় প্রায় দেড় দশক আগে বনবিভাগ কর্তৃপক্ষ সমিতির মাধ্যমে ইউক্যালিপটাস গাছের চারা লাগিয়েছিল। গাছ কাটার বয়স পার হলেও বনবিভাগ কর্তৃপক্ষ কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না। ফলে জমির মালিক ও কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন।
ইউক্যালিপটাস গাছের কারণে প্রতিটি জমিতে ছায়া পড়ছে এবং গাছের পাতা পড়ে জমির ক্ষতি হচ্ছে। অন্যদিকে গাছের শেকড় জমিতে ছড়িয়ে পড়ায় কৃষকরা ঠিকমতো হাল দিতে পারছেন না। কৃষকরা বারবার বনবিভাগকে গাছ কাটার অনুরোধ করলেও তারা কোনো গুরুত্ব না দিয়ে কালক্ষেপণ করছে। এতে কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। গাছের ছায়ার কারণে ধানের ফলন কম হচ্ছে, অন্যদিকে এসব ইউক্যালিপটাস গাছ পরিবেশেরও ক্ষতি করছে। কর্তৃপক্ষ দ্রুত গাছ না কাটলে কৃষকরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
দেড় দশক আগে ওই দুই গ্রামের কৃষকরা নিজেদের চলাচলের জন্য তাদের জমির ওপর রাস্তা তৈরি করেছিলেন। তখন রাজারহাট বন বিভাগ কর্তৃপক্ষ ওই রাস্তায় সমিতির মাধ্যমে ইউক্যালিপটাস গাছ লাগায়। কৃষকদের কাছে শর্ত ছিল যে, গাছ বড় হওয়ার সাথে সাথে কেটে নিয়ে যাবে। কিন্তু দেড় দশক পেরিয়ে গেলেও তারা গাছ কাটার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এতে কৃষকরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। গাছের পাতা জমিতে পড়ে পানি বিষাক্ত হয়ে পড়ছে এবং জমির জীববৈচিত্র্য ও প্রাণীগুলো মারা যাচ্ছে।
এক কৃষক জানান, "এই গাছগুলো লাগার পর থেকে আমাদের ভীষণ ক্ষতি হচ্ছে; জমিতে কোনো ফসল হচ্ছে না।" কৃষকরা বলছেন, বনবিভাগ কর্তৃপক্ষ যেন তাদের গাছ কেটে নিয়ে যায়। ক্ষেতে ফসল না হওয়ায় বর্গাচাষীরাও এখন আবাদ করতে চাইছে না। "আমরা এই জমি আজ ৫০ বছর ধরে আবাদ করি। এটা কোনো সরকারি রেকর্ডি রাস্তা না। আমরা নিজ উদ্যোগে রাস্তা তৈরি করেছি। সেখানে বনবিভাগ কর্তৃপক্ষ এমনভাবে গাছ লাগিয়েছে যে, ধানের ট্রলি এখন এই রাস্তায় নিয়ে যাওয়া যায় না," জানান এক গ্রামবাসী।
গ্রামবাসীরা জানান, "আগে মোটামুটি এই জমিগুলোতে অনেক বেশি ফলন হতো, এখন এই গাছগুলো লাগার পর থেকে ক্ষেতের ফলন কম হচ্ছে। ধানক্ষেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনেক সময় ধান পরিপক্ব না হতেই কেটে নিয়ে যেতে হয়। এতে ফলন অনেক কম হয়।"
রাজারহাট বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাদিকুর রহমান জানান, "আমরা ইতিমধ্যে ওই দুই গ্রামের জমির পাশে রাস্তার ইউক্যালিপটাস গাছ কাটার জন্য বিভাগীয় কর্মকর্তার কাছে চিঠি দিয়েছি। উপর থেকে নির্দেশনা আসলেই আমরা গাছগুলো কাটার ব্যবস্থা করব।"
সাব্বির