
কুমিল্লার মুরাদনগরে ট্রিপল মার্ডারের দায়ের করা মামলার আসামিকে আদালতে দেখেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন নিহত রুবির মেয়ে মামলার বাদী রিক্তা আক্তার। তিনি বলেন, এটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এসময় নিজের ও সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। এই নির্মম হত্যাকাণ্ডে প্রাণে বেঁচে যান রিক্তা ও তার তিন সন্তান। তবে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তার ছোট বোন রুমা। আদালত প্রাঙ্গণে রিক্তা তার আসামিদের উদ্দেশ্যে চিৎকার করে বলেন, “তোদের বলেছিলাম তোরা আমার মা-বোনকে মারিস না। তোরা কি বলছস? তোরা বলছিলি অপারেশন শুরু হয়ে গেছে। তোরা কীভাবে মারলি?
তিনি আদালত প্রাঙ্গনে সাংবাদিকদের কাছে আরো বলেন, যে শত্রু আমার পেছনে লেগেছে, তারা এখন আমাকে হুমকি দিচ্ছে। আমি কখন মারা যাই, আমি জানিনা। আমি ও আমাদের পরিবারের যারা বেঁচে আছি আমরা সবাই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমাদেরকে কে নিরাপত্তা দেবে? আমি দেশবাসীর কাছে বিচার চাই। সবার কাছে অনুরোধ আমার মা, ভাই-বোনের হত্যার বিচার কইরা আমাকে দেখাই দিবেন। আমি প্রত্যেকের ফাঁসি চাই।”
তিনি আরো জানান, একটি মোবাইল চুরি নিয়ে গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে বুধবার রাতে আমাদের পরিবারকে হুমকি দেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। পরদিন সকালে বাড়িতে হামলা চালানো হয়। হামলার সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল ও বাচ্চু মেম্বার ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি করেন রিক্তা। তার অভিযোগ, এটি একটি সুপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং এতে সরাসরি জড়িত ছিলেন চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ গ্রামের গন্যমান্য ব্যক্তিরা। এদিকে এই ঘটনায় এ পর্যন্ত ৮ জন আসামীকে আটক করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী।
আটককৃতরা হলেন, বাঙ্গরা বাজার থানার করইবাড়ী এলাকার মৃত আলী আকবরের ছেলে বাচ্চু মিয়া (৫৫), মৃত ছপি মোল্লার ছেলে রবিউল আউয়াল (৫৫), বাচ্চু মিয়ার ছেলে আতিকুর রহমান (৪২), রবিউল আউয়ালের ছেলে মোঃ বায়েজ মাস্টার (৪৩) এবং হায়দরাবাদ এলাকার মালু মিয়ার ছেলে দুলাল (৪৫) ও দুলাল মিয়ার ছেলে আকাশ (২২) এবং আকুবপুর ইউনিয়নের পীর কাশিমপুর এলাকার সবির আহমেদ ও নাজিম উদ্দিন বাবুল।
নেক্কারজনক এ ঘটনার পর কড়ইবাড়ী গ্রাম জনমানবহীন হয়ে পড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে দোকানপাট। রক্তাক্ত এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এখনো এলাকার পরিবেশ স্বাভাবিক হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রিফাত