ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

স্বাস্থ্য

মুখে দুর্গন্ধ!

মুখে দুর্গন্ধ!

মুখে দুর্গন্ধ অত্যন্ত বিড়ম্বনাকর অনুভূতি যার কারণে একজন মানুষের অন্য মানুষের সঙ্গে আন্তঃযোগাযোগ সংযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রেও বিরূপ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। মুখের দুর্গন্ধ মুখের অভ্যন্তরের কিছু রোগ ছাড়াও শরীরের অন্যান্য রোগের লক্ষণ হিসাবে দেখা দেয়। রেগ বা সমস্যায় মুখের অভ্যন্তরে যেসব কারণে দুর্গন্ধ হতে পারে সেগুলো হলো: (ক) মাড়ি রোগ-একিউট নেকরোটাইজিং আলসারেটিভ জিনজিভাইটিস বা পচনশীল ঘাযুক্ত মাড়ির প্রদাহ। খ) পেরিওডন্টাল রোগ: এ রোগে অসংখ্য এ্যানোরবিক ব্যাকটেরিয়া মুখে দুর্গন্ধের সৃষ্টি করে থাকে। গ) মুখের অভ্যন্তরে কৃত্রিম দাঁত যদি একরাইলিক জাতীয় হয়ে থাকে। শুধু তাই নয়, যদি কৃত্রিম দাঁতের সঠিকভাবে যতœ নেয়া না হয় তাহলেও মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। (ঘ) ফোঁড়াযুক্ত দাঁত (ঙ) দাঁতে ক্ষয় (সাময়িক) (চ) ইমপ্যাকটেড দাঁত বা প্রতিবন্ধকতাপ্রাপ্ত দাঁত। অভ্যাসগত যেসব কারণে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে সেগুলো হলো: (ক) মুখের মাধ্যমে শ্বাস নেয়া। (খ) ধূমপান। (গ) কিছু খাদ্যদ্রব্য যেমন- পেঁয়াজ, রসুন কাঁচা খেলে। (ঘ) এলকোহল সেবন। (ঙ) নিয়মিত দাঁত ব্রাশ বা ফ্লসিং না করা। (চ) জিহ্বা পরিষ্কার না করা। শরীরের অন্যান্য রোগের কারণে মুখে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয় নিম্নলিখিত কারণে: (ক) একিউট রেনাল ফেইলিউর বা হঠাৎ কিডনি বিকল হওয়া। (খ) ক্রনিক কিডনি ফেইলিউর বা কিডনি বিকল হওয়া পুরাতন রোগীদের। (গ) ডায়াবেটিস (ঘ) বাওয়েল অবস্ট্রাকশন বা অন্ত্রের কোন প্রতিবন্ধকতা। (ঙ) ইসোফেজিয়াল ক্যান্সার। (চ) গ্যাস্টিক কারসিনোমা বা ক্যান্সার। (ছ) ডায়াবেটিক কিটোএসিডোসিস। (জ) হেপাটিক এনসোফালোপ্যাথি বা লিভারের সমস্যা। (ঝ) ফুসফুসের ফোঁড়া বা এবসেস। (ঞ) এট্রপিক রাইনাইটিস। (ট) সাইনুসাইটিস (ঠ) গর্ভাবস্থা। (ড) ক্রনিক ফুসফুসের রোগ। (ঢ) যেসব ওষুধ শুষ্ক মুখ করে থাকে সেগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণেও মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। ওষুধগুলো হলো: * বিষন্নতানাশক ওষুধ। * এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ। * এ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধ। (ণ) গলায় সংক্রমণ। (ত) ফুসফুসের সংক্রমণ। মুখের দুর্গন্ধ প্রতিরোধের উপায় : (ক) দাঁত নিয়মিত ব্রাশ করতে হবে। (খ) জিহ্বা পরিষ্কার রাখতে হবে। (গ) নাক পরিষ্কার করা। (ঘ) সাইনাস পরিষ্কার রাখা। (ঙ) পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা। (চ) ধূমপানের বদঅভ্যাস ত্যাগ করতে হবে। (ছ) নেশা জাতীয় দ্রব্য পরিহার করতে হবে। মুখের দুর্গন্ধের আংশিক চিকিৎসা : (ক) পেরিওডন্টাল রোগ থাকলে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। কারণ-পেরিওডন্টাল রোগে এ্যানোরবিক ব্যাকটেরিয়া দুর্গন্ধের সৃষ্টি করে থাকে। (খ) যেসব কারণে শুষ্ক মুখের সৃষ্টি হয়ে থাকে তার চিকিৎসা করতে হবে। (গ) দুর্গন্ধের চিকিৎসায় কে ফোর্স ব্রেথ গার্ড মাউথওয়াশ ব্যবহার কতে হবে। (ঘ) চিনিমুক্ত চুইংগাম মুখে দুর্গন্ধ দূর করতে সাময়িক সাহায্য করতে পারে। ফিস অডার সিনড্রোম বা মুখ থেকে মাছের গন্ধ! মুখ থেকে মাছের ন্যায় গন্ধ ভাবতেই যে কোন মানুষ অস্বস্তিতে ভুগবেন। এ ধরনের সমস্যা কম, তবে হতে পারে। আমাদের শরীর কখনও কখনও ট্রাইমিথাইল অ্যামাইন ঠিকভাবে ভাঙ্গতে পারে না যা কিছু খাদ্যে পাওয়া যায়। ফলে ট্রাইমিথাইল অ্যামাইন শরীরে জমা হতে থাকে যা ঘাম, প্রস্রাব এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে বের হয়ে যায়। শ্বাস নেয়ার সময় বা ত্যাগ করার সময় তখন মাছের ন্যায় গন্ধ পাওয়া যায়।

স্বাস্থ্য বিভাগের সব খবর

ভিটামিন বি৩, বি৬ এবং বি৭

ভিটামিন বি৩, বি৬ এবং বি৭

ভিটামিন বি৩ঃ ভিটামিন বি৩ বা নিয়াসিন হজমে সাহায্য করে, চর্ম এবং স্নায়ুর কাজ সম্পাদনে সহায়তা করে থাকে। শরীরের এন্টি অক্সিডেন্ট সুরক্ষায় কাজ করে থাকে। খাদ্য থেকে শক্তিতে রূপান্তরের ক্ষেত্রে ভিটামিন বি৩ ভূমিকা রাখে। যাদের টাইপ-২ ডায়াবেটিস রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে কোলস্টেরল লেভেল প্রায় সময়ই বেশি থাকে। অন্যান্য ঔষধের সাথে ভিটামিন বি৩ বা নিয়াসিন কোলস্টেরল এর পরিমাণ কমাতে পারে। ভিটামিন বি৩ এর উৎসঃ টুনা এবং শ্যামন সামুদ্রিক মাছ, মুরগী, লিভার বা কলিজা, গরুর মাংস, মাশরুম, ব্রাউন রাইস, এভোকাডো, বাদাম ইত্যাদি। ভিটামিন বি৩ বা নিয়াসিনের অভাব হলেঃ নিয়াসিনের অভাব হলে দুর্বলতা, মাথা ব্যাথা, বিষন্নতা, স্মৃতি শক্তি কমে যাওয়া ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।  ভিটামিন বি৩ অতিরিক্ত খেলেঃ ভিটামিন বি৩ অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে লিভারের ক্ষতি হতে পারে, পেপটিক আলসার এবং ত্বকের র‌্যাশ বা লাল দাগ দেখা দিতে পারে। কখনও কখনও নিয়াসিন ব্লাড সুগার লেভেল বৃদ্ধি করতে পারে। ভিটামিন বি৬ এর উৎসঃ ভিটামিন বি৬ পাওয়া যায় টুনা মাছ, মুরগির কলিজা, পনির, ডিম, গরুর মাংস, গাজর, স্পাইনাক, মিষ্টি আলু, কলা, এভোকাডো ইত্যাদি। ভিটামিন বি৬ এর অভাব হলে রক্ত স্বল্পতা, স্নায়ুবিক সমস্যা এবং মানসিক দুর্বলতা দেখা দিতে পারে। ভিটামিন বি৭ ঃ ভিটামিন বি৭ বা বায়োটিন এর অভাব হলে ত্বকের র‌্যাশ, চুল পড়ে যাওয়া, উচ্চ কোলস্টেরল এবং হার্টের সমস্যা  দেখা দিতে পারে। ফুলকপি, শ্যামন সামুদ্রিক মাছ, গাজর, কলা, ময়দা, ইষ্ট ইত্যাদি খাবারে বায়োটিন বা ভিটামিন বি৭ পাওয়া যায়।

খাদ্যনালীতে কিছু আটকে গেলে

খাদ্যনালীতে কিছু আটকে গেলে

অন্যমনস্কভাবে খাওয়ার সময় মাছের কাঁটা/মাংসের হাড় অথবা ছোট ছোট শিশুরা খেলার সময় কোনো কিছু মুখে দিলে তা গলায় আটকে যেতে পারে। এটি একটি মেডিক্যাল ইমারজেন্সি। এমতাবস্থায় রোগীকে যত শিগগিরই সম্ভব হাসপাতালের জরুরি বিভাগে অথবা নিকটস্থ নাক কান গলা বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যেতে হবে। কি কি গলায় আটকাতে পারে ১. ধাতব মুদ্রা বা পয়সা ২. খেলনার ছোট ছোট অংশ ৩. বাঁধানো দাঁত ৪. মাছের কাঁটা ৫. মাংসের হাড় ৬. সুই/সেপ্টিপিন এবং আরও অনেক কিছু। খাদ্যনালীর কোথায় আটকাতে পারে গলবিল ও খাদ্যনালী এর সংযুক্ত স্থান হলো খাদ্যনালীর সবচেয়ে সংকীর্ণ জায়গা। এইখানেই বেশিরভাগ জিনিস আটকায়। এ ছাড়াও খাদ্যনালীতে চারটি সংকোচিত পয়েন্টে যে কোনো কিছু আটকাতে পারে। রোগের লক্ষণসমূহ ১. রোগীর বা রোগীর লোকজন কোনো কিছু খেয়ে ফেলার অথবা গলায় আটকে যাওয়ার কথা বলবে ২. ঢোক গিলতে অসুবিধা হতে পারে ৩. গলা ব্যথা হতে পারে ৪. অতিরিক্ত লালা বের হওয়া ৫. বমি বমি ভাব হওয়া। রোগ নির্ণয় করার উপায় ১. রোগের লক্ষণসমূহ থেকে ২. গলার বা বুকের এক্সরে করে দেখা যাবে ৩. ইসোফ্যাগোস্কপির (এন্ডোসকপি) মাধ্যমে নিশ্চিত হতে পারি। চিকিৎসা : যেহেতু এটি একটি মেডিক্যাল ইমারজেন্সি অবস্থা, সেজন্য রোগীকে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। এরপর সম্পূর্ণ অজ্ঞান করে ইসোফ্যাগোস্কপির (এন্ডোসকপি) মাধ্যমে খাদ্যনালীতে আটকানো জিনিস বের করতে হবে। চিকিৎসা না করার ফলে কি কি অসুবধিা হতে পারে ১. খাদ্যনালীতে ইনফেক্শন হতে পারে ২. খাদ্যনালী ফুটা হয়ে ফুসফুসে ইনফেক্শন অথবা পুঁজ জমতে পারে। (যদি ধারালো কিছু হয়) এমনকি রোগী মৃত্যুবরণও করতে পারে।

যৌন রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা ও চিকিৎসা

যৌন রোগ প্রতিরোধে সচেতনতা ও চিকিৎসা

(আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে যৌনতা সম্পর্কে রয়েছে ভ্রান্তধারণা। অথচ সুস্থ সমাজ গঠনে এ বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করতে হয়; নিজের এবং বিপরীত লিঙ্গের শরীর সম্পর্কে স্বাভাবিকভাবে জানতে হয়। এ জন্য প্রয়োজন যৌনশিক্ষার। নইলে আক্রান্ত হতে হয় নানা ধরনের জটিল রোগে। পুরুষ ও নারীর যৌনরোগ এবং তা থেকে পরিত্রাণের উপায় নিয়ে কথা হয় সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জন, চর্ম ও যৌনরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জাহেদ পারভেজের সঙ্গে। জনকণ্ঠ সাপ্তাহিক মঙ্গলবার স্বাস্থ্য পাতার আপনার ডাক্তারের পক্ষ থেকে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন- জ ই বুলবুল