
ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বজুড়ে জাতিসংঘের রয়েছে ১৮টি আঞ্চলিক দপ্তর বা কান্ট্রি মিশন। তবে এসব দপ্তর যেসব দেশে পরিচালিত হচ্ছে, তার সিংহভাগই অর্থনৈতিকভাবে ভঙ্গুর, রাজনৈতিকভাবে অস্থির এবং গৃহযুদ্ধপ্রবণ। জাতিসংঘ শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এসব অঞ্চলে তৎপর হলেও প্রশ্ন উঠছে— সত্যিই কি এসব দেশে মানবাধিকার রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পেরেছে তারা?
জাতিসংঘের কার্যক্রম নিয়ে বারবার অভিযোগ এসেছে পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকা, নিষ্ক্রিয়তা এবং দায় এড়ানোর প্রবণতা নিয়ে।
ফিলিস্তিন, একটি দীর্ঘদিন ধরে ইসরাইলি দখলদারিত্বে থাকা জনপদ। এখানে বহু বছর ধরেই চলে আসছে হত্যা, ঘুম ও দখলের প্রতিদিনকার বাস্তবতা। কিন্তু জাতিসংঘের ভূমিকা? কেবল নিন্দা আর সতর্কবার্তা দিয়ে নিজেদের দায়িত্ব শেষ করার নজিরই বেশি। সাম্প্রতিক সময়ে পশ্চিম তীরে ইসরাইলের বেআইনী অভিযানের বিপরীতেও জাতিসংঘ নেয়নি কোনো শক্ত অবস্থান।
একই চিত্র সিরিয়াতেও। যেখানে দীর্ঘদিন ধরে চলছে গৃহযুদ্ধ। জাতিসংঘের আঞ্চলিক দপ্তর থাকলেও মানবাধিকার পরিস্থিতির বাস্তব উন্নয়ন খুব একটা দেখা যায়নি। ইসরাইলের বিমান হামলায় সম্প্রতি দেশটির রাজধানী দামেস্ক, সুয়েদা ও দেরা শহর ক্ষতিগ্রস্ত হলেও জাতিসংঘ আবারও শুধু “নিন্দা জানিয়ে” দায় সারে।
কম্বোডিয়া, নাইজার— এসব বিশৃঙ্খল রাষ্ট্রেও জাতিসংঘ পরিচালনা করছে মানবাধিকার দপ্তর। অথচ এখানেও রয়েছে মানবাধিকার রক্ষার নামে পক্ষপাতদুষ্ট কার্যক্রমের অভিযোগ। অনেকক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার কিংবা জনগণের কাছেও জাতিসংঘের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে।
শুধু মানবাধিকার দপ্তর নয়, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনগুলোকেও ঘিরে আছে বিতর্ক। অভিযোগ রয়েছে, এসব বাহিনীর উপস্থিতিতে অনেক সময় স্থানীয় জনগণের জীবনে বিরূপ প্রভাব পড়ে।
এছাড়া জাতিসংঘের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া ও বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়েও রয়েছে বিস্তর প্রশ্ন। ফলে জাতিসংঘের কার্যক্রমে আস্থা হারাচ্ছে অনেক দেশই। তারই প্রমাণ, প্রতিবেশী নেপাল সরকারের ২০১১ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন না করা। যার ফলে দেশটি থেকে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর বন্ধ করে দিতে হয়।
শেখ ফরিদ