ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

মতামত

মতামত বিভাগের সব খবর

বঙ্গবন্ধু আজও বিকল্পহীন আশ্রয়

বঙ্গবন্ধু আজও বিকল্পহীন আশ্রয়

বাংলার এ মাটি সম্পদের প্রাচুর্যে ঐশ্বর্যশালী না হলেও, মননশীল নৈপুণ্যে বরাবরই উচ্চকিত। শারীরিক গঠন সমসত্ত্বের ইঙ্গিত দিলেও নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ে বাঙালি জাতি অবিমিশ্র নয়। ভাষায়ও বহমান বৈচিত্র্যের মিশ্রধারা। মানসিক আদলেও প্রতিফলিত কোমল এবং কাঠিন্যের যুগ্ম সাযুজ্য। হাজার বছরের পথচলায় বাঙালি কখনো আত্মপরিচয়ের সংকটে পড়েনি। বরং বিরূপ পরিবেশ আর বৈরী প্রকৃতিকে সামলে দিয়ে এ জনগোষ্ঠী তার সক্ষমতাকেই প্রমাণ করেছে বারবার। সভ্যতার বিবর্তনে মানুষের সমষ্টি চেতনা যেমন নির্ণায়ক হয়েছে, ঠিক তেমনই আঞ্চলিক পরিসরে বঙ্গবন্ধু, রবীন্দ্রনাথ, নেতাজী কিংবা স্বামী বিবেকানন্দের মতো বিপুলায়তন ব্যক্তিত্বের আলোক সংশ্লেষ এ জনপদের শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি তথা সমাজ-মননকে ক্রমাগত ঋদ্ধ করেছে। তবে সমাজের গতিপথকে পাল্টে দিয়ে একটি আধুনিক জাতিসত্তা নির্মাণের মতো ইতিহাস নির্ধারণী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সারা বিশ্বের ৩০ কোটি বাঙালির চেতনায় কেবলই শুধু অবিনাশী সত্তা হিসেবে নয়, তার রাজনৈতিক দর্শন প্রতিটি বাঙালির কাছে আজও একটি বিকল্পহীন আশ্রয় হিসেবে সমাদৃত।

শ্রমবাজারে সম্ভাবনা

শ্রমবাজারে সম্ভাবনা

দেশের রেমিটেন্স আয়ের অন্যতম উৎস বহির্বিশ্বের শ্রমবাজার বর্তমানে কিছুটা চাপের সম্মুখীন। সরকারি নথিতে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের তালিকায় ১৬৮টি দেশের নাম থাকলেও ১৯৭৬ সালে বিদেশে প্রথম কর্মী পাঠানোর পর থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের শ্রমবাজার হাতেগোনা কয়েকটি দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। বিগত পাঁচ বছরে (২০১৯-২০২৩) বিভিন্ন দেশে পাঠানো কর্মীদের তথ্য বিশ্লেষণে উঠে এসেছে- মোট পাঠানো কর্মীর ৯৭ শতাংশই পাঠানো হয় মাত্র ১০টি দেশে। পাঁচ বছরে অন্তত একজন কর্মী পাঠানো হয়েছে, এমন দেশ বিবেচনায় আনলেও দেশের কর্মী পাঠানো হয়েছে মোট ১৩৭টি দেশে, ৩১ দেশে কোনো কর্মীই যায়নি। সচরাচর মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশেই বাংলাদেশী কর্মীরা কাজে গিয়ে থাকে। সৌদি আরব, আরব আমিরাত, ওমান ও কাতারে কর্মসংস্থান হয়েছে বেশি। মধ্যপ্রাচ্যের বাইরে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর বড় কর্মসংস্থান তৈরি করেছে। দুই বছর ধরে মালয়েশিয়ায় কর্মী যাচ্ছে। এর মধ্যে গত বছরই গেছে সাড়ে তিন লাখের বেশি। এর আগে দুর্নীতির অভিযোগে টানা তিন বছর দেশটির শ্রমবাজার বন্ধ ছিল। তবে বাংলাদেশী শ্রমিকদের নানা কর্মকা-ে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার ফের বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ায় ভালো সম্ভাবনা থাকলেও কর্মী গেছে অনেক কম। ইউরোপের দেশগুলোতেও কর্মী পাঠানো যাচ্ছে না তেমন একটা। মালদ্বীপে একসময় নিয়মিত কর্মী যেত। অবৈধ কর্মীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় দেশটির শ্রমবাজার বন্ধ করে দেওয়া হয়। গত চার বছর সেখানে নতুন করে কর্মী পাঠানো যায়নি। এ বছর থেকে আবার মালদ্বীপে কর্মী পাঠানো শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, কর্মী পাঠানোর শীর্ষে থাকা দেশগুলোর কোনো একটিতে হোঁচট খেলেই কমে যায় বিদেশে কর্মী পাঠানো।

জাতির পিতার জন্মদিন

জাতির পিতার জন্মদিন

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্থপতি, ইতিহাসের মহানায়ক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন আজ। জাতি সানন্দচিত্তে তাঁর জন্মদিন উদ্যাপন করবে। ২০২০ সালে সরকার জাতির পিতার বর্ণাঢ্য জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী বর্ণিল আয়োজনে সম্পন্ন করেছে দেশে ও বিশ্বব্যাপী। গণমাধ্যমগুলো দিবসটির মহিমা ও তাৎপর্য তুলে ধরেছে নানা আঙ্গিকে। সংবাদপত্রসমূহ প্রকাশ করেছে বিশেষ ক্রোড়পত্র। টিভি চ্যানেলগুলো প্রচার করবে নানামাত্রিক অনুষ্ঠান।  একজন নেতা তাঁর দেশের মানুষকে মর্যাদাপূর্ণ আত্মপরিচয়ের আলোকে কী অপরিসীম সাহসিকতার মধ্য দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন, এর উজ্জ্বল উদাহরণ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দেশের সর্বস্তরের মানুষ তথা আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার ভালোবাসা, হৃদয় উজাড় করা শ্রদ্ধা ও সম্মানে তিনি অভিষিক্ত হয়েছেন। সমগ্র দেশের মানুষ অকৃত্রিম ভালোবাসার কারণে, বিশ্বাসের কারণে তাঁর ওপর অর্পণ করেছে পূর্ণ আস্থা। তাঁকে স্থান দিয়েছে তাদের হৃদয়ে।

চায়ের দেশে

চায়ের দেশে

হঠাৎ নিসর্গ প্রকৃতির ‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’র দেশ শ্রীমঙ্গল যাওয়ার সুযোগ পেলাম বাল্যবন্ধু রীমার পরিবারের সঙ্গে। একদিনের ট্যুর বলে লুফে নিলাম প্রস্তাবটা। রীমার ছেলে-মেয়ে দুটো আমি সঙ্গে থাকলে যে কোনো জায়গায় যেতে রাজি। আমারও ওদের সঙ্গ খুব ভালো লাগে। তাই বোরিং হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সব মিলিয়ে চমৎকার একটি সফরের আশায় এক শুক্রবার সকালে রওনা হয়ে গেলাম। নিজেদের গাড়ি থাকায় ঘরের তৈরি খাবার দিয়ে গাড়িতে বসেই নাস্তা সেরে নিলাম। ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গল যেতে সময় লেগেছে ৫ ঘণ্টা। প্রকৃতি আমাকে বরাবরই খুব টানে। যদিও খুব একটা ঢাকার বাইরে যাওয়া হয় না, তবুও শহরটাকে ঢাকার চেয়ে আধুনিক মনে হলো। শ্রীমঙ্গলের রাস্তাঘাট এত উন্নত! কোথাও কোনো ভাঙাচোড়া নেই। শহরে ঢুকতেই সবুজ প্রকৃতি দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। সবুজে ঘেরা কি পরিচ্ছন্ন আর উন্নত একটি শহর! রীমার বর আমান ভাই ঘুরে বেড়াতে খুব পছন্দ করেন। সুযোগ পেলেই পরিবার নিয়ে বেরিয়ে পড়েন। বাংলো করার ইচ্ছায় তিনি ওখানে বেশ খানিকটা জায়গা কিনেছিলেন প্রায় ৭/৮ বছর আগে। তাই প্রায়ই সেখানে যাওয়া হয়। যাওয়া-আসার কারণে তিনি সেখানকার অনেক কিছু সম্পর্কে খুব ভালো জানেন। ইচ্ছে থাকলেও সময় আর সুযোগের জন্য যাওয়া হয়নি আমার। চা বাগান দেখে তো আমার বিস্ময়ের শেষ নেই!

নিমতলী থেকে বেইলি রোড

নিমতলী থেকে বেইলি রোড

উপ-মহাদেশের বিখ্যাত কিংবদন্তি গায়ক মান্নাদের একটি জনপ্রিয় গানে আছে আবার হবে তো দেখা, এই দেখাই শেষ দেখা নয়তো। প্রিয়জন ক্ষণিকের তরে দূরে সরে গেলেও বেঁচে থাকলে কোনো না কোনো সময় আবার দেখা হয় এমন আশাবাদ ব্যক্ত হয়েছে গানের মধ্যে দিয়ে। কিন্তু সম্প্রতি বেইলি রোডের গ্রীন কোজি ভবনে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে যারা জীবন বিসর্জন দিয়েছেন তাদের সঙ্গে আর কোনো দিনই কারও দেখা হবে না। তারা মা-বাবা আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধব সহপাঠী সকলের কাছ থেকে শেষ বিদায় নিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছে। চিরচেনা পৃথিবীর আলো-বাতাস ও মানুষের সঙ্গে এটাই যে জীবনের শেষ দেখা হবে ঘর থেকে বের হওয়ার সময় নিশ্চয় তা জানতো না। নিষ্ঠুর নিয়তি এতগুলো ফুটন্ত তাজা প্রাণ মুহূর্তের মধ্যে নিঃশেষ করে দেবে এমনটা ছিল স্বপ্নের অতীত। তারা পরিবারের কাছে এখন শুধুই স্মৃতি। আর এই স্মৃতির একবুক অন্তর জ্বালা নিয়ে অসহায় পিতাকে বলতে শোনা যায় ‘হেই কোনো বিহানে আমার পোলাডা ঘর থাইকা বেরিয়ে গেল আর ফিরে আইলো না। ভালো পোলাডা গেল লাশ হইয়া আইলো। আমার সব আশা শেষ হইয়া গেল।’ এভাবেই এক বৃদ্ধ পিতাকে সন্তানের জন্য বিলাপ করতে শোনা যায়।

বঙ্গবন্ধু ॥ বিশ্বনন্দিত অবিনশ্বর

বঙ্গবন্ধু ॥ বিশ্বনন্দিত অবিনশ্বর

১৭ মার্চ ১৯২০ সাল। আবহমান বাংলা ও বিশ্ব ইতিহাসের নিগূঢ় মেলবন্ধনের মাঙ্গলিক নান্দীমুখ। কালের নিরন্তর যাত্রায় সূচিত হয়েছে কালান্তরের অবিনশ্বর মূল্যায়ন অধ্যায়। রচিত হয়েছে কিংবদন্তি এক মহামানবের কালজয়ী জীবনমানস। অজপাড়াগাঁয়ে প্রান্তিক পদচারণায় তৃণমূল থেকে নির্মিত অবহেলিত ধরিত্রীর নিষ্পেষিত-বঞ্চিত-মুক্তিকামী মানুষের তৌর্যত্রিক আলোকস্তম্ভ। মুক্তির মহানায়কখ্যাত এই বিশাল ব্যক্তিত্বের নাম বাঙালির বঙ্গবন্ধু বিশ্ববন্ধু শেখ মুজিব। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্থপতি এবং সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়া গ্রামের মধ্যবিত্ত সম্ভ্রান্ত শেখ পরিবারে তাঁর জন্ম। এক মহান আধ্যাত্মিক পুরুষ শেখ বোরহান উদ্দিন এই শেখ বংশের গোড়াপত্তন করেছিলেন। মোগল আমলের স্মৃতিময় দালানগুলোই অতীতের এই পরিবারের সুদিনের সাক্ষ্য বহন করে চলেছিল। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থে বঙ্গবন্ধু লিখেছেন, ‘একটা দালানে আমার এক মামা আজও কোনোমতে দিন কাটাচ্ছেন। আর একটা দালান ভেঙে পড়েছে, যেখানে বিষাক্ত সর্পকুল দয়া করে আশ্রয় নিয়েছে। এই সকল দালান চুনকাম করার ক্ষমতা আজ তাদের অনেকেরই  নেই। এই বংশের অনেকেই এখন এ বাড়ির চারপাশে টিনের ঘরে বাস করেন। আমি এই টিনের ঘরের এক ঘরেই জন্মগ্রহণ করি।’

শিল্পীর অপ্রত্যাশিত বিদায়

শিল্পীর অপ্রত্যাশিত বিদায়

রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ও শিক্ষক সাদি মহম্মদের অপ্রত্যাশিত প্রস্থান সমাজে আলোড়ন তুলেছে। তার স্বাভাবিক মৃত্যু হলে অন্যরকম প্রতিক্রিয়া হতো, তাতে শুধুই থাকত ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার প্রকাশ, প্রিয়জন হারানোর শোক। কিন্তু শিল্পী নিজেই যখন নিজ জীবনের যবনিকা টেনেছেন, তখন স্বাভাকিভাবেই মানুষ তাকে নিয়ে কথা বলছে। এই নষ্টভ্রষ্ট কূপমন্ডূক সমাজে বহু বছর ধরে যাকে মানুষ স্মরণই করেনি বা মনে রাখেনি, আজ তাদের সবার হৃদয়ই বেদনাপ্লুত এবং প্রতিক্রিয়ামুখর। সমাজের প্রথাগত সংজ্ঞায় তার মৃত্যু আত্মহত্যা হলেও এক্ষেত্রে স্বেচ্ছামৃত্যু কথাটিই যেন বড় হয়ে উঠেছে। কেন এ চরম সিদ্ধান্ত, শিল্পীর অতৃপ্তি, বিষণ্ণতা ও অভিমানের শিকড় এতদূর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিল যে এ বিশ^কে তার বিদায় জানাতে হবে অকালে!

অপ্রতুল কিডনি চিকিৎসা

অপ্রতুল কিডনি চিকিৎসা

বিশ্বে কিডনি রোগী প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। সবশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী সারা বিশ্বে প্রতি ৭ কোটি থেকে ১০ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ১০ শতাংশ দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে ভুগছেন। কিডনি রোগের প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা পাচ্ছে না শিশুরাও। বিশ্বে প্রতি ১০ লাখ শিশুর মধ্যে ১৫-৭৫ জন শিশু দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে ভুগছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ২০৪০ সালের মধ্যে ৫০ লাখের বেশি কিডনি বিকল রোগী সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুবরণ করতে পারেন। দেশেও কিডনি রোগীর সংখ্যা কম নয়। বিভিন্ন সমীক্ষায় উঠে এসেছে, দেশে প্রাপ্তবয়স্ক লোকদের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত প্রায় শতকরা ১৬-১৮ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রে এ সংখ্যা ১১ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ায় ১৬ শতাংশ ও আইসল্যান্ডে ১০ শতাংশ। ১০ বছর আগে দেশে কিডনি রোগীর সংখ্যা ছিল ৮০ লাখ থেকে ১ কোটি। কিন্তু বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় আড়াই কোটি। এই বৃদ্ধির হার এতই ব্যাপক যে, অদূর ভবিষ্যতে এটা মহামারি আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।