ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৪ জুন ২০২৩, ২১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০

মতামত

মাংকি সি, মাংকি ডু

মাংকি সি, মাংকি ডু

আর্থার সি ক্লার্কের উপন্যাস ‘২০০১ : এ স্পেস ওডিসি’ অবলম্বনে সিনেমা বানিয়েছিলেন স্টেনলি কুবরিক। ঐ সিনেমার ওপেনিং দৃশ্যটির কথা মনে আছে? দৃশ্যটির নাম: দ্য ডন অব ম্যান। দিগন্তের ওপারে সূর্য উঠছে। ক্ষুধার্ত বানরেরা জেগে উঠছে একে একে। গুহা থেকে বেরিয়ে এসে দেখে হাড়ের স্তূপ। একটি বানরকে দেখা যায় সেই স্তূপ থেকে লাঠির মতো একটি হাড় উল্টে-পাল্টে দেখতে। অচিরেই সে আবিষ্কার করে বসে সেই হাড়ের টুকরোটিকেই অপরকে ঘায়েল করার জন্য ব্যবহার করা যায়। একটি বানরের হাত হতে উড়ে যাওয়া একটি হাড়কে কুবরিক সিংগেল কাটে ধরেছেন। কেবলই একটি হাড়। কিন্তু যার আকৃতির সঙ্গে অনেকটাই মিলে যাবে ঐ দৃশ্য- গল্পের অনেক বছর পরে পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকা মানুষের স্যাটেলাইটের আকৃতির সঙ্গে।

মতামত বিভাগের সব খবর

মেট্রোরেলের শতভাগ ব্যবহার জরুরি

মেট্রোরেলের শতভাগ ব্যবহার জরুরি

মেট্রোরেল এখন রাজধানীর ঢাকার অহঙ্কার। বিষয়টি এমন যে ‘আমাদেরও আছে মেট্রোরেল।’ আমরা প্রবেশ করেছি বিশে^র সর্বাধুনিক প্রযুক্তির যাত্রী পরিবহন ব্যবস্থায়। বর্ধিষ্ণু জনসংখ্যায় যানজটের ঝামেলা এড়িয়ে চলাচলের জন্য এর চেয়ে ভালো পরিবহন আর নেই। দেশের প্রথম মেট্রোরেল নিয়ে মানুষের উচ্ছ্বাস ও কৌতূহলের সীমা নেই। উদ্বোধন হওয়ার পর যানটিতে ভ্রমণ করতে দীর্ঘ লাইন লেগে যেত। দূরদূরান্ত থেকে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও অনেকে চড়ার সুযোগ পেতেন না। সফল হলে নিজেকে ধন্য মনে করতেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা পোজের ছবি পোস্ট করতে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। পরিস্থিতি এমন ছিল যে প্রয়োজনীয় পরিবহন নয়, পর্যটকদের জন্য ‘ভ্রমণ ট্রেন’ চালু করা হয়েছে। এখন অবশ্য পরিস্থিতি কিছুটা বদলেছে। কিছু মানুষ এখন প্রয়োজনেও ট্রেনটি ব্যবহার শুরু করেছেন। কবে কোথায় প্রথম মেট্রোরেলে চড়েছিলাম এখন তা আর খুব একটা নিশ্চিত করে বলতে পারি না। ১৯৯৩ সালে সিঙ্গাপুর সফরের সময় মেট্রোরেলে চড়েছিলাম কিনা মনে নেই। সিঙ্গাপুরে মেট্রোরেল চালু হয়েছিল ১৯৮৭ সালে। প্রতিবেশী কলকাতায় মেট্রোরেল চালু হয়েছিল আরও আগে ১৯৮৪ সালে। কলকাতায়ও মেট্রোরেল চড়া হয়নি। প্রথম মেট্রোরেল চড়ার কথা মনে আছে ১৯৯৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগদান করেছিলাম তখন। বিশে^র সবচেয়ে পুরনো মেট্রোরেল নিউইয়র্কে চালু হয়েছিল ১৯০৪ সালে।

বিশ্ব পরিমন্ডলে প্রধানমন্ত্রীর মূল্যায়ন

বিশ্ব পরিমন্ডলে প্রধানমন্ত্রীর মূল্যায়ন

মুক্তির মহানায়ক হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য তনয়া দেশরত্ন শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিক রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকে অত্যাচার-অনাচার-নিপীড়ন-নির্যাতন-জেল-জুলুম ইত্যাদির ভয়াবহ অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর অবিনাশী আদর্শিক চেতনায় যথার্র্থ ঋদ্ধ শেখ হাসিনা নৈতিকতা-দেশপ্রেম এবং দেশের মাটি ও মানুষের প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা-ভালোবাসার অবিচল বহির্প্রকাশে সামরিক ও স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের পদযাত্রাকে সমুন্নত করেছেন। জাতির পিতার লালিত স্বপ্ন সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠাকল্পে তিনি যে রাজনৈতিক যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন; স্বৈরাচার পতনের মধ্য দিয়ে তার সে নির্ভীক-নির্ভয়-দুর্জয় ও দূরদর্শী নেতৃত্বের সফল প্রতিষ্ঠা বাংলার মানুষের কাছে অপূর্ব এক নতুন স্বপ্ন জাগানিয়ার মূর্ত প্রতীক হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বরেণ্য-নন্দিত সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে বিশ্বপরিম-লে অনবদ্য উঁচুমাত্রিকতায় বিপুলভাবে সমাদৃত।

খাদ্য নিরাপত্তায় ‘পার্টনার’

খাদ্য নিরাপত্তায় ‘পার্টনার’

কৃষি বিভাগ দেশের বিদ্যমান কৃষিকে বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তর এবং খাদ্যশস্য উৎপাদনে বৈচিত্র্য নিয়ে আসতে নানামুখী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে ‘প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচার অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফর্মেশন ফর নিউট্রিশন   এন্টারপ্রেনরশিপ অ্যান্ড রেজিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার)’ শীর্ষক একটি বড় প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকা। সময়কাল জুলাই ২০২৩ থেকে জুন ২০২৮। অর্থায়ন করছে বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিল (ইফাদ)। দেশের আটটি বিভাগ, ১৪টি কৃষি অঞ্চল, ৬৪টি জেলাসহ ৪৯৫টি উপজেলার মোট ৪ হাজার ৫৭১টি ইউনিয়নে বাস্তবায়ন করা হবে প্রকল্পটি। এর মাধ্যমে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ ফল ও ১০টি গুরুত্বপূর্ণ সবজির প্রটোকল প্রস্তুত করা হবে। এতে ফল, সবজি উৎপাদন থেকে শুরু করে রপ্তানির পুরো প্রক্রিয়া থাকবে। এছাড়াও সরকার গুড এগ্রিকালচারাল প্র্যাকটিসের মাধ্যমে ফল ও সবজির আওতাধীন এলাকা ৩ লাখ হেক্টর এবং উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত ২ লাখ হেক্টরে উন্নীত করার পরিকল্পনা করেছে। এই প্রকল্পের আওতায় ১০ লাখ কৃষককে উত্তম কৃষিচর্চার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। শক্তিশালী করা হবে বীজ নেটওয়ার্ক। উদ্ভাবন করা হবে সব ধরনের বিরূপ পরিবেশ সহনশীল ও উচ্চ ফলনশীল পাঁচটি ধানের জাত। ১ লাখ হেক্টর নতুন কৃষিজমি সেচের আওতায় আনা হবে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে ।

 প্রসঙ্গ সাম্প্রদায়িকতা

 প্রসঙ্গ সাম্প্রদায়িকতা

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত ‘জাতীয় নির্বাচন ২০২৪ : ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগণের অধিকার’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় আবারো সংখ্যালঘু কমিশন গঠনের দাবি উঠে এসেছে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সহিংসতার শিকার হওয়ার আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন, এমন বার্তাও তুলে ধরা হয়েছে এই সভায়। বাস্তবতা হলো মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকার যখন রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকে, তখন সংখ্যালঘু সম্প্রদায় অনেকটা নিরাপদ থাকে। ভিন্ন সময়ে তাদের ওপর বড় ধরনের নিপীড়ন চলে। এটিকে পাশ কাটিয়ে একতরফাভাবে দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দলকে দোষারোপ করার বিষয়টি কতটা সমীচীন ও গ্রহণযোগ্য এমন প্রশ্ন সামনে চলে আসে। তবে এদেশে স্যংখালঘুদের উৎসবের সময়ে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার বিষয়টি তাৎপর্যপূর্ণভাবে তুলে ধরেছেন নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। তিনি বলেন, দেশে সাম্প্রদায়িকতার একটা সামাজিকীকরণ হয়েছে। এখন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উৎসবের সময় হামলা হবে, এটাই যেন রীতি। হামলা কম হলে বলা হয় যে এবার কম হয়েছে।

প্রাক-নির্বাচন ভাবনা ও প্রত্যাশা

প্রাক-নির্বাচন ভাবনা ও প্রত্যাশা

১৯৩৭-এর আগে বঙ্গীয় পরিষদ ছিল রায়বাহাদুর- খান বাহাদুর, জমিদার-ব্যারিস্টারদের মিলনকেন্দ্র। ’৩৭-এ বঙ্গীয় পরিষদে পরিবর্তনের হাওয়া লাগে। রাজপ্রতিনিধিদের স্থানে গণপ্রতিনিধিরা স্থান করে নেন। বিভাগোত্তরকালে নির্বাচিত  নিবেদিতপ্রাণ ত্যাগী ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে জাতীয় সংসদ প্রাণ ফিরে পায়। কিন্তু বর্তমানে সংসদ যেন পূর্বাবস্থানে ফিরে যাচ্ছে। খান বাহাদুর-রায়বাহাদুরদের স্থান দখল করেছে শিল্পপতি-ব্যবসায়ীগোষ্ঠী। তাদের দাপটে রাজনীতিবিদ বা প্রকৃত জনপ্রতিনিধিরা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। বর্তমান পদ্ধতিতে সৎপথে অর্জিত অর্থে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রায় অসম্ভব। রাজনীতিতে টিকে থাকতে হলে প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। এ জন্য চাই ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের সহযোগিতা। আবার শিল্প কিংবা ব্যবসা চালু রাখতে হলে দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক কর্ণধারদের শরণাপন্ন অপরিহার্য। তারা পরস্পরের পরিপূরক। শিল্পপতি-ব্যবসায়ী এবং তথাকথিত রাজনীতিবিদদের মেলবন্ধন অপূর্ব!

এশিয়ার ‘আয়রন লেডি’

এশিয়ার ‘আয়রন লেডি’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি কাতার ইকোনমিক ফোরাম ২০২৩-এ যোগ দিয়ে তিন-দিনের সরকারি সফর শেষে দেশে ফিরে এসেছেন। কাতার ইকোনমিক ফোরাম মধ্যপ্রাচ্যের বৈশি^ক ও বিনিয়োগে নিবেদিত। বিশ^ব্যাপী চলমান বহুমুখী চ্যালেঞ্জ ও সংকট এবং উদ্ভূত বিরূপ অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে সমাধান বের করাই ফোরামের মূল উদ্দেশ্য। প্রধানমন্ত্রীর ইতিবাচক কর্মকা- বিশ^জুড়ে সমাদৃত হয়েছে। ব্রিটেনের বিখ্যাত সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট পত্রিকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এশিয়ার আয়রন লেডি হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। লন্ডন থেকে প্রকাশিত পত্রিকাতে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি নারী সরকারপ্রধান। তার নেতৃত্বে দারিদ্র্য বিমোচনের পাশাপাশি বেশিরভাগ সময় ৭ ভাগ জিডিপি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে দেশটি।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের গণহত্যা

জাতিসংঘে বাংলাদেশের গণহত্যা

জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের অধিবেশনের আলোচ্যসূচিতে স্থান পেয়েছে একাত্তরে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালি জাতির বিরুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসরদের দ্বারা সংঘটিত ভয়াবহ নৃশংস গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির বিষয়টি, যা অবশ্যই ইতিবাচক বলতে হবে। আগামী ১৯ জুন থেকে ১৪ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের ৫৩তম অধিবেশনে বাংলাদেশের এই দাবির বিষয়ে আলোচনা হবে। অধিবেশনের ৩ নম্বর এজেন্ডায় স্থান পেয়েছে বাংলাদেশের দাবিটি। উল্লেখ্য, এ বিষয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেসের সম্মতিও মিলেছে, যা বিবৃতি আকারে প্রকাশ করেছে বিশ্বসংস্থাটি। এখন ’৭১-এ বাংলাদেশে সংঘটিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসরদের গণহত্যার আন্তর্জাতিকভাবে জাতিসংঘের স্বীকৃতির বিষয়টি সময়ের অপেক্ষা মাত্র।  এরফলে বাংলাদেশে ’৭১-এর ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক সংঘটিত ভয়াবহ নৃশংস গণহত্যা তথা জেনোসাইডের বিশ্ব স্বীকৃতির পথে আরও একধাপ এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হলো। এর আগে গত ২৪ এপ্রিল গণহত্যা বিশেষজ্ঞদের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল জেনোসাইড স্কলার্স অ্যাসোসিয়েশন (আইএজিএস) সর্বসম্মতিক্রমে পাস করে প্রস্তাবটি। এতে ’৭১-এর বাংলাদেশে সংঘটিত পাকি হত্যাযজ্ঞকে ‘জেনোসাইড, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং যুদ্ধাপরাধ’ ঘোষণা করা হয়েছে। উল্লেখ্য, বিশ্বের জেনোসাইড স্কলার্সদের পাশাপাশি অনেক বিজ্ঞ আইনজীবীও এই সংস্থার সদস্য। জেনোসাইড হিসেবে ঘোষণার যুক্তি হিসেবে ’৭১-এর ৯ মাসে সংঘটিত ভয়াবহ ও নৃশংস সব ঘটনার প্রমাণাদি ও বিবলিওগ্রাফি তুলে ধরা হয়। এই স্বীকৃতির বিষয়টি আইএজিএসের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ’৭১-এর গণহত্যার বিশ্ব স্বীকৃতি পাওয়ার বিষয়টি আরও সহজ ও গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে মার্কিন কংগ্রেসেও একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে ইতোমধ্যে, যা পালন করবে ইতিবাচক ভূমিকা। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক পরিম-লে ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক বাঙালি জাতির ওপর ঘৃণ্য ও বর্বরোচিত হামলা, মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ এবং তিন লক্ষাধিক মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিষয়টিকে কেন্দ্র করে গণহত্যার স্বীকৃতির দাবি বাংলাদেশ জানিয়ে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে সম্প্রতি সুইজ্যারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের ২৫নং কক্ষে আলোচনাসভা, প্রতিবাদ, মানববন্ধন সর্বোপরি বাংলাদেশ জেনোসাইড বিষয়ক ভিডিও প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালের গণহত্যা জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃতির দাবিতে ৯ দিনব্যাপী কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে দেশেও পালন করা হয়েছে নানা অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি। এখন এটি বাস্তবায়নের জন্য সরকার, পররাষ্ট্র ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে আরও জোরালো ও বলিষ্ঠ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

বিপাকে বস্ত্রকল

বিপাকে বস্ত্রকল

দেশীয় বস্ত্রকলগুলো সমূহ বিপাকে পড়েছে। করোনা অতিমারি চলাকালীন লকডাউনে অন্যান্য শিল্প-কারখানার মতো বস্ত্রকলগুলোও ছিল বন্ধ। সেই ক্ষতির রেশ কাটতে না কাটতেই শুরু হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, যা চলমান। সারাবিশ্বে জ্বালানি, কাঁচামালÑ যার মধ্যে রয়েছে তুলাও, ডলারের দাম ইত্যাদির স্বাভাবিক বাণিজ্য ও সরবরাহ বন্ধ অথবা প্রায় বন্ধ রয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে চললেও চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত নয়। ফলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও তা হতে পারছে না পর্যাপ্ত কাঁচামাল ও জ্বালানি সংকটে। দেশীয় টেক্সটাইল খাতের বিরাজমান সমস্যা ও উত্তরণসংশ্লিষ্ট এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) পক্ষ থেকে এ খাতের নানা সমস্যা-সংকট সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে, যা রীতিমতো উদ্বেগজনক ও হতাশাব্যঞ্জক।  দেশে চলমান গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংকটের বিষয়টি সুবিদিত। ফলে সরকারকে বাধ্য হয়ে করতে হচ্ছে লোডশেডিং। এর জন্য প্রধানত দায়ী অভ্যন্তরীণ গ্যাসের মজুদ হ্রাস, কয়লা আমদানি কম বা বন্ধ হওয়া, জ্বালানির দাম বৃদ্ধি ইত্যাদি। ফলে আবাসিক বিদ্যুৎ-গ্যাস সংযোগসহ শিল্প-কারখানাগুলোতে চাহিদামতো বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে দফায় দফায় দামও বাড়ানো হয়েছে। চলমান গ্যাস-বিদ্যুৎ সংকট ও লোডশেডিংয়ের কারণে বস্ত্রখাতের উৎপাদন ক্ষমতা কমে গেছে ৩০-৪০ শতাংশ। ডলারের বিপরীতে টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়ন এ খাতের সংকট আরও বাড়িয়ে তুলেছে। সর্বোপরি আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার দাম বেড়েছে বহুলাংশে।

সতর্ক হোন

সতর্ক হোন

বর্ষা মৌসুম আসছে। মূলত এ মৌসুমে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ে। ইতোমধ্যে ডেঙ্গু মোকাবিলায় সবাইকে সতর্ক এবং সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। কিন্তু আমরা কতটুকু প্রস্তুত। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সবার আগে প্রয়োজন নিজে থেকে সচেতনতা। সে ক্ষেত্রেও আমরা উদাসীন বরাবর। নিজের মধ্যে সচেতনবোধটায় আমাদের বড় অভাব।  গরমের পর বর্ষার পানি যেমন জমির ফসলের জন্য, পরিবেশ, জীব-জন্তু ও কিছুর জন্য আশীর্বাদ তেমনি বর্ষার পানি বিভিন্ন জায়গায় জমে ডেঙ্গুবাহী মশার বংশ বিস্তৃত হয়। নিজেদের অসচেতনতার কারণে বৃষ্টির পানি বাইরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা প্লাস্টিকের বোতল-বাটি, ডাবের খোসা, গাড়ির টায়ার, ফুলের টব এমনকি অযতেœ ফেলে রাখা পাত্রে জমে থাকা টলটলে পানিতেই জন্ম নেই ডেঙ্গুবাহী এডিস মশা। ঘরে সাজিয়ে রাখা ফুলের টবে পানি জমে থাকলেও এডিস মশার বংশ বিস্তার করে। সেখান থেকে হাজার হাজার মশা যা কিনা আমাদের পরিবারের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।  অনেকরই পছন্দ ঘরের ভেতরে-বারান্দায় পছন্দের বাগান রাখা। সেই বাগানে শখের গাছ যেনো ডেঙ্গুর জন্মস্থান না হয় ঘর এবং বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় গাছের টবে যদি কাপড়ে দেওয়ার ন্যাপথন রাখা হয় তাহলে জমে থাকা পানিতে মশা বংশবিস্তার করতে পারবে না। আর যদি তা না করি তাহলে সব সময় খেয়াল রাখতে হবে এসব জায়গায় যাতে পানি জমে না থাকে। এ জন্য সবার আগে সচেতনতা জরুরি। ডেঙ্গুবাহী এডিস মশার কামড়ে প্রথমত জ্বর ও হতে পারে। প্রথমে জ্বর হলে আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না এটা ডেঙ্গুজ্বর কিনা। তবে কিছু লক্ষণ রয়েছে। যেমন- চোখের কোনায় লাল, কারও আবার নাক থেকে হালকা রক্ত আসা, কারও বা শরীরের চামড়ার নিচে লালচে ভাব হয়। মেয়েদের ক্ষেত্রে হঠাৎ পিরিয়ড শুরু“হয়ে যাওয়া, কিংবা পিরিয়ডের সময় জ্বর এবং রক্তক্ষরণ অতিরিক্ত হয়। লক্ষণ বুঝে তাৎক্ষণিত চিকিৎসা না নিলে মৃত্যুর কারণও হতে পারে। কারণ প্রথমে অনেক মনে করেন এটা সাধারণ ভাইরাস জ্বর। তবে পরে আর চিকিৎসাতেই কাজ হয় না। মৃত্যুঝুঁকি ডেকে আনে। সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না পাওয়ার জন্য মৃত্যুর মুখে পতিত হতে হয়। বিগত বছরগুলোর অভিঙ্গতা থেকে এমন আভাস পাওয়া যায়। তাই ডেঙ্গু নিয়ে হেলাফেলা নয়। সচেতন হতে হবে সবার আগে।  যেহেতু আবহাওয়া পরিবর্তনশীল এজন্য আমাদের সব আবহাওয়ায় খাপ খাইয়ে চলার ক্ষেত্রে সচেতনতা বোধ সবার আগে জরুরি। একমাত্র সচেতনার ফলেই সুস্থ থাকতে পারব আমরা। রেহায়ই পাব পাব ডেঙ্গুর  প্রকোপ থেকে।

সচেতনতার বিকল্প নেই

সচেতনতার বিকল্প নেই

পৃথিবী পরিবর্তনশীল। আর এ পরিবর্তনের ধারায় অনেক কিছুর সঙ্গে নতুন নতুন রোগ-ব্যাধিও আমাদের মাঝে উপস্থিত হচ্ছে। সেসব ব্যাধির মধ্যে ডেঙ্গুজ্বরও একটি। এটি  মৌসুমি জ্বর। গ্রীষ্মের শেষ থেকে শীতের আগ পর্যন্ত এ রোগ থাকে। তবে বর্ষাতে এর প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা যায়।  এটি মশাবাহিত রোগ। ডেঙ্গু ভাইরাস বাহিত এডিস মশার কামড়ে এ জ্বর হয়। বেশ কয়েক বছর ধরে এ রোগে মানুষ বেশ আতঙ্কে থাকছে। বর্ষার শুরু থেকেই হাসপাতালগুলোতে চাপ বেড়ে যায় ডেঙ্গুরোগীর। এবার বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই রোগীর চাপ বাড়ছে হাসপাতালে হাসপাতালে। যদিও সঠিক সময়ে চিকিৎসা হলে শতভাগ রোগী সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় করতে না পারলে রোগী মৃত্যু মুখে পতিত হতে পারে।

এটি আধুনিক যুগের বিশ্বযুদ্ধ নয় কি?

এটি আধুনিক যুগের বিশ্বযুদ্ধ নয় কি?

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘকালীন হবে- এ মন্তব্য ও আশঙ্কা রাশিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের মুখে যেমন শোনা গেল, তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তাবাহিনীর কর্মকর্তাদের মুখেও শোনা গেল। আমরা যেসব দেশ এ যুদ্ধের সঙ্গে সম্পৃক্ত নই, অস্ত্র-অর্থ দানকারী বা প্রত্যক্ষভাবে যুদ্ধের গোলাগুলির শিকার নই, কিন্তু বিশ্ববাজারে প্রধান দুটি প্রয়োজনীয় পণ্যÑ জ্বালানি ও খাদ্যশস্যের জোগানদার ইউক্রেন ও রাশিয়ার খাদ্যশস্য ও জ্বালানি সরবরাহে বিঘœ ঘটার কারণে ভুক্তভোগী, তাদের জন্য এটি দুঃখজনক বার্তা। বিশ্বের সব দেশের মতোই আমাদের দেশে খাদ্য, জ্বালানি মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে, যা সাধারণ ভোক্তার প্রায় নাগালের বাইরে।

নারী ফুটবলে অশনিসংকেত

নারী ফুটবলে অশনিসংকেত

সাফ শিরোপা জয়ে কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ ফুটবলের গৌরবের পতাকা রয়েছে মেয়েদের হাতেই। অথচ সাফল্য ও খ্যাতির দিক থেকে পুরুষ ফুটবল দলের তুলনায় এগিয়ে থাকা দলটির মাঝে হঠাৎই ভাঙন দেখা দিয়েছে। একে একে দল ছাড়ছেন খেলোয়াড়রা। স্ট্রাইকার সিরাত জাহান স্বপ্না মাত্র ২২ বছর বয়সে অবসর নিয়েছেন। ‘মানসিক অশান্তি’র কথা বলে দায়িত্ব ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন নারী ফুটবলের সাফল্যের কারিগর কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। এর আগে সাফজয়ী দল থেকে বাদ পড়ে খেলা ছাড়েন আনাই মোগিনি ও সাজেদা খাতুন। ক্যাম্প ছেড়ে বাড়ি চলে গেছেন ডিফেন্ডার আঁখি খাতুনও। মেয়েদের হতাশা-অপ্রাপ্তি ক্রমেই বাড়ছে, ঘুরেফিরে যার দায় বর্তাচ্ছে ফুটবল ফেডারেশন কর্মকর্তাদের ঘাড়েই। নানা কারণে ক্যাম্পে থাকা মেয়েরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন, অবসাদে ভুগছেন। খেলাবিহীন আর কত বসে থাকা যায়!  গত সেপ্টেম্বরে নেপালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জেতার পর আট মাস খেলাবিহীন কাটিয়েছে জাতীয় দল। টাকা নেই কারণ দেখিয়ে বাফুফে মিয়ানমারে অলিম্পিক বাছাই খেলতে জাতীয় দল পাঠায়নি। মিয়ানমারে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার কথা ছিল, সেটাও হয়নি। তড়িঘড়ি ফিফা প্রীতি ম্যাচ খেলতে সিঙ্গাপুরে দল পাঠাতে চেয়েও শেষ পর্যন্ত পারেনি বাফুফে। সাফ জেতার পর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মেয়েদের মাসিক বেতনও বাড়েনি। অধিনায়ক সাবিনা খাতুন মাসে পান মাত্র ২০ হাজার টাকা। অন্যরা ১০ হাজার টাকার আশপাশে। সেই ‘সামান্য টাকাও’ এপ্রিল থেকে বকেয়া। স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে এসব কারণেই দলটিতে দেখা দিয়েছে ভাঙন।