ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

পানিতে ডুবে মৃত্যু, ফরিদপুরের ঘটনা কি প্রতিরোধ যোগ্য ছিল?

অভিজিৎ রায়

প্রকাশিত: ১০:১৭, ১১ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১০:৫৮, ১১ জুলাই ২০২৫

পানিতে ডুবে মৃত্যু, ফরিদপুরের ঘটনা কি প্রতিরোধ যোগ্য ছিল?

ছবি: সংগৃহীত

কয়েক দিন আগে (গত ২৫ জুন) ফরিদপুরে এক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে— শহরের অদুরে ধলার মোড়ে পদ্মা নদীতে গোসল করতে নেমে ফরিদপুর  ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের দুই ছাত্র( তামিম ও মারুফ)  পানিতে ডুবে মারা গেছে। এর আগেও কয়েক বছর আগে একই স্থানে নৌ ভ্রমনে যেয়ে নৌকা ডুবে দুই শিক্ষকের মৃত্যু হয়। সর্বশেষ ছাত্রদের মৃত্যুর ঘটনায় ফরিদপুরসহ গোটা দেশেই শোকের ছায়া নেমে আসে। 

প্রশ্ন হচ্ছে, এমন মৃত্যুগুলো কি আসলেই ঠেকানো যায় না? শুধু শিশু নয়, কিশোর-তরুণ, এমনকি শিক্ষিত তরুণরাও এখন এই বিপদের বাইরে নেই। বর্ষা মৌসুমে বা গ্রীষ্মের সময় গ্রামের পুকুর, খাল, ডোবা কিংবা নদীতে নামা এখন যেন খুব সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে, অথচ নিরাপত্তার কোনো ব্যবস্থা থাকে না।

পানিতে ডুবে মৃত্যু আমাদের দেশে অনেকটা অবহেলিত বিষয়, অথচ প্রতিবছর অসংখ্য শিশু-কিশোর এভাবে প্রাণ হারাচ্ছে। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে শিশুরা বিনা তত্ত্বাবধানে বাইরে খেলতে যায়, পুকুরে নামে, আর সামান্য অসতর্কতায় ঘটে যায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা। আমাদের দেশে এখনো অধিকাংশ শিশুই সাঁতার জানে না, শহরের শিশুরাতো কেউই সাতার জানে না। আবার অভিভাবকরাও অনেক সময় বিষয়টিকে গুরুত্ব দেন না। এসব রোধে স্কুল-কলেজে সাঁতার শেখানোর ব্যবস্থা, কমিউনিটি পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধি, পুকুর-ডোবার চারপাশে বেড়া দেওয়া, নৌযানে পর্যাপ্ত লাইফ সাপোট রাখা এবং গণমাধ্যমে নিয়মিত প্রচারণা চালানো জরুরি। এসব উদ্যোগ এখনই না নিলে এভাবে প্রাণ ঝরে যাওয়ার মিছিল থামবে না। ফরিদপুরের এই দুটি সম্ভাবনাময় প্রাণ হারিয়ে গেল কেবল অসচেতনতা আর অব্যবস্থাপনার কারণে—আর কত প্রাণ গেলে আমরা সচেতন হব?

ফরিদপুর সাহিত্য সংস্কৃতি উন্নয়ন সংস্থার সদস্য সচিব হাসানুজ্জামান জানান, আমাদের দেশটা নদীমাতৃক। কিন্তু দুঃখের বিষয় দেশের অধিকাংশ শিশু কিশোর সাঁতার জানে না। শহরের শিশুদের সাঁতার শেখার কোন ব্যবস্থাই নেই।  এব্যাপারে সরকারকেই উদ্যোগ  নিতে হবে। প্রত্যেক উপজেলায় সরকারিভাবে সাঁতার শেখার ব্যবস্থা রাখতে হবে। অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। 

লেখক

অভিজিৎ রায়

সংবাদকর্মী, ফরিদপুর

আঁখি

×