ন্যাটো মিত্র হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান বলেছেন, ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে হাঙ্গেরিয়ান জাতিগোষ্ঠীর অধিকার পুনর্বহাল না করা পর্যন্ত যে কোনো আন্তর্জাতিক ইস্যুতে কিয়েভকে সমর্থন করবে না বুদাপেস্ট। সোমবার দেশটির পার্লামেন্টে তিনি এ কথা বলেছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
ভিক্টর অরবান বলেছেন, সুইডেনের ন্যাটো যোগদানের বিষয়ে সম্মতি দিতে কোনো তাড়া নেই হাঙ্গেরির। তিনি বলেন, সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদানে তাড়া দেওয়ার মতো যদি কোনো বিষয় থাকত তাহলে আমি খুশি হতাম। কিন্তু এমন কোনো পরিস্থিতি আমি দেখছি না। তার এই মন্তব্যের পর ধারণা করা হচ্ছে সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদান আরও বিলম্বিত হতে পারে।
ইউক্রেনে বসবাসরত প্রায় দেড় লাখ হাঙ্গেরিয়ানদের মাতৃভাষা ব্যবহার নিয়ে কিয়েভ ও বুদাপেস্টের বিরোধ রয়েছে। ২০১৭ সালে ইউক্রেন একটি আইন পাস করে। এই আইনে বিদ্যালয়ে সংখ্যালঘুদের ভাষার ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে বৈঠকের পর এক সাক্ষাৎকারে হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজ্জার্তো বলেছিলেন, আমরা যদি নিষেধাজ্ঞার বাস্তব দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি, তাহলে দেখতে পাব রাশিয়ার চেয়ে ইউরোপেরই বেশি ক্ষতি হচ্ছে। এ অবস্থায় মস্কোর ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রয়োজন দেখি না।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে ভিক্টর ওরবানের ভালো সম্পর্ক রয়েছে। পুতিনের খুব একটা সমালোচনা করেন না তিনি। ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের নিন্দা জানালেও কিয়েভকে কোনো অস্ত্র সহযোগিতা পাঠায়নি বুদাপেস্ট।
ইউক্রেনের ওডেসা বন্দরে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ॥ ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গত রবিবার রাতে ইউক্রেনের ওডেসা বন্দরে বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে রুশ বাহিনী। এ সময় ১৯টি ড্রোন, ১১টি ক্যালিবার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করতে সক্ষম হয় ইউক্রেন। তবে একটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং ২টি ওনিক্স সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র বন্দরে আঘাত করলে সেখানে মজুত রাখা অনেক শস্য নষ্ট হয়ে যায়।
জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় কৃষ্ণসাগর দিয়ে নিরাপদে শস্য পরিবহন চুক্তি থেকে জুলাই মাসে মস্কো বের হয়ে যাওয়ার পর থেকেই রাশিয়া ইউক্রেনের শস্য রপ্তানির অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত করতে ওডেসা ও মাইকোলাইভ অঞ্চলে হামলা জোরদার করেছে।
ইউক্রেন বলছে, রাশিয়া জানে বন্দর সুরক্ষা আমাদের জন্য একটি অগ্রাধিকার। যার কারণে যে হামলা চালানো হয়েছে তা ছিল একটি বড় ধরনের হামলা। রবিবার রাতে ইউক্রেনও হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। কৃষ্ণসাগরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, ক্রিমিয়ার ওপর এবং কুরস্ক ও বেলগোরোড অঞ্চলে ইউক্রেনীয় ড্রোনগুলো করে ভূপাতিত করা হয়েছে বলে তাদের দাবি। এতে কোনো হতাহতের কথা উল্লেখ করা হয়নি।