ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

পেহেলগাম হামলায় জড়িত গোষ্ঠীকে যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করায় যা বলছে চীন

প্রকাশিত: ০১:২৪, ১৯ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০১:২৫, ১৯ জুলাই ২০২৫

পেহেলগাম হামলায় জড়িত গোষ্ঠীকে যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করায় যা বলছে চীন

ছবি: সংগৃহীত

জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ হামলার পর, যুক্তরাষ্ট্র The Resistance Front (TRF) নামের সংগঠনটিকে বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন (FTO) এবং বিশেষভাবে চিহ্নিত বৈশ্বিক সন্ত্রাসী (SDGT) হিসেবে ঘোষণা করেছে। এ নিয়ে সরাসরি মন্তব্য না করে চীন বলেছে, আঞ্চলিক নিরাপত্তা রক্ষায় দেশগুলোর মধ্যে সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা আরও জোরদার হওয়া উচিত।

শুক্রবার বেইজিংয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেন, ‘চীন সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতা করে এবং ২২ এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানায়। আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা জরুরি।’

চীনের এই প্রতিক্রিয়া এমন সময় এলো, যখন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক বিবৃতিতে জানান, TRF-কে যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। TRF মূলত পাকিস্তানভিত্তিক নিষিদ্ধ সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা (LeT)-এর একটি প্রক্সি বা শাখা হিসেবে পরিচিত।

জাতিসংঘেও উঠছে TRF প্রসঙ্গ

যুক্তরাষ্ট্রের এই ঘোষণার প্রেক্ষিতে বিষয়টি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের (UNSC) ১২৬৭ স্যাংশন কমিটিতে উঠতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, এই কমিটি বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসীদের এবং তাদের সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, যার মধ্যে রয়েছে সম্পদ জব্দ, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ।

UNSC-র ১২৬৭ তালিকায় ইতিমধ্যে পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বা, জইশ-ই-মুহাম্মদ (JeM), জামাত-উদ-দাওয়া (JuD) এবং সন্ত্রাসী নেতা হাফিজ সাঈদ ও মাসউদ আজহার এর নাম রয়েছে।

পাকিস্তান ও চীনের আপত্তিতে জাতিসংঘ বিবৃতিতে TRF বাদ?

২২ এপ্রিলের হামলার পর ২৫ এপ্রিল জাতিসংঘ একটি কড়া বিবৃতি দিলেও TRF এবং LeT-এর নাম ওই বিবৃতি থেকে বাদ পড়ে। কূটনৈতিক সূত্র জানায়, পাকিস্তান ও চীনের আপত্তির কারণেই ওই নামগুলো বিবৃতি থেকে সরিয়ে ফেলা হয়।

হামলার দায় স্বীকার করে আবার অস্বীকার!

২২ এপ্রিল পেহেলগামে ভয়াবহ হামলায় নিহত হন ২৬ জন মানুষ। প্রথমে TRF হামলার দায় স্বীকার করলেও পরে তারা সেই দাবি থেকে সরে আসে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় তারা কৌশল পরিবর্তন করে।

ভারতের পক্ষ থেকে ৭ মে ‘অপারেশন সিঁদুর’ চালানো হয়, যেখানে পাকিস্তান ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে এবং পাকিস্তানের অভ্যন্তরে হামলা চালানো হয়।

চার দিন ধরে চলা এই সীমান্ত উত্তেজনার পর, ১০ মে দুই দেশ একটি সমঝোতায় পৌঁছে সংঘাত বন্ধে সম্মত হয়।

ভারতের অবস্থানের প্রতিধ্বনি মার্কিন বিবৃতিতে?

পাকিস্তানের প্রভাবশালী দৈনিক ডন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, TRF-কে নিয়ে মার্কিন বিবৃতিতে ভারতের দীর্ঘদিনের অবস্থানের প্রতিফলন ঘটেছে। ভারত শুরু থেকেই TRF-কে LeT-এর একটি মুখোশধারী শাখা বলে দাবি করে আসছে।

 

সূত্র: এনডিটিভি।

রাকিব

×