ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

কার্ডিওলজিস্ট নিজেই বুঝতে পারেননি—হার্ট অ্যাটাকের অদ্ভুত এক লক্ষণ

প্রকাশিত: ০৩:০০, ১৯ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০৩:১৭, ১৯ জুলাই ২০২৫

কার্ডিওলজিস্ট নিজেই বুঝতে পারেননি—হার্ট অ্যাটাকের অদ্ভুত এক লক্ষণ

ছবি: প্রতীকী

হার্ট অ্যাটাকের আগে হঠাৎ বাথরুমে যাওয়ার তীব্র ইচ্ছা—শোনার মতো অদ্ভুত মনে হলেও এটি হতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা। এমনটাই জানাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের একজন নামকরা হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ ড. উইলিয়াম উইলসন, যিনি নিজেই একসময় হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

৬৩ বছর বয়সে এই অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন ড. উইলসন। একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি তখন ভাবছিলাম, এটা তো আমার সঙ্গে হতে পারে না!’ যদিও তার শারীরিক অবস্থা দ্রুতই অবনতির দিকে যাচ্ছিল। বুকের মধ্যে চাপধরনের অস্বস্তি এবং ঘাম হওয়া—দুইটি ক্লাসিক উপসর্গই তখন দেখা দিয়েছিল।

কিন্তু তিনি যে লক্ষণটি তুলে ধরেছেন, সেটি বেশ অপ্রচলিত—হঠাৎ করে টয়লেটে যাওয়ার তীব্র তাড়া। ড. উইলসন জানান, ‘হার্ট অ্যাটাকের সময় শরীর একটা গভীর স্ট্রেস মোডে চলে যায়। এই সময় নার্ভাস সিস্টেমের কার্যক্রম বেড়ে যায়, বিশেষ করে যেটি আমাদের হজম ও মূত্রনালীর ওপর প্রভাব ফেলে। ফলে হঠাৎ মলত্যাগ বা প্রস্রাবের তীব্র ইচ্ছা দেখা দিতে পারে।’

এ ধরণের লক্ষণ সাধারণত খাবার খারাপ হওয়া বা উদ্বেগ বলে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু অনেকক্ষেত্রেই এগুলো হৃদ্‌রোগের সতর্কসংকেত হতে পারে।

হার্ট অ্যাটাকের সময় শরীরের প্রতিক্রিয়া

মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন বা হার্ট অ্যাটাক ঘটে তখন, যখন হৃৎপিণ্ডে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়, সাধারণত রক্ত জমাট বাঁধার কারণে। এতে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়, যা হৃদ্‌পেশির ক্ষতি করে। শরীরের নার্ভ সিস্টেম তখন অটোমেটিক রিফ্লেক্সে চলে যায়—এবং সেই সময় শরীরের কিছু অপ্রয়োজনীয় কাজ বন্ধ করে দেয় বা হঠাৎ ছেড়ে দেয়, যাতে বেঁচে থাকার প্রক্রিয়াগুলো চালু রাখা যায়।

এজন্য অনেকেই হার্ট অ্যাটাকের সময় বাথরুমে যেতে চায় বা গিয়েও থাকে। এটি অনেক সময় খাদ্য বিষক্রিয়া বা গ্যাস্ট্রিক সমস্যার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলা হয়।

সতর্কতা জরুরি

ভারতীয় ড. এস.এস. সিবিয়া বলেন, ‘বাথরুমে যাওয়ার তাড়া সাধারণত হৃদ্‌রোগের ক্লাসিক উপসর্গ নয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে এরকম ঘটনা ঘটতে পারে, বিশেষ করে যখন পেশেন্টের ভ্যাসোভ্যাগাল রেসপন্স হয়।’ তিনি বলেন, “হার্ট অ্যাটাকের প্রকৃত লক্ষণ হলো—বুক ধড়ফড় করা, বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, মাথা ঘোরা, বা ব্যথা চোয়াল বা বাহুতে ছড়িয়ে পড়া।’

তাই, কোনো উপসর্গকে অবহেলা না করে, বিশেষ করে বুকে চাপ, ঘাম, দুর্বলতা বা হঠাৎ বাথরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হলে চিকিৎসা নিতে দেরি করবেন না।

দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য। হার্ট অ্যাটাকের সময় যেকোনো অস্বাভাবিক উপসর্গ দেখা দিতে পারে, তবে সব সময় ক্লাসিক লক্ষণগুলোকেই গুরুত্ব দিতে হবে। উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।

 

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।

রাকিব

×