ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

স্বাস্থ্য

স্তন ক্যান্সার ॥ নতুন কিছু কারণ

স্তন ক্যান্সার ॥ নতুন কিছু কারণ

এখন স্তন ক্যান্সারের নতুন কিছু কারণে সচেতন ও সতর্কতা থাকাটা এখন জরুরি বেশি হয়ে পড়ছে। বিশ্বের মতো আমাদের দেশেও এর প্রকোপ বেশি বেড়ে গেছে। ইদানীং এর কারণের ধরনও কিছুটা পাল্টেছে।  আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে ভেজাল খাবার দাবার ও সঠিক জীবনযাত্রার বিঘেœর কারণেই এর মাত্রাটা বেড়ে যাচ্ছে বলে এক গবেষণায় দেখা যায়। তাই সচেতনতা তৈরি করতে  হবে।  অক্টোবর মাসেও স্তন ক্যান্সার সচেতনতা করা হয়েছে। বছরে কোন না কোনো এমন কিছু সচেতনতার পর্ব  থাকছেই। তাই সবাইকে এখন বেশি বেশি সচেতন করে তোলতে হবে। নতুবা এর প্রকোপ বেড়েই যাবে। এবং  মহিলাদের মধ্যে এই ক্যান্সার প্রথম স্থানে বিদ্যমান। মুশকিল হচ্ছে  বেশিরভাগ রোগীই ডাক্তারের কাছে যান দেরিতে। শুরুর দিকে স্তনে বা বগলে ব্যথাহীন চাকা ছাড়া আর কোনো উপসর্গ না থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য লক্ষ্মণগুলো ভিন্ন চরিত্রে  প্রকাশ পেয়ে থাকে।

স্বাস্থ্য বিভাগের সব খবর

হবু মায়েরা কর্মস্থলে ভালো থাকুন

হবু মায়েরা কর্মস্থলে ভালো থাকুন

গর্ভাবস্থায় বসে কাজ করলে মাঝে মধ্যে উঠুন, খানিকটা হাঁটুন গর্ভাবস্থায় একজন নারীর জীবনধারা বদলে যায়। কর্মস্থলেও নিজের শারীরিক পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে কাজের জন্য নিজেকে ‘ফিট’ রাখতে হয়। কারও কারও জন্য সেটা একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। জেনে নেওয়া যাক, কর্মস্থলে অন্তঃসত্ত্বা নারী নিজেকে ভালো রাখতে কী কী করতে পারেন। বমিভাব কমাতে   যা কিছু থেকে বমিভাব হতে পারে, তা এড়িয়ে চলুন। হয়তো ক্যানটিনের খাবারের ঘ্রাণটা সহ্য হচ্ছে না। সে ক্ষেত্রে ক্যানটিনে না গিয়ে ডেস্কে বসে খান। বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসুন। হাতের নাগালে ক্রেকার্স বা টোস্ট বিস্কুটের মতো শুকনা খাবার রাখুন। আদাকুচি বা আদা মেশানো পানীয় কাজে লাগাতে পারেন। গর্ভাবস্থায় একজন নারীর জীবনধারা বদলে যায় গর্ভাবস্থায় শরীর সহজে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু কর্মস্থলে তো চাইলেই আপনি বিশ্রাম নিতে পারবেন না, বরং ভিন্নভাবে ক্লান্তি সামলাতে হবে। পর্যাপ্ত পানি খান। হাতের কাছেই রাখুন পানির বোতল। একটু পরপর পানি খান। আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খান। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে আয়রন ট্যাবলেটও খেতে পারেন। বসে কাজ করলে মাঝে মধ্যে উঠুন। খানিকটা হাঁটুন। কখনো একটু সময়ের জন্য চেয়ারে পিঠ এলিয়ে বসুন। সুযোগ পেলে অল্প সময়ের জন্য একটা খালি চেয়ারে পা উঠিয়ে রাখুন। সম্ভব হলে কয়েক মিনিটের জন্য ঘরের আলো নিভিয়ে চোখ বুজে থাকুন। কাজের পরেও অন্যকিছু করার থাকতে পারে। এখন থেকে এগুলো একটু কমিয়ে দিন। রাতে পর্যাপ্ত ঘুমান। চিকিৎসকের পরামর্শ সাপেক্ষে বাড়িতে হালকা ব্যায়ামও করতে পারেন। স্বস্তিতে থাকতে এমন চেয়ারে বসুন, যাতে পিঠের নিচের অংশ ভালো ‘সাপোর্ট’ পায়। চেয়ারে আরামদায়কভাবে ব্যবহারের ব্যবস্থা না থাকলে কুশন ব্যবহার করুন। পা রাখতে পারেন নিচু টুলে দাঁড়িয়ে কাজ করতে হলে ছোট টুলে এক পা রাখুন। খানিক পরে আবার অন্য পা টুলে রাখুন। আরও যা করবেন কাজের শুরুতেই প্রতিদিনের কাজের তালিকা ঠিক করে নিন। সারা দিনের কাজ সামলানো সহজ হবে। অতিরিক্ত চাপ অনুভব করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বলুন। টুকটাক সমস্যার কথা কাছের বন্ধুর সঙ্গে ভাগ করে নিন। ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ থেকে দূরে থাকুন। সিগারেটের ধোঁয়াও কিন্তু মারাত্মক ক্ষতিকর। অতিরিক্ত শব্দ, অতিরিক্ত গরম, অতিরিক্ত ঠান্ডায় কাজ করা থেকে বিরত থাকুন। ভারী জিনিস তুলবেন না। কোনো কিছু বেয়ে উঠতে হলে সে কাজ এড়িয়ে চলুন। সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে গর্ভস্থ শিশুর ওপর তেমন ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে না। তবে গর্ভাবস্থায় ওজন কমে গেলে শিশুর ওজন কম ও অপুষ্টি হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রাখা উচিত। 

হৃৎপিণ্ডের এনজিনা

হৃৎপিণ্ডের এনজিনা

বাংলাদেশে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এই বৃদ্ধির অগণিত জানা-অজানা কারণ রয়েছে। তারপরও আমাদের ভৌগোলিক অবস্থান ও জীবনযাত্রার অভ্যাসগত কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। সাধারণত হৃদরোগের অসুখ বলতে আমরা হৃদযন্ত্রের অক্সিজেন বহনকারী ধমনীর সংকীর্ণতা বা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে যে অসুস্থতার সৃষ্টি হয় তাকে বুঝি। এই রোগ সংক্রান্ত অঈঈ/অঐঅ/ অঅঞঝ/ ঝঈঅও/ঝঞঝ/ ঋউঅ-এর নির্দেশিকা বিশ্লেষণ করলে আমরা রোগের মূলত তিন প্রকার চিকিৎসা পদ্ধতি পেয়ে থাকি।  প্রথমত, নিয়মিত ওষুধ খাওয়া, যা সকল রোগীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটা সর্বস্তরের চিকিৎসা পদ্ধতির জন্য প্রযোজ্য। দ্বিতীয়ত, ওহাধংরাব ঞৎবধঃসবহঃ, যেমন হৃৎপি-ের বন্ধপ্রায় ধমনীর মধ্যে ঢুকে এক বা একাধিক রিং (ঝঃবহঃ/চঈও) বসানো অথবা বুক কেটে বাইপাস সার্জারি (ঈঅইএ) করা। যা মূলত বিলম্ব-বিহীন, দ্রুত ও জরুরি চিকিৎসা পদ্ধতির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তৃতীয়ত, কোনো প্রকার ওহাবংরাব পদ্ধতি ছাড়াই হৃৎপিণ্ডের রক্তনালীর সংকীর্ণতা বা বন্ধ হয়ে যাওয়া ধমনীর উপযুক্ত চিকিৎসা করা, যা কিনা ক্রমবর্ধমান ও স্থিতিশীল হৃৎপিণ্ডের ব্যথার রোগীর জন্য প্রযোজ্য। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো টঝ-ঋউঅ নির্দেশিত ঊঊঈচ পদ্ধতি, যা কিনা বিজ্ঞানসম্মত, অত্যন্ত কার্যকরী, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াবিহীন, ব্যয় সহনীয়, সহজ ও একটি নিরাপদ চিকিৎসা ব্যবস্থা। ইতোমধ্যেই ঊঊঈচ ইউরোপ ও আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হৃৎপি-ের ক্রমবর্ধমান ও স্থিতিশীল এনজাইনা বা ব্যথায় সফলতার সঙ্গে বহুলাংশে ব্যবহার হয়ে আসছে।  ঊঊঈচ এর কার্যপদ্ধতি (Working Principal) : আমাদের হৃৎপি- Systole-এর সময়ে পরিশোধিত রক্তকে নির্ধারিত চাপ ও গতিতে শরীরের অগণিত ধমনীর মাধ্যমে সর্বাঙ্গে ছড়িয়ে দেয় এবং Diastole এর সময় এই রক্তের গতি অনেকটাই স্থির থাকে।  এই Diastole এর সময় শরীরের নিচের অংশের সকল ধমনীর উপর শরীরের বাহিরে অবস্থিত ঈঁভভ এর মাধ্যমে হৃৎপি-ের কাজের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চাপ সৃষ্টি করে ও রক্তকে অপেক্ষাকৃত উচ্চ চাপে দ্রুত হৃৎপি-ে ফেরত পাঠায়। এই কাজটি রোগীর ক্রমাগত ঊঈএ, কম্পিউটার ও কম্প্রেসারের সমন্বিত-কার্যের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ে থাকে।

বর্ষায় ত্বকের সমস্যা

বর্ষায় ত্বকের সমস্যা

বর্ষা মৌসুমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যার পানি দেখা দিতে পারে। বানের পানি পেরিয়েই শিশুরা অনেক জায়গায় স্কুলে যেতে হয়। আর বড়দের বাঁচার তাগিদে কাজ করতে হয় পানি সামলে। চারদিক থেকে ছুটে আসা এই নোংরা পানির সংস্পর্শে দেখা দেয় নানা রোগবালাই। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দেয়। এই সময়ে সবচেয়ে বেশি দেখা দেয় ফাঙ্গাস বা ছত্রাকজনিত নানা সংক্রমণ। আমাদের শরীরের ত্বকে অবস্থান করে, এমন স্বাভাবিক অধিবাসী কিছু জীবাণু হঠাৎ করেই দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে শক্তিশালী হয়ে ওঠে, সৃষ্টি করে নানা ত্বকের জটিল রোগ। দাদ : মূলত শরীরের ভাঁজগুলোতে ছত্রাক জন্মায়। একে চিকিৎসাবিজ্ঞানে টিনিয়া করপোরিস আর সাধারণ মানুষ দাদ বা ‘দাউদ’ বলে থাকেন। প্রচ- রকম চুলকানির পাশাপাশি কখনও কখনও এই সংক্রমণ দীর্ঘমেয়াদী ক্ষত তৈরি করে। গলা, মুখ, কুঁচকি, মলদ্বার এবং বুকে ও পিঠে এটি বেশি দেখা যায়। সাধারণত ছোট গোল ক্ষত আকারে সৃষ্টি হয়ে বাড়তে বাড়তে এটি মানচিত্রের রূপ নেয়। কখনও এর ওপর নানা রকম ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতিতে এটিতে পুঁজ হতে পারে। এটি ছড়ায়ও। ছত্রাক সংক্রমণ শরীর ছাড়াও মুখে, ঠোঁটে এমনকি মাথার ত্বকেও হতে পারে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে এরা ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। মাথার ত্বকে হলে এটাকে বলে টিনিয়া ক্যাপিটিস, কুঁচকিতে হলে টিনিয়া ক্রুরিস, হাত–পায়ে এর নাম টিনিয়া ম্যানাম ও টিনিয়া পেডিস।  সেবোরিক ডারমাটাইটিস : পানির সংস্পর্শে এ রোগের প্রাদুর্ভাব ব্যাপক। মাথার ত্বক, ভ্রু, মুখম-ল, নাকের দুই পাশ, বুকের ও পিঠের মাঝখানে ছোট ছোট দানার মতো দেখা দেয়, যা অনেকটাই তৈলাক্ত ও হলুদাভ। প্রচ- চুলকানির সঙ্গে মাথার চুল পড়া বেড়ে যাওয়া, ত্বকে জ্বালা ও ফুসকুড়ি দেখা দেয়; যা স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করে। ইস্ট নামের এক ধরনের ছত্রাক, যা দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে। তার কারণেই এটি হয়। ফলাফল খুশকি, চুলকানি, জ্বলুনি, লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি যা কেড়ে নেয় শরীরের সব স্বস্তি।

হাড়ের ব্যথায় হেলাফেলা নয়

হাড়ের ব্যথায় হেলাফেলা নয়

হাড়ের ব্যথা একটি উপসর্গ মাত্র। ব্যথা কখনও একাকী এবং কখনও অন্যান্য উপসর্গসহ প্রতীয়মান হয়। হাড়ের ব্যথা একজন লোককে চিন্তাগ্রস্ত ও বিষণœ করে তোলে যা ব্যথা থেকে ভয়াবহ। হাড় ব্যথা মানুষের স্বাভাবিক জীবনের গুণগতমানকে সাংঘাতিকভাবে বাধাগ্রস্ত করে। অধিকাংশ ব্যথা হয় হাড়ের বাহিরের স্নায়ু সংবেদনশীল আবরণ (পেরিওসটিয়াম) আক্রান্ত হওয়ার জন্য। পর্যাপ্ত স্নায়ু থাকে বিধায় মেরুদ-ের হাড়ে (কশেরুকা) সবচেয়ে বেশি ব্যথা হয়। কিছু ক্ষেত্রে হাড়ের গঠন দুর্বল (যেমন, ওসটিওমালাসিয়া) ও হাড় অকেজো (যেমন, ওসটিওনেকরোসিস) হলে হাড়ের ভেতরের আবরণের (এনডোসটিয়াম) উপর চাপ সৃষ্টি হয়। ফলে তীব্র ব্যথার উদ্রেক হয়।

ডায়াবেটিস ও ফ্যাটি লিভার

ডায়াবেটিস ও ফ্যাটি লিভার

বিপাকীয় কর্মহীনতা সম্পর্কিত ফ্যাটি লিভার রোগ (গঅঋখউ) এবং ডায়াবেটিসের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। গঅঋখউ হলো একটি লিভারের রোগ, যা প্রধানত অতিরিক্ত চর্বি জমার কারণে হয় এবং এটি প্রায়ই টাইপ ২ ডায়াবেটিসের সঙ্গে সম্পর্কিত। বিপাকীয় কর্মহীনতা সম্পর্কিত ফ্যাটি লিভার রোগ (গঅঋখউ) এবং ডায়াবেটিসের সম্পর্ক ইনসুলিন প্রতিরোধ (ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স): গঅঋখউ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের উভয়ের ক্ষেত্রেই সাধারণ কারণ হলো ইনসুলিন প্রতিরোধ। ইনসুলিন প্রতিরোধের ফলে শরীর ইনসুলিন ঠিকমত ব্যবহার করতে পারে না, যার ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। এটি লিভারের ফ্যাট জমার কারণে হতে পারে এবং গঅঋখউ সৃষ্টি করতে পারে। দৈহিক স্থূলতা: স্থূলতা গঅঋখউ এবং টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। অতিরিক্ত ওজন এবং বিশেষ করে পেটের চর্বি ইনসুলিন প্রতিরোধের ঝুঁকি বাড়ায়, যা উভয় রোগের কারণ হতে পারে। বিপাকীয় সমস্যামালা (মেটাবলিক সিন্ড্রোম): এটি একটি অবস্থা যেখানে উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ ট্রাইগ্লিসারাইড, নি¤œ ঐউখ কোলেস্টেরল এবং উচ্চ রক্ত শর্করার মতো বিভিন্ন বিপাকীয় সমস্যার সমন্বয় ঘটে। এই সিনড্রোম গঅঋখউ এবং ডায়াবেটিস উভয়ের ঝুঁকি বাড়ায়। বিপাকীয় কর্মহীনতা সম্পর্কিত ফ্যাটি লিভার রোগ এবং ডায়াবেটিস ব্যবস্থাপনা ওজন কমানো: ওজন কমানো গঅঋখউ এবং ডায়াবেটিস উভয়ের ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা যায়। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস :  কম কার্বোহাইড্রেট এবং কম ফ্যাটযুক্ত ডায়েট : প্রক্রিয়াজাত এবং উচ্চ-ক্যালোরিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা। বেশি ফাইবারযুক্ত খাবার : শাকসবজি, ফলমূল, পুরো শস্য এবং শিমজাতীয় খাবার গ্রহণ করা। গ্লাইকেমিক ইনডেক্স কম খাবার : যা রক্তে শর্করার স্তর ধীরে ধীরে বাড়ায়। নিয়মিত ব্যায়াম :  - এ্যারোবিক এক্সারসাইজ: যেমন- হাঁটা, সাইক্লিং, সাঁতার, যা রক্তে শর্করার স্তর নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। - রেজিস্ট্যান্স ট্রেনিং: যা ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়ায়। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ :  - মেডিকেশন : ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ গ্রহণ করা। -  রক্তের শর্করা পর্যবেক্ষণ : নিয়মিত রক্তের শর্করার স্তর পরীক্ষা করা। জীবনযাত্রার পরিবর্তন : - ধূমপান এবং অ্যালকোহল : ধূমপান পরিহার করা এবং অ্যালকোহল সীমিত করা। - পর্যাপ্ত ঘুম : নিয়মিত এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা। চিকিৎসা পরামর্শ: - নিয়মিত লিভার ফাংশন টেস্ট : লিভারের কার্যক্রম নিয়মিত পরীক্ষা করা। - চিকিৎসকের পরামর্শ : চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক চিকিৎসা নেওয়া। গঅঋখউ এবং ডায়াবেটিস উভয়ের ব্যবস্থাপনার জন্য একটি সম্মিলিত এবং সামগ্রিক পদ্ধতি গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক সময়ে এবং সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করলে রোগের অগ্রগতি রোধ করা এবং স্বাস্থ্যের উন্নতি সম্ভব।

তৈলাক্ত ত্বকের কিছু সমাধান

তৈলাক্ত ত্বকের কিছু সমাধান

প্রশ্ন: গরমকালে তৈলাক্ত বা তৈলাক্ত প্রবণ ত্বকের ক্ষেত্রে কি কি পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে ? উত্তর: গরমকালে ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার রাখা জরুরি। তা না হলে অতিরিক্ত তেল, ময়লা এবং মৃত কোষ মিলে ব্রণের সৃষ্টি হয়। যাদের ব্রণের সমস্যা আছে তাদের ড়রষ-নধংবফ অতিরিক্ত মেকআপ থেকে বিরত থাকাই ভালো। মিনারেল নধংবফ ফাউন্ডেশন বা ফেস পাউডার ব্যবহার করা ভালো । তৈলাক্ত এবং অধিক মসলাযুক্ত ফ্রাইড ফুড যেমন সমুচা বা পাকোড়া না খেয়ে, বেকড বা সিদ্ধ সমুচা /পাকোড়া বা মম খাওয়া ভালো। অতিরিক্ত শর্করা এবং চর্বি সমৃদ্ধ খাবার যেমন রসগোল্লা, সন্দেশ, বালুশাই, পেস্ট্রি না খেয়ে দুধ দিয়ে তৈরি ঘরে বানানো হালকা মিষ্টি জাতীয় খাবার যেমন দই, পুডিং, পায়েস ইত্যাদি খাবার খাওয়া ভালো।  অতিরিক্ত চর্বি সমৃদ্ধ খাবার যেমন পরোটা, লুচি, মোগলাই, কাবাব, পোলাও, রোস্ট, রেজালা না খেয়ে রুটি এবং মুরগি বা গরুর বা খাসির বেকড বা গ্রিলড মাংস খাওয়া উচিত। ত্বকের ধরন বুঝে ফেস মাস্ক বা এক্সফলিয়েটর ব্যবহার করা যেতে পারে। ব্রণ প্রবণ ত্বকের ক্ষেত্রে জেল বেসড ময়েশ্চারাইজার ভালো। দিনের বেলায় বাসার বাইরে যেতে হলে ত্বকের ক্ষতিকারক সূর্য রশ্মির প্রকোপ থেকে বাঁচার জন্য সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে। তবে এক্ষেত্রে গরমকালে  তৈলাক্ত  ত্বকের  জন্য, ক্রিম নয়-সানস্ক্রিন লোশন বা পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রশ্ন গরমকালে ত্বক উজ্জ্বল রাখার জন্য কি কি করা যেতে পারে? উত্তর : এক-পর্যাপ্ত পানি পান করা। দুই- ত্বকের ধরন বুঝে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা। তিন- অতিরিক্ত শর্করা, লবণাক্ত খাবার এবং ফলমূলের কনসেনট্রেটেড জুস বর্জন করা। চার- বেশি বেশি শাকসবজি এবং ফলমূল খাওয়া যেগুলোতে এন্টিঅক্সিডেন্ট বেশি থাকে। পাঁচ- দৈনিক আট ঘণ্টা ঘুমানো ভালো। ছয়-দিনের বেলায় কম সময় রোদে থাকা উচিত। সাত- রাতে ঘুমানোর আগে, আই কেয়ার ক্রিম ব্যবহার করা। আট- ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফেস সিরাম এবং হায়ালুরনিক এসিড সমৃদ্ধ কসমেটিক ব্যবহার করা যেতে পারে। নয়- দুই/তিন ঘণ্টা পর পর পানি দিয়ে মুখম-ল ধোয়া উচিত। দশ- সকল প্রকার মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকা উচিত।

উচ্চ রক্তচাপে ব্যায়াম

উচ্চ রক্তচাপে ব্যায়াম

উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের ব্যায়ামের ধরন : বর্তমান সময়ে হাইপার টেনশন বা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা বহু মানুষের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবনের পাশাপাশি খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন।  কি ধরনের ব্যায়াম করবেন? : ১. হাঁটাহাঁটি  বা দৌড়ানো ২. সাইকেল চালানো ৩. সাঁতার  কাটা ৪. খেলাধুলা করা ৫. বাগানে কাজ করা ৬. সিঁড়ি দিয়ে ওঠা / হাইকিং ৭. নাচ কতক্ষণ ব্যায়াম করবেন? : সপ্তাহে প্রতিদিন অথবা ন্যূনতম ৫ দিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করতে হবে। একটানা ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা সম্ভব না হলে ১০ মিনিট করে দিনে ৩ বার ব্যায়াম করেও সমান সুফল পাওয়া যাবে। ব্যায়ামের সুফল কি?: আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজি অনুযায়ী মানুষের স্বাভাবিক রক্তচাপ ১২০/৮০ মি. মি. পারদ। নিয়মিত ব্যায়ামের ফলে সিস্টোলিক রক্তচাপ ৩ থেকে ৬ ইউনিট এবং ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ৪ থেকে ১২ ইউনিট পর্যন্ত হয়ে থাকে। ১ থেকে ৩ মাস নিয়মিত ব্যায়াম করার পরে এই সুফল লক্ষ্য করা যায় এবং যতদিন ব্যায়াম করা যায় ততদিন এই সুফল বজায় থাকে। ব্যায়াম শুরু করার পূর্বে কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন? ১. হার্টের  কোনো রোগ জানা থাকলে যেমন হার্ট অ্যাটাক  ২. যদি ফুসফুসে কোনো রোগ থাকে  ৩. যদি পরিবারের পুরুষ সদস্যের ৫৫ বছর বা মহিলা সদস্যের ৬৫ বছর বয়সের পূর্বে হার্টের রোগ বা হঠাৎ মৃত্যুর ইতিহাস থাকে। ৪. নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস না থাকলে ৫. শারীরিক সুস্থতা সম্পর্কে আপনি যদি নিশ্চিত না থাকেন। কি লক্ষণ দেখা দিলে ব্যায়াম বন্ধ করবেন? ১. বুকে, গলায়, চোয়ালে বা বাহুতে ব্যথা/ চাপ অনুভব করলে। ২. অতিরিক্ত / অস্বাভাবিক শ্বাসকষ্ট হলে ৩. মাথা ঘোড়ালে ৪. হৃৎস্পন্দন / হার্টবিট অনিয়মিত হলে ব্যায়ামের অভ্যাস ধরে রাখার উপায় : আমরা অনেকেই ব্যায়াম শুরু করি কিন্তু নানা কারণে ব্যায়ামের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারি না। এক্ষেত্রে নিচের উপায় গুলো আপনাকে সাহায্য করতে পারে। ১. ব্যায়ামকে মজার করে তুলুন ২. দৈনন্দিন কাজের রুটিনের সঙ্গে মিলিয়ে ব্যায়ামের জন্য সময় নির্বাচন করুন ৩. ব্যায়ামে কাউকে সঙ্গে নিন  উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ব্যায়াম করার জন্য জিম এ ভর্তি হওয়া বা দামি যন্ত্রপাতি কেনার প্রয়োজন নেই, উপরের যে কোনো এক বা একাধিক ব্যায়াম নিয়মিত করবেন। ব্যায়াম খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে রাখা উচিত।