বর্ষা মৌসুমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যার পানি দেখা দিতে পারে। বানের পানি পেরিয়েই শিশুরা অনেক জায়গায় স্কুলে যেতে হয়। আর বড়দের বাঁচার তাগিদে কাজ করতে হয় পানি সামলে। চারদিক থেকে ছুটে আসা এই নোংরা পানির সংস্পর্শে দেখা দেয় নানা রোগবালাই। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দেয়। এই সময়ে সবচেয়ে বেশি দেখা দেয় ফাঙ্গাস বা ছত্রাকজনিত নানা সংক্রমণ। আমাদের শরীরের ত্বকে অবস্থান করে, এমন স্বাভাবিক অধিবাসী কিছু জীবাণু হঠাৎ করেই দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে শক্তিশালী হয়ে ওঠে, সৃষ্টি করে নানা ত্বকের জটিল রোগ।
দাদ : মূলত শরীরের ভাঁজগুলোতে ছত্রাক জন্মায়। একে চিকিৎসাবিজ্ঞানে টিনিয়া করপোরিস আর সাধারণ মানুষ দাদ বা ‘দাউদ’ বলে থাকেন। প্রচ- রকম চুলকানির পাশাপাশি কখনও কখনও এই সংক্রমণ দীর্ঘমেয়াদী ক্ষত তৈরি করে। গলা, মুখ, কুঁচকি, মলদ্বার এবং বুকে ও পিঠে এটি বেশি দেখা যায়। সাধারণত ছোট গোল ক্ষত আকারে সৃষ্টি হয়ে বাড়তে বাড়তে এটি মানচিত্রের রূপ নেয়। কখনও এর ওপর নানা রকম ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতিতে এটিতে পুঁজ হতে পারে। এটি ছড়ায়ও।
ছত্রাক সংক্রমণ শরীর ছাড়াও মুখে, ঠোঁটে এমনকি মাথার ত্বকেও হতে পারে। শরীরের বিভিন্ন স্থানে এরা ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। মাথার ত্বকে হলে এটাকে বলে টিনিয়া ক্যাপিটিস, কুঁচকিতে হলে টিনিয়া ক্রুরিস, হাত–পায়ে এর নাম টিনিয়া ম্যানাম ও টিনিয়া পেডিস।
সেবোরিক ডারমাটাইটিস : পানির সংস্পর্শে এ রোগের প্রাদুর্ভাব ব্যাপক। মাথার ত্বক, ভ্রু, মুখম-ল, নাকের দুই পাশ, বুকের ও পিঠের মাঝখানে ছোট ছোট দানার মতো দেখা দেয়, যা অনেকটাই তৈলাক্ত ও হলুদাভ। প্রচ- চুলকানির সঙ্গে মাথার চুল পড়া বেড়ে যাওয়া, ত্বকে জ্বালা ও ফুসকুড়ি দেখা দেয়; যা স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করে। ইস্ট নামের এক ধরনের ছত্রাক, যা দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে। তার কারণেই এটি হয়। ফলাফল খুশকি, চুলকানি, জ্বলুনি, লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি যা কেড়ে নেয় শরীরের সব স্বস্তি।