ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাস্থ্য

স্বাস্থ্য বিভাগের সব খবর

ক্ষতস্থানে জীবাণু আক্রমণ

ক্ষতস্থানে জীবাণু আক্রমণ

ক্ষত সব সময় দ্রুত শুকায় না। অনেক সময় কয়েক সপ্তাহ লেগে যায়। এমনকি কয়েক মাসও ক্ষত থাকতে পারে। সাধারণত এসব ক্ষতকে ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদি ক্ষত বলা হয়। নানা কারণে ক্ষত দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। এসব ক্ষত সারাতে হলে বিশেষ যতœ ও চিকিৎসা নিতে হয়। আর অবহেলা করলে এই ক্ষত থেকে আরও গভীরে হাড়ে সংক্রমণ, এমনকি চর্মজনিত ক্যান্সারও হতে পারে। ক্ষত নিরাময় মানবদেহের একটি স্বাভাবিক জৈবিক প্রক্রিয়া, যা চারটি সুনির্দিষ্ট পর্যায়ের মাধ্যমে হয়। এর মধ্যে আছেÑ হেমোস্ট্যাসিস, প্রদাহ, প্রসারণ ও পুনর্নির্মাণ। একটি ক্ষত সফলভাবে নিরাময়ের জন্য ওপরের চারটি পর্যায়ই যথাযথ ক্রম ও সময় মেনে ঘটতে হবে। বেশকিছু বিষয় আছে, যেগুলো ক্ষতস্থান পূরণের পর্যায়গুলোয় বাধা হয়ে দাঁড়ায়, ফলে ক্ষত শুকাতে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি সময় লাগে। যেমনÑ মরা চামড়া বা কোষ :  ক্ষতস্থানে মরা চামড়া বা কোষ থেকে গেলে বা শরীরের অংশ নয় এমন কিছু রয়ে গেলে। সংক্রমণ : ক্ষতস্থানে জীবাণু আক্রমণ করলে শরীর তখন ক্ষত পূরণ না করে জীবাণু ধ্বংস করতে ব্যস্ত থাকে।  রক্তক্ষরণ : ক্ষতস্থানে যদি রক্তপাত হতেই থাকে, তাহলে নতুন কোষ তৈরি, জোড়া লাগা, মজবুত হওয়া বন্ধ থাকে। রক্ত চলাচলে বাধা : ক্ষতস্থানে রক্ত চলাচল ব্যাহত হলে ক্ষত নিরাময়ের প্রক্রিয়াও বাধাগ্রস্ত হয়। খাদ্য ও পুষ্টির ঘাটতি : ক্ষত পূরণের জন্য শরীরে পর্যাপ্ত প্রোটিন, জিংক, আয়রন ও ভিটামিন সি প্রয়োজন। এসব জিনিসের ঘাটতি থাকলে ক্ষত শুকাবে না। অন্যদিকে, বাড়তি ওজনের কারণেও ক্ষত শুকাতে দেরি হয়। কিছু রোগ : ডায়াবেটিস, রক্তশূন্যতা, রোগ প্রতিরোধক্ষমতার অভাব, ক্যান্সার, রক্তনালির সমস্যা বা রক্ত চলাচলে সমস্যাজনিত রোগ থাকলে ক্ষত পূরণে দেরি হয়। ধূমপান: ধূমপানের অভ্যাস থাকলে ক্ষতস্থান পূরণে ধীরগতি দেখা যায়। সেই সঙ্গে জটিলতা দেখা দিতে পারে।  এ ছাড়া ডায়াবেটিস, নিউরোপ্যাথি ও কুষ্ঠ থাকলে অনুভূতি কমে যাওয়ার কারণে বারবার ক্ষত বা আঘাত লাগলেও রোগী বুঝতে পারেন না, ফলে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতের সৃষ্টি হয়। বিশেষ ধরনের জীবাণু দিয়ে সংক্রমণ হলেও ক্ষত দীর্ঘমেয়াদি হয়। সে জন্য শরীরে কোনো ক্ষতের সৃষ্টি হলে এবং স্বাভাবিকের (৩-৪ সপ্তাহ) তুলনায় দীর্ঘস্থায়ী হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।  চিকিৎসক রোগীর সম্পূর্ণ ইতিহাস, ওষুধ, অভ্যাস ও অন্যান্য রোগ সম্পর্কে জেনে প্রয়োজনীয় রক্ত পরীক্ষা, রক্ত চলাচল ও স্নায়ু পরীক্ষা, ক্ষতস্থানের পুঁজ এমনকি ক্ষতস্থান থেকে সামান্য মাংস কেটে পরীক্ষা করে ক্ষত না শুকানোর কারণ বের করতে পারবেন এবং সে অনুযায়ী যথাযথ চিকিৎসা প্রদান করবেন। সুতরাং দুর্ঘটনাবশত শরীরের কোথাও ক্ষতের সৃষ্টি হলে এবং শুকাতে দেরি হলে হেলাফেলা না করে নিকটস্থ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

অটিজম কোনো রোগ নয়

অটিজম কোনো রোগ নয়

শিশুর জন্মের ১৮ মাসের মধ্যে অটিজম বোঝা যায়। ১৮ মাস থেকে ৩৬ মাসের মধ্যে একটি শিশু যখন অন্য শিশুর সঙ্গে মিশতে চায় না, অথবা অন্য শিশুর সঙ্গে তার আচরণের পার্থক্য থাকে। অথবা কিছু কার্যক্রম অন্য বাচ্চাদের থেকে একদম ভিন্ন হয়। এছাড়া তাদের যোগাযোগে অসুবিধা থাকে। মৌখিক বা ইশারা কোনোভাবেই তারা যোগাযোগ স্থাপন করে না, অন্য বাচ্চারা যেমন মিলেমিশে খেলাধুলা করে সেই খেলাধুলা তারা করতে পারে না। অনেক বাচ্চার মধ্যে ছেড়ে দিলে ঐ বাচ্চা আলাদা হয়ে নিজের মতো থাকে। আর একটা হচ্ছে, অন্য বাচ্চাদের মতো তারা পুতুল নিয়ে খেলে না। তারা কাগজ দিয়ে খেলে, একই কথা বার বার বলে, তারা কখনো স্থির থাকে না। সে যেটা পছন্দ করে সেটা নিয়েই সারাক্ষণ থাকতে চায়। অটিজম মস্তিস্কের বিকাশজনিত সমস্যা। অটিজমের লক্ষণ শিশু জন্মের তিন বছরের মধ্যে দেখা দেয়। শুরুতেই অটিজমের লক্ষণ শনাক্ত হলে, তাদের চিকিৎসার মাধ্যমে কর্মক্ষম করে তোলা সম্ভব। তাই সচেতন হতে হবে পরিবারকে। শুরুতেই অটিজম শনাক্ত করার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। অটিজমের মধ্যে তিনটা মাত্রা আছে, তা- মৃদু মাত্রা, মধ্যম মাত্রা ও অতিমাত্রা, এই তিন ধরনের অটিজম থাকতে পারে। অটিজম বাচ্চাদের মধ্যে মেধার কোনো কমতি থাকে না। কিন্তু তাদের আচরণগত সমস্যা থাকে। এই কনসেপ্ট নিয়ে বিশ্বের সব বাচ্চাদের নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। যদি মৃদু আকারের অটিজম থাকে, শুরুতে শনাক্ত হলে তাদের সেইমতো দ্রুত ইন্টারভেনশন দিয়ে ঐসব শিশুকে কাজে লাগানো যায়। এই আইডিয়া থেকে ২০১০ সালের পর থেকে সারা বিশ্বে কাজ চলছে। সেই কারণে ঐসব শিশুকে বিশেষ স্কুলে পড়িয়ে কম মেধার কাজগুলো তাদের দিয়ে করানো যায়। সরকারের ডিজ্যাবিলিটি ইনফরমেশন সিস্টেমের তথ্যানুসারে, মেয়ে শিশুর চেয়ে ছেলে শিশুর সংখ্যা বেশি এবং গ্রামাঞ্চলের চেয়ে শহরাঞ্চলে অটিজমে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। যেসব বাচ্চার জেনেটিক সমস্যা থাকে সেসব শিশু এ ধরনের সমস্যা নিয়ে জন্মায়। ১৮ মাস পরে লক্ষণগুলো আসা শুরু করে, আর সম্পূর্ণরূপে এই অসুবিধাগুলো আসে তিন বছর বয়সে।

চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি হলেও বেড়েছে ব্যয়

চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি হলেও বেড়েছে ব্যয়

ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট থেকে শুরু করে ব্যোনম্যারো প্রতিস্থাপন। জটিল সব রোগের চিকিৎসার পাশাপাশি বেড়েছে আধুনিক চিকিৎসাসেবার আওতায় আসা রোগীর সংখ্যা। কিন্তু এ সময়ে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে চিকিৎসা ব্যয়ও। মানুষের আয়ের একটা বড় অংশ চলে যাচ্ছে চিকিৎসাসেবার পেছনে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাস্থ্যসেবার প্রথম ধাপেই যে বিষয়টি আসে তা হলো প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা।  বাড়ছে অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত লোকের সংখ্যাও। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় চারটি মূলভিত্তির মধ্যে দক্ষ মানবসম্পদ অন্যতম। দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে প্রয়োজন সুস্থ জনশক্তি। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় বর্তমান সরকারের অনেক প্রশংসনীয় উদ্যোগের মধ্যে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন যেকোনো সময়ের চাইতে সবচেয়ে ভালো।