ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৫ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে ৮টি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

প্রকাশিত: ০০:৩২, ৫ জুলাই ২০২৫

স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে ৮টি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর প্রায় ৭.৯৫ লাখ মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হন, যার মধ্যে অনেকেই স্থায়ীভাবে কর্মক্ষমতা হারান। তবে চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের মতে, জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন এনে—বিশেষ করে খাদ্যাভ্যাসে—এই ঝুঁকি অনেকটাই হ্রাস করা সম্ভব। সম্প্রতি Prevention ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে স্ট্রোক প্রতিরোধে কার্যকর ৮টি খাবারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

 স্ট্রোক প্রতিরোধে কার্যকর ৮টি খাবার

১. পাতাবাহারি শাকসবজি (স্পিনাচ, পালং, কেল):
নাইট্রেট সমৃদ্ধ এসব শাক শরীরে নাইট্রিক অক্সাইড তৈরি করে, যা রক্তচাপ কমাতে ও ধমনী প্রশস্ত করতে সহায়ক। এতে রয়েছে ভিটামিন কে ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট।

২. কমলা জাতীয় ফল (কমলা, মাল্টা, গ্রেপফ্রুট):
ভিটামিন সি, পটাশিয়াম ও ফাইবারে ভরপুর সাইট্রাস ফল কোলেস্টেরল কমায় ও প্রদাহ প্রতিরোধ করে। তবে গ্রেপফ্রুট কিছু ওষুধের সঙ্গে বিরূপ প্রতিক্রিয়া করতে পারে—চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

৩. আখরোট:
প্রতিদিন অর্ধ কাপ আখরোট গ্রহণ এলডিএল (খারাপ কোলেস্টেরল) কমায়। এতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা প্রদাহ কমায়, রক্তচলাচল স্বাভাবিক করে এবং রক্তচাপ হ্রাসে সহায়ক।

৪. দই:
দইয়ে রয়েছে ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও প্রোবায়োটিক যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে। তবে কম চিনি বা আনস্যুইটেনড দই বেছে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

৫. ওটস বা জোল:
ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ওটস রক্তে শর্করার পরিমাণ স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। এটি দেহে প্রদাহ কমিয়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করে।

৬. চর্বিযুক্ত মাছ (স্যামন, ম্যাকারেল, সার্ডিন):
ওমেগা‑৩ সমৃদ্ধ এসব মাছ প্রদাহ কমায়, রক্ত চলাচল সহজ করে এবং কোলেস্টেরল ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

৭. দ্রবণীয় ফাইবারযুক্ত খাবার (আপেল, গাজর, মিষ্টি আলু, ব্রোকলি):
দ্রবণীয় ফাইবার কোলেস্টেরল কমিয়ে রক্তনালিকে সুরক্ষা দেয় এবং রক্তে গ্লুকোজ বাড়ার হার কমায়।

৮. উদ্ভিদভিত্তিক প্রোটিন (বিনস, রাজমা):
এগুলো কেবল প্রোটিন নয়, বরং উচ্চ ফাইবারও সরবরাহ করে। এক গবেষণায় দেখা যায়, যারা পশু প্রোটিনের বদলে উদ্ভিদভিত্তিক প্রোটিন গ্রহণ করেন, তাদের হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য হারে কমে।

অতিরিক্ত কিছু সহায়ক খাবার:

  • কফি (মডারেট পরিমাণে): অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ।

  • বিটরুট: নাইট্রেট সমৃদ্ধ।

  • অ্যাভোকাডো: মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট ও পটাশিয়ামের উৎস।

  • সবুজ চা: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যাটেচিনে সমৃদ্ধ।

  • ডার্ক চকলেট: ফ্ল্যাভোনয়েড সমৃদ্ধ, যা রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

মেমোরিয়ালকেয়ার স্যাডলব্যাক মেডিকেল সেন্টারের কার্ডিওলজিস্ট ড. চেং-হান চেন বলেন, “স্ট্রোক প্রতিরোধে শুধু খাবার নয়, জীবনধারার পরিবর্তনও গুরুত্বপূর্ণ। ওজন নিয়ন্ত্রণ, ধূমপান পরিহার, রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল পর্যবেক্ষণ করে স্বাস্থ্য সচেতন হতে হবে।”
যথাযথ খাদ্যাভ্যাস ও স্বাস্থ্যসচেতন জীবনধারা গ্রহণ করে স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই সময় আপনার খাবারের তালিকায় যুক্ত করুন এই উপকারী খাদ্যগুলো।

Jahan

×