ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২

যেসব খাবার খেলে বাচ্চাদের স্মরণশক্তি বাড়ে

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ৫ জুলাই ২০২৫

যেসব খাবার খেলে বাচ্চাদের স্মরণশক্তি বাড়ে

সংগৃহীত

আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। কিন্তু প্রযুক্তিনির্ভর এই যুগে দিনদিন কমে যাচ্ছে শিশুদের মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা, ভুলে যাচ্ছে পড়া, বাড়ছে অস্থিরতা। এই সমস্যা শুধু পড়াশোনায় নয়, প্রভাব ফেলছে তাদের আত্মবিশ্বাস, মানসিক স্বাস্থ্য ও ভবিষ্যৎ উন্নতিতে। তবে শুধু ওষুধ নয়, স্মৃতিশক্তি বাড়াতে প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরোয়া খাবারই হতে পারে সবচেয়ে কার্যকর সমাধান।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশের জন্য কিছু নির্দিষ্ট পুষ্টিগুণযুক্ত খাবার শিশুর খাদ্যতালিকায় থাকা জরুরি। সেই তালিকায় আছে ডিম, বাদাম, বেরি, দুধ, শাকসবজি, ডার্ক চকোলেটসহ পরিচিত বেশ কিছু খাবার।

ডিম: প্রতিদিন একটিই যথেষ্ট

  • ডিমে রয়েছে কোলিন নামক এক বিশেষ উপাদান, যা স্মৃতি ও মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করে।
  • শিশুরা সকালের নাশতায় একটি করে সিদ্ধ বা অমলেট ডিম খেলেই তা ব্রেইন–ফাংশন উন্নত করে।

আখরোট ও কাঠবাদাম: মস্তিষ্কের প্রাকৃতিক শক্তি

  • ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে ভরপুর আখরোট শিশুর নিউরনের কর্মক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।
  • প্রতিদিন ৪–৫টি বাদাম শিশুর বিকেলে টিফিনে যোগ করলে পাওয়া যাবে চোখে পড়ার মতো উন্নতি।

বেরি: ছোট ফল, বড় কাজ

  • ব্লুবেরি বা স্ট্রবেরিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শিশুদের ব্রেইনের কোষে রক্তপ্রবাহ বাড়ায়, স্মৃতিশক্তি উন্নত করে এবং শেখার ক্ষমতা বাড়ায়।
  • বিকেলের হালকা খাবারে বা ওটসের সঙ্গে সহজেই পরিবেশনযোগ্য।

ওটস ও শাকসবজি: ধীরে ধীরে শক্তি

  • ওটস কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের খাবার হওয়ায় শিশুর দেহে দীর্ঘসময় শক্তি সরবরাহ করে এবং মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করে।
  • শাকসবজি, বিশেষ করে পালং ও মেথি, আয়রন ও ফলেটে সমৃদ্ধ, যা স্নায়ু সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে।

দুধ ও হলুদ: ঘুমের আগে স্মৃতির জ্বালানি

  • এক গ্লাস গরম দুধের সঙ্গে সামান্য হলুদ মিশিয়ে দিলে তা শুধু ঘুমে সহায়ক হয় না, কারকিউমিন উপাদান মস্তিষ্কের প্রদাহ কমিয়ে স্মৃতি ধরে রাখতেও সহায়তা করে।

ডার্ক চকোলেট: সঠিক পরিমাণে উপকারী

  • ৭০% কোকোযুক্ত ডার্ক চকোলেট ব্রেইনের রক্তপ্রবাহ বাড়ায় এবং ভালো মেজাজ তৈরিতে সাহায্য করে। তবে দিনে এক টুকরোর বেশি নয়, নয়তো হিতে বিপরীত।

কখন কোন খাবার?

  • বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সকালের নাশতা হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই সময় মস্তিষ্ক সক্রিয় হয় এবং দিনের কাজের জন্য শক্তি চায়। তাই সকালে ডিম, ওটস, দুধ এবং বাদাম খাওয়ানো সবচেয়ে কার্যকর। বিকেলে হালকা ফল বা বাদাম, আর রাতে ঘুমানোর আগে দুধ–হলুদ খুবই উপকারী।

শিশুর ভবিষ্যৎ আপনার হাতে

  • প্রতিদিন একটু সচেতন পরিকল্পনায় আপনি তৈরি করতে পারেন একটি আত্মবিশ্বাসী, স্মার্ট ও মনোযোগী ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। কোনো দামি সাপ্লিমেন্ট নয়, বরং ঘরেই থাকা পরিচিত খাবার দিয়েই গড়া সম্ভব একটি উন্নত মস্তিষ্কের ভিত।

আপনার সন্তানের মেন্যুতে আজ থেকেই শুরু হোক এই ‘ব্রেইন–ফুড’ যাত্রা।

হ্যাপী

×