ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৫ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

৫ ধরনের কানের ময়লা যা লুকিয়ে থাকা স্বাস্থ্যঝুঁকির ইঙ্গিত দিতে পারে

প্রকাশিত: ২০:৫৪, ৪ জুলাই ২০২৫

৫ ধরনের কানের ময়লা যা লুকিয়ে থাকা স্বাস্থ্যঝুঁকির ইঙ্গিত দিতে পারে

ছবি: সংগৃহীত।

কানের ময়লা বা 'ইয়ারওয়াক্স'—দেখতে অদ্ভুত হলেও শরীরের প্রাকৃতিক সুরক্ষা ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সাধারণত আমরা একে গুরুত্ব দিই না, কিন্তু চিকিৎসকরা বলছেন—এর রং ও গঠন শরীরের ভেতরের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে। সম্প্রতি চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা কানের ময়লার পাঁচটি রঙকে চিহ্নিত করেছেন, যা গোপনে শরীরের নানা অসুস্থতার বার্তা দিতে পারে।

স্বাভাবিক কানের ময়লা কেমন হওয়া উচিত?
বিশেষজ্ঞরা জানান, জিনগত বৈশিষ্ট্যের ওপর নির্ভর করে কারও কানের ময়লা শুষ্ক আবার কারওটা আর্দ্র হতে পারে—দুইটাই স্বাভাবিক।

শুষ্ক ময়লা সাধারণত হালকা হলুদ বা ধূসর এবং ভঙ্গুর প্রকৃতির হয়। আর্দ্র ময়লা তুলনামূলকভাবে ঘন, তেলতেলে এবং সময়ের সাথে রঙ পরিবর্তন করে হলুদ থেকে বাদামি বা গাঢ় হয়ে উঠতে পারে।

তবে এসবের বাইরে কিছু রং আছে, যা শরীরে লুকিয়ে থাকা রোগের বার্তা বহন করতে পারে। নিচে বিস্তারিত তুলে ধরা হলো—

১. কালো রঙের কানের ময়লা
দেখতে ভয়ংকর লাগলেও কালো রঙের ময়লা সাধারণত পুরোনো ময়লারই ইঙ্গিত দেয়। সময়ের সঙ্গে ধূলাবালি ও বাতাসের কণা জমে এটি গাঢ় হয়ে পড়ে।
কারণ: ধুলাবালিযুক্ত পরিবেশে কাজ করলে এই ধরনের ময়লা বেশি হয়। সমস্যা না হলে আতঙ্কের কিছু নেই।

২. গাঢ় বাদামি রঙের ময়লা
এটিও সাধারণত পুরোনো ময়লারই লক্ষণ। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে হলে শ্রবণক্ষমতা হ্রাস, চাপ অনুভব বা মাথা ঘোরার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
পরামর্শ: কটন বাড ব্যবহার না করে নিরাপদ উপায়ে ময়লা পরিষ্কার করা উচিত।

৩. সবুজ রঙের কানের ময়লা
এই রঙ অস্বাভাবিক এবং স্বাস্থ্যঝুঁকির বার্তা দেয়। সবুজ রঙ মানে ময়লার সঙ্গে পুঁজ বা ইনফেকশনের তরল মিশে আছে। সাধারণত দুর্গন্ধও থাকে।
লক্ষণ: কানে ব্যথা, চাপ, বা শ্রবণ কমে যাওয়া। তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা প্রয়োজন।

৪. সাদা বা ধবধবে কানের ময়লা
অনেকের শরীরের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য হিসেবে সাদা ময়লা হতে পারে, তবে হঠাৎ রঙ বদলে গেলে সতর্ক হতে হবে।
সম্ভাব্য কারণ: ইনফেকশন, ওষুধ প্রয়োগ বা কানের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। পাশাপাশি ব্যথা বা অস্বস্তি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

৫. লাল রঙের কানের ময়লা
লাল রঙ মানে ময়লায় রক্ত মিশেছে, যা সাধারণত কানের ভেতরে ক্ষত বা আঘাতের ইঙ্গিত হতে পারে। কটন বাড দিয়ে গভীরে ঢুকিয়ে ফেললেও এমন ক্ষতি হতে পারে।
গুরুতর হলে: কানের পর্দা ফেটে যেতে পারে, যা শুনতে সমস্যা বা ভারসাম্যহীনতা তৈরি করে। হঠাৎ এমন হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

কানের যত্ন মানেই শ্রবণশক্তি রক্ষা
সঠিক উপায়ে কান পরিষ্কার রাখা এবং কানের ময়লার রঙ ও গঠন নজরে রাখা আমাদের শ্রবণশক্তি বজায় রাখতে সহায়ক। বিশেষজ্ঞরা বলেন, কটন বাড না ব্যবহার করে চিকিৎসা-স্বীকৃত কানের ড্রপ বা পেশাদার পরিষেবার মাধ্যমে পরিষ্কার করাই নিরাপদ।

যে কোনো অস্বাভাবিকতা বা পরিবর্তন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কানের ময়লা যে শুধু ময়লাই নয়, তা হতে পারে শরীরের ভেতরের গুরুত্বপূর্ণ সংকেত বহনকারী—এটা এখন স্পষ্ট।

মিরাজ খান

×