
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যেন নিজেই এক অসুস্থ প্রতিষ্ঠান। কর্তৃপক্ষের অবহেলা, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে সরকারি এই হাসপাতালটি রোগীদের দুর্ভোগের নতুন প্রতীক হয়ে উঠেছে।
রোগীরা অভিযোগ করেছেন, হাসপাতালের চিকিৎসকরা নিয়মিত সময়মতো আসেন না। বহির্বিভাগের দরজায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও অনেকে চিকিৎসা পাচ্ছেন না। অনিয়মের সুযোগে কর্মচারীরা অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন, কিন্তু কোনো রসিদ দিচ্ছেন না। হাসপাতালের চারপাশে ড্রেনে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে রোগীদের থাকা দায়।
চক্ষু চিকিৎসা নিতে আসা এক রোগী বলেন, “গত তিন দিন ধরে হাসপাতালে আসছি। একদিন বলে ডাক্তার নেই, আরেকদিন বলে অনলাইনে ত্রুটি। আজও চিকিৎসা না নিয়েই ফিরে যাচ্ছি।”
অপর এক সেবাপ্রার্থী আবুল কালাম ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “ডায়াবেটিস পরীক্ষা করতে ৩৬০ টাকা নিয়েছে, কোনো রসিদও দেয়নি। সরকারি হাসপাতালে গিয়েও যদি এত টাকা দিতে হয়, গরিব মানুষ যাবে কোথায়?”
সরেজমিনে দেখা গেছে, সকাল ৮টার পরও বহির্বিভাগের দরজা বন্ধ। ৯টার পরও চিকিৎসকদের কক্ষে তালা ঝুলছে। সকাল ১০টার দিকে একে একে চিকিৎসকরা আসতে শুরু করেন। অথচ এই অনিয়ম দেখার কথা যাদের, সেই উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হাজির হন সকাল সাড়ে ১০টায়।
হাসপাতালের শৌচাগারগুলো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ওয়াশরুমের বেসিন ভাঙা, চারপাশে জমে আছে ময়লা-আবর্জনা। নোংরা পরিবেশে চলতে থাকা চিকিৎসা কার্যক্রম রোগীদের ভোগান্তি আরও বাড়িয়ে তুলছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সৌনম বড়ুয়া দাবি করেন, “আমার চিকিৎসকরা প্রতিদিন সময়মতো আসেন। আজ হয়তো একটু দেরি হয়েছে। জনবল সংকট থাকায় সবার ওষুধ চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানিয়েছি।”
হাসপাতালে তার দেরিতে আসার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “সকালে সাব-সেন্টার ভিজিট করতে গিয়েছিলাম, তাই আসতে দেরি হয়েছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, “ডাক্তারদের সকাল ৮টায় হাসপাতালে উপস্থিত থাকার কথা। কেন তারা দেরি করেছেন, তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
মিমিয়া