ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ

বাংলাদেশ বিভাগের সব খবর

পাউবোর গাইড ওয়াল নির্মাণে নিম্ন মানের সামগ্রী

পাউবোর গাইড ওয়াল নির্মাণে নিম্ন মানের সামগ্রী

বাঁশখালীর সাধনপুর ইউনিয়নের বাণীগ্রামের কুমারীছড়া এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অধীনে ২৩ মিটার গাইড ওয়াল নির্মাণে বহুমুুখী দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসী।  ছোট্ট এই কাজটির জন্য টেন্ডার সিডিউলে ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হলেও গাইড ওয়াল নির্মাণের আরসিসি ঢালাইয়ে নিম্ন মানের পাথর, সিমেন্ট, বালি ও রড ব্যবহার করা হচ্ছে প্রকাশ্যে। এই ছোট্ট কাজটির ‘লাভের গুড়’ খেতে এই পর্যন্ত তিনজন বিএনপি নেতা ঠিকাদার হাত বদল দেখিয়ে পাউবো কর্মকর্তারাও ভাগের হিসেবে উৎফুল্ল হয়ে দুর্নীতিতে বাধা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, সাধনপুরের বাণীগ্রাম কুমারী ছড়ার শ্মশান পাড়ের ২৩ মিটার গাইড ওয়ালের কাজ পেয়েছেন ফণি এন্টার প্রাইজের মালিক রুপেশ চাকমা। বরাদ্দ ধরা হয়েছে ২৫ লাখ টাকা। পাউবো কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় কাজটি রুপেশ চাকমাকে কিছু লাভ দিয়ে চুক্তিতে ভাগিয়ে নেন বাঁশখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি লোকমান আহম্মদ প্রকাশ মাস্টার লোকমান। তিনি আরেক চুক্তিতে বিক্রি করে দেন কাথরিয়ার বিএনপি নেতা রাসেলের কাছে। অর্থাৎ কাজে লাভের গুড় খেলেন ৩ জন ঠিকাদার। বর্তমানে উপ-ঠিকাদার রাসেল পাউবোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে সখ্য রেখে ভয়ঙ্কর দুর্নীতি করে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় শ্মশানের কয়েকজন ব্যক্তি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, কাজে নিম্ন মানের সিমেন্ট, পাথর, সিলেকশন বালির পরিবর্তে স্থানীয় বালি ব্যবহারসহ নানা অনিয়ম করা হচ্ছে। শুনেছি অভিযোগ করলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়, তাই কোনো রকমে কাজ উদ্ধারে চুপ থেকেছি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কুমারী ছড়ার পাড়ের গাইড ওয়াল সরাসরি ছড়ার মাঝখানে করা হচ্ছে। নিচের অংশে ঢালাই ও গাইড ওয়ালের আর.সি.সি ঢালাইয়ে ৯৫% থেকে ১০০% ক্লিংকার যুক্ত ওপিসি সিমেন্ট (ওরডিনারি পোর্ট ল্যান্ড সিমেন্ট)’র পরিবর্তে ব্যবহার হচ্ছে পিসিসি সিমেন্ট (পোর্ট ল্যান্ড কম্পোজিট সিমেন্ট), ১২ এমএম লোহার পরিবর্তে ব্যবহার হচ্ছে ১০ এমএম লোহা, সিলেকশন বালি ২. ৫ এফ এম সিলেটি বালির পরিবর্তে ব্যবহার হচ্ছে ০.৮ এফএমের স্থানীয় পাহাড়ি ছড়ার বালি। ঢালাইয়ের জন্য যেসব পাথর মজুত করা হয়েছে তা অত্যন্ত নিম্ন মানের। হাতে ঘষা দিলেও অনেক পাথর গুঁড়ি হয়ে যায়। ফনি এন্টারপ্রাইজের মালিক রুপেশ চাকমা বলেন, আমি পাউবো কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় কাজটি চুক্তিভিত্তিক বিএনপি নেতা লোকমান আহম্মদকে বিক্রি করে দিয়েছি। দুর্নীতি করলে পাউবো কর্মকর্তা ও ওই ঠিকাদার দায়ী। আমি নয়। ওই কাজের উপ-ঠিকাদার দাবি করে বিএনপি নেতা রাসেল বলেন, আমি কাজটি লোকমান ভাইয়ের কাছ থেকে নিয়েছি। সিডিউল অনুসারে করছি। পাউবো কর্মকর্তারা আমার কাজ দেখে প্রশংসা করেছে। আমি কোনো দুর্নীতি করছি না। নিম্নমানের পাথর, বালি, রড ও সিমেন্টের ব্যাপারে তিনি বলেন, এ রকম কাজ বাহারছড়া, সরল, কালীপুরেও হচ্ছে শুধু আমি একা করছি না। সব ঠিকাদার একইভাবে কাজ করছে।  পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী অনুপম পাল বলেন, দুর্নীতির অভিযোগ পেলে কাজের মান নিয়ে তদন্ত করব। সরেজমিন পরিদর্শনের সময় নিম্নমানের পাথর, বালি, সিমেন্ট মজুত থাকলেও আপনি ঠিকাদারকে কিছু বলেননি অথচ দ্রুত কাজ চালিয়ে যান বলে পরামর্শ দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে- এই প্রশ্নে তিনি বিষয়টি আবার দেখবেন বলে এড়িয়ে যান।

ডায়াবেটিক রোগীর উপযোগী  ব্রি ধান-১০৫ চাষে সাফল্য

ডায়াবেটিক রোগীর উপযোগী  ব্রি ধান-১০৫ চাষে সাফল্য

ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য উপযোগী বিশেষ ধান উৎপাদন হয়েছে চিতলমারী উপজেলায়। কৃষক বিধান চন্দ্র বিশ্বাসের জমিতে এই ধান উৎপন্ন হয়েছে। নতুন জাতের এই ধানের নাম ব্রি-১০৫। বিষয়টা এলাকায় সাড়া ফেলেছে। এবারই প্রথম চিতলমারীর ৩৩ শতক জমিতে নতুন জাতের এই ধান চাষ হয় বলে উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে। জানা গেছে, গোপালগঞ্জ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) বিজ্ঞানী সৃজন চন্দ্র দাস ও ড. মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলামের তত্ত্বাবধায়নে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চিতলমারীর সহযোগিতায় কৃষক বিধান চন্দ্র এই ধান সফলভাবে উৎপাদন করেন। চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিফাত আল মারুফ শুক্রবার বলেন, ‘এই ধানের জিআই মান কম, অর্থাৎ ‘৫৫’ হওয়ায় ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য এই ধানের চাল উপযোগী খাবার। যে খাবারে জিআই যত বেশি থাকে সেই খাবার খাওয়ার পর তত দ্রুত ভেঙে রক্তে মিশে যায়। ফলে ওইসব খাবার ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। সাধারণ ধানের চালে জিআই থাকে ৬৬ মাত্রায়। কিন্তু নতুন জাতের এই ব্রিধান-১০৫ এর চালে জিআই ৫৫ মাত্রার হওয়ায় ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য উপযোগী খাবার।’  সিফাত আল মারুফ আরও জানান, এবারই প্রথম চিতলমারী উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের বড়বাক গ্রামের কৃষক বিধান চন্দ্র বিশ্বাসের ৩৩ শতক জমিতে নতুন জাতের এই ব্রিধান-১০৫ চাষ হয়। বৃহস্পতিবার ধানের নমুনা কর্তন শেষে দেখা যায়, ২০ বর্গমিটার জমিতে ১৪.৯ কেজি ফলন (কাচা) উৎপাদিত হয়েছে। যার শুকনো ওজন হবে ১৩.১৬ কেজি। এই হিসাবে হেক্টরপ্রতি এই ধানের ফলন হয়েছে ৬.৫৮ টন। পরীক্ষামূলক এই চাষে কৃষক বিধান চন্দ্র বিশ্বাস সফল হয়েছেন। আগামীতে আরও চাষিদের এই ধান চাষে উদ্বুদ্ধ করা হবে। চাষিরা বেশি এই ধান আবাদ করলে ডায়াবেটিক রোগীদের প্রতিষেধকে সহায়তা হবে।  কৃষক বিধান চন্দ্র বিশ্বাস জানান, নতুন ধরনের এই ধান-বীজ পেয়ে তিনি চাষে অনেক বেশি যতœশীল ছিলেন। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ব্রিধান-১০৫ এর বীজসহ পরামর্শ পান। এখন বিশেষ এই ধান কোন বাজারে কেমন দামে বিক্রি হবে সেটা নিয়ে তিনি ভাবছেন।