শিল্প খাতে ডলার-সংকটের নেতিবাচক প্রভাব কাটতে শুরু হয়েছে। যার ফলে এই খাতের উদ্যোক্তারা আগের চেয়ে বেশি ঋণ পরিশোধ করছেন। গত বছরের ডিসেম্বর প্রান্তিক শিল্প খাতের মেয়াদি ঋণ বিতরণ ও আদায় দুটোতেই ব্যাপক সাড়া মিলেছে। ডিসেম্বর মাসে মেয়াদি ঋণ আদায় হয়েছে ৫০ হাজার ৫৯৩ কোটি টাকা, যা তার আগের বছর একই সময়ে ছিল ১৮ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরে আদায় বেড়েছে ৩২ হাজার ১১৬ কোটি টাকা বা ৬৩ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ডিসেম্বরে ঋণ বিতরণ হয়েছে ২৯ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা। তার আগের বছরের একই সময় ঋণ বিতরণ করা হয়েছিল ১৮ হাজার ৭৭২ কোটি টাকা। সে তুলনায় ঋণ বিতরণ বেড়েছে ১০ হাজার ৮০২ কোটি টাকা। পাশাপাশি ২০২৩ সালের ডিসেম্বর প্রান্তিকে আদায় হয়েছে ৫০ হাজার ৫৯৩ কোটি টাকা। তার আগের বছরের একই সময়ে আদায় হয়েছিল ১৮ হাজার ৪৭৭ কোটি। সেই হিসাবে এক বছরে আদায় বেড়েছে ৩২ হাজার ১১৬ কোটি টাকা বা ৬৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘অর্থনৈতিক সংকট পুরোপুরি কাটেনি। এখনো নানা চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে সময় পার করছি। তবে ব্যবসাকে স্বাভাবিক রাখতে কাজ করে যাচ্ছি। নানাভাবে ডলার ম্যানেজ করা হচ্ছে। কিন্তু হঠাৎ করে সুদের হার বেড়েই চলেছে। এতে দীর্ঘমেয়াদি ঋণের সুদ অনেক বেড়ে যাবে। এসব বিবেচনায় নিয়ে ঋণ পরিশোধ অনেক বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছেন। যার ফলে ঋণ আদায় বেড়ে গেছে। আবার অনেকে নতুন ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করছেন। অন্যান্য উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহ করে ঋণ পরিশোধ করছেন।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০২৩ সালের সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত শিল্প খাতে মোট ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৩০ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপিতে পরিণত হয়েছে ৬০ হাজার ৯৫১ কোটি টাকা। এক বছর আগে এই খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ৪৯ হাজার ২২৩ কোটি। সে হিসাবে বছর ব্যবধানে খেলাপি বেড়েছে ২৩ দশমিক ৮২ শতাংশ। খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেছেন, কোভিড মহামারির ধাক্কা সামলে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল দেশের অর্থনীতি। এর ফলে ঘুরে দাঁড়ায় শিল্প খাত।