ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২

অর্থনীতি বিভাগের সব খবর

পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় শীর্ষ স্থানে বাংলাদেশ

পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় শীর্ষ স্থানে বাংলাদেশ

নানা রকম বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পর তৃতীয় অবস্থানে আছে ভিয়েতনাম। আর শীর্ষ অবস্থানে আছে বরাবরের মতো চীন। যদিও তাদের বাজার হিস্যা ২ শতাংশীয় পয়েন্ট কমে গেছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ‘ওয়ার্ল্ড ট্রেড স্ট্যাটিসটিকস : কি ইনসাইটস অ্যান্ড ট্রেন্ডস ইন ২০২৪’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। চলতি মাসে এটি নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।  ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর বৈশ্বিক পণ্য ও সেবা বাণিজ্য ৪ শতাংশ বেড়ে ৩১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। যা কিনা তার আগের বছর (২০২৩ সাল) ২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল। গত বছর বৈশ্বিক পণ্য বাণিজ্য ২ শতাংশ এবং সেবা খাতের ব্যবসা বেড়েছে ৯ শতাংশ। এ ছাড়া বৈশ্বিক বাণিজ্যে সেবা খাতের হিস্যা বেড়ে হয়েছে ২৬ দশমিক ৪ শতাংশ, যা ২০০৫ সালের পর সর্বোচ্চ। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত বছর (২০২৪ সাল) বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ৫৫৭ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করে। এতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ শতাংশ। ২০২৩ সালে বিভিন্ন দেশ তৈরি পোশাক আমদানি করেছিল ৫২০ কোটি ডলারের। ডব্লিউটিওর প্রতিবেদন অনুযায়ী, টানা দুই বছর ধরে (২০২৩ ও ২০২৪ সাল) বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ৩৮ বিলিয়ন ডলারের ঘরে আছে। গত বছর রপ্তানি হয়েছে ৩৮ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র দশমিক ২১ শতাংশ। রপ্তানিতে সামান্য প্রবৃদ্ধি থাকলেও বাজার হিস্যা কমে গেছে বাংলাদেশের। ২০২৩ সালে বিশ্বে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের বাজার হিস্যা ছিল ৭ দশমিক ৩৮ শতাংশ। গত বছর সেটি কমে দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক ৯০ শতাংশ। এ প্রসঙ্গে নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান বলেন,  ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাল্টা শুল্ক কার্যকর হলে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি কমতে পারে। অন্যদিকে এই বাজারে ভিয়েতনামের রপ্তানি বাড়তে পারে। এতে করে বৈশ্বিক বাজারে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামের রপ্তানি কাছাকাছি চলে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।

সকল সরকারি অফিসসহ বিভিন্ন স্থাপনার ছাদে সোলার প্যানেল বসানো হবে

সকল সরকারি অফিসসহ বিভিন্ন স্থাপনার ছাদে সোলার প্যানেল বসানো হবে

সব সরকারি অফিস, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও হাসপাতালে আগামী ৩ থেকে ৬ মাসের মধ্যে সোলার প্যানেল স্থাপন করা হবে। সরকারি অফিসে ক্যাপেক্স এবং স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও হাসপাতালে ওপেক্স মডেলে বিনিয়োগ করা হবে। এক্ষেত্র প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো ব্যয় বহন করতে হবে না। সোমবার এক পরিপত্রে সরকারের এই পরিকল্পনা তুলে ধরেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। পরিপত্রে বলা হয়েছে, জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচির আওতায় সরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্য স্থাপনার ছাদে সোলার সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে আগামী ডিসেম্বর মধ্যে দেশের জাতীয় গ্রিডে প্রায় ৩,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সংযুক্ত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা ২০২৫ অনুযায়ী সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ২০ শতাংশ এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে পূরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। বর্তমানে মোট উৎপাদিত বিদ্যুতের মাত্র ৫.৬ শতাংশ (১.৫৬৩.৭ মেগাওয়াট) সৌর বিদ্যুৎ থেকে উৎপাদিত হচ্ছে, যা প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। ভারতে সৌর বিদ্যুৎ থেকে ২৪ শতাংশ, পাকিস্তানে ১৭.১৬ শতাংশ ও শ্রীলঙ্কায় ৩৯.৭ শতাংশ বিদ্যুৎ আসে। বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশের ৫৬ শতাংশ বিদ্যুৎ আসে প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে, যার মজুত দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার লক্ষ্যে বিদ্যুৎ বিভাগ ‘জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি’ প্রণয়ন করেছে। পরিপত্রে বলা হয়েছে, সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ভবনের ছাদে (ভাড়া করা স্থাপনা ব্যতীত) সোলার প্যানেল স্থাপন করা হবে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ক একটি ওয়েবভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন চালু হয়েছে। এই অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ছাদের আয়তন বিবেচনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির বিবরণ ও প্রাক্কলিত ব্যয় জানা যাবে। এই প্রক্রিয়ায় নেট মিটারিং পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ বিল সমন্বয় করা হবে।  একইভাবে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও হাসপাতালে ওপেক্স মডেলে বিনিয়োগের মাধ্যমে সোলার প্যানেল স্থাপন করা হবে। যেখানে প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো ব্যয় বহন করতে হবে না। ফলশ্রুতিতে, প্রতিষ্ঠানগুলোর বিদ্যুৎ বিল সাশ্রয় হবে। এতে আরও বলা হয়েছে, সৌরবিদ্যুৎ সিস্টেমগুলো ব্যাটারিবিহীন ও গ্রিডে সংযুক্ত হবে। তবে চাহিদার ভিত্তিতে কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্য স্থাপনায় ব্যাটারি যুক্ত হতে পারে। নেট মিটারিং পদ্ধতিতে সিস্টেমগুলো পরিচালিত হবে। প্রতি তিন মাস অন্তর গ্রিডে সরবরাহকৃত বিদ্যুৎ এবং গ্রিড থেকে ব্যবহৃত বিদ্যুৎ সমন্বয় করে গ্রাহককে বিল দেওয়া হবে। ছাদের আয়তনভেদে সৌরবিদ্যুৎ সিস্টেমগুলো ১০ কিলো-ওয়াট থেকে কয়েক মেগাওয়াট হবে। এই কার্যক্রমের ফলে সরকার আশা করছে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের জাতীয় গ্রিডে প্রায় ৩,০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে। এর ফলে শুধু বিদ্যুতের সরবরাহই বাড়বে না, পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি ও পরিবেশের ওপরও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। উল্লেখ্য, ২০২৫-২৬ বাজেটে সোলার প্যানেল, ইনভার্টার ও ব্যাটারির কর হ্রাস করে ১ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়াও, সোলার থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের জন্য ১০ বছরের আয়কর অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে দেশে বার্ষিক প্রায় ৪,২০০ কোটি টাকা অর্থসাশ্রয় হবে বলে বিদ্যুৎ বিভাগের পরিপত্রে বলা হয়েছে। উৎপাদিত বিদ্যুতের আর্থিক মূল্য দাঁড়াবে প্রায় ২৫,২০০ কোটি টাকা। এছাড়া, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমবে বছরে প্রায় ১৮ লক্ষ টন। যার ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমদানিকৃত জ্বালানির ওপর নির্ভরতা অনেকাংশে কমবে। এই উদ্যোগের ফলে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের নিঃসরণ বছরে প্রায় ২৫ লাখ টন হ্রাস পাবে; যা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও সংহত করবে। এছাড়াও, কার্বন ক্রেডিট বিক্রির মাধ্যমে বছরে প্রায় ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। এ ছাড়া আরও বলা হয়েছে, জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচির বাস্তবায়নে প্রায় নতুন ১ লাখ কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা সৃষ্টি হবে। এই কর্মসূচি নতুন বাজার সৃষ্টি করবে, দেশের তরুণ ও দক্ষ জনশক্তির জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এবং জাতীয় আয় বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সামগ্রিকভাবে, এ কর্মসূচি বিদ্যুৎ খাতে গতি আনবে, দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাবে, পরিবেশ রক্ষা ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করবে। বিশেষত, নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রা দ্রুততম সময়ে অর্জনের ক্ষেত্রে এই কর্মসূচি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ কমলেই ব্যাংক খাতের ঝুঁকি কমবে ॥ গভর্নর

রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ কমলেই ব্যাংক খাতের ঝুঁকি কমবে ॥ গভর্নর

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের আমলে সবচেয়ে বেশি আর্থিক অনিয়ম হয়েছে ব্যাংক খাতে। যার রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ছিল শতভাগ। আর্থিকভাবে রাজনৈতিক চাপ মোকাবিলায় রাজনীতিকে পরিশুদ্ধ হতে হবে। রাজনৈতিক গুণগত পরিবর্তন না হলে প্রাতিষ্ঠানিক ঝুঁকি এড়াতে নজরদারি দিয়ে সম্ভব নয়। যে কারণে আগামীতে এ ধরনের লুটপাট বন্ধ করতে হলে রাজনীতিকদের শুদ্ধ হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম সম্মেলন কক্ষে ব্যাংক খাতে রিস্ক বেইজ সুপারভিশন পদ্ধতি চালুর অগ্রগতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা  বলেন।  এ সময় গভর্নর বলেন, ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসনের প্রয়োজন। এ জন্য ব্যাংক কোম্পানি আইন পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। তিনি বলেন, আগামী বছরের জানুয়ারি থেকে সব ব্যাংকে রিস্ক বেইজ সুপারভিশন (আরবিএস) পদ্ধতি শুরু করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পূর্ব-প্রস্তুতি হিসেবে ইতোমধ্যে ২০টি ব্যাংকের সঙ্গে পাইলটিং শেষ হয়েছে, বাকি ব্যাংকগুলোতে পাইলটিং আগামী জুনের মধ্যে শেষ হবে।  গভর্নর বলেন, ২০টি ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক নিরীক্ষা কার্যক্রম শেষ হয়েছে, ডিসেম্বরের মধ্যে সব ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক নিরীক্ষা কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। ২০২৬ এর জানুয়ারি থেকে ব্যাংক রিস্ক বেইসড সুপারভিশন শুরু হবে। ছয়টি ব্যাংক একীভূত হওয়ার বিষয়ে গভর্নর বলেন, এসব ব্যাংকের সম্পদের মান নিরূপণের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। একীভূত করার কাজও এগিয়ে চলেছে। যদি কোনো ব্যাংক একীভূত হতে না চায় তাদের কাছে সুনির্দিষ্ট বক্তব্য জানতে চাওয়া হবে। যদি তারা সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা দিতে পারে তা হলে তাদের বক্তব্য-প্রস্তাব বিবেচনা করা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এই নতুন তদারকি কাঠামোর আওতায় প্রতিটি ব্যাংকের আর্থিক, বাজার, পরিচালনাগত, আইনগত এবং কৌশলগত ঝুঁকি আরও সঠিকভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হবে। সেই ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও দ্রুত নেওয়া যাবে। এতে প্রতিটি ব্যাংকের কার্যক্রম আলাদাভাবে মূল্যায়ন এবং ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলোয় দ্রুত হস্তক্ষেপ করা সহজ হবে।  নতুন কাঠামো বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব সংগঠনেও বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। নতুনভাবে গঠন করা হবে একাধিক তদারকি বিভাগ, যেমন তদারকি নীতিমালা ও সমন্বয় বিভাগ, তথ্য বিশ্লেষণ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ, প্রযুক্তি ও ডিজিটাল ব্যাংকিং তদারকি বিভাগ, এবং অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন রোধবিষয়ক ঝুঁকি তদারকি বিভাগ। এ ছাড়া প্রতিটি ব্যাংকের জন্য থাকবে পৃথক তদারকি দল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, এই পরিবর্তন সফল করতে তদারকির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি তফসিলী ব্যাংকগুলোর কর্মকর্তাদের জন্যও বিশেষ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থাগুলো কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে। তদারকিকে তথ্যনির্ভর করতে তৈরি করা হচ্ছে নতুন তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ ব্যবস্থা। একটি কেন্দ্রীয় তদারকি তথ্য প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হচ্ছে, যার মাধ্যমে দেশের যে কোনো ব্যাংকের ঝুঁকির চিত্র সহজে বিশ্লেষণ করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে।  বাংলাদেশ ব্যাংকের আশা, এই রূপান্তরের ফলে ব্যাংক খাতে জবাবদিহিতা আরও শক্ত হবে। একই সঙ্গে তদারকি কার্যক্রম হবে ফলপ্রসূ এবং প্রযুক্তিনির্ভর উদ্ভাবনে ব্যাংকগুলো এগিয়ে আসবে। এর মাধ্যমে আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ভিত্তিও আরও মজবুত হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তনে সব অংশীজনের সহযোগিতা ও অংশগ্রহণ কামনা করেছে। যাতে সম্মিলিতভাবে একটি আধুনিক, ঝুঁকি সচেতন এবং টেকসই ব্যাংকিং পরিবেশ গড়ে তোলা যায়। সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর হাবিবুর রহমান, নুরুন নাহারসহ  অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

২৭ মাস পর মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের নিচে

২৭ মাস পর মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের নিচে

গত আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর মাত্র ১ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতিসহ সার্বিক মূল্যস্ফীতি অভাবনীয়ভাবে কমেছে অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত জুন শেষে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৩৯ শতাংশ, যা মে মাসে ছিল ৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং গত বছরের আগস্টে ছিল ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। অর্থাৎ গত ১১ মাসে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি কমেছে প্রায় ৪ শতাংশ। সোমবার বিবিএসের মূল্য ও মজুরি পরিসংখ্যান শাখা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।  প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরকে ভিত্তিসূচক ধরে জুন ২০২৫ সালে সার্বিকভাবে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ, যা গত মে মাসে ছিল ৯ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং গত বছরের আগস্টে ছিল ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ। এর মধ্যে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ, যা মে মাসে ছিল ৯ দশমিক ৪২ শতাংশ এবং গত বছরের আগস্টে ছিল ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। আর সব মিলিয়ে গত ২৭ মাস পর দেশের মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে।  অপরদিকে গ্রামীণ ও শহরে এই সময়ে মূল্যস্ফীতির তেমন বেশি পার্থক্য দেখা যায়নি। গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতি জুন শেষে দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ, যা গত মে মাসে ছিল ৯ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং গত বছরের আগস্টে ছিল ১০ দশমিক ৯৫ শতাংশ। এ সময় শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দঁাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ, যা গত মে মাসে ছিল ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং গত বছরের আগস্টে ছিল ১০ দশমিক ০১ শতাংশ। শহরে ও গ্রামে খাদ্য মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে দেখা যায়, জুনে যেখানে শহরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ, সেখানে গ্রামে ছিল ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ। গত বছরের আগস্টে এই মূল্যস্ফীতি শহরে ছিল ১১ দশমিক ২৪ এবং গ্রামে ১১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।   এ ছাড়া খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে জুনে যেখানে শহরে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং গ্রামে ৯ দশমিক ৭২, সেখানে গত বছরের আগস্টে এই মূল্যস্ফীতির হার ছিল যথাক্রমে ৯ দশমিক ২০ শতাংশ এবং ১০ দশমিক ৪৫ শতাংশ।