
বাংলাদেশের ইতিহাসে চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থান একটি বীরত্ব, আত্মত্যাগ ও গণপ্রতিরোধের স্মরণীয় অধ্যায়। এ প্রতিরোধ শুধু রাজনৈতিক নয়, এটি ছিল জুলুমের বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াই। এই গণঅভ্যুত্থানে প্রতিটি পর্যায়ে মাদরাসা শিক্ষার্থী ও আলেম সমাজ সম্মুখসারির প্রতিরোধ যোদ্ধা হিসেবে যে ভূমিকা পালন করেছে, তা ইতিহাসে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
আমরা মনে করি, জুলাই গণপ্রতিরোধের প্রতিটি দিবসের ব্যাকেন্ডে সিগনিফিক্যান্ট স্টোরি, আত্মত্যাগ ও বীরত্বের গল্প লুকিয়ে আছে। যেমন, ১৪ জুলাই জুলাই কন্যাদের প্রতিরোধ, ১৮ জুলাই প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি প্রতিরোধ৷ সেই প্রতিরোধের অংশ হিসেবে মাদরাসা শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন জায়গায় কোটা আন্দোলনের শুরু থেকে রাজপথে অবস্থান নিলেও ১৯ জুলাই জুমার নামাজের পর ব্যাপকভাবে প্রতিরোধের দৃঢ় ইস্পাত প্রাচীর গড়ে তুলেছে।
১৯ জুলাই সারাদেশে শহীদ হয়েছে শতাধিক। শুধুমাত্র আলেম সমাজ ও মাদরাসা ব্যাকগ্রাউন্ডের শহীদ ছিল কমপক্ষে ১০ জন। অসংখ্য আহত এখনও চিকিৎসাধীন, যারা ১৯ জুলাই আহত হয়েছে। এ ইতিহাস অবিকৃত এবং সত্য।
আমরা সে ইতিহাস অবিকৃত রেখে ১৯ জুলাই মাদরাসা শিক্ষার্থী ও আলেম সমাজের সেই রক্তে ভেজা প্রতিরোধকে স্মরণ করতে চাই। জুলাইয়ের যে কোনো একটা দিনকে রেন্ডমলি দিবস ঘোষণার মধ্য দিয়ে আমরা ভিক্ষাবৃত্তি বা দয়ার দিবসকে স্মরণ করতে চাই না।
মাদরাসা শিক্ষার্থীদের এই ভূমিকা শুধু সাহসের নয়, বরং নৈতিক বিপ্লব ও মূল্যবোধভিত্তিক রাষ্ট্রচিন্তার অঙ্গীকারের প্রকাশ। তারা জানিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশের ভবিষ্যত শুধু নাগরিকদের নয়, নৈতিক ভিত্তি সম্পন্ন আদর্শিক প্রজন্মেরও। অতএব, আমরা জুলাইয়ের সম্মুখসারির যোদ্ধা হিসেবে সাধারণ আলেম সমাজ জোর দাবি জানাচ্ছি যে, ১৯ জুলাইকে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধ দিবস হিসেবে সরকারিভাবে গেজেট আকারে ঘোষণা করতে হবে।
এই দিবস শুধুমাত্র একটি শ্রেণির নয়, এটি জাতীয় গণপ্রতিরোধের ইতিহাসে একটি অনিবার্য অধ্যায়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের আত্মত্যাগ, ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে তাদের নৈতিক দৃঢ়তা ও প্রতিরোধের অবস্থানকে সম্মান জানানো হবে।
একই সাথে আমরা অঙ্গীকার করছি, ভবিষ্যতে এদেশের রাষ্ট্রগঠনে এই আদর্শিক শক্তিগুলোর সম্মিলিত প্রয়াস এবং ত্যাগ কখনোই ভুলে যাওয়া হবে না।
নুসরাত