
২০২৪ সালের কোটা আন্দোলনের মতো ১৮ সালেও কোটা সংস্কার আন্দোলন দমাতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আন্দোলনের প্রেক্ষিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর চাকরির সরকারি চাকরিতে সকল কোটা বাতিল করলেও ২০২৪ সালের জুনে কোর্টের রায় আবারও উস্কে দেয় শিক্ষার্থীদের। এই কোটাকে কেন্দ্র করেই ২৪ সালের ৫ই আগস্ট পতন হয় দেড় দশকের স্বৈর শাসনের।
২০২৪ সালের জুলাইয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর সরকারের দমন নিপীড়নের ফলে তা পরিণত হয় গণমানুষের আন্দোলনে। স্বৈরাচারী হয়ে ওঠা শেখ হাসিনার পতন হয় ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে। বহু প্রাণের বিনিময়ে গঠন হয় অন্তর্বর্তী সরকার, যার নেতৃত্ব দেন নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের মূল ধারায় অন্তর্ভুক্ত করতে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি ও সরকারি চাকরি সহ নানা ক্ষেত্রে তাদের অংশগ্রহণ বাড়াতে মেধার পাশাপাশি কোটা পদ্ধতির শুরু হয়। এই কোটাকে কেন্দ্র করেই ২০২৪ সালে পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, ১৮ সালে আমরা কিন্তু কোটা সংস্কার আন্দোলন করেছিলাম কিন্তু সরকার কি করেছিল, কোটা বাতিল করেছিল। সে জায়গা থেকে আবারও কোটাকে কাজে লাগিয়ে এক ধরনের রাজনীতি করার সুযোগটা কিন্তু আওয়ামী লীগ রেখে দেয়।
আরেকজন শিক্ষার্থী বলেন, সকল প্রকারের অযৌক্তিক যে কোটা দিয়ে ভরে রাখা হয়েছিল সেটা যাতে যৌক্তিক একটা সংস্কার হোক এবং সেক্ষেত্রে যেহেতু স্টুডেন্টরা হচ্ছে হিউজ একটা স্টেকহোল্ডার এবং তাদের সাথে যাতে একটু আলোচনায় বসে যৌক্তিক একটা সংস্কারটা করা হয়। কিন্তু সে সময় কিন্তু তারা আমাদের সাথে কিন্তু বসতে রাজি হয়নি।
কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলনের সূচনা ২০১৩ সালে। সে বছর আন্দোলন ব্যর্থ হলে ২০১৮ সালে শিক্ষার্থীরা আবারও মাঠে নামে যার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন নুর, রাশেদ, ফারুকের মতো তরুণ ছাত্রনেতারা।
১৮ সালের কোটা আন্দোলনের সংগঠক রাশেদ খান বলেন, ১৮ তেও শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়ে গড়িমসি করেন পরে হামলা ও গ্রেপ্তার পর্যন্ত হতে হয়। হাসিনা যখন দেখলো যে এই ছেলেগুলোকে রিমান্ডে নির্যাতন করে জেলে নিয়ে এদেরকে আসলে থামানো যাচ্ছে না, একটা পর্যায়ে গেজেট দিতে বাধ্য হলো। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা তারা বা নাতি পুতিরা চাকরি পাচ্ছে না। এর পরে কোটা আবার হাইকোর্টের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনার একটি চক্রান্ত করলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু হয়ে গেল শিক্ষার্থীরা নামলো তাদের স্লোগান ছিল ১৮ এর হাতিয়ার গর্জে উঠো আরেকবার এবং ১৮ সালের পরিপত্র বহাল করতে হবে।
সরকারের নির্দেশে প্রশাসন ভয়ভীতি দেখিয়ে ১৮ এর আন্দোলন স্থগিত করালেও সংসদে মতিয়া চৌধুরী আন্দোলনকারীদের রাজাকারের বাচ্চা বলাতে দমে যাওয়া আন্দোলন আবারও উজ্জীবিত হয়ে উঠে।
রিফাত