
ছবি:সংগৃহীত
ভারতের প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং সম্প্রতি জানিয়েছেন, ভারতের পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়ে একাধিক দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে। তবে আলোচনা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, তাই বিস্তারিত কিছু জানানো সম্ভব নয়।
“আমরা বিভিন্ন অংশীদারের সঙ্গে কথা বলছি। আলোচনা এখনো এমন জায়গায় পৌঁছায়নি যেখানে আমরা গণমাধ্যমে কিছু জানাতে পারি,” — বলেন সচিব সিং।
ভারতের নিজস্ব যুদ্ধবিমান তৈরির পরিকল্পনা (AMCA প্রোগ্রাম) থাকলেও তা বাস্তবায়নে আরও অন্তত এক দশক লাগতে পারে। এ অবস্থায় ভারতকে বিকল্প খুঁজতেই হচ্ছে।
রাশিয়ার Su-57: ভারতের সম্ভাব্য পছন্দ?
যদিও সচিব সিং সরাসরি কোনো দেশের নাম বলেননি, অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন তিনি রাশিয়ার Su-57 স্টেলথ যুদ্ধবিমান-এর কথাই বলেছেন। আমেরিকার F-35 যুদ্ধবিমানও ভারতকে প্রস্তাব করা হয়েছে, কিন্তু আমেরিকার কঠোর নিয়ন্ত্রণ নীতির কারণে ভারত তা গ্রহণে খুব একটা আগ্রহী নয়।
প্রাক্তন এয়ার মার্শাল অনিল চোপড়া বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, “আমেরিকা প্রভাব খাটাতে পছন্দ করে। তারা যখন খুশি তখন মিত্রদের ছেড়ে দিতে পারে। রাশিয়া তুলনামূলকভাবে নির্ভরযোগ্য।”
এই বাস্তবতা থেকেই অনেকেই মনে করছেন, Su-57-ই ভারতের সামনে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য বিকল্প।
পুরো প্রযুক্তি হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতি: ভারতের জন্য বড় প্রলুব্ধ
রাশিয়া শুধু যুদ্ধবিমান বিক্রি করতে চায় না, তারা ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে Su-57-এর সম্পূর্ণ সোর্স কোড ও প্রযুক্তি হস্তান্তর করার প্রস্তাব দিয়েছে। এর মানে হলো, ভারত নিজেই এই বিমান তৈরি, রক্ষণাবেক্ষণ এবং উন্নয়ন করতে পারবে।
বিশ্লেষকদের মতে, মে মাসে পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত উত্তেজনায় ফরাসি রাফাল যুদ্ধবিমানের পারফরম্যান্সে হতাশা থেকেই ভারত আরও শক্তিশালী ফাইটারের প্রয়োজন অনুভব করে। এই জায়গায় Su-57 বাস্তব যুদ্ধে বারবার প্রমাণ দিয়েছে তার কার্যক্ষমতা।
যুদ্ধক্ষেত্রে প্রমাণিত ফাইটার
রাশিয়া Su-57 যুদ্ধবিমানটি ইউক্রেন যুদ্ধের মতো কঠিন পরিবেশেও ব্যবহার করেছে। এটি শুধু আকাশযুদ্ধই নয়, শত্রুর বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস, গভীর অভিযানে ঢুকে হামলা এবং দূরপাল্লার নিখুঁত স্ট্রাইকেও ব্যবহৃত হয়েছে। অন্য কোনো পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান এত বাস্তব যুদ্ধ অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেনি।
রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক অটুট
যুক্তরাষ্ট্রের চাপ থাকা সত্ত্বেও ভারত এখনও রাশিয়ার কাছ থেকেই সবচেয়ে বেশি অস্ত্র কেনে। এতে বোঝা যায় যে, দুই দেশের মধ্যে সামরিক সম্পর্ক এখনো দৃঢ় এবং পারস্পরিক বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে।
Su-57 কেবল একটি যুদ্ধবিমান নয়—এটি ভারতের জন্য হতে পারে আত্মনির্ভরতার পথে একটি বড় পদক্ষেপ। যদি ভারত এই বিমান কিনে এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের সুবিধা পায়, তাহলে ভবিষ্যতের জন্য এটি কৌশলগতভাবে একটি স্মার্ট সিদ্ধান্ত হবে।
মারিয়া