
ছবি: সংগৃহীত
ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের গুরগাঁওয়ে ভয়াবহ এক পারিবারিক ট্র্যাজেডিতে নিহত হয়েছেন ২৫ বছর বয়সী জাতীয় পর্যায়ের টেনিস খেলোয়াড় রাধিকা যাদব। বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) সকালে রান্না ঘরে নাস্তা প্রস্তুতের সময় নিজের বাবা দীপক যাদব তাকে পেছন থেকে চারবার গুলি করে হত্যা করেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ৪৯ বছর বয়সী দীপক যাদব ইতোমধ্যেই অপরাধের দায় স্বীকার করেছেন এবং তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য—টেনিস ক্যারিয়ার শেষ হওয়ার পর মেয়ের জন্য নিজেই ২ কোটি রুপি বিনিয়োগ করে একটি একাডেমি গড়ে দেন দীপক। মেয়ের স্বপ্ন পূরণে সার্বিক সহায়তা করেন তিনি। এমনকি, একটি মিউজিক ভিডিওতে অংশ নেওয়ার ইচ্ছার কথা বললে দীপক নিজেই মেয়েকে শুটিং সেটে নিয়ে যান এবং সেখানে ১১ ঘণ্টা অবস্থান করেন।
তবে দীপক যাদবের একটি ভিন্ন রূপও ছিল। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তিনি খুব সহজেই মেজাজ হারাতেন এবং নিজের স্ত্রী ও মেয়ের ওপর নানা ধরনের সন্দেহ করতেন। একবার শুধু ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলার জন্য স্ত্রীকে তিরস্কারও করেন তিনি।
কিছুদিন আগে দীপক তার পৈতৃক গ্রামে গিয়েছিলেন। সেখানে গ্রামের কয়েকজন তাকে কটাক্ষ করে বলেন, তিনি তার মেয়ের সবকিছুতে সমর্থন দিয়ে একজন ‘গিরা হুয়া বাপ’ (পতিত পিতা) হয়েছেন। এই মন্তব্য দীপকের মনে প্রবল ক্ষোভের জন্ম দেয়। বাড়ি ফিরে তিনি রাধিকাকে একাডেমি বন্ধ করার নির্দেশ দেন। রাধিকা সাফ জানিয়ে দেন, ২ কোটি রুপি বিনিয়োগ করার পর একাডেমি বন্ধ করাটা যুক্তিহীন।
বিষণ্ণতা থেকে খুনের সিদ্ধান্ত
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনার পর দীপক তিন দিন ধরে ক্রমাগত রাগ ও লজ্জার মধ্যে দ্বিধায় ভুগছিলেন। তিনি আত্মহত্যা কিংবা রাধিকাকে হত্যার কথা ভাবছিলেন। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার সকালে নিজের মেয়েকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন।
সকালবেলা রান্নাঘরে নাস্তা তৈরির সময়, দীপক পিছন থেকে পাঁচবার গুলি চালান। এর মধ্যে চারটি গুলি রাধিকার পিঠ ও কোমরে লাগে এবং ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
সূত্র: এনডিটিভি।
রাকিব