ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

বাউফলে মসজিদের উন্নয়নের জন্য দেয়া একসনা জমির ইজারা বাতিল, মুসল্লীদের মাঝে ক্ষোভ

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, পটুয়াখালী

প্রকাশিত: ২১:০৯, ১২ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২১:৫২, ১২ জুলাই ২০২৫

বাউফলে মসজিদের উন্নয়নের জন্য দেয়া একসনা জমির ইজারা বাতিল, মুসল্লীদের মাঝে ক্ষোভ

 বাউফলে  একটি মসজিদের উন্নয়নের জন্য দেয়া একসনা   জমির ইজারা বাতিল করে দেয়া হয়েছে।

ফলে এনিয়ে  ওই মসজিদের মুসল্লী   ও স্থানীয়দের   মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

আর এ কাজটি করেছেন বাউফলের ইউএনও মো. আমিনুল ইসলাম। 

বাউফল উপজেলা  সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রতিক কুমার কুন্ড মসজিদের  উন্নয়নের জন্য  মামুন খান নামের এক ব্যক্তির নামে একসনা এ জমি ইজারা  দেন।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) ৯ জুলাই বদলিজনিত কারণে চলে যাওয়ার পর সহকারী কমিশনারের দায়িত্ব পেয়ে বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) ওই ইজারা দেওয়া জমি বাতিল  করে ফের তার পছন্দের লোককে ইজারা দেন ইউএনও!

উপজেলা ভূমি কার্যালয় ও মসজিদ কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি খাস জমিতে উপজেলা ভূমি অফিস আল মদিনা জামে মসজিদ রয়েছে। পদাধিকার বলে ওই মসজিদের সভাপতি হলেন সহকারী কমিশনার। 
 

মসজিদ কমিটির সদস্য মামুন খান জানান,ওই জমি ইজারা নেওয়ার পর তিনি চাষাবাদ শুরু করেছেন।শুক্রবার(১১জুলাই) তিনি চাষাবাদ করতে গেলে তাতে বাঁধা দেন স্থানীয় কয়েকজন। পরে তিনি ইউএনও আমিনুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য তাঁর কাছে যান এবং বিস্তারিত জানালেও ইউএনও আমিনুল ইসলাম সহকারী কমিশনার প্রতীক কুমারের দেওয়া ইজারা মানতে নারাজ।

মামুন খান আরও অভিযোগে করেন,কৌশলে  ইউএনও তাঁর কাছে অনৈতিক সুবিধা চেয়েছেন। কিন্তু তিনি অনৈতিক সুবিধা দিতে রাজি হননি। পরে তাঁর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।  পরে আজ শনিবার জানতে পারেন ইউএনও আমিনুল ইসলাম বৃহস্পতিবার 
(১০ জুলাই) তাকে দেয়া ইজারা বাতিল করে একই জমি হুমায়ন দর্জি, মো. সুমন, রিপন সিকদার ও চান মিয়া নামে চার ব্যক্তিকে ইজারা দিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভূমি কার্যালয়ের এক ব্যক্তি বলেন,সহকারী কমিশনার স্যার ছিলেন সততার প্রতীক। কাউকে কোনো কাজে একটি কানাকড়ি ঘুস দিতে হয়নি। তাঁর কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিতে চাইতেন ইউএনও স্যার। যেহেতু তিনি  বেতনের টাকায় চলতেন, তিনি অনৈতিক সুবিধা দিবেন কিভাবে? এ কারণেই ঝামেলায় না জড়িয়ে সহকারী কমিশনার স্যার নিজে তদবির করে বদলি হয়েছেন। এখন বাউফলবাসি বুঝবে কত ধানে, কত চাল।

এ বিষয়ে সাবেক সহকারী কমিশনার প্রতীক কুমার কুন্ডু বলেন,যেহেতু মসজিদটি সরকারি সম্পত্তিতে ভূমি কার্যালয়ের। তাই মসজিদের উন্নয়নের স্বার্থে এক বছরের জন্য সাত একর সরকারি কৃষি খাস জমি মসজিদ কমিটির এক সদস্য চাষাবাদের জন্য দেওয়া হয়েছে। যা এক বছরের আগে অন্য কাউকে দেওয়ার কথা না।

এ  ব্যাপারে ইউএনও আমিনুল ইসলাম বলেন, "এবিষয়ে সহকারী কমিশনার তাঁর সঙ্গে কোনো আলোচনা করেননি। এ কারণে বিষয়টি তাঁর জানা ছিল না। তাছাড়া ইজারা শর্ত  সাপেক্ষে দেওয়া হয়। বাতিল করা যাবে না এমন কোনো শর্ত নাই।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, মসজিদ উন্নয়নের জন্য খাস জমি ইজারা দেওয়া লাগবে কেনো? টিআর, কাবিখা অনেক প্রকল্প আছে। খাস জমি থেকে রাজস্ব আয় করতে হবে।’ তাহলে সহকারী কমিশনার কি রাজস্ব আদায় না করেই ইজারা দিয়েছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেখে বলতে হবে।

পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ শামসুল আরেফীন বলেন‘,বিষয়টি যেহেতু আমার জানা নেই। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে হলে ইউএনও সঙ্গে আগে কথা বলে বলতে হবে।’ 

রাজু

×