ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

রাশিয়ার ড্রোন ও মিসাইল হামলা: ইউক্রেনের সামনে তীব্র সংকট

প্রকাশিত: ০০:৪০, ১৩ জুলাই ২০২৫

রাশিয়ার ড্রোন ও মিসাইল হামলা: ইউক্রেনের সামনে তীব্র সংকট

রাশিয়ার ড্রোনের আক্রমণ ইউক্রেনের জন্য এক মর্মান্তিক দৃশ্য তৈরি করেছে। রাশিয়ার অবিরাম আক্রমণে ইউক্রেনের সেনারা একের পর এক বাধা ভেঙে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। গত বৃহস্পতিবার ভোরে ইউক্রেনের বুকে আছড়ে পড়ে রাশিয়ার ১৮টি মিজাইল এবং ৪০০টি ড্রোন, যা দেশটির জন্য নতুন এক বিপর্যয়ের সৃষ্টি করেছে। এর আগেও, রাশিয়া প্রায় ৮০০টি মিজাইল এবং ড্রোনের বিশাল বহর দিয়ে ইউক্রেনকে ক্ষতবিক্ষত করেছিল।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানকে আরও তীব্র করে তুলেছেন। ড্রোন এবং মিসাইলের ঝাঁক ইউক্রেনের বিভিন্ন অংশে আছড়ে পড়ছে, যেখানে একের পর এক রুশ পতাকা উড়ছে। ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার এই ধ্বংসযজ্ঞের মাঝে অস্ত্র ও গোলাবারুদের সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে, হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অর্বান বলেছেন, "রাশিয়ার কাছে হেরে গেছে ইউরোপ", উল্লেখ করে তিনি মনে করেন এই যুদ্ধের কোনো সমাধান নেই। তার মতে, ইউক্রেনীয়রা হেরে গেছে এবং ইউরোপও তাদের সঙ্গে হেরেছে। কিন্তু পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো এখনো ইউক্রেনকে অস্ত্র এবং আর্থিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে, যদিও পরিস্থিতি উল্টো যেতে শুরু করেছে।

এছাড়া, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আসন্ন সোমবারে রাশিয়া সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেবেন বলে জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো এবং ইউক্রেনের মধ্যে নতুন চুক্তির মাধ্যমে পশ্চিমা জোট ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করবে, তবে এর খরচ পুরোপুরি বহন করবে ন্যাটো। অর্থাৎ, ইউক্রেনকে সরাসরি অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করবে যুক্তরাষ্ট্র।

ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করতে ব্রিটেন ৫০০০ থ্যালেস আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেবে, যা রাশিয়ার বিমান ও মিসাইল হামলা ঠেকাতে সাহায্য করবে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন। থ্যালেস কোম্পানির মিসাইল উৎপাদন কেন্দ্রটি নর্দান আয়ারল্যান্ডের বেলফাস্টে অবস্থিত।

রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের তীব্রতার মধ্যে, রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেরগেই লাভরব মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সাথে বৈঠক করেছেন মালয়েশিয়ায়, যেখানে তারা ইউক্রেন সংকট নিয়ে আলোচনা করেছেন। লাভরব চলতি সপ্তাহের শেষে উত্তর কোরিয়া সফরে যাবেন, যেখানে রাশিয়ার হয়ে লড়াই করছে উত্তর কোরিয়ার সৈন্যরা।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, লাভরবের এই সফর সামনের যুদ্ধে রাশিয়ার বড় অগ্রগতির সংকেত দিতে পারে, যা ইউক্রেনের জন্য নতুন ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।

এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের ভবিষ্যত কি হতে যাচ্ছে, তা এখনও অনিশ্চিত। তবে রাশিয়ার তীব্র আক্রমণ এবং পশ্চিমা জোটের সহায়তা ইউক্রেনের জন্য এক নতুন দিশা দেখাচ্ছে, যদিও তা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে।

 

রাজু

×