
ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশার বালাসোরে কলেজ শিক্ষকের বারবার যৌন সুবিধার দাবি সহ্য করতে না পেরে নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন এক ছাত্রী। অভিযুক্ত শিক্ষক সমীর কুমার সাহুকে ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার (১১ জুলাই) দুপুরে ফকির মোহন কলেজের গেটের সামনে বিক্ষোভ চলাকালীন ওই ছাত্রী হঠাৎ করে নিজের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে তার শরীরের ৯৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে এক সহপাঠীরও ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। বর্তমানে দুজনেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভুবনেশ্বরের এইমসে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ওড়িশার উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী সূর্যবংশী সুরজ জানিয়েছেন, “অভিযুক্ত শিক্ষক ও কলেজের অধ্যক্ষকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
জানা গেছে, সমন্বিত বিএড প্রোগ্রামের ওই ছাত্রী গত ১ জুলাই কলেজের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, বিভাগের প্রধান সমীর কুমার সাহু বারবার তাকে অনৈতিক ‘সুবিধা’ দিতে চাপ দিয়েছেন এবং হুমকি দিয়েছেন—শারীরিক সম্পর্কে না গেলে তার ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দেবেন।
ছাত্রীর পরিবার ও স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, অভিযোগের পর কলেজ কর্তৃপক্ষ ৭ দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
কলেজের অধ্যক্ষ দিলীপ ঘোষ বলেন, “ছাত্রীর অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছিল এবং অভ্যন্তরীণ কমিটির রিপোর্ট তৈরির প্রক্রিয়া চলছিল। আজ সে আমার অফিসে এসেছিল। জানায়, মারাত্মক মানসিক চাপে আছে। আমি অভিযুক্ত শিক্ষককে ডেকে সতর্ক করেছিলাম। ছাত্রী ও শিক্ষক উভয়েই নিজেদের বক্তব্যে অটল ছিলেন।”
ঘটনার পর বালাসোরে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষক ও কলেজ প্রশাসনের শাস্তির দাবি জানান।
বালাসোরের পুলিশ সুপার রাজ প্রসাদ জানিয়েছেন, “শিক্ষককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দোষ প্রমাণে একাধিক দল কাজ করছে। দোষীকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
মিমিয়া