
সংগৃহীত
দখলদার বর্বর ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসনে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া গাজা উপত্যকায় চরম খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (WFP) সতর্ক করে বলেছে, খাবারের অভাবে সেখানে মানুষের জীবন এখন সরাসরি হুমকির মুখে।
শিশুদের মধ্যে পুষ্টিহীনতা মারাত্মকভাবে বেড়েছে, আর প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন।
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শুক্রবার (১১ জুলাই) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএফপির ডেপুটি নির্বাহী পরিচালক কার্ল স্কাউ বলেন, “এটা এমন এক মানবিক বিপর্যয়, যা আমাদের নজরে আগে কখনো আসেনি।”
তিনি জানান, ইসরায়েলের টানা অবরোধ, বিমান হামলা ও স্থল অভিযান শুধু ঘরবাড়ি,হাসপাতাল ও স্কুলই ধ্বংস করেনি, বরং পুরো খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে।
কার্ল স্কাউ বলেন, গাজায় এখন মানবিক সংকট এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, জাতিসংঘের সহায়তা দেওয়ার সামর্থ্যও সীমিত হয়ে পড়েছে। বর্তমানে প্রায় ৯০ হাজার শিশু মারাত্মক পুষ্টিহীনতায় ভুগছে এবং তাদের জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন।
ডব্লিউএফপির তথ্য অনুযায়ী, গাজার প্রতি তিনজন বাসিন্দার একজন দিনে এক বেলার খাবারও জোগাড় করতে পারছে না। এই দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতিকে ‘মনুষ্যসৃষ্ট সংকট’ হিসেবে আখ্যায়িত করে সংস্থাটি বলছে, যদি অবিলম্বে অবরোধ তুলে না নেওয়া হয় এবং খাদ্য সহায়তা প্রবেশ না করতে দেওয়া হয়, তবে মৃত্যু ও দুর্ভিক্ষ আরও ব্যাপক আকার ধারণ করবে।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো গাজায় অবাধ মানবিক সহায়তা প্রবেশের আহ্বান জানালেও ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তাজনিত বাধার কারণে তা কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ফলে খাদ্য, ওষুধ ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দিনে দিনে আরও ভয়াবহ হচ্ছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া যুদ্ধের পর থেকে ৫৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৩৭ হাজার মানুষ। লক্ষ লক্ষ মানুষ গৃহহীন হয়ে শরণার্থী শিবির বা ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের ধ্বংসাবশেষে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ও জাতিসংঘ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো অবিলম্বে অস্ত্রবিরতি ও নিরাপদ মানবিক করিডর চালুর দাবি জানিয়েছে, যাতে সহায়তা ও চিকিৎসা পৌঁছানো যায় এই অবরুদ্ধ অঞ্চলে।
হ্যাপী