ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

ঢাকায় খেলার মাঠের অভাব: শিশুদের শৈশব বিপন্ন

মোহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল

প্রকাশিত: ১০:২১, ১১ জুলাই ২০২৫

ঢাকায় খেলার মাঠের অভাব: শিশুদের শৈশব বিপন্ন

ছবি: জনকণ্ঠ

ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী এবং সবচেয়ে জনবহুল শহর। এই নগরীর প্রতিটি ইঞ্চি জমি যেন কংক্রিটে বন্দি। বিল্ডিং আর দালানকোঠায় ঘেরা ঢাকায় খেলার মাঠ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে উঠেছে। শিশুদের স্বাভাবিক শৈশব ও শারীরিক বিকাশের জন্য যেখানে মাঠ অপরিহার্য, সেখানে এমন পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
ঢাকার বাস্তব চিত্র:
রাজধানীর অনেক এলাকায় দেখা যায়, চারপাশে উঁচু দালান, মাঝের কোনো খোলা জায়গা নেই। যে অল্প কিছু খালি জায়গা আছে, সেগুলোও বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকে—পানি জমে, আবর্জনা পড়ে থাকে। অথচ এসব জায়গা শিশুদের খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহার করা যেত।

ফলাফল হিসেবে বাচ্চারা রাস্তায় ঝুঁকি নিয়ে খেলতে বাধ্য হয় বা ঘরে বসে মোবাইল, ট্যাব আর ভিডিও গেমে আসক্ত হয়ে যায়। এতে শারীরিক ব্যায়াম তো হয়ই না, উল্টো নানা রোগ, চোখের সমস্যা ও মানসিক চাপের ঝুঁকি বাড়ে।
খেলার মাঠের গুরুত্ব:
খেলার মাঠ শিশুদের জন্য শুধু বিনোদনের জায়গা নয়। এটি তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের অপরিহার্য অংশ। মাঠে খেলার মাধ্যমে বাচ্চারা শৃঙ্খলা শেখে, দলগত কাজের অভ্যাস গড়ে তোলে, বন্ধু তৈরি করে এবং মনকে সতেজ রাখে।সমস্যার মূল কারণসমূহ:পরিকল্পনাহীন নগরায়ণ,খোলা জায়গা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা,সরকারি নজরদারির অভাব,নতুন ভবনের অনুমোদনে মাঠের বিষয়টি উপেক্ষা করা।সমাধানের পথ: প্রতিটি ওয়ার্ড বা মহল্লায় অন্তত একটি খেলার মাঠ নিশ্চিত করা।পরিত্যক্ত ও বেহাল জমিগুলোকে পরিষ্কার করে মাঠে রূপান্তর করা। নতুন ভবনের নকশায় খোলা জায়গা রাখা বাধ্যতামূলক করা। মাঠ দখলমুক্ত রাখতে প্রশাসনিক ব্যবস্থা জোরদার করা।অভিভাবক ও জনগণকে সচেতন করা—মাঠ বাঁচাতে একজোট হওয়া।একটি শিশু তার শৈশবের আনন্দ, শারীরিক সুস্থতা এবং মানসিক প্রশান্তি খেলার মাঠে খুঁজে পায়। ঢাকার উন্নয়ন তখনই টেকসই হবে, যখন নগর পরিকল্পনায় শিশুদের জন্য খেলার মাঠকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর, সিটি কর্পোরেশন, নগর পরিকল্পনাবিদ এবং সাধারণ নাগরিক—সবাইকে এই বিষয়ে দায়িত্বশীল হতে হবে।

শিশুদের জন্য একটি সুন্দর, সুস্থ, আনন্দময় শৈশব উপহার দিতে হলে এখনই মাঠ বাঁচাতে উদ্যোগ নিতে হবে।

লেখক:মোহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, ধোলাইপাড়, যাত্রাবাড়ী। 

সাব্বির

×