ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২

হাতিসুর গাছ: উপকারী হলেও সচেতনতার প্রয়োজন

প্রকাশিত: ০৬:৫৫, ১৯ জুলাই ২০২৫

হাতিসুর গাছ: উপকারী হলেও সচেতনতার প্রয়োজন

ছবি: সংগৃহীত

হাতিসুর গাছটি বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশেও ব্যাপকভাবে পরিচিত একটি একবর্ষজীবী আগাছা জাতীয় উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Heliotropium indicum।

গাছটি সাধারণত ছোট ও শাখান্বিত হয়। এর পাতা ছোট ও রুক্ষ এবং ফুলগুলো ছোট ও সাদা রঙের হয়। ফুলের গুচ্ছটি দেখতে অনেকটা হাতির শুঁড়ের মতো বলেই এই উদ্ভিদের নামকরণ হয়েছে ‘হাতিসুর’। এটি সাধারণত আগাছা হিসেবেই জন্মায় এবং খালি জমি, রাস্তার ধারে কিংবা বাগানেও দেখা যায়। দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় এটি অনেক সময় অন্যান্য উদ্ভিদের জন্য ক্ষতিকর হয়ে ওঠে।

তবে এই গাছের রয়েছে নানাবিধ ব্যবহার। হাতিসুর গাছের পাতা ও ফুল ঐতিহ্যগতভাবে ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। কিছু এলাকায় এর পাতা শাক হিসেবেও খাওয়া হয়। তবে, বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে গাছটির কিছু অংশ বিষাক্ত হওয়ায় এর ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।

হাতিসুর গাছ মূলত এশিয়া মহাদেশের উদ্ভিদ। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশেও এটি দেখা যায়। গাছটি উষ্ণ ও আর্দ্র জলবায়ুতে ভালোভাবে জন্মে।

হাতিসুর গাছের পাতা ও ফুল ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায়। এটি ত্বকের রোগ, জ্বর এবং অন্যান্য সমস্যায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এমনকি গাছের পাতা পোকামাকড় দূর করতেও কার্যকর। এছাড়াও এর পচা পাতা মাটির উর্বরতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

তবে, এই উদ্ভিদটি একটি আগাছা হিসেবেও পরিচিত এবং অন্যান্য উদ্ভিদের বৃদ্ধিতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। এ গাছের কিছু অংশ বিষাক্ত হওয়ায় এর অবাধ ব্যবহার ক্ষতিকর হতে পারে। তাই, এর বহুমুখী ব্যবহার থাকা সত্ত্বেও অবাধভাবে ব্যবহার না করে সচেতনতা বজায় রাখা উচিত।

 ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার (IUCN) অনুযায়ী, হাতিসুর গাছের সংরক্ষণ অবস্থা ‘লিস্ট কনসার্ন’ বা ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত। এর মূল কারণ হলো, এটি খুবই সাধারণ এবং ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।

কোনও ধরনের ঔষধি গাছ ব্যবহারের আগে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক বা হার্বাল বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

শেখ ফরিদ 

×