ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

তরুণদের জন্য দুঃসংবাদ, ক্লান্তি ও শরীর ব্যথাও হতে পারে ক্যান্সার !

প্রকাশিত: ০১:৫২, ১৯ জুলাই ২০২৫

তরুণদের জন্য দুঃসংবাদ, ক্লান্তি ও শরীর ব্যথাও হতে পারে ক্যান্সার !

ছবি: সংগৃহীত

ক্যান্সার একটি মরণব্যাধি হলেও প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে এর থেকে সেরে ওঠার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তবে দুঃখজনকভাবে, অনেক সময় কিশোর ও তরুণরা ক্যান্সারের কিছু সাধারণ প্রাথমিক লক্ষণকে অবহেলা করে, যা পরে গুরুতর আকার ধারণ করে। ক্লান্তি এবং শরীর ব্যথা এমন দুটি লক্ষণ, যা প্রায়শই উপেক্ষা করা হয় কিন্তু এগুলো ক্যান্সারের ইঙ্গিত হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন যে, কিশোর-কিশোরী এবং তরুণ প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে ক্যান্সারের ঘটনা বাড়ছে, বিশেষ করে কোলন ক্যান্সার। তাই এই বয়সী মানুষেরা যদি দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি বা শরীরের ব্যথা অনুভব করেন, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

ক্যান্সারের সম্ভাব্য প্রাথমিক লক্ষণগুলো যা উপেক্ষা করা উচিত নয়:

  • অব্যক্ত ওজন হ্রাস: যদি কোনো রকম খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন বা ব্যায়াম না করেও হঠাৎ করে ওজন কমে যায়, বিশেষ করে কয়েক মাসে ৫-১০ কেজি বা তার বেশি, তাহলে এটি ক্যান্সার (যেমন লিম্ফোমা, লিউকেমিয়া বা গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল টিউমার) এর একটি সতর্ক সংকেত হতে পারে।

  • তীব্র ক্লান্তি: পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়ার পরও যদি ক্লান্তি না কাটে, প্রতিদিন কাজে মনোযোগ দিতে অসুবিধা হয়, অথবা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি অবসাদ অনুভব হয়, তাহলে এটি লিউকেমিয়ার মতো রক্ত-সম্পর্কিত ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে।

  • অস্বাভাবিক পিণ্ড বা ফোলা: শরীরের যেকোনো অংশে যদি অস্বাভাবিক পিণ্ড বা ফোলা দেখা যায় যা ব্যথা করে না এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে তা উপেক্ষা করা উচিত নয়। স্তন, বগল, ঘাড় বা অণ্ডকোষের মতো স্থানে এমন পিণ্ড স্তন ক্যান্সার বা লিম্ফোমার লক্ষণ হতে পারে।

  • ত্বকের পরিবর্তন: ত্বকে নতুন তিল বা আঁচিলের আকার, আকৃতি বা রঙের পরিবর্তন, নতুন দাগ, ত্বক অস্বাভাবিকভাবে গাঢ় বা হলুদ হয়ে যাওয়া, অথবা দীর্ঘস্থায়ী চুলকানি ত্বকের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।

  • দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা: যদি শরীরে কোনো নির্দিষ্ট স্থানে ব্যথা কয়েক সপ্তাহ ধরে থাকে এবং এর কোনো সুস্পষ্ট কারণ না থাকে (যেমন আঘাত), তাহলে এটি গুরুতর কিছুর ইঙ্গিত হতে পারে। পেটে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা কোলন ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। বিশেষ করে হাড় বা জয়েন্টে অবিরাম ব্যথা অস্টিওসারকোমা বা ইউইং সারকোমার মতো হাড়ের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে, যা সাধারণত অল্প বয়স্কদের মধ্যে দেখা যায়।

  • অস্বাভাবিক রক্তপাত বা স্রাব: মাসিকের মধ্যবর্তী সময়ে রক্তপাত, যৌন মিলনের পর রক্তপাত, মল বা প্রস্রাবের সাথে রক্ত, অথবা অস্বাভাবিক স্রাব ক্যান্সারের (যেমন জরায়ুমুখের ক্যান্সার বা কোলন ক্যান্সার) লক্ষণ হতে পারে।

  • মলত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন: মলত্যাগের অভ্যাসে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন, যেমন দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া, অথবা মলের সাথে রক্ত বা শ্লেষ্মা, কোলন ক্যান্সারের ইঙ্গিত হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা জোর দিয়ে বলছেন, এই লক্ষণগুলোর যেকোনো একটি দেখা গেলেই আতঙ্কিত না হয়ে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা শুরু হলে ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।

আঁখি

×