ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

অর্থনীতি বিভাগের সব খবর

এনবিআর কর্মকর্তাদের শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহার

এনবিআর কর্মকর্তাদের শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহার

ব্যবসা-বাণিজ্যের বৃহত্তর স্বার্থের কথা বিবেচনা করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা দেশব্যাপী শাটডাউন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রবিবার রাতে ঢাকায় বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সভাপতি হাসান মোহাম্মদ তারেক রিকাবদার এই সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করেন। এ ছাড়া এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের মহাসচিব সেহেলা সিদ্দিকাও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। ব্যবসায়ীদের মধ্যস্থতায় এনবিআর সংস্কার পরিষদ তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছে বলে জানা গেছে। সন্ধ্যায় অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পর ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ আন্দোলনরত এনবিআর কর্মকর্তাদের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ব্যবসায়ীরা এনবিআর সংস্কার এবং আন্দোলনকারীদের দাবি-দাওয়া সমাধান করার জন্য ৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান। সেই সঙ্গে দেশের বৃহত্তর স্বার্থে তাদের কাজে যোগদানের অনুরোধ জানান।  সার্বিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ তাদের চলমান শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন। পরে তাদের এই সিদ্ধান্ত ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানান।  এর আগে সরকারের সঙ্গে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আন্দোলনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কোনো সমাধান না হওয়ায় আগের ঘোষণা অনুযায়ী মার্চ টু এনবিআর ও কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছিল এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। রবিবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে প্রধান কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব ও অতিরিক্ত কর কমিশনার সেহেলা সিদ্দিকা এই ঘোষণা দিয়েছিলেন।

দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স

দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স

চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষ হওয়ার দুদিন আগেই প্রবাসীরা দেশে ৩০.০৫ বিলিয়ন বা ৩ হাজার ৫ কোটি ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন। একক অর্থবছর হিসাবে এটাই বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রবাসী আয়ের রেকর্ড। বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো একক অর্থবছরে আর এত বেশি রেমিটেন্স দেশে আসেনি। সেই সঙ্গে এই প্রথম বাংলাদেশ রেমিটেন্স তথা প্রবাসী আয়ে ৩০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। এই রেকর্ড রেমিটেন্সে দেশের রিজার্ভ একটি সুসংহত অবস্থার দিকে ধাবিত হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের এই রেকর্ড রেমিটেন্স আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৫.৫০ শতাংশ বেশি। এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ২৮ জুন পর্যন্ত দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৩.৭৪ বিলিয়ন ডলার।  এর আগে একক অর্থবছর হিসেবে সর্বোচ্চ পরিমাণে রেমিটেন্সে রেকর্ড হয় ২০২০-২১ অর্থবছরে। সেই সময়ে কোভিডের কারণে হুন্ডির চ্যানেলগুলো বন্ধ থাকায় প্রবাসীরা ২৪.৭৭ বিলিয়ন ডলার আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে বা ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠান। এদিকে চলতি জুন মাসের ২৮ তারিখ পর্যন্ত প্রবাসীরা রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন ২.৫৩ বিলিয়ন ডলার; যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল মাত্র ২.৩৭ বিলিয়ন ডলার। রবিবার  বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি জুন মাসের প্রথম ২৮ দিনে ২৫৩ কোটি ৯২ লাখ ডলারের রেমিটেন্স এসেছে দেশে। এর মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন লাখ ডলার, বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩৬ কোটি ১২ লাখ ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৬১ কোটি ৬১ লাখ ৪০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৫৩ লাখ ৭০ হাজার ডলার। এর আগেও প্রবাসী আয় প্রবাহে ইতিবাচক ধারা ছিল। গত মে মাসে দেশে এসেছে ২ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার, যা ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। তারও আগে মার্চ মাসে সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ২৯ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স এসেছিল। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিটেন্স এসেছে। আগস্টে এসেছে ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। পরের মাস নভেম্বরে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার। এরপর চলতি বছরের জানুয়াতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার রেমিটেন্স এসেছে। এ ছাড়া মার্চে ৩২৯ কোটি ডলার, এপ্রিলে আসে ২৭৫ কোটি ডলারের রেমিটেন্স। সবশেষ মে মাসে ২৯৭ কোটি ডলারের রেমিটেন্স পাঠান প্রবাসী বাংলাদেশিরা। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রেমিটেন্স প্রবাহ শুধু প্রবাসী পরিবারের আয় বাড়ায় না বরং দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও বড় অবদান রাখে। এদিকে সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে প্রবাসীদের বিভিন্ন প্রণোদনা দিচ্ছে। ডিজিটাল চ্যানেলে অর্থ পাঠানো সহজ হওয়ায় এখন অনেকেই হুন্ডি এড়িয়ে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেল বেছে নিচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান জানান,  বৈধ চ্যানেলে রেমিটেন্স পাঠাতে নানা উদ্যোগ, উৎসবকেন্দ্রিক আয় বৃদ্ধি ও অবৈধ পথে প্রেরণ নিরুৎসাহিত করায় এই প্রবাহ বাড়ছে। তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বিপুল রেমিটেন্স এলেও এখনো বড় অঙ্ক অবৈধ পথে চলে যাচ্ছে। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্যমতে, ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে বৈদেশিক শ্রমবাজারে ৯ লাখ ৬ হাজার ৩৫৫ জন কর্মী যুক্ত হয়েছেন। আর ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশে পাঠানো জনশক্তির অঙ্ক ছিল ১ কোটি ৬০ লাখ ৭৫ হাজার ৪৮৭ জন। এই বিপুল জনশক্তির অর্জিত আয় বৈধপথে দেশ আনতে পারলে বাৎসরিক রেমিটেন্সের অঙ্ক ৪০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যেত।  রেমিটেন্স আয়ের দিক থেকে ২০২৪ সালে বিশ্বে সপ্তম অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। গত বছর বাংলাদেশে সাড়ে ২৬ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। শীর্ষে ছিল ভারত। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের একটি ব্লগের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু। ভারত ২০২৪ সালে আনুমানিক ১২৯ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পেয়েছে। যা যেকোনো দেশের এক বছরে পাওয়া সর্বোচ্চ রেমিটেন্স। এ ছাড়া, গত বছর বৈশ্বিক রেমিটেন্সের মধ্যে ভারত একাই নিয়ে গেছে ১৪ দশমিক ৩ শতাংশ।

সার্কুলার প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আর্থিক উন্নতির নতুন পথ উন্মোচন

সার্কুলার প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আর্থিক উন্নতির নতুন পথ উন্মোচন

সার্কুলার প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শুধু পরিবেশ থেকে প্লাস্টিক বর্জ্যই কমাচ্ছে না, আর্থিক উন্নতির নতুন পথ উন্মোচিত করেছে। সেই সঙ্গে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গড়ে উঠা ব্যবসা দেশের ডিজিটাল আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে। গবেষণা সংস্থা পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, চট্টগ্রাম শহরের প্লাস্টিক বর্জ্য সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনার সঙ্গে জড়িত ৮৮ শতাংশ পরিবার ও ভাঙ্গারিওয়ালা এখন বিকাশ, নগদের মতো ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করছে। এই উদ্যোগে জড়িত ৯৫ শতাংশ পরিবার-ই এখন প্লাস্টিক বিক্রয়ে অংশ নিচ্ছে, যাদের এক তৃতীয়াংশ আবার এই উদ্যোগটি চালু হওয়ার পর যুক্ত হয়েছে। এটিকে এই উদ্যোগের একটি সামাজিক সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।  বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর চট্টগ্রামে প্রতিদিন প্রায় ৩ হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যার মধ্যে প্রায় ২৪৯ টনই প্লাস্টিক বর্জ্য। এর একটি বড় অংশ সংগ্রহ না হওয়ায় এই প্লাস্টিক খাল-নালা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা বন্ধ করে দিয়ে পরিবেশ দুষণ, জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং শহরের জলাবদ্ধতাকে প্রকট করে তোলে। এই পরিবেশগত সংকট মোকাবিলায় ২০২২ সালের জুন মাসে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, ইউনিলিভার বাংলাদেশ এবং উন্নয়ন সংস্থা ইপসার মধ্যে একটি অংশীদারিত্ব চুক্তি চালু হয়।

রিজার্ভ ছাড়াল ৩০ বিলিয়ন ডলার

রিজার্ভ ছাড়াল ৩০ বিলিয়ন ডলার

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে চলমান ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি থেকে দুই কিস্তির অর্থ ১৩৪ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। ২৬ জুন বাংলাদেশের হিসাবে এ অর্থ জমা হয়েছে। এর ফলে দেশের মোট বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ গত বৃহস্পতিবার দিন শেষে ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। সেদিন মোট রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ২৫ দশমিক ৫১ বিলিয়ন ডলার। আর ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।  অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে প্রবাসীরা বৈধ পথে আয় পাঠানো বাড়িয়েছেন। এই বাড়তি প্রবাসী আয় বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে স্বস্তি ফিরিয়ে দিয়েছে। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ সরে এসেছে। ১০ মাস ধরেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে না। এর মধ্যে দেশের ব্যাংক ও রাজস্ব খাত সংস্কার, বাজেট সহায়তা ও ঋণ হিসেবে ৫০০ কোটি ডলারের বেশি ঋণ দেশে আসছে। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে। এসব কারণে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত বা রিজার্ভ বেড়েছে। এ ছাড়া শুক্রবার জাপানের ৪২ কোটি ডলার ঋণের অর্থ এসেছে, যা এখন রিজার্ভে যুক্ত হয়েছে। দেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা বিবেচনায় আইএমএফ আরও ৯০ কোটি ডলার ঋণ দেবে। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংক, এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি), জাপান ও ওপেক ফান্ড থেকে আরও ১০০ কোটি ডলার ঋণ আসবে, যা চলতি মাসের মধ্যে রিজার্ভের হিসাবে যুক্ত হবে। এতে চলতি মাস শেষে মোট রিজার্ভ ৩২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা। এদিকে গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রবাসী আয় এসেছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গত সপ্তাহ পর্যন্ত প্রবাসী আয় এসেছে ২৯ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার। ফলে প্রায় ছয় বিলিয়ন ডলার আয় বেশি এসেছে। এদিকে রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ শতাংশ। ফলে আমদানি ৫ শতাংশের মতো বাড়লেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে। ২০২৪ সালের ৩১ জুলাই আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ সময়ে মোট রিজার্ভ ছিল ২৫ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলার। তখন বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ছিল ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার।

১২ দুর্বল ব্যাংককে সাড়ে ৫২ হাজার কোটি টাকা ঋণ

১২ দুর্বল ব্যাংককে সাড়ে ৫২ হাজার কোটি টাকা ঋণ

দুর্বল ব্যাংককে আর টাকা ছাপিয়ে সহায়তা দেওয়া হবে না, দায়িত্ব নেওয়ার পর একাধিকবারই একথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। কিন্তু সেই কথায় অনড় থাকতে পারেননি তিনি।  চলতি অর্থ বছরে এ পর্যন্ত ১২টি ব্যাংককে ৫২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বর থেকে টাকা ছাপানো, গ্যারান্টি ও বিশেষ সুবিধার মাধ্যমে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে দেওয়া এ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।   বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গ্রাহকের আমানত ফেরত দিতে ডিমান্ড লোনের মাধ্যমে ১০টি ব্যাংক পেয়েছে ৩৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। পাশাপাশি ৯টি ব্যাংকের চলতি হিসাবের ঘাটতিতে থাকা ১৯ হাজার কোটি টাকাও রূপান্তর করা হয়েছে ডিমান্ড লোনে।  সবচেয়ে বেশি ঋণ নিয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, যার পরিমাণ ১৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এরপর রয়েছে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবিএল), ন্যাশনাল ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। এছাড়া তালিকায় আছে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, এবি ব্যাংক, বিসিবিএল, আইসিবি, বেসিক ও পদ্মা ব্যাংক। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেছিলেন, টাকা ছাপিয়ে আর কোনো ব্যাংককে ঋণ নয়। তবে বাস্তবে সেই নীতির বাস্তবায়ন হয়নি। এ নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের যুক্তি- অবস্থার বাস্তবতা বিবেচনায় এ সহায়তা অব্যাহত রাখা হয়েছে।  এ অবস্থায় দেশের ব্যাংকিং খাতে আস্থার সংকট যেমন বাড়ছে, তেমনি ভবিষ্যতে এ ধরনের সংকট এড়াতে ব্যাংকিং সংস্কারে কার্যকর পদক্ষেপের প্রয়োজন আরও গভীরভাবে অনুভব করছেন অর্থনীতিবিদরা। তারা মনে করেন, পুনঃঋণ নয়, বরং প্রশাসনিক স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করলেই কেবল এই সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব। কয়েক মাসের মধ্যে একীভূত হচ্ছে গ্লোবাল, ইউনিয়নসহ শরিয়াভিত্তিক পাঁচ ব্যাংক। এই পাঁচ ব্যাংক মিলে হবে শরিয়াভিত্তিক একটি ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের এমন সিদ্ধান্তে আপত্তি তুলেছেন এক্সিম ব্যাংকের পাশাপাশি সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকও। তারা বলছে, একীভূত নয়, একক ব্যাংকিং কার্যক্রম চালাতে চায় তারা। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে আপত্তি জানিয়েছে এই দুই ব্যাংক। তাদের সক্ষমতা ভিত্তিতে ব্যাংক পরিচালনা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে তারা।   সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শফিউজ্জামান জনকণ্ঠকে বলেন, ‘একীভূত হতে কোনো প্রকার আগ্রহ নেই। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা রয়েছে। আড়াই থেকে তিন বছরের মধ্যে ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। এই ব্যাংকের প্রতি গ্রাহকের আস্থা রয়েছে। ফলে আমানত নিয়ে কোনো প্রকার চিন্তা নেই। এই ব্যাংকের অনেক শাখা ও উপশাখা রয়েছে।