ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

অর্থনীতি বিভাগের সব খবর

সচিবালয়ে আসার কারণ জানালেন বিএসইসি চেয়ারম্যান

সচিবালয়ে আসার কারণ জানালেন বিএসইসি চেয়ারম্যান

পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ প্রশ্ন রেখে বলেছেন, এলাম প্রধান উপদেষ্টার পাঁচটি নির্দেশনা নিয়ে, আর আপনারা বানিয়ে দিলেন পদত্যাগ। এটার একটা ইফেক্ট বাজারে পড়ে না?  সোমবার সকালে সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন। অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে সচিবালয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা (কিছু গণমাধ্যম) তো নিউজ বানিয়ে দিয়েছেন। কোথা থেকে এ সমস্ত নিউজ (পদত্যাগের গুজব) বানান এবং পান। সারাদিন খালি এগুলোই ছড়ায়। এর থেকে ভালো কিছু কি নাই বলেন? আমি এলাম প্রধান উপদেষ্টার পাঁচটি নির্দেশনা নিয়ে, এতক্ষণ সেটা নিয়েই আলোচনা করছিলাম। আমি আসছি একটা কাজে আর আপনারা বানিয়ে দিলেন এগুলো (পদত্যাগ)। এটার একটা ইফেক্ট বাজারে পড়ে না? তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার যে পাঁচটি নির্দেশনা, তার বেশিরভাগই আমাদের কাজ নয়, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের। সেটা কো-অর্ডিনেশন আপনারা করবেন। এটার জন্যই আজকে আসা। এটাকে আপনারা (কিছু গণমাধ্যম) বানিয়ে দিলেন আমি পৌনে ১০টায় কেন আর্জেন্ট আসছি, আমি পদত্যাগ করব। এ যদি হয়, একটা মানুষ কাজ করবে কি? কেন বারবার গুঞ্জন ছড়াচ্ছে আপনি পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন- এমন প্রশ্ন করা হলে খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেন, গুজব ছড়াল আমি আমেরিকায় গিয়ে ফিরব না। আমি যদি আমেরিকায় যেতাম, সবাই জানে ১২ বছর আমেরিকায় আমার ট্যাক্স ফাইল করতে হয়েছে। আমার তো ওখান থেকে কোনো দিন দেশেই ফেরার দরকার ছিল না।

শ্রীলঙ্কায় ওয়ালটন ব্র্যান্ডের যাত্রা শুরু

শ্রীলঙ্কায় ওয়ালটন ব্র্যান্ডের যাত্রা শুরু

শ্রীলঙ্কার বাজারে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে গ্লোবাল ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড ওয়ালটন। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের অন্যতম সেরা গ্লোবাল ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড হয়ে ওঠার লক্ষ্য পূরণে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল ওয়ালটন। দেশটিতে সহ¯্রাধিক সেলস আউটলেটে ওয়ালটন পণ্য বিক্রি হবে বলে জানিয়েছে পরিবেশক প্রতিষ্ঠান। গত শনিবার সন্ধ্যায় কলম্বোর সিনামন লাইফ হোটেলে আয়োজিত ‘গ্র্যান্ড লঞ্চিং অব ওয়ালটন ব্র্যান্ড’ শীর্ষক এক জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শ্রীলঙ্কার বাজারে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হয়েছে ওয়ালটনের।  শ্রীলঙ্কার খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান এবং ওয়ালটনের ব্যবসায়িক অংশীদার ‘মনিক ট্রেডিং প্রাইভেট লিমিটেড’ কর্তৃক আয়োজিত ওই গ্র্যান্ড লঞ্চিং প্রোগ্রামে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম।

লুটেরাদের জব্দকৃত সম্পদ দরিদ্র মানুষের কল্যাণে ব্যয় করবে সরকার

লুটেরাদের জব্দকৃত সম্পদ দরিদ্র মানুষের কল্যাণে ব্যয় করবে সরকার

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, ব্যাংক ও অন্যান্য খাত থেকে যে অর্থ লুট হয়েছে তা সাধারণ মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করা হবে। লুটেরাদের পাচারকৃত অর্থ ও ব্যাংকের জব্দ শেয়ার ব্যবহারের ক্ষেত্রে পুরো প্রক্রিয়া আইনি কাঠামোর মধ্যে সম্পন্ন হবে। লুটের টাকা সরাসরি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কল্যাণে ব্যয়ে ‘ব্যবস্থাপনা তহবিল’ গঠন করবে সরকার।  এর আগে সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বিষয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে লুটপাট হওয়া সম্পদ ও অর্থ পুনরুদ্ধারের পর সেই সম্পদ কিভাবে কোন খাতে ব্যয় করা হবে সেই লক্ষ্যে একটি তহবিল গঠনের নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট বিএফআইইউর প্রধান এ এফ এম শাহীনুল ইসলাম।   কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, আদালতের সিদ্ধান্ত ও প্রয়োজনে আইন সংশোধনের মাধ্যমে ফান্ড গঠন করা হবে। ব্যাংক ক্ষতিপূরণ এবং জনহিতকর কাজে ব্যবহারের জন্য দুই ধরনের ফান্ড গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।  এক প্রশ্নে আহসান এইচ মনসুর বলেন,  জব্দকৃত সম্পদের হিসাব কোর্টের সিদ্ধান্ত হওয়ার পরেই এবং আইনের সঠিক ধারা প্রয়োগের মাধ্যমেই এই কার্যকলাপ করা হবে। প্রয়োজনে আইন কিছু সংশোধন করতে হতে পারে। এটা নিয়ে আইন মন্ত্রণালয় এবং অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় কাজ করবে। যদি এটি প্রয়োজন হয়। এ ছাড়া বর্তমান আইন দিয়ে যদি এটি করা সম্ভব হয় তাহলে আমরা সেটাই করব। গভর্নর বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে একটা ফান্ড প্রতিষ্ঠা করা। যেটার অর্থ দিয়ে আমরা ব্যাংকগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে পারব। কারণ ব্যাংকগুলো বিশালভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের টাকা তো লুট করা হয়েছে। এছাড়া বাকি টাকা যেগুলো নন ব্যাংক রিলেটেড, যেগুলো দুর্নীতির মাধ্যমে টাকা অর্জন করা হয়েছে, সেগুলো সরকার আরেকটা ফান্ডে নিয়ে জনহিতকর কাজে ব্যয় করবে। সবই আইনগতভাবে করা হবে। কোনোটাই আইনের বাইরে হবে না।  গভর্নর বলেন, আমি আগেও বলেছি যারা টাকা পাচার করেছে তাদের কিন্তু আমরা শন্তিতে থাকতে দেব না। পাচারকারীরা বিপুল অর্থের বিনিময়ে আইনজীবী নিয়োগ দিচ্ছে। এতেই বোঝা যায় তারা দৌড় ঝাঁপের ওপর আছে। শান্তিতে নেই। যুক্তরাজ্য, আমেরিকা, কানাডা, সিঙ্গাপুর সরকারের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। বিদেশীদের কাছ থেকে আমরা প্রচুর আগ্রহ পাচ্ছি।  তারা জানিয়েছে আমরা যথাযথ প্রমাণ দিতে পারলেই টাকা ফেরত দেওয়া হবে।  প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ‘তারা শান্তিতে যে নেই, এর আরও একটা প্রতিচ্ছবি হলো, মাঝারি আকারের আরও ১২৫টি অনিয়ম তদন্তের আওতায় আসছে, যারা ২০০ কোটি টাকার বেশি অর্থ লুট করেছেন। আমরা ২০টি বিদেশি আইনি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করছি। এখন এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কী কাজ হবে, তার কার্যপরিধি ঠিক করা হচ্ছে।’ প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, যারা তদন্তের আওতায় এসেছেন, তাদের ১ লাখ ৩০ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদ সংযুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি ১৬ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার বিদেশে ও ৪২ হাজার ৬১৪ কোটি টাকার অস্থাবর সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। গভর্নর আরও বলেন, এমএফএস কোম্পানি নগদের আগের বোর্ডে যারা ছিলেন তারা বিপুল আর্থিক অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। নগদের আইটি বিভাগের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুষ্কৃতকারীরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সব ধরনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। ফলে প্রতিষ্ঠানটিতে এই মুহূর্তে কি হচ্ছে তা নিয়ে শঙ্কিত বাংলাদেশ ব্যাংক। বিগত সময়ের মতো অর্থ তছরুপ ও বেআইনি কর্মকা- হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।  গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার নগদে প্রশাসক নিয়োগ দেয়। প্রশাসক বসানোর পর নিরীক্ষায় উঠে আসে, নগদ লিমিটেডে বড় ধরনের জালিয়াতি সংঘটিত হয়েছে। ভুয়া পরিবেশক ও এজেন্ট দেখিয়ে প্রতিষ্ঠানটিতে আর্থিক জালিয়াতি এবং অতিরিক্ত ইলেকট্রনিক অর্থ বা ই-মানি তৈরি করা হয়েছে। এসব কারণে ২ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকার হিসাব মিলছে না।  সাবেক সরকারের আমলে নিয়মের বাইরে গিয়ে গ্রাহক বানানো ও সরকারি ভাতা বিতরণসহ একচেটিয়া সুবিধা পায় নগদ। প্রতিষ্ঠানটিতে যখন এসব অনিয়ম সংঘটিত হয়, তখন এর পরিচালনায় যুক্ত ছিলেন আওয়ামী লীগের একাধিক সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তি। সবার চোখের সামনে এসব অনিয়ম হয়। এ ঘটনায় সরকারের ডাক বিভাগের আটজন সাবেক ও বর্তমান মহাপরিচালক (ডিজি), নগদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (সিইও) ২৪ জনকে আসামি করে মামলা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। দেশের বড় ১০টি ব্যবসায়ী গ্রুপ ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবারের বিরুদ্ধে ওঠা অর্থ পাচারের অভিযোগ তদন্ত করছে আন্তসংস্থা টাস্কফোর্সের আওতাধীন ১১টি টিম। এ সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য বৈঠকে তুলে ধরা হয়। শেখ হাসিনার পরিবারের বাইরে যে ১০ শিল্পগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে এস আলম গ্রুপ, বেক্সিমকো গ্রুপ, নাবিল গ্রুপ, সামিট গ্রুপ, ওরিয়ন গ্রুপ, জেমকন গ্রুপ, নাসা গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, সিকদার গ্রুপ ও আরামিট গ্রুপ।

পালিয়ে থাকা অর্থপাচারকারীদের নাগরিকত্ব বাতিল হচ্ছে: গভর্নর

পালিয়ে থাকা অর্থপাচারকারীদের নাগরিকত্ব বাতিল হচ্ছে: গভর্নর

বিদেশে পালিয়ে থাকা অর্থপাচারকারীদের নাগরিকত্ব বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। মঙ্গলবার (১৯ মে) প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে আয়োজিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান। বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা, গভর্নরসহ আর্থিক খাতের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। গভর্নর জানান, বিগত সরকারের আমলে দেশের ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতে ব্যাপক লুটপাট হয়েছে। এ সময়ে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এসব অর্থ ফেরত আনার জন্য ইতোমধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরাত, কানাডা, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলো বাংলাদেশের অনুরোধে তথ্যভিত্তিক সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। তিনি আরও জানান, পাচার হওয়া অর্থ ও জব্দ করা সম্পদের ব্যবস্থাপনার জন্য একটি বিশেষ তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই তহবিল থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংকগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে এবং আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হবে। তহবিলের একটি অংশ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কল্যাণেও ব্যয় করা হবে। গভর্নরের ভাষ্যমতে, ইতোমধ্যে জব্দকৃত অবৈধ অর্থ, শেয়ার ও সম্পদের পরিমাণ প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা। এর মধ্যে দেশে জব্দ হওয়া স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের মূল্য ১ লাখ ৩০ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা, এবং বিদেশে শনাক্ত ও ফ্রিজ করা সম্পদের পরিমাণ ১৬৪.০৩ মিলিয়ন ডলার। এছাড়া বিদেশে অবস্থিত ১৮ কোটি ডলারের সম্পদের হদিসও মিলেছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে প্রতিটি পদক্ষেপ আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে এবং জনগণের কল্যাণে তা ব্যয় করা হবে। ভিডিও দেখুন: https://www.youtube.com/watch?v=XD9_vliAyro

সাভারে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন

সাভারে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন

অবৈধ গ্যাস ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযানে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়েছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। এতে প্রায় ২৬ লাখ টাকার গ্যাস চুরি রোধ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। রবিবার তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের জনসংযোগ অফিস থেকে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে শনিবার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসির আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ সাভার, জোবিঅ-সাভারের আওতাধীন কলমা, টঙ্গাবাড়ী, গরুরহাট, বড় আশুলিয়া, বঙ্গবন্ধু রোড, রাজু মার্কেট, গৌরীপুর, বটতলা, আশুলিয়া, সাভার এলাকার ৬টি স্পটে বিশেষ অভিযান চালায়। অভিযানে রুটনেক্সট ওয়াশিং ও ইকো লন্ডিং ইন্ডাস্ট্রিজ নামে বাণিজ্যিক কারখানার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এতে ১১ লাখ ৯৬ হাজার ৪৫৭ টাকার মাসিক গ্যাস চুরি রোধ করা সম্ভব হবে। এ সময় ৪০ ফুট লাইন পাইপ অপসারণপূর্বক জব্দ করা হয়। একই দিনে জোবিঅ-আশুলিয়ার আওতাধীন চক্রবর্তীটেক, ভবানীপুর, গাজীপুর (আশুলিয়া নেটওয়ার্ক) এলাকায় অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ তথা সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান চালানো হয়। অভিযানে আনুমানিক ৬০০ ফুট অবৈধ বিতরণ লাইনের বিভিন্ন ব্যাসের আনুমানিক ৫০০ ফুট লাইন পাইপ অপসারণ করে মেসার্স নূর জানুমা ওয়াশিং প্ল্যান্ট ও এআর জিন্স নামক শিল্প সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এতে ১৩ লাখ ৯৯ হাজার ৪৪০ টাকার মাসিক গ্যাস চুরি রোধ করা সম্ভব হবে। এছাড়া ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস এবং ভিজিল্যান্স বিভাগ গাজীপুর কর্তৃক যৌথ পরিদর্শনে ইমপ্রেস নিউটেক্স কম্পোজিট টেক্সটাইল, গোড়াই- মির্জাপুর, টাঙ্গাইলের রেগুলেটরে অবৈধ হস্তক্ষেপ শনাক্ত করার কারণে তৎক্ষণিক গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়।

সাড়ে ১১ মাসে ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ ১.০৮ লাখ কোটি টাকা

সাড়ে ১১ মাসে ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণ ১.০৮ লাখ কোটি টাকা

সরকারের অভ্যন্তরীণ ঋণ-সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের মাসিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম সাড়ে এগারো মাসে সরকার তফসিলি ব্যাংকগুলো থেকে ১ লাখ ৮ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৫৭ শতাংশ বেশি। প্রতিবেদন বলছে, ১২ মে পর্যন্ত তফসিলি ব্যাংক থেকে সরকারের বকেয়া ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪.৮৫ লাখ কোটি টাকা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে এ ঋণের পরিমাণ ছিল ৬৮ হাজার ৭০৬ কোটি টাকা। তফসিলি ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৮ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা ঋণ নিলেও সরকার ইতোমধ্যে আগের নেওয়া বাংলাদেশ ব্যাংকের ৪৯ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করেছে। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত সরকারের নিট ঋণ দাঁড়িয়েছে ৫৬ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সরকারের মোট বকেয়া ঋণ প্রায় ৩২ শতাংশ কমে ২০২৪ সালের জুনের ১.৫৬ লাখ কোটি টাকা থেকে ১.০৬ লাখ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাজস্ব আদায়ে ধীরগতি, বাজেট ঘাটতি মেটাতে ঋণ বৃদ্ধি, বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধিতে ধীরগতি এবং ২০২৪ সালের আগস্টে রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর ব্যবসা-বাণিজ্যে অনিশ্চয়তাসহ নানা কারণে সরকারের ব্যাংক ঋণ ব্যাপক হারে বেড়েছে। একইসঙ্গে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সংকোচনমুখী মুদ্রানীতির ধারা অব্যাহত রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ কমিয়ে উল্টো বেশি পরিশোধ করেছে। ফলে অর্থবছরের শেষ সময়ে এসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমতে শুরু করেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে পাশ হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে সরকারের ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১.৩৭ লাখ কোটি টাকা। তবে অন্তর্বর্তী সরকার সেই লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৯৯ হাজার কোটি টাকা করেছে। তবে ব্যাংকিং খাতের বর্তমান অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে সরকারের ঋণ ৯০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে সীমিত রাখা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, অর্থবছরের শেষ সময়ে স্বাভাবিকভাবে সরকারের ঋণ বেড়ে থাকে। তবে এখন পর্যন্ত যে ঋণ নেওয়া হয়েছে, লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় তা অনেক কম। বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, সরকার বর্তমানে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির অংশ হিসেবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ধার করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ধার পরিশোধ করার প্রক্রিয়ায় গেছে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ধার পরিশোধ করার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যালান্স শিটকে সংকুচিত করা হচ্ছে, যা আগের অস্বাভাবিক সম্প্রসারণকে সংশোধন করছে। সরকার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ধার না বাড়ালে মূল্যস্ফীতিজনিত চাপ তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ছিল মন্তব্য করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, সরকার ধার না বাড়ালে বাজারে অর্থ সরবরাহ অনেক বেশি থাকত। একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, গত আট-নয় মাস যাবত বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। ‘এছাড়াও দুর্বল ব্যাংকগুলো থেকে আমানত তুলে নিয়ে তা সূচকে ভালো থাকা ব্যাংকগুলোতে আমানত রাখা হয়েছে। যার কারণে এসব ব্যাংক অতিরিক্ত তারল্য সরকারকে ঋণ দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, বেসরকারি খাতে ঋণের চাহিদা কমে যাওয়ায় ট্রেজারি বিল ও বন্ড এখন ব্যাংকগুলোর জন্য আকর্ষণীয় বিনিয়োগে পরিণত হয়েছে। ‘সরকার এই বন্ডগুলোর ওপর নিশ্চয়তা দেয়, ফলে ঝুঁকি কম থাকায় ব্যাংকগুলো এই বিনিয়োগকে বেশি পছন্দ করছে। তিভে আগামী অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি কমাতে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যাংকঋণ নেওয়া অনেক কমানোর পরিকল্পনা করছে। কর্মকর্তারা বলেন, আগামী অর্থবছরে ব্যাংক ঋণের পরিমাণ চলতি অর্থবছরের মূল লক্ষ্যমাত্রা থেকে প্রায় ২৫ শতাংশ কমিয়ে ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা করা হবে। সম্প্রতি অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বা টাকা ছাপিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন করা ঠিক হবে না। আগামী অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য হবে।’ ব্যাংক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ॥ সরকার বাজেট ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক থেকে দুইভাবে টাকা ধার করে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে অথবা কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে। তবে সরকার যখন বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে বেশি ঋণ নেয়, তখন সেই ব্যাংকগুলোর হাতে মানুষের জন্য কিংবা ব্যবসার জন্য ঋণ দেওয়ার টাকা কমে যায়। আর সরকার যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত ঋণ নেয়, তাহলে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যেতে পারে। অর্থাৎ, জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় সাধারণ মানুষের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করে। এটা অর্থনীতির নীতির একটি মৌলিক নিয়ম। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, দেশে এপ্রিল মাসে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯.১৭ শতাংশ। অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারাও স্বীকার করেছেন, ব্যাংক থেকে সরকারের ঋণগ্রহণ এই চড়া মূল্যস্ফীতির অন্যতম কারণ। তবে তারা এ-ও বলছেন, সরকারের হাতে বিকল্প বিকল্পও খুব বেশি নেই। পলিসি ডায়ালগ সেন্টারের ডিস্টিংগুইশড ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘সরকার যদি ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে অতিরিক্ত ঋণ নেয়, তাহলে তা বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।’ তিনি বলেন, এসব ঋণের সুদ পরিশোধ করতেই সরকারের রাজস্ব আয়ের বড় একটা অংশ খরচ হয়ে যায়। তাই আগামী অর্থবছরে এসব বিষয়ে সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে। মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, ‘যদি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ৭.৯ লাখ কোটি টাকার মধ্যে রাখা হয়, তাহলে বর্তমান মূল্যস্ফীতির হারের প্রেক্ষাপটে এটি তুলনামূলকভাবে ছোট বাজেট হবে। তাই বাজেটের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত রাজস্ব আদায় বাড়ানো।’