ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

পদত্যাগ করলেন রাশেদ খান, কিন্তু দায়মুক্ত হবেন না

প্রকাশিত: ১৫:৩৪, ১ জুলাই ২০২৫

পদত্যাগ করলেন রাশেদ খান, কিন্তু দায়মুক্ত হবেন না

ছবি: সংগৃহীত

যশোর জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক রাশেদ খান হঠাৎ করেই পদত্যাগ করেছেন। রোববার রাতের পোস্টে তিনি জানিয়েছেন, তিনি আর সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নন। তবে তার এই পদত্যাগকে ঘিরে ওঠা প্রশ্ন ও বিতর্ক থামেনি।

অভিযোগের তালিকায় রয়েছে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা উপেক্ষা করে একক সিদ্ধান্ত গ্রহণ, সংগঠনের নীতিমালা মেনে চলার বদলে নিজের মত অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং তা কেন্দ্রের অনুমোদন ছাড়াই বাস্তবায়ন করার অভিযোগ।

স্বজনপোষণ ও পক্ষপাত: স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের বাদ দিয়ে ছাত্রলীগের নির্দিষ্ট কিছু নেতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে পদায়ন করার অভিযোগ।

আর্থিক স্বচ্ছতার অভাব ও অনিয়ম: সাংগঠনিক তহবিল ব্যবহারে স্বচ্ছতা না থাকা এবং অর্থনৈতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে অনিয়মের আভাস।

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ: দলীয় নিয়মকানুন উপেক্ষা করে নিজের চারপাশে বলয় গড়ে তোলা, এতে তৃণমূল কর্মীদের অবহেলা এবং নেতৃত্বে বিভাজনের সৃষ্টি।

সাংগঠনিক দ্বন্দ্ব ও নেতৃত্ব বিভাজন: যশোর ইউনিটে দীর্ঘদিন ধরে নেতৃত্বকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘাত, যার ফলে দলের কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার অভিযোগ।

এই অভিযোগসমূহের পেছনে সংগঠনের অভ্যন্তরে চলমান ভ্রূক্ষেপ এবং অসন্তোষের প্রতিফলন দেখা গেছে। সংগঠনের একাধিক কর্মী ও পদধারী ইতিমধ্যেই আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

এই পরিস্থিতিতে জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক মো. সজীব হোসেন বলেন, “যখন একজন নেতা কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অগ্রাহ্য করে নিজের একক বলয় গড়েন, স্বজনপোষণের সুযোগ তৈরি করেন, এবং আর্থিক স্বচ্ছতায় প্রশ্ন তোলা হয়—তখন তাঁর পদত্যাগকে দায়মুক্তি হিসেবে দেখা যায় না।”
“আমরা চাই, রাশেদ খান স্পষ্টভাবে এগুলো নিয়ে জবাবদিহি করুন। নেতৃত্বের দায় শুধু পদে থাকার সময়ই নয়, পদত্যাগের পরেও বহাল থাকে।”

তিনি আরও বলেন, “যশোর ইউনিটে দীর্ঘদিন ধরে যে বিভাজন ও অনিয়ম চলছে, তার দায় কে নেবে? এসব প্রশ্ন ছাড়া আন্দোলনের ঐক্য ও কার্যকারিতা কল্পনাই করা কঠিন।”

যশোর ইউনিটের এ অবস্থা নিয়ে এখনো সংগঠনের কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে এই ইউনিট পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নেতৃত্বের প্রতি দায়বদ্ধতা ও স্বচ্ছতা ছাড়া কোনো ছাত্র আন্দোলন সুদীর্ঘায়িত হতে পারে না। রাশেদ খানের পদত্যাগের ঘটনায় এরই পুনঃপ্রমাণ পাওয়া গেল।

শিহাব

×