ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০২ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

কুষ্টিয়ায় কাফনের কাপড়ে বিএনপির বিক্ষোভ, ভোট কারচুপির অভিযোগ

সাগর হোসেন, কুষ্টিয়া

প্রকাশিত: ২১:২৪, ১ জুলাই ২০২৫

কুষ্টিয়ায় কাফনের কাপড়ে বিএনপির বিক্ষোভ, ভোট কারচুপির অভিযোগ

দৈনিক জনকণ্ঠ

কাফনের কাপড় পরে জেলা বিএনপির কার্যালয় ঘেরাও করে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির একাংশের নেতা-কর্মীরা। সদ্য অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়া পৌর বিএনপির দ্বিবার্ষিক কাউন্সিলে ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের কোর্ট স্টেশনসংলগ্ন জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে এই কর্মসূচি শুরু হয়। সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজল মাজমাদারের নেতৃত্বে কয়েক শত নারী-পুরুষ এ সময় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। অনেককে কাফনের কাপড় পরে মাটিতে শুয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়।

বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা জিয়ার সৈনিক এক হও, লড়াই করো, অবৈধ নির্বাচন মানী না, মানব না,সহ বিভিন্ন স্লোগানে চারপাশ মুখর করে তোলে। বক্তৃতা তারা ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুবউদ্দিন আহমেদ ও সদস্যসচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকারকে দায়ী করেন।

কাজল মাজমাদার জানান, জেলা বিএনপির নেতৃত্বাধীন নির্বাচন পরিচালনা কমিটি চরম অনিয়ম করেছে। আমরা দলীয় কার্যালয় ঘেরাও করে প্রতিবাদ জানিয়েছি এবং ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছি। দাবি পূরণ না হলে হরতাল ও অবরোধের মতো কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবো।

বিক্ষোভের আগেরদিন রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে কাজল মাজমাদার পৌর বিএনপির নির্বাচনকে ‘কারচুপির উৎসব’ বলে উল্লেখ করেন। সংবাদ সম্মেলন চলাকালেই খবর আসে, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রাবাসের টয়লেটে ‘চেয়ার’ প্রতীকের সিল মারা বেশ কিছু ব্যালট পেপার পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় দলীয় মহলে উত্তেজনা ছড়ায়।

কাজল মাজমাদার বলেন,নির্বাচনের আগে থেকেই শঙ্কা ছিল। এরপরও গণতন্ত্র ও দলের স্বার্থে আমরা অংশ নেই। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। আমরা এ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করছি এবং পুনরায় নির্বাচন চাই।

অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার বলেন,ভোটের দিন কিংবা গণনার সময় কোনো অভিযোগ ছিল না। ফলাফল ঘোষণার পর হঠাৎ করে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, যা ভিত্তিহীন। নির্বাচন শতভাগ স্বচ্ছভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গত ২৭ জুন কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ মাঠে পৌর বিএনপির দ্বিবার্ষিক কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতি পদে একে বিশ্বাস বাবু এবং সাধারণ সম্পাদক পদে কামাল উদ্দিন নির্বাচিত হন। পরাজিত প্রার্থী কাজল মাজমাদার পুনর্গণনার দাবি জানান। পুনর্গণনার পর  তার ভোট ৫৯৫ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৫৯৯ হলেও বিজয়ী বাবুর ভোট হয় ৬১১।

প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর কুতুব উদ্দিন আহমেদকে আহ্বায়ক এবং প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকারকে সদস্য সচিব করে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করা হয়।

৩১ সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটিতে ত্যাগী অনেক নেতাকে বাদ দেওয়ায় শুরু থেকেই বিক্ষুব্ধ ছিলেন একটি অংশের নেতা-কর্মীরা। সাম্প্রতিক পৌর নির্বাচন এ বিরোধকে আরও তীব্র করে তোলে।

হ্যাপী

×