
ম্যানসিটির বিরুদ্ধে জয়সূচক গোলের উচ্ছ্বাস আল-হিলালের ফুটবলারের, ইন্টার মিলানকে হারিয়ে বাঁধভাঙা আনন্দ ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লুমিনেন্সের অধিনায়ক থিয়াগো সি
কি ছিল না এই ম্যাচে? আক্রমণ, প্রতিআক্রমণ, রুদ্ধশ^াস লড়াই। রোমাঞ্চকর এই ম্যাচে ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে শেষ হাঁসি হেঁসেছে আল-হিলাল। পেপ গার্দিওলার ম্যানসিটিকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট কেটেছে সৌদি প্রো-লিগের ক্লাবটি। এই জয়ে ইউরোপীয় দলের বিপক্ষে এশিয়ান ক্লাবগুলোর টানা ২০ ম্যাচের জয়খরা কাটিয়েছে আল-হিলাল।
প্রথম কোনো এশিয়ান ক্লাব হিসেবে ফিফার আনুষ্ঠানিক কোনো টুর্নামেন্টে ইউরোপীয় দলের বিপক্ষে জয় পেল আল হিলাল। দিনের আরেক ম্যাচে ইন্টার মিলানের হৃদয় ভেঙে বিশ্বকাপের কোয়ার্টারে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব ফ্লুমিনেন্স। কোয়ার্টার ফাইনালে আগামী শনিবার এই দুই দল মুখোমুখি হবে।
মঙ্গলবার ফ্লোরিডার ক্যাম্পিং ওয়ার্ল্ড স্টেডিয়ামে শেষ ষোলোর ম্যাচে আল-হিলালের মুখোমুখি হয় ম্যানসিটি। বল দখল থেকে শট নেওয়া সবদিকেই গার্দিওলার শিষ্যরা এগিয়ে থাকলেও ম্যাচের ফল গেছে বিপক্ষে। আল-হিলালের বল দখলে ছিল ৩১ শতাংশ। এ ছাড়া ১৭ শট নিয়ে ৬টি লক্ষ্যে রাখতে সক্ষম হয় তারা। বিপরীতে পজিশনে আধিপত্যের পাশাপাশি ত্রাস ছড়িয়ে ৩০টি শট নেয় সিটি, এর মধ্যে ১৪টি গোলের লক্ষ্যে ছিল। ম্যাচের মাত্র নবম মিনিটেই পর্তুগিজ মিডফিল্ডার সিলভার গোলে এগিয়ে যায় সিটি।
বিরতির পর নেমে প্রথম মিনিটে ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার মার্কোস লিওনার্দোর গোলে সমতায় ফেরে আল-হিলাল। আল-হিলাল ৫২ মিনিটে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন সেলেসাও তারকা ম্যালকম। কিন্তু তার তিন মিনিট পরই কর্নার ও সেট পিসে গোলে করে সিটিকে সমতায় ফেরান আর্লিং হালান্ড। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে স্কোর বোর্ড ২-২ হলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। খেলতে নেমে শুরুতেই গোল করেন আল-হিলালের সেনেগালিজ সেন্টারব্যাক কুলিবালি। ১০৪ মিনিটে ফিল ফোডেনের গোলে সিটি আবারও ম্যাচে ফেরে।
তবে ম্যাচের ১১২ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় ও আল-হিলালের চতুর্থ গোলটি লিওনার্দো করলে সেটি আর ম্যানসিটি শোধ করতে পারেনি। ফলে এই লড়াই থামল ৪-৩ ব্যবধানে। এবারের ক্লাব বিশ্বকাপের আগমুহূর্তে আল-হিলাল কোচের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ইতালিয়ান কোচ সিমোন ইনজাঘি। তার অধীনেই নেইমার জুনিয়রের সাবেক ক্লাবটি ইতিহাস গড়ল।
এদিকে ইন্টার মিলান ও ফ্লূমিনেন্সের ম্যাচের শুরুতেই এগিয়ে যায় ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটি। তবে মিলানের দখলে বল ছিল ৬৯ শতাংশ। যদিও ভালো সুযোগ তৈরিতে এগিয়ে ছিল সেলেসাও দলটি। এ ছাড়া ১৬ শট নিয়ে ৪টি লক্ষ্যে রাখতে পারে মিলানের প্রতিনিধিরা। বিপরীতে ১১টি শট নিয়ে সমান ৪টি লক্ষ্যে ছিল ফ্লুমিনেন্সের। এক মাস আগেই তারা উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে পিএসজির কাছে হেরেছিল।
এবার ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে ইন্টারের যাত্রা থামল শেষ ষোলোতে। নর্থ ক্যারোলিনার ব্যাংক অব আমেরিকা স্টেডিয়ামে ম্যাচের মাত্র তৃতীয় মিনিটেই আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার জার্মান কানোর গোলে ফ্লুমিনেন্স লিড নেয়। পুরো ম্যাচে সেটি আর শোধ করতে পারেনি লাউতারো মার্টিনেজ-থুরামদের ইন্টার। উল্টো যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে সেলেসাও মিডফিল্ডার হারকিউলিস পেরেইরা আরেক গোল করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। এই জয়ে দ্বিতীয় ব্রাজিলিয়ান ক্লাব হিসেবে বিশ্বকাপের শেষ আটে উঠল ফ্লুমিনেন্স। ফ্লুমিনেন্সের কাছে পরাজিত ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টারই অবশ্য ম্যাচজুড়ে আধিপত্য দেখায়।
ম্যাচটিতে তিনজন ডিফেন্ডার দিয়ে লাইনআপ সাজিয়েছিলেন ফ্লুমিনেন্সের কোচ রেনাতো গাউচো।