
ছবি: জনকণ্ঠ
নরসিংদীর শিবপুরে স্বাক্ষর জাল করে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের (পিআইও) সরকারি প্রকল্প টিআর-কাবিখার অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে প্রকল্প সহকারী (কার্য সহকারী) আরিফুল ইসলাম তুহিন এবং পিয়ন আশিককে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তুহিনের বাসা থেকে নগদ ৫২ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে তাদের গ্রেপ্তার এবং টাকার জব্দের বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। এর আগে সোমবার রাত ৩টার দিকে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) আরিফুল ইসলাম তুহিনের বাসায় অভিযান চালায়। ওই সময় তার আলমারিতে রাখা নগদ ৫২ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
শিবপুর উপজেলা পিআইও অফিস ও এনএসআই সূত্রে জানা গেছে, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (টিআর/কাবিখা) থেকে ভুয়া বিল-ভাউচার ও পিআইও কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে মোট ৫২ লাখ ৭৮ হাজার টাকা উত্তোলন করেন তুহিন ও আশিক।
সূত্র জানায়, গত ১৫ জুন শিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা টিআর/কাবিখা প্রকল্পের ১৯১টি বিল হিসাবরক্ষণ অফিসে জমা দেন। বাজেট না থাকায় ৮১টি বিল প্রত্যাখ্যাত (বাউন্স) হয়। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনিক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। এরপর এনএসআই গোপনে তদন্ত শুরু করে এবং ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে তুহিন ও আশিকের জড়িত থাকার প্রমাণ পায়।
এই তদন্তের ধারাবাহিকতায় সোমবার রাতে এনএসআই কর্মকর্তারা তুহিনের বাসায় অভিযান চালিয়ে ৫২ লাখ টাকা উদ্ধার করেন। তুহিন এই টাকার সুনির্দিষ্ট উৎস জানাতে ব্যর্থ হন। পরদিন সকালে পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। জিজ্ঞাসাবাদে তুহিন ও আশিক স্বীকার করেন, তারা স্বাক্ষর জাল করে অর্থ উত্তোলন করেছেন। বর্তমানে আইনি প্রক্রিয়া চলমান।
শিবপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, “প্রকল্পের ১৯১টি বিল জমা দেওয়ার পর ৮১টি বাউন্স হয়। আমরা তখন তাদের কাছ থেকে বিল ভাউচার নিয়ে যাচাই করি এবং সেখানে স্বাক্ষর জালের প্রমাণ পাই। পরে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এনএসআইকে জানানো হয় এবং তদন্তে তাদের সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত হয়।”
শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আফজাল হোসেন জানান, “গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা অর্থ আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা দায়ের হবে। আমরা আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
শহীদ