পরনে নীল শাড়ি। সঙ্গে ম্যাচিং করে ফুল স্লিভ ব্লাউজ, হাতে ম্যাচিং করে নীল রঙের ওয়ালেট। সিঁথি কেটে চুল, কপালে সাদা পাথরের টিপ, কানে নীল ও সাদা পাথরের দুল। সঙ্গে মেরুন কালারের লিপস্টিক। মরুর বুকে যেন বাঙালি নারীর প্রকৃত সৌন্দর্যকে ধারণ করেছেন মেহজাবীন চৌধুরী।
‘দ্য নিউ হোম অব ফিল্ম’ প্রতিপাদ্যে ৫ ডিসেম্বর থেকে সৌদি আরবের জেদ্দার প্রাণকেন্দ্র আল-বালাদ শহরের কালচার স্কয়ারে শুরু হয়েছে রেড সি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের চতুর্থ আসর। আন্তর্জাতিক এই উৎসবে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশের একমাত্র সিনেমা ‘সাবা’। যে ছবিটির মাধ্যমে এক যুগের নাটক ক্যারিয়ার পেরিয়ে সিনেমায় অভিষেক হয় মেহজাবীন চৌধুরীর। নির্মাতা মাকসুদ হোসেনেরও এটি প্রথম সিনেমা। কাছাকাছি সময়ে আরও একটি সিনেমা নিয়ে দুনিয়া ঘোরার ছক এঁকেছেন মেহজাবীন। সেটি হলো শঙ্খ দাশগুপ্তর ‘প্রিয় মালতী’। টরন্টো, বুসান, কায়রো হয়ে মেহজাবীন বছরের শেষটা কাটাচ্ছেন সৌদি আরবের জেদ্দায়। যেখানে তিনি এখন সময় কাটাচ্ছেন হলিউড-বলিউডের শীর্ষ তারকাদের সঙ্গে, সেও আবার খাঁটি বাঙালির সাজে। দেশের শীর্ষ টিভি অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী যে এভাবে ২০২৪ সালের প্রায় পুরোটা সময় বিদেশে কাটিয়ে দেবেন, ২০২৩ সাল নাগাদ সেটি কেউ কল্পনাও করেনি। তাও আবার নাটক নয়, সিনেমা নিয়ে। সেটা আবার শূটিং নয়, উৎসবে উৎসবে।
সেই পরিকল্পনা ধরে কানাডা (সাবা), কোরিয়া (সাবা), ইন্দোনেশিয়া (সাবা), মিসর (প্রিয় মালতী) হয়ে এবার মরুর দেশ সৌদি আরবে বাংলাদেশ ও নিজের চলচ্চিত্রকে প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি। উৎসবে একেবারে বাঙালিয়ানায় নিজেকে সাজিয়েছেন তিনি। সেই সাজেই হলিউড তারকাদের সঙ্গে ফ্রেমবন্দি হতেও দেখা যায় মেহজাবীনকে।
অভিনেত্রী নিজেই উৎসবের নানা মুহূর্তের ছবি শেয়ার করেছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এর মধ্যে দেখা মিলেছে হলিউডের বিখ্যাত অভিনেতা উইল স্মিথ এবং ব্রিটিশ অভিনেত্রী এমিলি ব্লান্টের সঙ্গে একান্তে ছবি তুলতে। সেগুলো প্রকাশ করে ক্যাপশনে অভিনেত্রী লিখেছেন, রেড সি ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল গ্র্যান্ড ওপেনিং নাইট-এ একমাত্র বাংলাদেশী সিনেমা ‘সাবা’ প্রতিনিধিত্ব করছে। এখন পারস্পরিক সাংস্কৃতিক বিনিময় চলছে এবং বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ উৎসবের অংশ হতে পেরে আমি সম্মানিত বোধ করছি।
মেহজাবীন ছাড়াও ‘সাবা’ সিনেমার একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী। সিনেমায় দেখানো হয়েছে এক পক্ষাঘাতগ্রস্ত মা ও তার মেয়ের গল্প। মা অসুস্থ হওয়ার পর থেকে তার দেখাশোনার পুরো দায়িত্ব পালন করে সাবা। মায়ের চিকিৎসার অর্থ জোগাড় করার জন্য তাকে কাজ নিতে হয় সিসা বারে।
‘সাবা’ সিনেমাটি নির্বাচিত হয়েছে রেড সি আসরের প্রতিযোগিতা বিভাগে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ১৫টি চলচ্চিত্রের সঙ্গে লড়ছে ‘সাবা’। তাই নয়, এ উৎসবে ‘সাবা’র তিনটি প্রদর্শনী রাখা হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর কালচার স্কয়ার-সিনেমা ১-এ হবে প্রথম প্রদর্শনী। এরপর ৯ ও ১৪ ডিসেম্বর একই স্থানে আরও দুটি প্রদর্শনী হবে। উৎসবটি চলবে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত।