
সংগৃহীত প্রতীকী ছবি
সকালে দ্রুত ঘুম ভাঙানো অনেকের কাছেই একটি চ্যালেঞ্জ মনে হতে পারে। তবে কিছু সহজ অভ্যাস এবং কৌশল অবলম্বন করলে আপনি এই কাজটি সহজেই করতে পারবেন এবং দিনের শুরুটা করতে পারবেন সতেজ ও কর্মচঞ্চলভাবে।
১. ঘুমের একটি নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করুন: প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলুন। ছুটির দিনেও এই রুটিন মেনে চলার চেষ্টা করুন। এতে আপনার শরীরের ভেতরের 'দেহঘড়ি' (circadian rhythm) একটি নির্দিষ্ট ছন্দে অভ্যস্ত হবে এবং ঘুম থেকে ওঠা সহজ হবে।
২. পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন: একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য সাধারণত ৭-৯ ঘণ্টা ঘুম প্রয়োজন। যদি আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে না ঘুমান, তবে সকালে দ্রুত ঘুম ভাঙানো কঠিন হবে এবং সারাদিন ক্লান্তি অনুভব করবেন। তাই আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ঘুমের সময় বরাদ্দ করুন।
৩. অ্যালার্ম ঘড়িকে হাতের নাগাল থেকে দূরে রাখুন: অ্যালার্ম বাজলে আমরা প্রায়শই এটিকে বন্ধ করে আবার ঘুমিয়ে পড়ি। এই অভ্যাস এড়াতে অ্যালার্ম ঘড়িটি বিছানা থেকে একটু দূরে রাখুন, যাতে এটি বন্ধ করার জন্য আপনাকে বিছানা থেকে উঠতেই হয়। একবার উঠে দাঁড়ালে পুনরায় ঘুমানোর প্রবণতা কমে যাবে।
৪. সকালে প্রাকৃতিক আলোর সংস্পর্শে আসুন: ঘুম থেকে ওঠার সাথে সাথে ঘরের পর্দা সরিয়ে দিন বা জানালা খুলে দিন। সূর্যের আলো সরাসরি চোখে পড়লে তা মস্তিষ্কে মেলাটোনিন হরমোনের উৎপাদন কমিয়ে দেয়, যা ঘুম নিয়ন্ত্রণ করে। এর ফলে শরীর সজাগ হতে শুরু করে।
৫. হালকা ব্যায়াম বা স্ট্রেচিং করুন: ঘুম ভাঙার পর বিছানায় বসেই হালকা কিছু স্ট্রেচিং বা যোগব্যায়াম করতে পারেন। এটি আপনার রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করবে এবং শরীরকে সতেজ করে তুলবে। এরপর বিছানা ছেড়ে কিছুক্ষণের জন্য হাঁটাহাঁটি করা বা হালকা ফ্রিহ্যান্ড এক্সারসাইজও করতে পারেন।
৬. সকালে এক গ্লাস পানি পান করুন: ঘুম থেকে উঠেই এক গ্লাস পানি পান করুন। এটি আপনার শরীরকে হাইড্রেটেড করবে এবং হজম প্রক্রিয়াকে সক্রিয় করতে সাহায্য করবে। লেবু মিশিয়ে উষ্ণ পানি পান করা আরও উপকারী হতে পারে।
৭. ঘুমানোর আগে স্ক্রিন টাইম কমান: ঘুমানোর অন্তত এক ঘণ্টা আগে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ বা টেলিভিশন থেকে দূরে থাকুন। এসব ডিভাইসের নীল আলো মেলাটোনিন উৎপাদনে বাধা দেয় এবং ঘুম আসা কঠিন করে তোলে। এর বদলে বই পড়ুন বা আরামদায়ক কিছু শুনুন।
৮. সন্ধ্যায় ক্যাফেইন ও ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন: বিকালে বা সন্ধ্যায় ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় (যেমন চা, কফি) এবং ভারী খাবার পরিহার করুন। এগুলি আপনার ঘুমের চক্রকে ব্যাহত করতে পারে এবং সকালে উঠতে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
এই অভ্যাসগুলো নিয়মিত মেনে চললে আপনি ধীরে ধীরে সকালে দ্রুত এবং সতেজ হয়ে ঘুম থেকে উঠতে পারবেন।
সাব্বির