
ছবিঃ সংগৃহীত
চরমপন্থা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছে কুষ্টিয়ার সচেতন নাগরিক সমাজ।
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন তারা। চরমপন্থী ক্যাডার জাহাঙ্গীর কবির লিপটনের ফাঁসির দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
নাগরিক সমাজের নেতারা বলেন, লিপটন দীর্ঘদিন ধরে কুষ্টিয়ায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে রেখেছে। ক্ষমতাসীন দলের কিছু নেতার ছত্রছায়ায় থেকে সে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, কেউ তার নির্দেশ মানতে অস্বীকৃতি জানালে র্যাবের মাধ্যমে তুলে নিয়ে গায়েবি মামলা দিয়ে শাস্তি দেওয়া হতো। অস্ত্র ও মাদকের ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে রাখত সে।
স্মারকলিপি থেকে জানা যায়, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউর আহসানের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় লিপটন র্যাবের সোর্স হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছে। তবে চলতি বছরের ৫ আগস্টের গণআন্দোলনের পর সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে সে গা ঢাকা দেয়। কিছুদিন পর বিএনপির কুষ্টিয়া জেলা সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকারের আত্মীয় পরিচয়ে আবারও এলাকায় ফিরে আসে এবং পুনরায় পুরনো অপকর্মে লিপ্ত হয়।
অভিযোগ রয়েছে, প্রশাসনের একাংশকে প্রভাবিত করার জন্য লিপটনের ভাই উপসচিব আলমগীর কবির এবং বিএনপি নেতা জাকির হোসেন সরকার সক্রিয়ভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে পুলিশের তদন্ত শেষে দায়েরকৃত অভিযোগপত্রে লিপটনকে চতুর্থ আসামি করা হয়েছে।
সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে গত ৬ জুন ভোররাতে সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ টিম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার দূর্বাচারা গ্রামে অভিযান চালায়। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত ওই অভিযানে লিপটনসহ তার তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযানে ৬টি বিদেশি পিস্তল, একটি লং ব্যারেল গান, বিপুল গুলি ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। সেনাবাহিনীর দক্ষ ও পরিকল্পিত অভিযানে চারজনকেই নিরাপদে আটক করা সম্ভব হয়।
গ্রেফতারের পরই প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে গণমাধ্যমকে জানানো হয় এবং অভিযুক্তদের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানায় হস্তান্তর করা হয়।
নাগরিক সমাজের দাবি—চরমপন্থী লিপটন এবং তার সহযোগীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি কুষ্টিয়াকে সন্ত্রাসমুক্ত রাখতে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা ও কঠোর অবস্থান জরুরি বলে মত দেন তারা।
ইমরান