ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

ইসরায়েলকে নিয়ে কোরআনের যে ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হলো

প্রকাশিত: ১৩:৪৪, ১৫ জুন ২০২৫

ইসরায়েলকে নিয়ে কোরআনের যে ভবিষ্যদ্বাণী সত্য হলো

ছবি: সংগৃহীত।

আজকের বিশ্বে যখন শান্তি ও মানবাধিকারের কথা উচ্চারিত হচ্ছে, তখনই মধ্যপ্রাচ্যের বুকে ফিলিস্তিনের নিরস্ত্র জনগণের উপর অব্যাহতভাবে বোমা বর্ষণ, ভূমি দখল, শিশু হত্যা ও ধর্মীয় উপাসনাস্থলে হামলার ভয়াবহ দৃশ্য দেখে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন—ইসরায়েল আসলে কোন শান্তির প্রতিনিধিত্ব করে?

অনেক বিশ্লেষক ও ধর্মীয় চিন্তাবিদ বলছেন, আজকের ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড যেন কুরআনে বর্ণিত বনী ইসরাইল জাতির ঐতিহাসিক আচরণকেই স্মরণ করিয়ে দেয়।

সূরা আল-বাকারায় আল্লাহ তাআলা বনী ইসরাইলকে সরাসরি সতর্ক করে বলেন: "হে বনী ইসরাইল! আমি তোমাদের প্রতি যে অনুগ্রহ করেছি তা স্মরণ করো এবং আমার অঙ্গীকার পূর্ণ করো, আমি তোমাদের অঙ্গীকার পূর্ণ করব। আর তোমরা শুধুমাত্র আমাকেই ভয় করো।" (আল-বাকারা: ৪০)

কিন্তু ইতিহাস জানায়—বনী ইসরাইল সেই অঙ্গীকার পূরণ করেনি। তারা সত্যকে প্রত্যাখ্যান করেছে, হিদায়াত থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আল্লাহর দেয়া নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে দুনিয়ার মোহে ডুবে গিয়েছে।

এরপরের আয়াতে আল্লাহ বলেন, “যা আমি অবতীর্ণ করেছি তা বিশ্বাস করো, যা তোমাদের কাছে রয়েছে তা তারই সমর্থন। তোমরাই এর প্রথম অস্বীকারকারী হয়ো না এবং আমার আয়াত বিক্রি করো না সামান্য মূল্যে।" (আল-বাকারা: ৪১)

আজকের ইসরায়েলি শাসকগোষ্ঠী ও তাদের সহযোদ্ধারা যেন সেই একই পথেই চলছে—সত্য গোপন করছে, বর্বরতাকে শান্তি বলে প্রচার করছে। আল-বাকারা: ৪২-তে এর পরিস্কার ইঙ্গিত আছে: “তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে দিও না এবং জেনে-বুঝে সত্য গোপন করো না।”

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ইউরোপে নিপীড়নের শিকার হয়ে ইহুদিরা যখন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করছিল, তখন ফিলিস্তিনিরাই মানবিকতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু সেই আশ্রয়-প্রাপ্ত ইসরায়েল পরে হয়ে উঠেছে আগ্রাসনের প্রতীক।

আজ সেই একই ভূমিতে চলছে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ, একের পর এক সামরিক অভিযান, এমনকি ধর্মীয় উপাসনালয় আল-আকসা মসজিদেও বারবার হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।

ইসরায়েল দাবি করে, তারা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। কিন্তু বাস্তবে বিশ্ব দেখছে—ফিলিস্তিনের নিরীহ শিশুদের আর্তনাদ, বিধ্বস্ত হাসপাতাল, ধ্বংসপ্রাপ্ত স্কুল, ঘরহারা জনগণ আর তাজা লাশের স্তুপ।

বর্তমানে ইসরায়েল শুধু গাজায়ই নয়, সম্প্রতি ইরানেও সামরিক হামলা চালিয়েছে। ফলে নতুন করে গোটা মধ্যপ্রাচ্য উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। যুদ্ধের আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছে লেবানন, ইয়েমেন এমনকি সৌদি সীমান্ত পর্যন্ত।

এ অবস্থায় বিশ্বব্যাপী অনেকেই ইসরায়েলকে "শান্তির মুখোশধারী আগ্রাসী রাষ্ট্র" হিসেবে চিহ্নিত করছেন।
একে কেউ বলছেন—ধর্মের অপব্যবহারে নির্মিত রাজনীতি, কেউ বলছেন—অকৃতজ্ঞতার চরম উদাহরণ।

নুসরাত

×